বিদাত ও এর প্রকারভেদ এবং এর পরিনতি
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ২৭ জুন, ২০১৪, ১১:০০:০৭ রাত
পটভুমি :
বিদয়াত (বিদ্য়াত / বিদআত) শব্দটা মুসলিম সমাজে আলোচিত বিষয় ।
১. কিছু দিন আগে আমি “সবাইকে শবে বরাতের শুভেচ্ছা ( http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/1864/fakhrul/47205 ) “ শিরোনামে একটা লেখা দিলাম । তাতে দেখলাম একজন ভাই মন্তব্য করেছেন :
" বিদাত সম্পর্কে আপনার পরিস্কার ধারণা নেই বলেই মনে হচ্ছে।বিদাত হলো তা-ই, যা পূর্ণ ইসলামের অংশ নয় এবং আল্লাহ-রসুল প্রদত্ত বিধান নয় কিন্তু মুসলিমরা তাকে ইসলামের অংশ মনে করে। তাই নবী বলেছেন-কুল্লু বিদাতিন দালালাহ-সকল বিদাতই গুমরাহী। “
২. কিছু দিন আগে পুলিশ মুখ ঢাকা ও প্রয়োজনের বেশী কাপড় পড়া কিছু মেয়েকে গ্রেফতার করে । এক লোক তাদের পোষাক সম্পর্কে আমার কাছে জানতে চান ।
আমি তার এক প্রশ্নের উত্তরে বলি : এসব মেয়েদের এভাবে পোষাক পড়া বিদাত এবং কোন মেয়েকে জোড় করে বা বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে তাকে এধরনের পোষাক পড়ানো বিদাত ।
সকল বিদাতই গোমরাহি এবং পরহেজগার হিসেবে প্রমাণ করার জন্য বিশেষ পোষাক ব্যবহার করার বিষয়টি কেন বিদাত এই বিষয়টি আলোচনা করার জনস্যই মূলত এই লেখা । আর যারা বিদাত নিয়ে অনেক বেশী আলোচনা করেন তাদের অনেকের বাস্তব অবস্হা কেমন - তাও আমি সামান্য কয়েকটি উদাহরণ দিয়ে তুলে ধরার চেষ্টা করবো এবং তাদের কর্ম কান্ডকে আমরা কীভাবে প্রতিহত করবো - তার ইংগিতও দিবো ।
বিদাত শব্দের অর্থ হলো :
নব আবিস্কার , নতুন সৃষ্টি ।
বিদাত কাকে বলে ? :
শেষ নবী ও রাসুল, হাসরের ময়দানে শাফায়াতের কান্ডারী এবং মানবতার মহান মুক্তির দুত মুহাম্মদ ( সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর পর নতুন নতুন যা কিছু সৃষ্টি হয়েছে বা হতে থাকবে – সেগুলো দুনিয়াবীই হোক বা দ্বীনি বিষয়েরই হোক না কেন – সেগুলোকে বিদাত বলা হয় ।
বিদাতের প্রকারভেদ :
বিদাত সাধারণত ছয় প্রকার । যেমন :
১. দুনিয়াবী বিদাত ।
২. বিদাতে ওয়াজেবা ।
৩. বিদাতে হাসানাহ বা মান্দুবা ।
এই দুইটাকে (২ ও ৩)একত্রে বিদাতে লিদ্দ্বীন বলা হয় ।
৪. বিদাতে মুকাফ্ফেরাহ
৫. বিদাতে মুহার্রামাহ
৬. বিদাতে মাকরুহা
এই তিনটাকে (৪,৫ ও ৬)একত্রে বিদাতে ফিদ্দ্বীন বলা হয় । এগুলো হলো বিদাতে সাইয়্যিয়াহ ( গোমরাহী ) , বিদাতে দালালাহ (পরিতাজ্য), বিদাতে মাজমূমাহ ।
এসব বিদাতের সাথে যারা সম্পৃত্ত থাকবে এবং এসব বিদাতকে ভাল বলে মনে করবে এবং লোকদের এসব বিদাত করতে বলবে – তারা জাহান্নামে যাবে । (তওবা করলে জাহান্নামে যাবে না ।)
অর্থাৎ দ্বীনের সাথে সম্পৃত্ত বিদাত হলো ৫ প্রকার (২,৩,৪,৫,৬) ।
বিদাতের শরিয়াগত দিক :
ইসলামের পরিভাষায় যে কোন নতুন আবিস্কারকে বিদাত বলা হয় না ।
যে সব ইবাদতের ক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র ইংগিত বা দলীল নেই , অথচ এসব করা হয় – তাদের শরিয়া বিরোধী বিদাত বলা হয় । এগুলো কোনক্রমেই বিদাতে হাসানাহ বা মান্দুবা নয় (বিদাতের প্রকারভেদের ২ ও ৩ নং ভাগ) । এগুলো হচ্ছে বিদাতে সাইয়্যিয়াহ বা গোমরাহী ।
শরিয়ার সাথে সম্পৃত্ব বিদাত হলো - বিদাতে ওয়াজেবা এবং বিদাতে হাসানাহ বা মান্দুবা ।
এই দুইটাকে (২ ও ৩ )একত্রে বিদাতে লিদ্দ্বীন বলা হয় ।
শরিয়া বিরোধী বিদাতকে ইসলামী বিশেষজ্ঞগণ তিনভাগে ভাগ করেছেন । বিদাতে মুকাফ্ফেরাহ, বিদাতে মুহার্রামাহ, বিদাতে মাকরুহা ।
এই তিনটাকে (৪,৫ ও ৬)একত্রে বিদাতে ফিদ্দ্বীন বলা হয় ।
শরিয়ার সাথে যুক্ত বিদাত হলো ৫ প্রকার । এর মধ্যে ৩ প্রকার বিদাত অগ্রহণযোগ্য ও পরিতাজ্য এবং ২ প্রকার বিদাত হলো গ্রহণযোগ্য ।
কোন বিদাতসমূহ অগ্রহণযোগ্য :
শরিয়া বিরোধী বিদাতকে ইসলামী বিশেষজ্ঞগণ তিনভাগে ভাগ করেছেন । শরিয়া বিরোধী বিদাতকে ইসলামী বিশেষজ্ঞগণ তিনভাগে ভাগ করেছেন । বিদাতে মুকাফ্ফেরাহ, বিদাতে মুহার্রামাহ, বিদাতে মাকরুহা ।
এই তিনটাকে (৪,৫ ও ৬)একত্রে বিদাতে ফিদ্দ্বীন বলা হয় ।
শরিয়া বিরোধী বিদাত অগ্রহণযোগ্য । কারণ -
রাসুল সা : বলেছেন , যে ব্যক্তি আমাদের এ দ্বীনের মধ্যে নতুন ভাবে এমন বস্তু সৃষ্টি করে যা দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত নয়, তা অবশ্যই পরিতাজ্য । (বুখারী ও মুসলিম )
এই কথার মাধ্যমে রাসুল (সা.) বিদাতে ফিদ্দ্বীন ( বিদাতে মুকাফ্ফেরাহ, বিদাতে মুহার্রামাহ, বিদাতে মাকরুহা ) হতে দুরে থাকতে বলেছেন ।
দ্বীনের ভিতর কোন কিছু হ্রাস করা ও বৃদ্ধি করা হলো বিদাত ।
বিদাত গুলোর উদাহরণ :
১. দুনিয়াবী বিদাত ।
যেমন : ইন্টারনেট ব্যবহার , দ্রুতগতি সম্পন্ন আধুনিক পরিবাহন ব্যবহার , শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা ইত্যাদি । এগুলো ইবাদতের সাথে সরাসরি যুক্ত নয় । এগুলোকে ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী পরিচালনা করলে সোয়াব হবে ।
যেমন : নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় বানানো এবং তার উদ্দেশে হিসেবে বলা : “The mission of NSU is to produce highly skilled labor force, visionary professional leaders and responsible and enlightened citizens.”
এবং সেই অনুযায়ী ছাত্র - ছাত্রীদের দুনিয়াদারি ও ঈমানদারির জ্ঞান দান করা এবং তাদের এসব জ্ঞানগুলোকে বাস্তব জীবনে কাজে লাগানোর জন্য প্রতিষ্ঠাতাদের আপ্রাণ চেষ্টা করা হলো দুনিয়াবী বিদাত ।
এই কাজ করলে তাদের সোয়াব হবে ।
যদি তারা এসব কাজ না করে ছাত্র - ছাত্রীদের উশৃঙ্খল বানানো হয় এবং তাদের কনডম ও জন্মনিরোধ সামগ্রী সরবরাহ করা হয় এবং তাদের নামাজ কালাম তো দুরে থাক ইসলামী বই পত্র লাইব্রেরী হতে সরিয়ে ফেলা হয় - তাহলে প্রতিষ্ঠাতা ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরই শুধু গোনাহ হবে না , বরং মুসলিম সমাজের সবার গুনাহ হবে ও সমাজ কুলষিত হবে এবং এজন্য সমাজের নিষ্ঠাবান মুসলিমদের উচিত তাদের বিরোদ্ধে এখনই সর্বাত্মক জিহাদ শুরু করা । প্রথমে এজন্য সমাজের নিষ্ঠাবান মুসলিমদের জনসচেতনা বৃদ্ধি করতে হবে এবং জনমত গঠণ করতে হবে এবং জনগণকে সাথে নিয়ে তাদের প্রতিহত ও প্রতিরোধ করতে হবে ।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসলে কি হচ্ছে - তার কিছু নমুনা হলো এসব ছবি ।
২. বিদাতে ওয়াজেবা ।
যেমন : কুরআন হাদিস বোঝার জন্য আরবী ব্যকরণ বা নাহু ও ছরফ শেখা । কিন্তু রাসুল সা: এর যুগে নাহু ও ছরফ ছিল না । সুতরাং এগুলো বিদাত ।
সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরোপেক্ষ মতবাদ-সহ বিভিন্ন ইসলামবিরোধী মতবাদের বিরোদ্ধে জিহাদ করার জন্য এসব বিষয় নিয়ে নিয়মিত পড়াশোনা করা এবং এসব মতবাদে বিশ্বাসীদের সাথে নিয়মিত আলোচনা ও বিতর্ক করা যাতে তারা ইসলামের পথে ফিরে আসতে পারে । কিন্তু রাসুল সা: এর যুগে এসব ইসলামবিরোধী মতবাদ ছিল না । সুতরাং এই কাজ করা বিদাত ।
এধরনের আরো বিদাতের উদাহরণ হলো :
১।তুরস্কের শাসক দলের মতো রাজনৈতিক দল বানিয়ে ইসলামের পর্যায়ক্রমে ইসলামের প্রচার ও প্রসারের কাজ করা ।
২।হিন্দু মেযেদের দুর্গা বাহিনীর মতো মুসলিম মেয়েদের জন্র বিশেষ দল বানানো ।
৩।নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পতিতাদের ইসলামের জ্ঞান দান করা ও তাদের সঠিকভাবে ওড়না ও পোষাক পড়ানোর জন্য বিশেষ দল বানানো ।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নামাজ পড়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে : https://www.facebook.com/NorthSouthUniversity/photos/a.591706520843066.145108.212068485473540/864502633563452/?type=1&theater
শিল্পপতি ও ইসলামী ব্যক্তিত্ব রাগীব আলী
বিশিষ্ট বিদাত গবেষক, ইসলামী চিন্তাবিদ ও উসুল আল ফিকত গ্রন্হের রচয়িতা এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শাহ আব্দুল হান্নান
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান ও Managing Director & CEO, Raymond Group of Industries বেনজির আহমেদ । জনাব মুসলিম প্রধান বাংলাদেশ হয়েছে বলেই আপনি শিল্পপতি হতে পেরেছেন । সামান্য সময় হলেও ভাবুন , মুসলিম জাতিকে আপনি কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন ?
( ছবিতে আমরা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে জেনা ব্যভিচারের প্রধান পৃষ্ঠপোষকদের অন্যতম দুই ব্যক্তিকে দেখতে পাচ্ছি । এক জন হলেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও শিল্পপতি এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান রাগিব আলী এবং দ্বিতীয় ব্যক্তিটি হলেন প্রক্ষাত ইসলামী চিন্তাবিদ ও বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের সেনাপতি এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শাহ আব্দুল হান্নান । বিস্তারিত তথ্য :
১। https://www.facebook.com/pages/%E0%A6%A8%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A5_%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%89%E0%A6%A5_%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%9F/1414444932122075
২। https://www.facebook.com/SayNoUndressedWomen
Official North South University Facebook Page.
Phone: +88-02-8852000
Official Twitter: http://www.twitter.com/NSU_BD
http://www.northsouth.edu/
http://www.northsouth.edu/about-nsu/nsu-trustees/chairman-bot.html
http://www.northsouth.edu/about-nsu/nsu-trustees/members-of-the-trust/
)
৩. বিদাতে হাসানাহ বা মান্দুবা ।
যেমন : কুরআনে আগে যের, যবর, পেশ ও নুকতা ছিল না । এখন যের, যবর, পেশ ও নুকতা- যুক্ত কুরআন পড়া । যেহেতু আগে এসব ছিল না সেহেতু এই কাজ বিদাত ।
মুলত অনারব লোকদের সুবিধার জন্য ইরাকের শাসক হাজ্জাজ বিন ইউসুফ কুরআনে যের, যবর, পেশ ও নুকতা ব্যবহার চালু করেন ।
আগে হিজরী ক্যালেন্ডার ছিল না । হযরত ওমর ( রা. ) মুসলিমদের ইবাদতগুলো, প্রতি দিনের কার্যক্রম সঠিক ভাবে করা এবং সারা বিশ্বে একই দিনে রোজা, ঈদ করার জন্য এবং হিজরী নববর্ষ পালন করার জন্য হিজরী ক্যালেন্ডার চালু করেন । যেহেতু আগে হিজরী ক্যালেন্ডার ছিল বা রাসুল (সা.) –এর যুগে ছিল না । সেহেতু হিজরী ক্যালেন্ডার ব্যবহার করা বিদাত ।
হযরত ওমর রা. – এর সময় কুরআন চর্চা ও রাসুলের সুন্নাত জারি রাখার স্বার্থে ২০ রাকাত তারাবীহের নামাজ চালু করন হল বিদাতে হাসানাহ বা মান্দুবা । যা সুন্নাতে মুয়াকাদ্দাহ বলে অভিহিত করা হয় ।
বিদাতে ওয়াজেবা ও বিদাতে হাসানাহ বা মান্দুবা - এই দুইটাকে (১ ও ২)একত্রে বিদাতে লিদ্দ্বীন বলা হয় ।
এসব বিদাত দ্বীনের কাজের সুবিধার জন্য করা হয়েছে এবং করা অপরিহার্য । মূলত ইসলামের প্রথম যুগগুলোতে কুরআন ও হাদিসের দলীল বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও এসব কাজ করার প্রয়োজন হযনি । কিন্তু পরবর্তীতে ইসলাম ও মুসলিমদের স্বার্থে দ্বীনি লক্ষ্য হাসিলের স্বার্থে এধরনের নতুন নতুন বিদাত চালু করলে সোয়াব হবে ।
এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে-
عن جرير رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من سن فى الاسلام سنة حسنة فله اجرها واجر من عمل بها من بعده من غيره ان ينقص من اجرهم شىء .
অর্থাৎ: হযরত জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ বাজালী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি দ্বীন ইসলামে কোন উত্তম বিষয় বা আমলের প্রচলন করলো, তার জন্য প্রতিদান বা ছওয়াব রয়েছে এবং তার পরে যারা এই আমল করবে তাদের জন্য ছওয়াব বা প্রতিদান রয়েছে, অথচ এতে তাদের ছওয়াবের কোন কমতি করা হবে না।’ (মুসলিম, মিশকাত)
৪. বিদাতে মুকাফ্ফেরাহ
৫. বিদাতে মুহার্রামাহ
৬. বিদাতে মাকরুহা
এই তিনটাকে (৪,৫ ও ৬)একত্রে বিদাতে ফিদ্দ্বীন বলা হয় ।
এসব বিদাত হলো দ্বীনের আকিদা ও ইবাদতের মধ্যে নতুন নতুন বিষয় সংযোজন করা যেগুলো ইসলামের প্রাথমিক যুগে ছিল না । যেগুলোর পক্ষে কুরআন হাদিসের কোন ইংগিত বা দলিলও নেই ।
৪. বিদাতে মুকাফ্ফেরাহ
যেমন : এই বিদাতে বিশ্বাস করলে মুসলিম কাফির হয়ে যায় । যেমন : সমাজতন্ত্রকে ইসলামের চেয়ে ভাল মনে করে এনিয়ে ব্যস্ত থাকা ও এই মতবাদে আহবান করা, আল্লাহকে ধর্মনিরোপেক্ষ বলা ও এই মতবাদে বিশ্বাস করা ও এই মতবাদ নিয়ে ব্যস্ত থাকা ও এই মতবাদে লোকদের আহবান করা ।
ইসলাম প্রচারকদের কবরে সিজদা করা ও তাদের কাছে দুনিয়াবী কিছু চাওয়া এবং তাদের কবরের আশে পাশে নামাজ পড়া এবং তাদের অসীম ক্ষমতাবান মনে করা ।
অমুসলিমদের উপাসনালয়ে যেয়ে তাদের মঙ্গল কামনা করা বা হিন্দুদের পুজায় যেয়ে মুর্তির দিকে তাকানো ও হিন্দুদের জন্য মঙ্গল কামনা করে বক্তৃতা করা ।
৫. বিদাতে মুহার্রামাহ
এসব বিদাত করলে কবীরাহ গুনাহ হয় ।
যেমন : ইসলাম প্রচারকদের কবরের আশে পাশে যেয়ে তাদের নামে পশু যবাই করা বা তাদের জন্য যে কোন কিছু মানত করা ।
হিন্দুদের পুজায় যেয়ে প্রসাদ খাওয়া এবং হিন্দুদের উপাসনায় অংশ নেওয়া বা উপাসনা ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করা ।
৬. বিদাতে মাকরুহা
এসব বিদাত হলো মাকরুহ বা হারামের কাছাকাছি বিষয় । এগুলো করলে গুনাহ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।
যেমন :
আযানের পূর্বে দরুদ শরীফ পাঠ করা , মানুষের অনিচ্ছা সত্ত্বেও মাইকে কুরআন তিলোয়াত করা ও ওয়াজ নসীহত করা ।
জোড়ে জোড়ে আল্লাহু আল্লাহু বলে চিৎকার করা (এই কাজকে লোকেরা জিকির করা বলে থাকে ।
যে জিনিসটা কুরআন ও হাদিস দ্বারা অপরিহার্য বলে পরিগনিত হয়নি, কিন্তু তাকে অপরিহার্য বলে সমাজে চালু করাও বিদাতে মাকরুহা । যেমন : কোন বিশেষ সংগঠণের মেয়েদের মুখ ঢাকা এবং অতিরীক্ত পোষাক পড়তে বাধ্য করা বা তা ড্রেস কোড হিসেবে চালু করা ।
সব বিদাত গোমড়াহী নয় :
অনেকেই একটা হাদিস প্রায়ই বলে থাকেন । তাহলো :
তোমরা দ্বীনের মধ্যে নিত্য নতুন আবিষ্কার হতে দুরে থাক । কেননা প্রতিটি নতুন আবিস্কৃত কাজই বিদাত । আর প্রতিটি বিদাতই গোমারাহী । আর প্রতিটি গোমরাহীর পরিনতি অবশ্যই জাহান্নাম । ( নাসায়ী, মুসনাদে আহমদ, মেশকাত )
আমি আগে আলোচনায় একটি হাদিস আলোচনা করেছি যাতে আমি তুলে ধরেছি ইসলামের প্রচার ও প্রসারের জন্য নতুন যা কিছু করা হবে এবং এগুলোতে যদি কুরআন-হাদিসের সামান্যতম ইংগিত বা দলীল থাকে তাহলে তা ভাল কাজ এবং এর জন্য সোয়াব রয়েছে । এই হাদিসে মুলত বিদাতে মুকাফ্ফেরাহ ,বিদাতে মুহার্রামাহ এবং বিদাতে মাকরুহা এই তিন ধরণের বিদাতের কথা বলা হয়েছে ।
এসব বিদাত হলো দ্বীনের আকিদা ও ইবাদতের মধ্যে নতুন নতুন বিষয় সংযোজন করা যেগুলো ইসলামের প্রাথমিক যুগে ছিল না । যেগুলোর পক্ষে কুরআন হাদিসের কোন ইংগিত বা দলিলও নেই । সুতরাং এসব নিয়ে যে বা যারা মাতামাতি করবে বা মশগুল থাকবে তারা জেনে শুনে জাহান্নামের দিকে ধাবিত হবে ।
আর যারা গুনাহের কাজ করবে এবং মানুষের সাথে প্রতারণা করবে ও সমাজে অশ্লীলতা - ব্যভিচারের প্রসার ঘটাবে , নামাজ - কালাম ও ইসলামী বই পড়া নিষিদ্ধ করে নাচঁ গানের প্রসার ঘটাবে (যেমন : নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যুক্ত সব লোক ) তারা মুসলিম দাবি করলেও সুস্পষ্টভাবে কবিরা গুনাহের কাজ করায় তাদের ও তাদের সমর্থকদের আল্লাহ জাহান্নামের আগুনে ফেলবেন । আমাদের নৈতিক দায়িত্ব হলো তাদের জাহান্নামের আগুন হতে রক্ষা করা । এজন্য আমাদের উচিত হবে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পতিতাদের ওড়না বিতরণ করা ও সঠিকভাবে পোষাক পড়তে উৎসাহ দান করা এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যুক্ত সব লোক ( উসুল আল ফিকহ্ বইয়ের লেখক শাহ আব্দুল হান্নান - সহ সব ছাত্র-ছাত্রী) - কেই ইসলামের সঠিক জ্ঞান দান করা । অন্যথায় আল্লাহ তায়ালা আমাদের হাসরের মাঠে পাকড়াও করবেন এবং তাদের জেনা - ব্যভিচার ও ইসলামবিরোধী কাজ হতে আমাদের সন্তান ও আমরাও রেহাই পাবো না এবং আমরাও তাদের প্রভাবে কুলষিত হয়ে যাবো ।
ওয়ামা আলাইনা ইল্লাল বালাগুল মুবিন ।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার :
১. বিদয়াত পরিচিতি ও বিদয়াতের পরিণতি প্রথম খন্ড
শায়খুল হাদিছ আল্লামা ফজলুল করীম
হেড মুহাদ্দিস, ধামতি ইসলামিয়া কামিল মাদরাসা
দেবিদ্বার, কুমিল্লা
২.মিরাকাত – মোল্লা আলী কারী
৩.গুনিয়াতুত তালেবিন
৪.ফাতওয়ায়ে আলমগিরি
৫.মেশকাত
৫.বুখারী শরীফ
৬.মুসলিম শরীফ
৭.নাসায়ী শরীফ
৮.মুসনাদে আহমদ
৯. কানজুদ্দায়েক
১০. আদ্দুরুল মুখতার
১১.হিদায়া
১২.কাদিখান
১৩. মসজিদুল আকবর কম্প্লেক্স
১৪. মুফতি দিলওয়ার হোসাইন : প্রধান মুফতি ও মুহতামিম মসজিদুল আকবর কম্প্লেক্স
১৫.আনজুমানে ইশায়াতে ইসলামী
১৬. মুহাম্মদীয়াহ মিশন , বাংলাদেশ
১৭.জামেয়াতুল আসাদ আল ইসলামীয়াহ
১৮. বাংলাদেশের ইসলামপ্রিয় ও দ্বীনদার - ঈমানদার জনগণ
চলবে …….
বিষয়: বিবিধ
৫৭৬৩ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আরো একটা বিষয় জানতে চাচ্ছি :
১। কুরআন ও হাদিসের আলোক শাহ আব্দুল হান্নান , শিল্পপতি রাগীব আলী এবং শিল্পপতি বেনজীর আহমেদ -কে কি বলা হয় ?
তাদের আচরণকে ইসলামের পরিভাষায় কি বলা হয় ?
সাধারণ মুসলিমদের তাদের ব্যাপারে কি ভাবা উচিত ? এবং তাদের কি করা উচিত ?
আপনার এই কথার সাথে আমি একমত ।
এর জন্য কম বেশী দায়ী হলেন শাহ আব্দুল হান্নানের মতো ইসলামী চিন্তাবিদরা ।
আপনি বলেছেন : " চুল,সতর কোনটাই ঢাকা নেই। এক্ষেত্রে ফতোয়া কি? এটাও কি আপনার পোস্টের ভাস্য অনুযায়ী বিদাতের মধ্যে পড়েনা?!"
উত্তরে বলছি :
সঠিক পদ্ধতিতে ওড়না না পড়লে কবিরা গুনাহ হয় । এটা আমরা আগেই জেনেছি । আজ আমরা "কুরআন ও হাদিসে কোথায় ওড়না সম্পর্কে আলোচনা আছে ?" - তা জানবো । আমরা "ওড়না সঠিক পদ্ধতিতে না পড়লে কেন কবিরা গুনাহ হবে" - এই বিষয়ে আলোচনা অদুর ভবিষ্যতে করবো ইনশাআল্লাহ ।
কুরআনে ওড়না কথাটা আছে কি ? উত্তর হলো : ওড়না শব্দটা বাংলা আধনা বা উড়নি শব্দ হতে এসেছে । সুতরাং এই শব্দ কুরআনে নেই । কুরআন ও হাদিসে "খিমার" এবং "জিলবাব" দুইটা শব্দ রয়েছে । খিমার শব্দের অর্থ অর্থ ওড়না, হেডকভার, বা বড় চাদর জাতীয় কাপড় । এই কাপড় দিয়ে মেয়েদের মাথা,গলা, কান ও সম্পূর্ণ বুক ঢাকার কথা কুরআন ও হাদিসে বলা হয়েছে ।
মুহাম্মদ (সা.)- এর সময় অধিকাংশ মেয়ে মাথার উপরে ওড়না টাইট করে বেধে পিছনের দিকে ফেলে রাখতো । তাদের গলা, কান ও বুকের বেশীর ভাগ অংশ খোলা থাকতো । কেহ মেয়েদের দিকে তাকালে তাদের গলা ও বুকের বেশীর ভাগ অংশ সহজে দেখতে পেতো ।
কুরআন নাযিল হওয়ার আগে সৌন্দর্য ও আভিজাত্য প্রকাশের জন্য বেশির ভাগ মেয়ে মাথায় এভাবে ওড়না পড়তো এবং কিছু মেয়ে মুখ ঢাকতো । এসব কোন ধর্মের নিয়ম ছিলো না । এটা ছিলো তাদের সংস্কৃতির একটি অংশ ।
কিন্তু ওড়না তারা সঠিক পদ্ধতিতে পড়তো না বলে সমাজে বিশৃঙ্খলা, নগ্নতা ও অশালীনতার বিস্তার ঘটতো । এজন্য কুরআনের সুরা নুরের ৩১ নং আয়াত নাজিল হয় যাতে বলা হয়েছে :
وليضربن
بخمرهن على جيوبهن
অনুবাদ :
১.“আর তারা যেন তাদের ওড়নার আঁচল দিয়ে তাদের বুক ঢেকে রাখে ।“
অথবা
২.”তারা গলা ও বক্ষদেশকে যেন ওড়না দ্বারা আবৃত করে । “
অথবা
৩.”তারা যেনো ওড়না বুকে ফেলে রাখে”
ভাবানুবাদ : মুসলিম মেয়েরা যেন ওড়না দিয়ে মাথা, পিঠ, কান, গলা, সম্পূর্ণ বুক ভালভাবে ঢেকে রাখে ।
সুরা নুরের এই আয়াত নাযিল হলে মুসলিম মেয়েরা সঠিক পদ্ধতিতে ওড়না পড়া শুরু করে ।
এব্যাপারে একটা সহিহ হাদিস হযরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন । হাদিসটা হলো :
আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত,
يرحم الله نساء المهاجرات الأول، لما أنزل الله : وليضربن بخمرهن على جيوبهن شققن مورطهن فاختمرن بها.
আল্লাহ তাআলা প্রাথমিক যুগের মুহাজির মহিলাদের প্রতি দয়া করবেন । যখন আল্লাহ তাআলা এই আয়াত,” তারা গলা ও বক্ষদেশকে যেন ওড়না দ্বারা আবৃত করে (সূরা নূর : ৩১ )নাযিল করলেন, তখন তারা নিজে চাদর ছিঁড়ে ওড়না ওড়না হিসেবে ব্যবহার করা শুরু করে ।
হাদিসটা কোথায় আছে ? :
১. বোখারি শরীফের ৮ম খন্ডে ৪৩৯৮ নং হাদিস , বাংলাদেশ ইসলামি ফাউন্ডেশন ।
তবে তা প্রচলিত নিয়মে সন্নিবেশ করলে বোখারী শরিফের ৬ষ্ঠ খন্ডের ৬০ নং অনুচ্ছেদের ২৮২ নং হাদিস হয় ।
২. এই হাদিসটাই সামান্য কয়েকটা শব্দের পার্থক্য ছাড়াই আবু দাউদ শরীফের ৩২ অধ্যায় বা পোষাক খন্ডে বর্ণিত হয়েছে আর এই বইয়ে এই হাদিসটার নাম্বার দেওয়া হয়েছে ৪০৯১ ।
সুরা নুরের এই আয়াতে “খিমার" خمر - শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে । এই আরবি শব্দটির অর্থ “কাভার" বা "ঢাকনা”। কোন কিছু ঢাকতে যা ব্যব হার করা হয়। সে ক্ষেত্রে টেবিল ক্লথ, জানালার পর্দা, চাদর, ওড়না, পোশাক যেকোন কিছু হতে পারে। আমরা এখানে খিমার শব্দের বাংলা অনুবাদ করেছি ওড়না । কারণ প্রসঙ্গ উল্লেখের কারণে এর অনুবাদ কখনোই জানালার পর্দা বা চাদর হবে না ।
সুতরাং কেহ যদি বলে ওড়না সঠিক পদ্ধতিতের পড়ার কথা কুরআনের কোথায় বলা আছে তাহলে আমরা লোকদের বলবো সুরা নুরের ৩১ নং আয়াতে ।
আর হাদিসের কোথায় ওড়না সঠিক নিয়মে পড়ার কথা বলা আছে ? .. যদি কেহ বলে, তাহলে আমরা বলবো : বুখারী শরীফের বোখারী শরিফের ৬ষ্ঠ খন্ডের ৬০ নং অনুচ্ছেদের ২৮২ নং হাদিস এবং আবু দাউদ শরীফের ৩২ অধ্যায় বা পোষাক খন্ডে বর্ণিত ৪০৯১ নং হাদিসে ওড়না সঠিক নিয়মে পড়ার কথা বলা হয়েছে ।
জেনে রাখা ভাল :
১. ওড়না মোটা কাপড়ে হতে হবে । পাতলা কাপড়ের ওড়না পড়লে কবিরা গুনাহ হবে । কারণ :
এসম্পর্কে হযরত আয়েশা (রা.) বলেন : সরা নুরের ৩১ নং আয়াত নাযিল হলে মেয়েরা পাতলা কাপড় পড়া বাদ দিয়ে মোটা কাপড় সংগ্রহ করে এর দ্বারা ওড়না বানিয়ে নিয়েছিলো ।
(তাফসীরে ইবনে কাসির, হাদিস গ্রন্হ : আবু দাউদ )
আয়েশা (রা বর্ণনা করেন , আসমা বিনতে আবী বকর (রা পাতলা কাপড় পড়ে রাসুল (সা.) -এর বাড়ি বেড়াতে আসলেন । (আয়েশা রা. হলেন আসমা রা.-এর আপন বোন) । রাসুল (সা.) আসমা (রা.) –কে দেখে মুখ ফিরিয়ে নিলেন এবং বললেন, হে আসমা ! মেয়েরা যখন বড় হয়ে যায় তখন তাদের এই অঙ্গ আর ওই অঙ্গ ছাড়া প্রকাশ করা বৈধ নয়। তিনি চেহারা ও দু’কব্জির দিকে ইঙ্গিত করে দেখালেন ।
[ আবু দাউদ, হাদিস নং :৪১০৬ ; মিশকাত, হাদিস নং :৪৩৭২ ]
এসব হাদিস এবং সুরা নুরের ৩১ নং আয়াত হতে আমরা বুঝলাম : “মেয়েদের অবশ্যই মুখমন্ডল ও দুই হাতের কব্জি ছাড়া সম্পূর্ণ শরীর মোটা ঢিলা ও আরামদায়ক কাপড়ের পোষাক দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে এবং মোটা কাপড়ের ওড়না দিয়ে সম্পূর্ণ মাথা, কান, গলা, পিঠ এবং সম্পূর্ণ বুক ঢেকে রাখতে হবে ।“
২. সম্পূর্ণ মাথা, কান,পিঠ, গলা ও সম্পূর্ণ বুক ঢেকে রাখার জন্য ওড়না নিজের শরীরে সাথে মাপ মতো বানিয়ে নিতে হবে । বর্তমান সময়ের গামছার মতো সাইজের ওড়না ব্যবহার করে এসব অঙ্গ পুরোপুরি ঢেকে রাখা যায় না । সুতরাং এই ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে ।
বোনদের বলছি । মনযোগ দিয়ে শুনুন । সঠিক পদ্ধতিতে কোন আপু ওড়না পড়লেন না । অথচ তিনি সহিহ শুদ্ধভাবে সুরা ও দুয়া পড়ে নামাজ পড়লেন । জেনে রাখুন, এই নামাজ আল্লাহ গ্রহণ করবেন না । বরং এই কারণে তার নিজেরই নয়, তার বাবার, তার ভাইদের, তার স্বামীর, তার ছেলেদের এবং তার মায়েরও এজন্য গুনাহ হবে ।
অনেক আপু হাফ হাতা টাইট শর্ট কামিজ ও ফতুয়া পড়ে নামাজ পড়েন । আর নামাজ পড়ার সময় ওড়না দিয়ে সম্পূর্ন মাথা ঢাকা তো দুরে থাক তা দিয়ে ভালভাবে বুকও ঢাকতে পারেন না । কারণ তাদের ওড়নাগুলো ছোট । দেখতে গামছার মতো । এধরনর ছোট ওড়না দিয়ে মাথা ঢাকতে গেলে ঠিকভাবে শরীরের অন্য অংশগুলোও ঢাকা যায় না । এধরণের পোষাক ও ওড়না পড়ে নামাজ পড়া হতে মেয়েদের বিরত থাকতে হবে ।
অন্য সময়ও এধরনের পোষাক পড়া যাবে না । কারণ এধরনের পোষাক ইসলামের নীতিমালা বিরোধী পোষাক । উপরন্তু এধরনের পোষাক পড়লে গুনাহ হবে । আর গুনাহ হলে জান্নাতে যাওয়া যাবে না । আমাদের মনে রাখতে হবে মৃত্যুর পর জান্নাত-ই আমাদের শেষ ঠিকানা ।
উপরন্তু ইসলামের নীতিমালা অনুযায়ী পোষাক ও ওড়না না পড়লে আপনার গুনাহ হবেই , তার সাথে সাথে আপনার বাবার, আপনার ভাইদের, আপনার স্বামীর, আপনার ছেলেদের এবং আপনার মায়েরও গুনাহ হবে ।
সুতরাং বোনদের হাতে কলমে সঠিক পদ্ধতিতে ওড়না পড়া , সঠিক পদ্ধতিতে শাড়ি পড়া, সঠিক পদ্ধতিতে সেলোযার কামিজ পড়ার প্রশিক্ষণ দেওয়া পরিবারের অন্য সদস্যদের নৈতিক দায়িত্ব । বাবাদের, ভাইদের , স্বামীদের, ছেলেদের এবং অফিসের প্রধান কর্মকর্তা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ব্যক্তির ঈমানি দায়িত্ব হলো তাদের অধিনস্ত ও তত্ত্বাবধায়নকৃত মেয়েদের পোষাকের ব্যাপারে লক্ষ্য রাখা । তাদের উচিত তারা কোন ধরনের পোষাক পড়ে ঘরে ও বাহিরে চলাফেরা করছে – সে দিকে লক্ষ্য রাখা এবং ইসলামী নীতিমালা নির্ভর পোষাক তাদের সরবরাহ করা ও পড়ানো । অন্যথায় তাদের সবারই গুনাহ হবে এবং সামাজে নৈতিক অবক্ষয় ও বিশৃঙ্খলা দেখা দিবে ।
ওয়ামা আলাইনা ইল্লাল বালাগুল মুবিন ।
এব্যাপারে আরো জানার জন্য দেখুন :
https://www.facebook.com/WrapOrnaInProperWay
জাজাকাল্লাহ খাইর ।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ট্রাস্টি বোর্ড বা কোন কমিটিতেই শাহ আবদুল হান্নান নেই। শুধুমাত্র গোলাম আযমের ছেলে হওয়ার কারণে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দেয়া হয়নি গোলাম আযমের এক ছেলেকে যিনি এখন আইডিবি তে কর্মরত।
নর্থ সাউথের সকল ছাত্র ছাত্রী নিশ্চয়ই কনডম বিতরণ করেনি। সেখানকার অনেকে আপনার মতের অনুসারীও আছে। ছাত্র ছাত্রী/শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মাঝে সকল দল মতের অনুসারী রয়েছে। এটা বুঝার মত ম্যাচুরিটি কি আপনার নাই?
শাহ আবদুল হান্নান প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছিলেন বলে বর্তমানে কনডম বিতরণের দায়ও কি তার উপর বর্তায়? আপনি কি মানসিকভাবে সুস্থ?
রাসূলুল্লাহ(সা) ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেছেন। কিন্তু ইসলাম এর নামে অনেক ভাঁওতাবাজির দায় কি মহানবী(স) এর উপর বর্তায়? (নাউজুবিল্লাহ)।
কথিত ইসলামী চিন্তাবিদ শাহ আব্দুল হান্নান এখনও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যুক্ত আছে । নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইট নিয়মিত আপডেট করা হয় । এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটের এই লিংকে http://www.northsouth.edu/about-nsu/nsu-trustees/members-of-the-trust/ শাহ আব্দুল হান্নানের ছবি শেষের দিকে দেওয়া হয়েছে ( অবশ্য এক মাস আগে প্রায় মাঝে তার ছবি ছিল ) । এখানে বলা হয়েছে :
Mr. Shah Abdul Hannan
Founder General Member, NSU Trust
Former Secretary, Govt. of the People’s Republic of Bangladesh
সুতরাং কে মিথ্যাচার করেছে ? তা এই লিংক বা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইট হতেই প্রমানিত হয় ।
আমি নিজেও এই লেখায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লিংক ব্যবহার করেছি । সুতরাং আমার তথ্য সঠিক ও সত্য ।
উপরন্তু নির্ভরযোগ্য সূত্র মতে শাহ আব্দুল হান্নান NSU Trust- এর Founder General Member হিসেবে ট্রাস্টি বোর্ডের প্রায় সব সভাতে তিনি উপস্হিত হয়ে থাকেন ।
আপনার জ্ঞাতার্থে বলছি : এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নামাজ কালাম পড়া ছেলেদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয় এবং তাদের নম্বর কমিয়ে দিয়ে ও পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় হতে বহিস্কার করা হয় । ঠিক একই পদ্ধতি আইএউবিএটি , আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল , ব্রাক , নর্দান , ডেফোডিল , ইন্ডিপেন্ডন্ট করে থাকে । এই ব্যাপারে আমার কাছে সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট প্রমাণ আছে । কয়েক বছর আগে আইএউবিএটি দাড়ি টুপি পড়া ছেলেদের ও বোরকা - ওড়না পড়া মেয়েদের অনেককে ভাল রেজাল্ট করা সত্ত্বে ফেল করানো হয় এবং তাদের পোষাক খুলে নেওয়া হয় । এই ব্যাপারে আমি নিজে আন্দোলনের সাথে সম্পৃত্ত হয়েছিলাম ।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন প্রায় সব বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে কি হয় বা কারা কি করে তার তথ্য ও উপাত্ত আমি নিয়মিত সংগ্রহ করে থাকি । এব্যাপারে আমার ম্যাচুরিটির অভাব কখনোই কম ছিল না ।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যত অনাচার ব্যভিচার হয়েছে তার দায় শাহ আব্দুল হান্নান সহ সব দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের উপর বর্তায় । আমার এই কথা কুরআন - হাদিস দ্বারা সমর্থিত । কারণ তারা দায়িত্বশীল । তারা অধস্তনদের মূল্যবোধ শেখান না ।
জামায়াত শিবিরের লোকদের একটা বড় স্বভাব হলো : সব কিছুতেই রাসুল সা - কে তুলনা করা ।
যেমন : নিজামীকে রাসুল সা - এর সাথে সাইদী তুলনা করেছিলো । (নাউজুবিল্লাহ) । আর এই কারণে সাইদীকে ধর্ম অবমাননার মামলায় সর্ব প্রথম গ্রেফাতার করা হয় ।
কোথায় শাহ আব্দুল হান্নান ? আর কোথায় সাইয়্যাদুল মুরসালিন শাফিয়্যিল মুজরিমিন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ?
হায় ! আল্লাহ ।
শাহ আব্দুল হান্নান ও জামায়াতে ইসলামী প্রায় সব কাজই ভাঁওতাবাজি ।
অপর দিক মুহাম্মদ সা মানবতার মুক্তির দুত । তিনি নিজে না খেয়ে মানুষকে খাইয়েছেন । পেটে পাথর বেধেছেন ।
অপর দিকে জামায়াত - শিবিরের নেতা মানে হলো অঢেল বিত্ত - বৈভবের মালিক ও অহংকারের প্রতিক ।
নামাজ নিষিদ্ধ করা এবং লাইব্রেরী হতে ইসলামী বই তুলে নেওয়া ও নামাজি ছেলেদের হয়রানী করা এবং মেয়েদের সংক্ষিপ্ত পোষাক পড়তে উৎসাহিত করা এবং বিভিন্ন উৎসবের নামে কুরুচিকর নাচ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নেটে দেওয়া সম্পর্কে কিছু বলূন । এবং কিছু ছাত্রীর পতিতাবৃত্তি এবং নেটে অশালীন ছবি প্রদর্শন করা সম্পর্কে কিছু বলূন । এব্যাপারে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি কি ?
আমি যা সত্য ও ন্যায় - তা তুলে ধরি । আর এক্ষেত্রে আমি বিন্দুমাত্র আপোষ করি না ।
একটু ব্যাখ্যা করে বলুন তো দেখি....
এরা বাড়তি কাপড পড়ে সমস্যায় পড়েন তা আমি ফেসবুকেই বেশ কিছু মন্তব্যে দেখেছি । কারাগারে নিক্ষিপ্ত মেয়েদের ইতোমধ্যেই এলার্জি ও শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছে ।
বাংলাদেশের সমাজকে তারাই খারাপ মনে করে যারা নিজেরা বাংলাদেশ একটা স্বাধীন দেশ এই বিষয়টা মানতে হীনমন্যতায় ভুগে থাকে ।
এসব মেয়েদের বাংলাদেশের সাধারণ মহিলারা বিন্দুমাত্র অনুকরনীয় ও অনুসরণীয় আদর্শ হিসেবে মনে করে না । তাদের গর্বের বিষয়ও মনে করে না ।
হিজাব শব্দের অর্থ পর্দা । তারা পর্দার নামে বাড়াবাড়ি করছে । এই ব্যাপারে আগেও অনেক লেখা লিখেছি এবং ভবিষ্যতেও লিখবো ।
বেদায়াত সাবজেকটি ও খারাপ না, বর্তমানে সময়ে হট কেকের মত চলছে। আমার মত আরেক বে আক্কেল কইল মাদ্রাসা, ইউনিভার্সিটি, ব্যাংক, বীমা, লকার, ছাপাখানা, প্রিন্ট করা কোরআন হাদিস সবই নাকি বেদয়াত!!!! এমন কি আ্ই প্যাডে কোরআন শোনা, মোবাইলে কোরআন পড়া সবই নাকি বেদয়াত। দুনিয়া যত আগাইতেছে, বেদায়েতের সংজ্ঞাও নাকি বাড়িতেছে। আমনের ধন্যবাদ দিয়া খাটো করতে চাই না।
হ্যা । বিদাত শব্দটা এখন আলোচিত বিষয় । এই বিদাত শব্দটা ব্যবহার করে অত্যাচারি রাজতান্ত্রিক দেশ সৌদি আরব গঠিত হয়েছে । সুতরাং যত দিন সৌদি আরব নামক দেশ পৃথিবী হতে বিলীন না হবে তত দিন বিদাত শব্দটা বেশী বেশী আলোচতি হবে ।
আমি কোন বিষয়ে লিখবো কি লিখবো না - তা আমার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয় ।
আমার বাকি লেখাগুলোও পড়ার আমন্ত্রন রইল ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন