ধর্ষণ হতে রক্ষা পাওয়ার উপায় ( ২য় পর্ব )
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ০৬ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৬:৫৯:০১ সন্ধ্যা
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ ও দিক নির্দেশনা :
১. এই পোস্ট আপুবৃন্দকে গুরুত্ব দিয়ে পড়ার অনুরোদ করছি ।
২.এই পোস্ট পড়ার আগে এই পোস্টের আগের পর্ব : ধর্ষণ হতে রক্ষা পাওয়ার উপায় ( ১ম পর্ব )
এবং ফেসবুকের এই পেজটার বিষয়বস্তুর সাথে "মেয়েদের-জন্য-আত্মরক্ষা-কৌশল" । http://www.facebook.com/SelfdefenseTechniquesForFemales
পরিচিত হওয়ার জন্য আপুবৃন্দকে আহবান জানাচ্ছি । কারণ আপনারা অবগত হয়েছেন যে, আমাদের দেশ আজ ধর্ষণ নামক মহামারিতে আক্রান্ত । পরিমল ছাত্রীধর ও ধর্ষক লীগ নামক সম্প্রদায়ের উদ্ভব হয়েছে । তারা ছলে-বলে কৌশলে আমাদের কোমলমতি মেয়েদের অপবিত্র করে ফেলছে । সুতরাং আপুবৃন্দ ! লজ্জা না করে আমার এসব পোস্ট পড়ুন । পড়ুন । পড়ুন ।
ভূমিকা :
রাজনৈতিক সংগঠণের সাথে সম্পৃত্ত শরিফুল নামক এক ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৯ সালের জুন মাসের কোন একদিন পানির সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে এক মেধাবী ছাত্রীকে অচেতন করে ধর্ষণ করে এবং তার চিত্রায়ন করে । বিষয়টি পত্রিকায় এসেছিলো । কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্হাই নেয়নি । আর ধর্ষিতা ছাত্রীটি আর পড়াশোনা চালিয়ে যায়নি । আমি এই ঘটনার বিস্তারিত বিবরণে যাবো না ।
আমি আজ আপনাদের এক সর্ট ফ্লিম প্রদর্শণ করছি যাতে বয়ফ্রেন্ডের বা প্রেমিকের কারণে এক মেয়ে ধর্ষিতা হয়ে প্রাণ হারায় ।
তারপর আমি আজ ধর্ষণ হলে কি করণীয় এবং ধর্ষণ কি তা উপস্হাপন করছি ।
আপুবৃন্দ ! আশা করি, আপনারা মনোযোগ দিয়ে সর্ট ফ্লিমটা দেখবেন এবং বয় ফ্রেন্ডের সাথে সম্পর্কের ধরণ পরিবর্তন করবেন বা বয়ফ্রেন্ড বা ল্যাব পার্টনার বা স্টাডি পার্টনার নামধারী ছেলেদের হতে সতর্ক থাকবেন । এই সর্ট ফ্লিমটা ভাল করে দেখুন । কারণ এই সর্ট ফ্লিমটা দেখার উপর আপনাদের বাকী পর্বগুলো বোঝা ও আইনগত দিক সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা অর্জন নির্ভর করবে ।
শর্ট ফ্লিমটা দেখুন এই লিংক হতে : http://www.dailymotion.com/video/xw61gt_why-you-should-avoid-and-beware-of-boyfriend_shortfilms#.UNdeC3pe_Mo
শর্ট ফ্লিমটার নাম : Why you should avoid and beware of boyfriend
ধর্ষণের শিকার হলে করণীয় :
১.ধর্ষণের শিকার নারী ধর্ষিতা হওয়ার পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিশ্বস্হ কারো সাথে ধর্ষিতা হওয়ার বিষয়টি শেয়ার করবেন এবং ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য সাহস সঞ্চয় করার চেষ্টা করবেন ।
২. ধর্ষণের শিকার নারী ধর্ষণের পর কোন অবস্হায় তার শরীর ও ধর্ষণের সময় পরিধেয় পোষাক পরিস্কার করবেন না । কারণ এতে ধর্ষণের আলামত নষ্ট হয়ে যাবে ।
৩. পরিস্কার কাগজের ব্যাগে করে ধর্ষণের সময় ধর্ষিতার পরিধেষ পোষাক থানায় নিয়ে যেতে হবে ।
৪.দ্রুত সম্ভব থানায় অভিযোগ দায়ের করতে হবে ।
৫. ধর্ষণের শিকার নারীই হচ্ছেন ধর্ষণের প্রধান স্বাক্ষী । পুলিশ তাকে থানায়/ঘটনাস্হলে/অন্য কোথাও গিয়ে স্বাক্ষ্য গ্রহণ করবে ।
৬.পুলিশ স্বাক্ষ্য নেওয়ার পর ডাক্তারের কাছে পরীক্ষার জন্য পাঠালে ধর্ষণের শিকার নারীর সাথে একজন মহিলা থাকবে ।
৭.ধর্ষণের শিকার নারীকে ডাক্তারের কাছে নেওয়ার দায়িত্ব পুলিশের ।
৮.পরীক্ষা নেওয়ার আগে ধর্ষণের শিকার নারীর সিল/হাতের ছাপ/স্বাক্ষরের মাধ্যমে অনুমতি নেওয়া ।
৯.ডাক্তারী পরীক্ষার আগে আক্রান্ত নারীকে কিছু প্রশ্ন করা হয় । একে বলা হয় কেসহিস্ট্রি । এসব প্রশ্নের উত্তর ধর্ষিতাকে দ্বিধাহীন চিত্তে ও লজ্জাহীনভাবে সঠিক উত্তর দিতে হবে ।
১০.১৮বছরের কম বয়সী নারীর সম্মতিতে যৌন সম্পর্ক স্হাপন করা হলে তা ধর্ষণ বলে গণ্য হবে ।
১১.ধর্ষণ প্রমাণের জন্য প্রমাণাদি সংগ্রহ করার দায়িত্ব পুলিশের । একজন অফিসার ফৌজদারী কার্যবিধির নিয়মানুযায়ী তদন্ত করবেন ।
১২.আক্রান্ত নারী পরবর্তী ধর্ষণের শিকার হবে বলে মনে করলে পুলিশের নিরাপত্তা চাইবেন ।
১৩. একজন আইনজীবি আক্রান্ত নারীর পক্ষে মামলায় লড়বেন । আসামীর অনুপস্হিতিতে বিচার কার্য চলবে ।
১৪. ধর্ষণের শিকার নারী হলো প্রধান স্বাক্ষী ঐ মামলার । তাই আদালতে ধর্ষণের প্রমাণাদি উপস্হাপনে সন্দেহ মনে হলে বিচারক আসামির শাস্তি কমিয়ে দিতে পারে এবং আসামী ছাড়াও পেয়ে যেতে পারে ।
১৫.বিচারকের রায়ে সন্তুষ্ট না হলে ক্ষতিগ্রস্হ ব্যক্তি উর্ধ্বতন আদালতে আপিল করতে পারবেন ।
এবার আমরা জানবো ধর্ষণ বলতে কি বোঝায় ?
কোনো নারীর সম্মতি ছাড়া তার সাথে কোন পুরুষের যৌন সম্পর্ক স্হাপন করাকে ধর্ষণ বলে । অর্থাৎ যৌন সম্পর্ক স্হাপনে নারীর সম্মতি না থাকলেই তা ধর্ষণ হবে । ধর্ষণের সময় নারী যদি কোন বাধা না দেয় বা প্রতিরোধ নাও করে তাহলেও যৌন সম্পর্ক স্হাপনে যে-কোন অসম্মতি জানালেই সেটা ধর্ষণ বলে গণ্য হবে । কারণ ধর্ষণের সময় অনেক সময় অনেক কারণে নারী বাধা দিতে বা প্রতিরোধ করতে পারে না । যেমন ধর্ষণকারী তাকে অস্ত্র দিয়ে ভয় দেখাতে পারে, নারী মৃত্যুভয় কিংবা গুরুত্বর আঘাত পাওয়ার ভয় পেতে পারে, আবার মাদক দব্য বা ওষুধ দিয়ে নারীকে জ্ঞানহীন করে ধর্ষণ করা হতে পারে । তবে ১৮ বছরের কম বয়স্ক শিশু যৌন সম্পর্ক স্হাপনে সম্মতি দিক কিংবা না দিক, তা ধর্ষণ হবে । কারণ ১৮ বছরের কম বয়স্ক শিশুর সম্মতির কোনো মূল্য নেই । এটা করা হয়েছে নাবালক শিশুদের আইনগত সুরক্ষা দেওয়ার জন্য । আইনের দিক থেকে ১-১৮ বছর পর্যন্ত সবাই শিশু ।
মনে রাখবেন :
১.প্রতি ২ মিনিটে ১ টা মেয়ে সম্ভ্রম হারায় ।
২.সম্ভ্রম হারানোর ফল খুবই খারাপ । আপনি মানষিকভাবে ভেঙ্গে পড়বেন । পোস্ট স্ট্রোমাটিক স্টেস ডিসঅডার ছাড়াও সেক্সচুয়াল্লি ট্রান্সমিডেট ডিজিজ ছাড়াও আপনার মনে পুরুষদের সম্পর্কে খারাপ ধারণা বদ্ধমূল হয়ে যাবে ।
৩.৭৫% সম্ভ্রমহারা মেয়ের তাৎক্ষণিক চিকিৎসার প্রয়োজন হয় ।
৪.৪৫ % ধর্ষকের আছে মারাত্মক সব রোগ । আপনি তাদের দ্বারা সম্ভ্রম হারালে সেসব রোগে আপনি আক্রান্ত হবেন ।
৫.৬২ % সম্ভ্রমহানীর ঘটনা কখনোই সম্ভবহারারা সারা জীবন কারো কাছেই প্রকাশ করেন না ।
সুতরাং ধর্ষণ হতে বাঁচুন । আত্মরক্ষা কৌশল শিখুন । কারণ : বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত
Women who learn self-defense have higher self-esteem.
তাহলে Stand and speak out.
আমরা আপনাদের সাথে আছি । আজই আমাদের এই পেজে লাইক করুন এবং আমাদের সাথেই থাকুন ।
উপসংহার :
ধর্ষণের স্বীকার নারীর প্রধান কর্তব্য হলো : তার ধর্ষণের ঘটনাকে যথাসম্ভব পরিচিত কারো কাছে প্রকাশ করা এবং যত দ্রুত সম্ভব আইনের দ্বারস্হ হওয়া । ধর্ষণ হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য আত্মরক্ষা কৌশল আয়ত্ব করার সাথে সাথে নিজেকে সদা সতর্ক অবস্হায় রাখতে হবে । আর ধর্ষণের শিকার হয়ে গেলে নিজেকে কোন ভাবে গুটিয়ে রাখা যাবে না । প্রতিটি মেয়েরই উচিত বাংলাদেশের নারি নির্যাতন ও মুসলিম পারিবারিক আইনের সাথে সম্পৃত্ত আইনের ধারা ও উপধারা সম্পর্কে ধারণা রাখা । কারণ আইন ও সচেতনতাই একটা মেয়েকে ক্যারিয়ারিস্ট হয়ে উঠতে সাহায্য করে ।
লেখক : মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম http://www.facebook.com/fakhrul78
বিষয়: বিবিধ
১৭১৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন