সবাইকে শবে বরাতের শুভেচ্ছা
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ১৩ জুন, ২০১৪, ০২:৪৪:২২ রাত
সবাইকে শবে বরাতের শুভেচ্ছা । কাল দিবাগত রাত শবে বরাত । হাদিসের পরিভাষায় এই রাতটিকে বলা হয় "লাইলাতুন্ নিসফু মিন সাবান" অর্থাৎ সাবান মাসের মাঝের রাত বা সাবান মাসের পনেরতম রাত । এই রাতটিকে আমরা শবে বরাত বলে থাকি । কারণ বাংলাদেশসহ সারা ভারত ও পাকিস্তানে প্রায় এক হাজার বছর রাষ্ট্র ভাষা ছিল ফার্সি ভাষা । ইংরেজরা ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ বা ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ফার্সি ভাষার পর রাষ্ট্রভাষা ইংরেজী চালু করে । ফার্সি ভাষায় শব শব্দের অর্থ রাত আর বরাত শব্দের অর্থ পবিত্রতা, মুক্তি । সুতরাং শবে বরাত শব্দের অর্থ হলো পবিত্রতার রাত বা মুক্তির রাত বা নাজাত লাভের জন্য নতুনভাবে উজ্জিবীত হওয়ার রাত ।
বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যে শবে বরাত :
বাংলাদেশে ইসলাম প্রচারের সময় হতে শবে বরাত পালিত হয়ে আসছে । ফার্সি ভাষায় লিখিত বাংলাদেশের প্রাচীনতম ইতিহাস গ্রন্হ তবকাতে নাসিরী -তে বলা আছে, মুসলিম শাসকরা এদিন জাকজমকের সাথে পালন করতো । (বাংলা একাডেমির অনুবাদ : ১৫৮ পৃষ্ঠা । ) ফার্সি ভাষায় লিখিত বাংলাদেশের মোগল আমলের ইতিহাস গ্রন্হ বাহারিস্তানে গায়বিতে মির্যা নাথান বলেছেন : “শবে বরাতে শাসকরা কামানের গোলা নিক্ষেপ করে জনগণকে শবে বরাতের সুসংবাদ দিতেন । আমার আম্মা শবে বরাতের জন্য শিউলী ফুলের বোটার রং মিশ্রীত করে সুস্বাদু হালুয়া রান্না করতেন ।“ (বাংলা একাডেমীর অনুবাদ )
ইংরেজ আমল ও পাকিস্তান আমলে জাক জমকের সাথে শবে বরাত পালনের ইতিহাস পাওয়া যায় । সুতরাং আমরা কেন এই বরকতময় রাতকে অবহেলা করবো । এটা আমাদের বরকতময় ঐতিহ্য ।
শবে বরাত সম্পর্কে হাদিসের ভাষ্য :
এবার আমরা হাদিসের গ্রন্হগুলোতে দেখি শবে বরাত সম্পর্কে কি তথ্য রয়েছে -
১. আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) বলেন: এক রাতে আমি রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে খুজে না পেয়ে তাকে খুজতে বের হলাম, আমি তাকে বাকী গোরস্তানে পেলাম। তখন রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন: 'তুমি কি মনে কর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তোমার উপর জুলুম করবে?' আমি বললাম: 'হে আল্লাহর রাসূল! আমি ধারণা করেছিলাম যে আপনি আপনার অপর কোন স্ত্রীর নিকট চলে গেছেন। তখন রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: 'মহান আল্লাহ তা'লা শা'বানের মধ্য রাত্রিতে নিকটবর্তী আসমানে অবতীর্ণ হন এবং কালব গোত্রের ছাগলের পালের পশমের চেয়ে বেশী লোকদের ক্ষমা করেন।
মুসনাদে আহমাদ (৬/২৩৮), তিরমিঝি (২/১২১,১২২), ইবনে মাজাহ (১/৪৪৪, হাদীস নং ১৩৮৯)
২. রাসূল (সাঃ) বলেছেন- যখন শাবান চাঁদের ১৫-এর রাত আসবে তখন তোমরা জাগ্রত থেকে আল্লাহর ইবাদত করবে। আর পরদিন রোজা রাখবে । কেননা আল্লাহ এ রাতে সূর্যাস্তের পরই সর্বনিম্ন আসমানে নেমে আসেন এবং তার বান্দাদের ডেকে বলেন, ওহে আছো কোন ক্ষমা প্রার্থী? আমি তোমাকে ক্ষমা করব। আছো কোন রিজিক প্রার্থী? আমি তোমাকে রিজিক দেব। আছো কোন বিপদগ্রস্ত? আমি তোমাকে বিপদমুক্ত করব। আছো কোন তওবাকারী? আমি তোমার তওবা কবুল করব। এভাবে সুবহে সাদেক পর্যন্ত আল্লাহ আহবান করতে থাকেন (ইবনে মাজাহ)
৩. আব্দুল্লাহ বিন আবী ক্বায়স (রা.) হতে বর্ণিত রয়েছে যে, তিনি উম্মুল মুমিনীন সায়্যিদাতুনা আয়িশা(রা.) কে বলতে শুনেছেন, আমার মাথার তাজ, সাহিবে মিরাজ, মহানবী(সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) এর পছন্দের মাস শাবানুল মুআজ্জাম ছিল কারণ এতে তিনি রোযা রাখতেন অতঃপর(এভাবে)এটাকে রামজানুর মুবারাকের সাথে মিলিয়ে দিতেন ।
( আবু দাউদ শরীফ হাদিস নং ২৪৩১ ২য় খণ্ড ,)
৪. আলী ইবনে আবী তালিব (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ "যখন শা'বানের মধ্য রাত্রি আসবে তখন তোমরা সে রাতের কিয়াম তথা রাতভর নামায পড়বে, আর সে দিনের রোযা রাখবে; কেননা সে দিন সুর্য ডোবার সাথে সাথে আল্লাহ তা'আলা দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন এবং বলেন: ক্ষমা চাওয়ার কেউ কি আছে যাকে আমি ক্ষমা করে দেব। রিযিক চাওয়ার কেউ কি আছে যাকে আমি রিযিক দেব। সমস্যাগ্রস্থ কেউ কি আছে যে আমার কাছে বিমুক্তি চাইবে আর আমি তাকে উদ্ধার করব। এমন এমন কেউ কি আছে? এমন এমন কেউ কি আছে? ফজর পর্যন্ত তিনি এ ভাবে বলতে থাকেন"।
হাদীসটি ইমাম ইবনে মাজাহ তার সুনানে (১/৪৪৪, হাদীস নং ১৩৮৮) বর্ণনা করেছেন।
৫. রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বহু সহীহ হাদীসে প্রমাণিত হয়েছে যে, তিনি শা'বান মাসে সবচেয়ে বেশী রোযা রাখতেন।
(এর জন্য দেখুনঃ বুখারী, হাদীস নং ১৯৬৯, ১৯৭০, মুসলিম, হাদীস নং ১১৫৬, ১১৬১, মুসনাদে আহমাদ ৬/১৮৮, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ২৪৩১, সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস নং ২০৭৭, সুনানে তিরমিঝি, হাদীস নং ৬৫৭)।
সুতরাং এসব হাদিস দ্বারা শবে বরাত পালন করা মুস্তাহাব বলে প্রমানিত হলো ।
আমরা শবে বরাতে কেন নফল ইবাদত করবো ?:
১. ইবাদতগত কাজ ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাতে মুয়াক্কাদা, সুন্নাতে জায়িদা, মুস্তাহাব,নফল হয় তার গুরুত্বের বিচার করে । কিন্তু সব ধরনের ইবাদতগত কাজই গুরুত্বপূর্ণ ।
সুতরাং আমাদের উচিত শবে বরাত পালন করা ।
শবে বরাত পালন করুন । এই বরকতময় ইসলামী পর্বের বরকত হাসিল করুন ।
২.এক জন মুসলিমের জন্য নফল ইবাদত গুরুত্বপূর্ণ । প্রতি মাসের ১৩,১৪,১৫ তারিখ নফল রোজা রাখার কথা সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত । যেহেতু শবে বরাতের রাত্র ১৫ তারিখের রাত এজন্য রোজা রাখা অধিকতর বরকতময় বলে পরিগণিত হবে ।
৩.উপরন্তু সহিহ হাদিসে রাত জেগে ইবাদত-তাশবিহ-তাহলিল করার কথা আছে । এজন্য পরিবার পরিজন নিয়ে প্রায়শই রাত জেগে ইবাদত-তাশবিহ-তাহলিল করায় অভ্যস্হ হোন । কারণ ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাতে মুয়াক্কাদা, সুন্নাতে জায়িদা, মুস্তাহাব,নফল সব ইবাদতই মুসলিমদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ । সব ইবাদত করলেই আমরা আল্লাহর নেক বান্দা হতে পারবো ।
৪.জান্নাতই আমাদের শেষ ঠিকানা । জান্নাতে যাওয়ার রাস্তায় অগ্রগামী থাকার জন্য আমাদের নফল ও মুস্তাহাব আমলগুলোকেও গুরুত্ব দিতে হবে । পরিশেষে আমরা হাক্কুল ইবাদ (জনসেবামুলক কাজ ) ও আল্লাহ জীবন-বিধানকে বিশ্বময় ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য নব উদ্যমে ঝাপিয়ে পড়ার জন্য প্রতিটা মুর্হুতকে কাজে লাগাবো ।
এক্ষেত্রে আমরা আল্লামা ইকবালের বাল-ই-জিব্রাইল কাব্যগ্রন্হের মর্দে মুমিন কবিতার এই পংতিকে মনে রাখবো :
"নিশ্চয়ই প্রতিটা মুসলিম প্রতিটা মুহূর্ত ও প্রতিটা ঘন্টা পরিবর্তনে মধ্যে নতুনভাবে উজ্জিবীত হয় ।
সে সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে শব্দ এবং কাজের মাধ্যমে তার সক্ষমতা ও ক্ষমতা প্রদর্শন করে তারই প্রমাণ দেয় ।"
কারা শবে বরাতের বিরোধীতা করে ? :
ইসলাম ও মানবতার দুষমন এবং মুসলিম জাতির ঐক্য ও সংহতি বিনষ্টকারী অত্যাচারী-রাজতান্ত্রিক ওহাবী মতবাদে বিশ্বাসী এবং ইমাম হোসেন রা.-কে স্বপরিবারে হত্যাকারী পাষান্ড ইয়াজিদ ও ইহুদিদের বংশধর সৌদি আরবের রাজতান্ত্রিক শাসকদের পাচাটা গোলামরাই মুলত বরকতময় এই পর্বটির বিরোধীতা করে থাকে ।
তারা হীনস্বার্থের বশবর্তী হতে আমাদের বিভ্রান্ত করছে । সৌদি আরবে অত্যাচারী সৌদি রাজতন্ত্র চেপে বসার পর হতে সৌদি আরব হীনস্বার্থে ইসলাম বিকৃত করা শুরু করেছে । এটা তারই ধারাবাহিকতা মাত্র ।
তারা এই ক্ষেত্রে সহীহ ও হাসান হাদিসকেও অস্বীকার করে থাকে ।
আয়েশা (রঃ) এক রাতে রাসূল (সাঃ) খুজতে বের হয়েছিলেন" এই হাদিস কি মিথ্যা ।
عن مالك بن يخامر عن معاذ بن جبل عن النبي صلى الله عليه وسلم قال : يطلع الله إلى خلقه في ليلة النصف منشعبان فيغفر لجميع خلقه إلا لمشرك أو مشاحن،رواه ابن حبان وغيره ورجاله ثقات وإسناده متصل على مذهب مسلم الذي هو مذهب الجمهور في المعنعن ولم يجزم الذهبي بأن مكحولا لم يلق مالك بن يخامر كما زعم وإنما قاله على سبيل الحسبان، راجع : سير أعلامالبلاء.
মুআয ইবনে জাবাল রা. বলেন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদকরেছেন, ‘‘আল্লাহ তাআলা অর্ধ-শাবানের রাতে (শাবানের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাতে) সৃষ্টির প্রতি (রহমতের) দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত আর সবাইকে মাফ করে দেন।’’- সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস ৫৬৬৫
হাদীসটির সনদ সহীহ। এজন্যই ইমাম ইবনে হিববান একে ‘কিতাবুস সহীহ’এ বর্ণনা করেছেন। কেউ কেউ হাদীসটিকে পারিভাষিকদৃষ্টিকোণ থেকে ‘হাসান’ বলেছেন; কিন্তু হাসান হাদীস সহীহ তথা নির্ভরযোগ্য হাদীসেরই একটি প্রকার।
ইমাম মুনযিরী, ইবনে রজব, নূরুদ্দীন হাইসামী, কাসতাল্লানী, যুরকানী এবংঅন্যান্য হাদীস বিশারদ এইহাদীসটিকে আমলযোগ্য বলেছেন। দেখুন,আততারগীব ওয়াততারহীব ২/১১৮, ৩/৪৫৯;লাতায়েফুল মাআরিফ ১৫১; মাজমাউয যাওয়াইদ ৮/৬৫; শরহুল মাওয়াহিবিল লাদুন্নিয়্যা ১০/৫৬১
নাসিরুদ্দীন আলবানী . ‘‘সিলসিলাতুল আহাদীসিস সহীহা’’ ৩/১৩৫-১৩৯-এ এই হাদীসের সমর্থনে আরো আটটি হাদীস উল্লেখ করার পর লেখেন-
وجملة القول أن الحديث يمجموع هذه الطريق صحيح بلا ريب والصحة تثبت بأقلمنها عددا ما دامت سالمة من الضعف الشديد كما هو الشأن في هذا الحديث.
‘‘এ সব রেওয়ায়াতের মাধ্যমে সমষ্টিগতভাবে এই হাদীসটি নিঃসন্দেহে সহীহ প্রমাণিত হয়।’’ এরপর শায়খ আলবানী রাহ. ওই সব লোকের বক্তব্য খন্ডন করেনযারা কোনো ধরনের খোঁজখবর ছাড়াই বলে দেন যে, শবে বরাতের ব্যাপারে কোনো সহীহ হাদীস নেই।
২. ‘‘হযরত আলা ইবনুল হারিস রাহ. থেকে বর্ণিত, আয়েশা রা. বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ (সা.)রাতে নামাযে দাঁড়ান এবংএত দীর্ঘ সেজদা করেন যে, আমার ধারণা হল তিনি হয়ত মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি উঠে তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম। তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলিনড়ল। যখন তিনি সেজদা থেকে উঠলেন এবং নামায শেষ করলেন তখন আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে আয়েশা অথবাবলেছেন, ও হুমাইরা, তোমার কি এই আশংকা হয়েছে যে, আল্লাহর রাসূল তোমারহক নষ্ট করবেন? আমি উত্তরে বললাম, না, ইয়া রাসূলুল্লাহ। আপনার দীর্ঘসেজদা থেকে আমার আশংকা হয়েছিল, আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কিনা। নবীজী জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি জান এটা কোন্ রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন ইরশাদ করলেন-
هذه ليلة النصف من شعبان إن الله عز وجل يطلع على عباده في ليلة النصف من شعبان فيغفر للمستغفرين ويرحم المسترحمين ويؤخر أهل الحقد كما هم.
‘‘এটা হল অর্ধ-শাবানের রাত। (শাবানের চৌদ্দ তারিখের দিবাগত রাত।) আল্লাহ তাআলা অর্ধ-শাবানের রাতে তাঁর বান্দাদের প্রতি মনোযোগ দেন এবং ক্ষমা প্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন এবং অনুগ্রহপ্রার্থীদের প্রতি অনুগ্রহ করেন আর বিদ্বেষ পোষণকারীদেরছেড়ে দেন তাদের অবস্থাতেই।’’-শুয়াবুল ঈমান, বাইহাকী ৩/৩৮২-৩৮৩
ইমাম বাইহাকী রাহ. এই হাদীসটি বর্ণনারপর এর সনদের ব্যাপারে বলেছেন-
هذا مرسل جيد
হাজার বছর ধরে যা করে আসা হচ্ছে তা একটা ঐতিহ্য । আর এই ঐতিহ্যে খারাপ কিছু নেই । আর যেসব হাদিস উল্লেখ করা হয়েছে, তা পালনযোগ্য হাদিস । আর সহিহ হাদিস প্রসঙ্গে বলছি : অন্তত একটি হাদিস হলেও সহিহ হাদিস ।
[ আরো বিস্তারিত জানার জন্য দেখতে পারেন : শবে বরাতের তত্ত্বকথা করণীয় ও বর্জনীয় - মাওলানা মুফতি দিলাওয়ার হোসাইন , মসজিদুল আকবর কমপ্লেক্স, মিরপুর-১, ঢাকা-১২১৬ । ]
শবে বরাতের দিনে হালুয়া রুটি খাওয়া ও বিতরণ করা সোয়াবের কাজ :
আল্লাহর রাসূল (সা.) ফরমান: কেউ যদি আমাদের ধর্মে এমন কিছু চালু করে - যা তা থেকে উদ্ভূত নয় - তাহলে, তা বর্জনীয়। (মিশকাত:১৩৩, বুখারী ও মুসলিম)
সঠিক ব্যাখ্যা: বাতেলপন্থীরা তাদের স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে এ হাদীছ শরীফের অপব্যাখ্যা দিয়ে সরলমনা মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করে থাকে! অথচ এর সঠিক মর্ম হচ্ছে, যা কিছু শরীয়তের মাপকাঠিতে অবৈধ, অর্থাৎ “যা তা থেকে উদ্ভূত নয়” মানে হচ্ছে, যা কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা, কিয়াস ইত্যাদির আলোকে বৈধ নয় - তা বর্জনীয়। নইলে, সেসব বৈধ।
যেমন- পবিত্র কুরআনের হরফগুলোতে নুক্বত্বা, যবর, জের, পেশ ইত্যাদি দেওয়া, সিহাহ্ সিত্তাহ বা হাদীছ শরীফের কিতাবগুলো সংকলন করা, খতমে বুখারীর রীতি, ট্রাফিক আইন মেনে চলা, সহীহ-হাসান-জইফ সনদের সংজ্ঞা দেওয়া, উসূলের কিতাবাদি প্রণয়ন করা, অভিধানের সাহায্য নেওয়া, বিয়ে, তালাক্ব ইত্যাদি নিবন্ধন করা, মুসলমানদের কবরে ফুল দেওয়া, মসজিদ-মাদ্রাসা মোজাইক করা, ওগুলোতে টাইলস, এসি, একজস্ট ফ্যান প্রভৃতি লাগানো, পান-সুপারি-চুন খাওয়া ইত্যাদি; তেমনি, পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে হালুয়া-রুটি তৈরী ও বিতরণও নিঃসন্দেহে শরীয়তসম্মত।
উল্লেখ্য, হাদীছ শরীফে “বিদয়াত” ও “সুন্নত” শব্দ দু’টি ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় অর্থেই ব্যবহৃত হয়েছে। আর ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের গবেষণা বিভাগ থেকে প্রকাশিত আরবী-বাংলা অভিধানের ২য় খন্ডের ৬৮৩ পৃষ্ঠায় আরবি “মুহদাছ” (বহুবচনে মুহদাছাত) শব্দের বাংলা অর্থ লিখা হয়েছে, নতুন, সৃষ্ট, নব প্রবর্তিত, কুরআন-হাদীছ বহির্ভূত বস্তু বা বিষয়, ধর্মের সনাতন ধারার পরিপন্থী চিন্তা বা কর্ম, নব উদ্ভাবিত। সুতরাং মুহদাছ মানে, যা কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা, কিয়াস ইত্যাদির পরিপন্থী।
আর পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে হালুয়া-রুটি তৈরী ও বিতরণ কোনোভাবেই শরীয়তবিরোধী নয়, বরং এর মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর মাঝে সৌহার্দ-সম্প্রীতি বেড়ে যায় এবং ভ্রাতৃত্বের বন্ধন মজবুত হয়। আর এটাই ইসলামে দাবি। সুতরাং তা নিঃসন্দেহে বৈধ।
দ্বিতীয়ত, নবীজী (সা.) নিজেই বিদয়াতের শ্রেণী বিভাগ করেছেন। যেমন- তিনি ফরমান: আমার (ইন্তেকালের) পরে, কেউ আমার মরে যাওয়া কোনো সুন্নত জীবিত করলে সে - যারা সে মতে আমল করবে - সে অনুপাতে সওয়াব পাবে। আর এতে ঐ আমলদারদের সওয়াবও কমে যাবে না। পক্ষান্তরে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সন্তুষ্ট নন - এমন ভ্রান্ত বিদয়াত কেউ চালু করলে তার - যারা ঐ বিদয়াত অনুসরণ করবে - সে অনুপাতে গুণাহ হবে। আর এতে ঐ বিদয়াতীদের গুণাহও কমে যাবে না (মিশকাত:১৬১, তিরমিযী ও ইবনে মাজা)।
লক্ষ্য করুন, নবীজী ইরশাদ করেছেন: “আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সন্তুষ্ট নন - এমন ভ্রান্ত বিদয়াত কেউ চালু করলে।” সুতরাং বিদয়াত ভ্রান্তও হতে পরে এবং অভ্রান্তও হতে পারে। নইলে, তিনি “আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সন্তুষ্ট নন - এমন ভ্রান্ত বিদয়াত” না বলে শুধু বিদয়াত বললেইতো পারতেন, তাই না? কাজেই, “প্রত্যেক বিদয়াত গোমরাহী” মানে হচ্ছে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল অসন্তুষ্ট - এমনসব ভ্রান্ত বিদয়াতই কেবল গোমরাহী।
আর পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে হালুয়া-রুটি তৈরী করে নিজে খেলে এবং গরীব-মিসকীন ও পরিচিতজনদের মাঝে বিতরণ করলে কি আল্লাহুতা’লা ও তাঁর রাসূল (সা.) নাখোশ হবেন? অসম্ভব! এটা হতেই পারে না, বরং তাঁরা খুশিই হবেন। আর আমরা এ একীন বা দৃঢ় বিশ্বাসই রাখি। সুতরাং যারা এটা করতে নিষেধ করে এবং বিদয়াত! বিদয়াত!! বলে অযথা চেঁচামেচি করে - তারা প্রথম শ্রেণীর নির্বোধ ও গোমরাহ!!! কেননা, এদের প্রধানতম বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে, কুরআন মজীদ ও হাদীছ শরীফের সঠিক মর্ম বুঝতে ব্যর্থ হওয়া। আল্লাহুতা’লা ঐসব অর্বাচীন থেকে দ্বীন ও মিল্লাতকে হেফাজত করুক!
(৩) নেতিবাচক দৃষ্টিতে বিদয়াত মানে হচ্ছে, সুন্নতবিলুপ্তকারী বা সুন্নতকে চ্যালেঞ্জকারী। যেমন- আল্লাহর রাসূল (সা.) ফরমান: কোনো সম্প্রদায় বিদয়াত উদ্ভাবন না করা পর্যন্ত সুন্নত উঠিয়ে নেওয়া হবে না। সুতরাং বিদয়াত উদ্ভাবন না করে সুন্নত আঁকড়ে থাকা উত্তম (মিশকাত: ১৭৮, আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব, মুসনাদে আহমাদ ও মুসনাদে বাঝঝার)।
তিনি আরো ফরমান: কোনো সম্প্রদায় তাদের ধর্মে বিদয়াত উদ্ভাবন না করা পর্যন্ত আল্লাহ্ তাদের কাছ থেকে ঐ পরিমাণ সুন্নত উঠিতে নেবেন না। এরপরে রোজ কিয়ামত পর্যন্ত তা আর তাদের ফিরিয়ে দেবেন না (মিশকাত: ১৭৯ ও সুনানে দারিমী)।
তিনি আরো ইরশাদ করেন: যদি কোনো উম্মত তাদের নবীর ওফাতের পরে তাদের ধর্মে কোন বিদয়াত উদ্ভাবন করে - তাহলে, তারা ঐ পরিমাণ সুন্নতেরই সর্বনাশ করে। (আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব ও তিবরানী)
সুতরাং প্রমাণিত হলো যে, বিদয়াত অনুপাতেই সুন্নত বিলুপ্ত হয় তথা মন্দ বিদয়াত মানেই, সুন্নত বিলুপ্তকারী।
অথচ পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে হালুয়া-রুটি তৈরী ও বিতরণ করলে কোনো সুন্নতই বিলুপ্ত হয় না। কাজেই, এ নেক-আমলকে যারা বিদয়াত বলে - তারা প্রথম স্তরের গবেট! আল্লাহুতা’লা ঐসব জাহেল লোক থেকে মুসলিম মিল্লাতকে হেফাজত করুক!!
(৪) হানাফী মাযহাবে পবিত্র কুরআন, সুন্নাহ ও ইজমা বিরোধী না হলে, উরফ (রেওয়াজ বা প্রচলিত রীতি কিংবা দেশাচার) ও আদত (অভ্যাস) ইসলামী শরীয়তের অন্যতম উৎস।
এর প্রমাণ হচ্ছে, আল্লাহুতা’লা ফরমান: “তোমরা ক্ষমার অভ্যাস গড়ে তোলো, সঠিক প্রথা অনুসারে নির্দেশ দাও এবং অজ্ঞদের এড়িয়ে চলো (সূরা আরাফ: ১৯৯)।
ইমাম মুহাম্মাদ (রাদ্বিআল্লাহুতা’লা ’আনহু) মুরসাল হিসেবে বর্ণনা করেন, নবী করীম (সা.) ফরমান: মুসলিমরা যা কিছু ভালো মনে করে - তা আল্লাহর কাছেও ভালো এবং মুসলিমরা যা কিছু খারাপ মনে করে তা আল্লাহর কাছেও খারাপ। {মুয়াত্তা ইমাম মুহাম্মাদ: ২৪৩ (২)}
এছাড়া, প্রখ্যাত হানাফী মুজতাহিদ ইমাম সারাখসীও (রহ.) এ হাদীছ শরীফটি নবীজীর বাণী হিসেবে তাঁর উসূলুস্ সারাখসীর ১ম খন্ডের ২৯৯ পৃষ্ঠায় (কায়রো থেকে প্রকাশিত সংস্করণে) বর্ণনা করেছেন। আর ইমাম আহমাদ, বাঝঝার, তিবরানী প্রমুখও (রহ.) তাঁদের কিতাবগুলোতে এটিকে হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাস’উদের (রা.) বাণী হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
উল্লিখিত হাদীছ শরীফের তাৎপর্য হচ্ছে, মুসলমানগণ যদি এমন কিছুকে ভালো মনে করেন - যা শরীয়তের কোনো বিধানকে চ্যালেঞ্জ করে না - তাহলে, তা আল্লাহুতা’লার কাছেও ভালো বা গ্রহণযোগ্য।
সুতরাং পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে হালুয়া-রুটি তৈরী ও বিতরণ করাটা যেহেতু শরীয়তের কোনো বিধানকে চ্যালেঞ্জ করে না - সেহেতু, তা আল্লাহুতা’লার কাছেও খায়ের ও মকবূল এবং একটি উত্তম প্রথা বা রীতি। আর তাই, তাতে অশেষ সওয়াবও রয়েছে বৈকি। অথচ বাতিলপন্থীরা তা থেকে আমাদের বঞ্চিত করতে চায়। আসলে, ওরা এক নম্বরের গোবরগণেশ! এদের থেকে আল্লাহুতা’লার কাছে পানাহ চাই।
(৫) আল্লাহর রাসূল (সা.) ফরমান: কেউ ইসলামে কোনো সুন্নতে হাসানা বা উত্তম রীতি চালু করলে সে - এ কারণে এবং ঐ রীতি অনুসারে যারা আমল করবে - সে অনুপাতেও সওয়াব পাবে। আর এতে ঐ আমলদারদের সওয়াবও কমে যাবে না। পক্ষান্তরে, কেউ ইসলামে কোন সুন্নতে সায়্যিয়া বা মন্দ রীতি চালু করলে তার - এ কারণে এবং যারা ঐ রীতির অনুসরণ করবে - সে অনুপাতেও গুণাহ হবে। আর এতে ঐ বদকারদের গুণাহও কমে যাবে না (মিশকাত:২০০, আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব, মুসলিম, নাসাঈ, তিরমিযী ও ইবনে মাজা)।
অন্য হাদীছ শরীফে রয়েছে, একবার আল্লাহর রাসূলের (সল্লাল্লাহুতা’লা ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুগে কেউ কিছু চাইলে - লোকেরা তাকে কিছুই দিলো না। এরপরে আরেকজন লোক দান করলে - অন্যান্য লোকও দান করলো। তখন আল্লাহর রাসূল (সা.) ফরমালেন: কেউ ভালো কিছু প্রবর্তন করে তা আমল করলে সে - তার প্রতিদান পাবে এবং যারা তা করবে - ঐ অনুপাতেও সে সওয়াব পাবে। অথচ এতে ঐ আমলদারদের সওয়াবও কমে যাবে না। আর কেউ মন্দ কিছু চালু করে তা আমল করলে সে - তার প্রতিফল ভোগ করবে এবং যারা এর অনুসরণ করবে - ঐ অনুপাতেও তার গুণাহ হবে। অথচ এতে ঐ বদকারদের গুণাহ কমে যাবে না (মুসনাদে আহমাদ, হাকীমের মুস্তাদরাক ও আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব)।
তিনি আরো ফরমান: কেউ কোনো সুন্নতে হাসানা বা উত্তম রীতি চালু করলে - সে বেঁচে থাকতে এবং তার মৃত্যুর পরেও লোকজন তা আমল করা ছেড়ে না দেওয়া পর্যন্ত তার জন্যে সওয়াব রয়েছে। আর কেউ কোনো সুন্নতে সায়্যিয়া বা মন্দ রীতি চালু করলে - (লোকজন) তা ছেড়ে না দেয়া পর্যন্ত - এর গুণাহর ভাগীদারও সে হবে। সুতরাং কেউ সীমান্ত পাহারা দিতে গিয়ে মারা গেলে - রোজ হাশরে তার পুনরুত্থান পর্যন্ত এর সওয়াব সে পেতে থাকবে। (আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব ও তিবরানীতে নির্দোষ সনদে বর্ণিত)
সুতরাং পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে হালুয়া-রুটি ইত্যাদি মুখরোচক হালাল খাবার তৈরী ও বিতরণ করাটা সুন্নতে হাসানা বা বিদয়াতে হাসানা। কেননা, এতে খারাপ কিছুই নেই। এমনকি কেউ যদি সেদিন এসব তৈরী ও বিতরণ করতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে রাতের নফল ইবাদত-বন্দেগী নাও করতে পারেন - তাতেও কোনো সমস্যা নেই। কেননা, নফল ত্যাগ করলে কোনো গুণাহ হয় না। সুতরাং যারা এ নেক-আমলকে (... হালুয়া-রুটি তৈরী ও বিতরণ) চ্যালেঞ্জ করে - আমরা তাদের তথাকথিত ঈমান ও এলেমকেও চ্যালেঞ্জ করি। এরা পহেলা নম্বরের অপদার্থ, গবুচন্দ্র ও গোমরাহ। আল্লাহুতা’লা এসব বর্জ্য বা আবর্জনা থেকে আমাদের হেফাজত করুক। আমিন।
পরিশেষে, ভাইসব! আসুন, বাজে লোকের বাজে কথায় কান না দিয়ে আমরা সাধ্য মতো, এ সুন্নতে হাসানাহ বা নেক-আমলে শরীক হয়ে দুনিয়া, কবর ও আখেরাতে অশেষ সওয়াব হাসিল করি।
( এই অংশের জন্য কৃতজ্ঞতা : মাওলানা সাইফুল ইসলাম রুবাইয়েত )
শবে বরাত সারা বিশ্বব্যাপী পালিত পর্ব :
ওহাবী দর্শণ ও সেক্সিজম মতবাদ দ্বারা প্রভাবিত সৌদি আরবসহ বেশ কিছু আরব দেশে একমাত্র দুই ঈদ ছাড়া আর কোন ইসলামী উৎসব পালিত হয় না । আর এসব দেশে দুই ঈদ পালিত হয় নামকাওয়াস্তে । এসব দেশের অধিকাংশ জনগণও বুঝতে পারে না ঈদ কবে আসলো আর কবে হয়ে গেলো । সৌদি আরবসহ এসব দেশের শাসকরা জনগণকে সত্যিকার ইসলামের শিক্ষাবিমুখ করে রাখে ও ইসলামী পর্বাদি পালন হতে বিরত রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালায় । কারণ ইসলামের সঠিক শিক্ষা আর ইসলামী পর্বাদি জাকজমের সাথে পালিত হলে জনগণ সংগঠিত হয়ে অত্যাচারি শাসকদের ক্ষমতা হতে উৎখাত করবে । সেক্সিজম সম্পর্ক জানতে দেখুন : https://en.wikipedia.org/wiki/Sexism
ওহাবী দর্শণ সম্পর্কে জানতে দেখুন : http://en.wikipedia.org/wiki/Wahhabi_movement
ওহাবী দর্শণ ও সেক্সিজম মতবাদ দ্বারা প্রভাবিত সৌদি আরবসহ বেশ কিছু আরব দেশ ছাড়া বিশ্বের সর্বত্র বিভিন্ন নামে শবে বরাত পালিত হয় । দেখুন : http://en.wikipedia.org/wiki/Mid-Sha'ban
http://en.wikipedia.org/wiki/Laylat_al_Bara'at
উপসংহার :
শবে বরাত পালন করা এবং এই দিন হালুয়া রুটি খাওয়া ও বিতরণ করা সোয়াবের কাজ । শবে বরাত বাংলাদেশে সভ্যতা-সংস্কৃতি-ঐতিহ্যের অংশ । সুতরাং আমাদের এই পর্ব জাক জমকভাবে পালন করতে হবে । এবং এই পর্বের বিরোধীতাকারীদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে । শবে বরাতের নফল নামাজে আমরা রাত জেগে সৌদি আরবের রাজতন্ত্র পতনের জন্য এবং সারা বিশ্বের মুসলিমদের ঐক্য ও সংহতির জন্য বিশেষ দুয়া ও মুনাজাত করার পাশাপাশি বাংলাদেশকে আধুনিক – বিজ্ঞানমনস্ক – প্রযুক্তি নির্ভর ইসলামী রাষ্ট্রে পরিনত করার জন্য জিহাদী চেতনায় উদ্ভুদ্ধ হবো । তাহলেই আমাদের শবে বরাত পালন স্বার্থক হবে ।
[ সবাইকে আমার বাড়িতে শবে বরাতের হালুয়া রুটি খাওয়ার দাওয়াত রইল । আশা করি দাওয়াত গ্রহণ করবেন । ]
বিষয়: বিবিধ
৪৫৫৩ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ফেসবুক দেখলে মনে হয় শবে বরাত বলতে কিছু নেই । যারা পালন করছে তারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ।
বাস্তব অবস্হা ভিন্ন । এদিন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার সরকারী ছুটির দিন ঘোষনা করেছেন । সব সরকারী বেসরকারী অফিস বন্ধ থাকছে ।
আপনি যে মাইনাস দিলেন , এজন্য বলতে বাধ্য হচ্ছি :
১. লেখাটা কি পড়েছেন, না পড়েই মাইনাস দিয়েছেন । যদি আগের থেকেই বদ্ধমূল ধারণা হৃদয়ে পোষণ করেন তাহলে সেগুলোর ভিত্তি কি তা দয়া করে উপস্হাপন করতে পারতেন ।
২. ইসলাম গোড়ামীর ধর্ম নয় ।
৩. ইসলাম যুক্তি ও বিবেকের ধর্ম ।
আপনি কি মাইনাস আমাকেই শুধু দিলেন না , দিয়েছেন বাংলাদেশের সমগ্র মুসলিম সম্প্রদায়কে এবং বাংলাদেশ সরকারকে ।
আপনার উচিত এদিন যাতে সরকার সরকারী ছুটি না দেন এজন্য আন্দোলন করা ।
আপনাকে ধন্যবাদ ।
আমি কুরআন - হাদিসের বাহিরে কিছুই লিখি নাই ।
এই কয় দিন বেশ কিছু লেখা দেখেছি । সেগুলোতে মন্তব্য লেখার ইচ্ছা হয়নি ।
কারণ এসব লেখার লেখক বা সৌদি আরবের আলেমদের লেখার কপি পেস্টকারীদের অনেককেই অনেক আগে কাফির-মুর্তাদ-নাস্তিক বলে ফতোয়া দিয়ে রেখেছেন এবং অনেকেই ব্লক করেছেন ।
এদের অনেকের লেখায় অনেক অসত্য ও বানোয়াট তথ্য রয়েছে । তাদের রাজনৈতিক দর্শণ মওদুদি মতবাদ এবং ধর্মীয়ভাবে তারা অত্যাচারী রাজতান্ত্রিক ওহাবী সৌদি আরবের দৃষ্টিভঙ্গির অনুসরণ করে থাকেন । আপনি জেনে অবাক হবেন , আমি নিজেও এক সময় এই দলের লোক ছিলাম ।
জীবনের মাঝামাঝি সময় এসে ইসলাম গভীরভাবে পড়ার সুযোগ পেয়েছি বলে আমি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও মতবাদ হৃদয় হতে মুছে ফেলেছি ।
আপনি যে সব লেখা পড়ার কথা বলছেন বা আপনার লেখা পড়ার কথা বলছেন , আমি মূলত সেগুলোর জবাব হিসেবে এই লেখাটা লিখেছি ।
আমি আপনাকে অনুরোদ করবো : মনযোগ দিয়ে এই লেখাটা পড়ুন ।
এক লেখায় দেখলাম : শবে বরাতে রোজা রাখা যাবে না । কারণ হিসেবে বলা আছে হাদিসে নেই ।
অথচ অনেক সহীহ হাদিসে আইয়ামে বীদ বা হিজরী পঞ্জিকার প্রতি মাসের ১৩,১৪,১৫ তারিখ নফল রোজা বরকতময় বলা হয়েছে বা অশেষ সোয়াবের কাজ বলা হয়েছে ।
শবে বরাত হয় মাসের ১৫ তারিখ । সুতরাং এদিন রোজা রাখা সোয়াবের কাজ ।
আরেক লেখায় দেখলাম : সম্মিলিতভাবে ইবাদত করা যাবে না ।
আমার কথা হলো : ইবাদত করা সোয়াবের কাজ । তা যে দিনই করা হোক না কেন ।
ইবাদতের কাজে বাধা দেওয়ার কথা কতটুকু যোক্তিক । যেখানে ভালকাজে পরস্পর সহযোগিতা করার ব্যাপারে কুরআনে আল্লাহ বার বার তাদিগ দিয়েছেন ।
শবে বরাতের রাতে যদি কোন লোক ইবাদত করা শুরু করে, তাহলে এমনও তো হতে পারে সেই লোককে আল্লাহ সত্যপথ দান করতে পারেন এবং আল্লাহ তাকে নিয়মিত মুছল্লীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন বা তাকে আল্লাহ তায়ালা সেই মন মাণষিকতা দান করতে পারেন ।
আরেক লেখাতে দেখলাম : সেখানে বলা হচ্ছে শবে বরাত বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান ছাড়া আর কোথাও পালিত হয় না । এটা মিথ্যাচার ছড়া কিছু নয় ।
ওহাবী দর্শণ ও সেক্সিজম মতবাদ দ্বারা প্রভাবিত সৌদি আরবসহ বেশ কিছু আরব দেশে একমাত্র দুই ঈদ ছাড়া আর কোন ইসলামী উৎসব পালিত হয় না । আর এসব দেশে দুই ঈদ পালিত হয় নামকাওয়াস্তে । এসব দেশের অধিকাংশ জনগণও বুঝতে পারে না ঈদ কবে আসলো আর কবে হয়ে গেলো । সৌদি আরবসহ এসব দেশের শাসকরা জনগণকে সত্যিকার ইসলামের শিক্ষাবিমুখ করে রাখে ও ইসলামী পর্বাদি পালন হতে বিরত রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালায় । কারণ ইসলামের সঠিক শিক্ষা আর ইসলামী পর্বাদি জাকজমের সাথে পালিত হলে জনগণ সংগঠিত হয়ে অত্যাচারি শাসকদের ক্ষমতা হতে উৎখাত করবে । সেক্সিজম সম্পর্ক জানতে দেখুন : https://en.wikipedia.org/wiki/Sexism
ওহাবী দর্শণ সম্পর্কে জানতে দেখুন : http://en.wikipedia.org/wiki/Wahhabi_movement
ওহাবী দর্শণ ও সেক্সিজম মতবাদ দ্বারা প্রভাবিত সৌদি আরবসহ বেশ কিছু আরব দেশ ছাড়া বিশ্বের সর্বত্র বিভিন্ন নামে শবে বরাত পালিত হয় । দেখুন : http://en.wikipedia.org/wiki/Mid-Sha'ban
http://en.wikipedia.org/wiki/Laylat_al_Bara'at
তাতে দেখা যাচ্ছে :
রাসুল সা. - স্বয়ং ইবাদত করছেন ।
রাসুল সা. - স্বয়ং কবর জিয়ারত করছেন ।
তাছাড়া তিনি নিজেই প্রতি মাসে ১৩,১৪,১৫ তারিখ রোজা রাখার কথা বলেছেন ।
এরপরও কি আপনি এসব বিষয়কে অগ্রাজ্য করবেন ?
আর উৎসব ও পর্বাদি পালন করা পারিবারিক ও সামাজিক পরিমন্ডলের উপর নির্ভর করে । কোন সমাজ কীভাবে উৎসব পালন করবে তা সেই সমাজের সংস্কৃতি ও লোকাচারের উপর নিভর্র করে ।
ওহাবী মতবাদ অনুযায়ী পরিচালিত অত্যাচারী রাজতান্ত্রিক সৌদি আরবেও ঈদ উৎসবও ঘটা করে পালিত হয় না ।
কারণ দেশটা রাজতান্ত্রিক ও গণবিরোধী শাসকদের দ্বারা পরিচালিত হওয়ায় শাসকরা আনন্দ উৎসব বা বড় ধরনের সমাবেশকে উৎসাহিত করে না । এমন কি মসজিদেও বিভিন্ন সময় সমেবেত হওয়ার ব্যাপারে বিধি নিষেধ আড়োপ করা হয় ।
রাসুল সা. এবং তারা সাহাবী রা. - গণ কুরআন দিবস, নবী দিবস, শহীদ মালেক দিবস, ইসলামী শিক্ষা দিবস, প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী দিবস , দিগন্ত টেলিভিশনের জন্ম দিন ....ইত্যাদি পালন করেননি ।
কিন্তু বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় ইসলামী দলের লোকরা এসব করে থাকেন ।
নফল ও মুস্তাহাব ইবাদত যদি জানানোই হতো তাহলে সবার জন্য তাহাজ্জুদের নামাজ ফরজ - ওয়াজিব - সুন্নাতে মুয়াক্কাদ্দা হয়ে যেতো ।
আশা করি বুঝতে পেরেছেন ।
ইসলাম
ভাই আপনাকেও শুভেচ্ছা
আপনার ও আমার জন্য এই রাতে বিশেষভাবে এই দুয়া :
رَبَّنا هَب لَنا مِن أَزوٰجِنا وَذُرِّيّٰتِنا قُرَّةَ أَعيُنٍ وَاجعَلنا لِلمُتَّقينَ إِمامًا
হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা দান কর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শস্বরূপ কর। (সুরা ফুরকান : ৭৪)
আল্লাহ আমাদের এই চাওয়াকে কবুল করুন । আমীন ।
আমি মূলত ওহাবী-মওদুদী-দেওবন্দী-কওমী-তেতুল হুজুরীদের অপতৎপড়তার ব্যাপারে মানুষকে সতর্ক ও সচেতন করছি । এরা মুসলিমদের ঐক্য-সংহতিবিরোধীই নয় এরা বাংলাদেশের সভ্যতা-সংস্কৃতির শত্রু । এদের না বলুন ।
ইসলাম ও মানবতার দুষমন এবং মুসলিম জাতির ঐক্য ও সংহতি বিনষ্টকারী অত্যাচারী-রাজতান্ত্রিক ওহাবী মতবাদে বিশ্বাসী এবং ইমাম হোসেন রা.-কে স্বপরিবারে হত্যাকারী পাষান্ড ইয়াজিদ ও ইহুদিদের বংশধর সৌদি আরবের রাজতান্ত্রিক শাসকদের পাচাটা গোলামরাই মুলত বরকতময় এই পর্বটির বিরোধীতা করে থাকে ।
যে কোন লিখার মাঝে নেগেটিভ কথাগুলো পাঠকের মনে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এমনটি না লিখলেই ভাল হত। আপনার দলীল ভিত্তিক লিখাটি পড়ে ভাল লেগেছে। তবে কিছু ব্যক্তিগত অাক্রোশ ভাল লাগেনি।
আমি সৌদি আরবে থাকি ১৯৯১ সাল থেকে। ওহাবী সুন্নি এসব হিংসাত্বক বিভাজনটা ক্ষতি বৈ উপকার নেই। উপেক্ষিত ফরজের দেশে নফল নিয়ে বাড়াবাড়ি ও এক ধরণের ফেতনা। যাক, আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক পথে চলার তৌ্ফিক দান করুণ। আমিন। যাযাকাল্লাহু খায়ের।
আমি মূলত ওহাবী-মওদুদী-দেওবন্দী-কওমী-তেতুল হুজুরীদের অপতৎপড়তার ব্যাপারে মানুষকে সতর্ক ও সচেতন করছি । এরা মুসলিমদের ঐক্য-সংহতিবিরোধীই নয় এরা বাংলাদেশের সভ্যতা-সংস্কৃতির শত্রু । এদের না বলুন ।
ইসলামকে আল্লাহ পরিপূর্ণ করে দেয়ায় তার স্থলাভিশিক্ত হয়ে এসব বিদাত চালু করে আল্লাহর সমকক্ষ হয়ে নতুন বিধান জারী করার অধিকার মুসলিমদের নেই, এটা শিরকও বটে।
নবী-সাহাবীরা যা করেননি--তা ইসলাম বলে চালানো মুনাফিকি; ১৫ শাবান শাবানই এবং শবে বরাত শবে বরাতই।
এটা জায়েজ হলে আমরা ইসলামের নামে অনেক কিছুই আবিস্কার করতে পারি যা ছওয়াবের কাজই তো হবে--যেমন, ৩ রাকাত মাগরিবের বদলে আমরা আল্লাহকে খুশি করতে এক রাকাত বাড়িয়ে ৪ রাকাত পড়তেই পারি, কী বলেন??
শিরকের সংগা কি ? দয়া করে জানাবেন ।
শবে বরাত পালন কোন ক্রমেই বিদাত নয় । বরং যারা এর বিরোধীতা করছেন তারাই বিদাতী । কারণ এসব বিরোধীতাকারীরা বাংলাদেশ কেন সারা বিশ্বে কখনোই বিপুল সংখ্যায় ছিল না । আর এদের উৎপত্তিও হয়েছে এই দুই দশকে । এরা গণমাধ্যম ও নতুন করে বানানো কিছু মসজিদ -মাদ্রাসা বানিয়ে মুসলিমদের বিভ্রন্ত করে যাচ্ছে ।
শবে বরাত নিয়ে বাদানুবাদ করছে অত্যাচারী ও রাজতান্ত্রিক সৌদি আরবের কিছু অনুচর । এদের সংখ্যা বাংলাদেশে খুব একটা বেশী নেই । কিন্তু তারা ইন্টারনেট এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্যবহার করে মুসলিমদের বিভ্রান্ত করে যাচ্ছে । এদের সাথে জামায়াত-শিবিরের লোকরাও যোগ দিয়েছে । দয়া করে বলুন : মুসলিমদের এই মুহুর্তে অগ্রাধিকার কি ? তবে জামায়াত-শিবির এবং অত্যাচারী ও রাজতান্ত্রিক সৌদি আরবের কিছু অনুচরদের মতে প্রথম অগ্রাধিকার হলো যে কোন মূল্য সৌদি আরবের রাজতন্ত্রকে অক্ষুন্ন রাখতে হবে এবং ইসলামী খিলাফত বা ইসলামী রাষ্ট্র কায়েমের চিন্তা সৌদি আরবের ক্ষেতে্রে বাদ দিতে হবে ।
শবে বরাতে মানুষ নফল ইবাদত করে । আল্লাহর ইবাদত করা কেমন করে শিরক হয় ? আল্লাহ ইবাদত ছাড়া আর কোন উদ্দেশ্যে মানুষকে পাঠিয়েছেন ? তাহলে তিনি কি ভুল করেছেন এই আয়াতটা নাজিল করে : "আমি মানুষ ও জিন জাতিকে শুধুমাত্র ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি । সুরা জারিয়াত । " রোজা পালন করতেন রাসুল সা. রমজানের প্রস্তুতি হিসেবে । আমি আপনাকে প্রশ্ন করছি : প্রতি মাসের ১৩,১৪,১৫ তারিখ নফল রোজা রাখার সহিহ হাদিসগুলো কি আপনার মতে জাল ? কারণ শবে বরাত তো ১৫ তারিখ হয় । আর এই দিনে অনেকে রোজা রাখেন ।
বরাত হলো একটা রাতের নাম । রাত আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন । আর বোঝার সুবিধার জন্য আমরা এই দিনের নাম দিয়েছি । দিনের নামগুলো আমরা দিযেছি । যেমন : শনি রবি সোম...... । শবে বরাতে মানুষ ইবাদত করে , রোজা রাখে । আর আপনি বলছেন এই দিন ইবাদত করা যাবে না । করলে শিরক হবে । শিরক হবে এই ব্যাপারে কি আপনার কাছে কোন দলীল আছে ?
আপনার জ্ঞাতার্থে বলছি :
১৯২৪ সালে ইহুদি ও ইয়াজিদের বংশধর মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহ্হব ও ইবনে সৌদ সন্ত্রাসী চক্র আরবের নজদ, হেজাজ, আসীর দখল করে সৌদি আরব নামক দেশ গঠণ করার পর ইসলামের অনেক বিষয়ই তারা বন্ধ করে দেন । তার মধ্যে শবে বরাত একটা । আমার প্রাপ্ত তথ্য মতে : সৌদি আরবের ৩০ % শিয়া , ৩০ % হান্বলী মাজহাব অনুসরণকারী , ২০ % শাফেয়ী মাযহাবের অনুসারী বাস করেন । বাকীরা হলেন ওহাবী এবং তারাই সৌদি আরবের সর্বেসর্বা । তারা টাকা দিয়ে আলেমদের মাধ্যমে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃস্টি করছেন এবং ওহাবী মতবাদ প্রচার করে যাচ্ছেন । সুতরাং আপনাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই । কারণ জামায়াতীদের ইসলাম ও মানবতার দুষমন এবং মুসলিম জাতির ঐক্য ও সংহতি বিনষ্টকারী অত্যাচারী-রাজতান্ত্রিক ওহাবী মতবাদে বিশ্বাসী এবং ইমাম হোসেন রা.-কে স্বপরিবারে হত্যাকারী পাষান্ড ইয়াজিদ ও ইহুদিদের বংশধর সৌদি আরবের রাজতান্ত্রিক অত্যাচারী শাসকদের পাচাটা গোলামরা এবং মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় হতে পড়ে আসা লোকরাই মুলত বরকতময় এই পর্বটির বিরোধীতা করে থাকে । আর আপনারা তাদের দ্বিধাহীন চিত্তে অনুসরণ করে থাকেন ।
রাসুল সা. , সাহাবী রা, তাবেয়ী রা. - নফল নামাজ পড়েন নাই ? নফল ইবাদত করেন নাই ? তারা কি বলে গেছেন : অমুক দিন অমুক ইবাদত করবে না । করলে গুনাহ হবে - এমন দলীল দেখাতে পারবেন ?? বিদাত বলছেন । ভাল কথা । রাসুল সা. এর যুগে লিখিত কুরআন ছিল । তাহলে কুরআন পড়ছেন কেন ? কুরআনে যের যবর পেশ যিনি লাগিয়েছেন তিনি তাবেয়ী তো দুরে থাক ভাল মুসলিমও ছিল না । অথচ তার দেওয়া যের যবর পেশ ওয়ালা কুরআন পড়ছেন । এটা কি আপনি বিদাত করছেন না । রাসূল সা. আর সাহাবী রা. কি ফেসবুক আর ব্লগ সাইট ব্যবহার করে ইসলাম প্রচার করেছেন কি ? যেহেতু তারা করেন নাই তাহলে আপনার কথা অনুযায়ী আপনি বিদাত করছেন ? রাসুল সা. এবং তার সাহাবীরা নামাজের সময় নির্ধারনের জন্য ঘড়ি ব্যবহার করেননি । অথচ আপনি ব্যবহার করছেন । সুতরাং আপনার কথা অনুযায়ী আপনি বিদাত করছেন ।
শবে বরাতের বিরোধীতা করে তারাই মুনাফিক , ইয়াজিদ ও ইহুদী - খৃষ্টানদের অনুসারী । আল্লাহ তাদের সত্যপথ দান করুন । আমীন ।
আল্লাহ আপনাকে হৃদয় হতে মওদুদী মতবাদ ও ওহাবী মতবাদ মুছে ফেলার তৌফিক দান করুন এবং গর্বিত মুসলিম বাঙ্গালী ও বাংলাদেশি হওয়ার তৌফিক দান করুন । আমীন ।
কিন্তু বিদাত সম্পর্কে আপনার পরিস্কার ধারণা নেই বলেই মনে হচ্ছে।বিদাত হলো তা-ই, যা পূর্ণ ইসলামের অংশ নয় এবং আল্লাহ-রসুল প্রদত্ত বিধান নয় কিন্তু মুসলিমরা তাকে ইসলামের অংশ মনে করে। তাই নবী বলেছেন-কুল্লু বিদাতিন দালালাহ-সকল বিদাতই গুমরাহী।
আর শিরক তাই যা আল্লাহর গুনাবলী বা ক্ষমতার সমকক্ষ হিসেবে অন্যকে সামিল করা বুঝায়। তাই শব বরাত আবিস্কার মানেই আল্লাহকে অযোগ্য মনে করে ইসলামকে অপূর্ণ মনে করে আল্লাহর কাজে ইসলামী বিধান প্রবর্তনে শরিক হওয়াই কিনা ভাই? [b
আর কুরআনে জের, যবর, পেশ যুক্ত করায় কি ইসলামের বিধানে নতুন কিছু যুক্ত হয়েছে নাকি ইসলামের বিধান পরিবর্তিত হয়েছে-যাকে বিদাত বলা যাবে!![/b] আরবী ব্যাকরনকে কেনো ইসলামের সাথে বা বিদাতের সাথে একাকার করবেন ভাই?
ব্যাকরণ হিসেবে জের যবর পেশ প্রবর্তন আর শবেবরাত প্রবর্তনের ফারাক তো শিশুও বোঝে ভাই?
১। "আমি মূলত ওহাবী-মওদুদী-দেওবন্দী-কওমী-তেতুল হুজুরীদের অপতৎপড়তার ব্যাপারে মানুষকে সতর্ক ও সচেতন করছি । এরা মুসলিমদের ঐক্য-সংহতিবিরোধীই নয় এরা বাংলাদেশের সভ্যতা-সংস্কৃতির শত্রু । এদের না বলুন।"
২। "শবে বরাতের বিরোধীতা করে তারাই মুনাফিক , ইয়াজিদ ও ইহুদী - খৃষ্টানদের অনুসারী।"
ভাই, আপনার উপরের দুটো বক্তব্য বেঠিক, অসুন্দর ও অগ্রহণযোগ্য। মন্তব্য কলামে বেশী বলতে চাই না। তবে আপনার প্রতি শদ্ধাটুকু নষ্ট হয়ে গেল।
মন্তব্য করতে লগইন করুন