দ্বিতীয় প্রজন্মের মুক্তিযুদ্ধের আরেক শহীদ টাঙ্গাইল শহরের শহীদ সুমন সাহা
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১১:২১:৪৭ সকাল
২৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৩ তারিখ শনিবার টাঙ্গাইল শহরে কসমস কম্পিউটার সিস্টেম নামক স্বাধীনতাবিরোধীদের প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-এর অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিচয় জানা গেছে। তিনি ছাত্রলীগেরই কর্মী সুমন সাহা (২৭)। তিনি হলেন দ্বিতীয় প্রজন্মের মুক্তিযুদ্ধের আরেক জন শহীদ ।
পুড়ে অঙ্গার মৃতদেহটিকে প্রথমে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির কোন মহিলা কর্মীর বলে ধারণা করা হয়েছিল। স্বাধীনতাবিরোধীদের আতংক ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তির অতন্দ্র প্রহরী, সনাতন ধর্মের রক্ষক ও টাঙ্গাইল জেলা ইসকন-এর নিবেদিত প্রাণ অর্জুন সেনা “সুমন সাহা” শহরের বেবিস্ট্যান্ড এলাকার মৃত মদনমোহন সাহার ছেলে। গ্রামের বাড়ি বাসাইল উপজেলার হাবলা ইউনিয়নের ভৈরপাড়া। দুপুরে ময়না তদন্তশেষে মৃতদেহ পরিবারে হস্তান্তর করা হয়। সৎকারের জন্য সুমনের লাশ গ্রামের বাড়ি নেয়া হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডে ছাত্রলীগের কর্মী সুমন নিহত ও আটজন অগ্নিদগ্ধ হওয়ার ঘটনায় জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ রাজীব বাদী হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। কারো নাম উল্লেখ না করে অজ্ঞাতনামা ৭০/৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় অভিযোগ করা হয়, শনিবার বিকালে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠন পতাকা মিছিল নিয়ে কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার 'কসমস কম্পিউটার সিস্টেম'-এর সামনে ভিক্টোরিয়া রোড অতিক্রম করার সময় উপর থেকে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা মিছিলের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। মিছিলে অংশগ্রহণকারী ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী তাদের প্রতিহত করার জন্য কম্পিউটার সেন্টারের দোতলায় উঠলে সেন্টারের লোকজন পর পর দুইটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটালে সুমন নিহত এবং জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শহরের বেবীস্ট্যান্ড এলাকার আবু বকর সিদ্দিকীর ছেলে সহিদ সিদ্দিকী, কলেজ পাড়ার নুরুজ্জামানের ছেলে শুভ, হাজরা ঘাটের বাবু, দক্ষিণ কলেজ পাড়ার নুরু মিয়ার ছেলে শুভ, সাবালিয়ার আনোয়ার হোসেনের ছেলে রবিন, প্যারাডাইস পাড়ার নারায়ণ দে সরকারের ছেলে দ্বীপোজ্জল দে সরকার, মসজিদ রোডের হাবিবুর রহমানের ছেলে সবুজ ও দেওলার মো. আবদুস সবুরের ছেলে সৌরভ অগি্নদগ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হয়।
উল্লেখ্য, কসমস কম্পিউটার সিস্টেমের মালিক খোদা-ই-খিদমতগার টাঙ্গাইল শাখার সেক্রেটারি ও স্বাধীনতাবিরোধী ও পাকিস্তানের দোষর সংগঠণ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবেদিতপ্রাণ কর্মী ও জিহাদী শওকত হোসেন ইমরান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার সময় সেন্টারটিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ চলছিল। এ সময় মিছিলকারীদের কয়েকজন সেখানে গিয়ে প্রশিক্ষণার্থীদের বের করে দেয় এবং কম্পিউটারগুলো ভাঙচুর করে। তারা পেট্রোল ঢেলে ঘরের ভিতর আগুন ধরিয়ে দিলেও ঘরের দরোজা অটোলক সিস্টেম হওয়ায় তারা বেরিয়ে আসতে ব্যর্থ হয়। এদিকে দমকল বাহিনী আগুন নেভাতে এলেও মিছিলকারীরা অগ্নিনির্বাপণে বাধা দিয়ে তাদের দুইটি গাড়ি ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ এলে দমকল বাহিনী তাদের সহায়তায় আগুন নেভায় এবং অঙ্গার হয়ে যাওয়া মৃতদেহ ও আহতদের উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। এদের চারজনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
খবরে প্রকাশ এঘটনার পর টাঙ্গাইল ছাত্র লীগের অফিসে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারনা হয়েছে এবং ইসকনের সদস্যবৃন্দ হরিনাম যজ্ঞের আয়োজন করেছেন ।
উল্লেখ্য স্বাধীনতাবিরোধী এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপধাদের দায়ে দুষ্ট জামায়াতে ইসলামীর নেতা কাদের মোল্লার যথাযথ শাস্তির দাবির মধ্য দিয়ে প্রগতিশীল ব্লগার ও সংগঠণের সদস্যবৃন্দ ঢাকার শাহবাগ স্বোয়ারে বাংলাদেশে দ্বিতীয় প্রজন্মের মুক্তিযুদ্ধের সূচনা করেন । দ্বিতীয় প্রজন্মের মুক্তিযুদ্ধে এপর্যন্ত ৫ জন শহীদ হয়েছেন ।
আমরা দ্বিতীয় প্রজন্মের মুক্তিযুদ্ধের শহীদ সুমন সাহা-সহ সব শহীদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি ।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার ও তথ্যের উৎস :
১.http://www.ittefaq.com.bd/index.php?ref=MjBfMDJfMjVfMTNfMV8yXzFfMjE4MTA=
২. http://www.karatoa.com.bd/details.php?pub_no=1195&menu_id=5&val=150447
৩. http://us.bdnews24.com/bangla/details.php?id=218828&cid=2
৪. http://www.iskconbd.org/
বিষয়: বিবিধ
১৩৬৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন