বিয়ের কনের শাড়ি পড়ার ধরণ কেমন হওয়া উচিত এবং কনের করণীয় দিকগুলো
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ১১ জানুয়ারি, ২০১৪, ০২:০০:৫৬ রাত
পটভুমি :
আমার এক ছাত্র ঢাকার গুলশান এলাকায় বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলো । সে আমার কাছে যে অভিজ্ঞতা বণর্না করলো তা হতে বুঝতে পারলাম :
১. শুভ বিবাহ নামক বিয়ের এই অনুষ্ঠানের প্রধান আকষর্ণ ছিলো বিয়ের কনে । কনে এই শীতের মধ্যেই পাতলা লাল শাড়ি পড়ে ছিল । তার পেট, পিঠ, গলা, বুকের কিছু অংশ এবং চুল ভালভাবেই দৃশ্যমান হচ্ছিলো এমন কি এই সাজ - পোষাকে তার সাথে অনেক অপরিচিত পুরুষ লোক পর্যন্ত ছবি তুলেছিলো ।
২. শুভ বিবাহ নামক অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগেও গাঁয়ে হলুদ নামক আরেকটা অনুষ্ঠান হয়েছিলো । তাতেও তার সাজ-পোষাক এরকমই ছিল ।
৩. বিয়ের এসব অনুষ্ঠানে আগত প্রায় সব মেয়ের পোষাকই শালিন ছিল না । এসব অনুষ্ঠানে ছেলে - মেয়ে কোন ভেদাভেদ ছিল না । মেয়েরা অপরিচিত ছেলেদের জটলায় যেয়ে অযথা হৈ হুল্লোড় করছিলো এবং তাদের কথাবার্তায় শালিনতার কোন চিহ্ন ছিল না ।
৪. বিয়ের এক পর্যায়ে কাজি বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করার পর মুনাজাত করেন এবং প্রতিটা মেয়েই অশীলন পোষাক পড়ে মুনাজাতে অংশ নিয়েছিলো ।
৫. বিয়ের অনুষ্ঠানের উল্লেখযোগ্য সময় হিন্দি ছবির গান বাজানো হয়েছিলো । চিত্রায়িত ভিডিওতেও হিন্দি ছবির গান ছিল ।
এসব আরো অনেক বিষয় আমার কাছে উপস্হাপনের সে জানতে চাইলো :
১. বিয়ের কনের সাজ-সজ্জার ধরণ কেমন হওয়া উচিত ?
২. বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য কি ৪-৬ টা অনুষ্ঠান করার কি প্রয়োজন আছে ? এসব কি অর্থের ও সময়ের অপচয় নয় ?
৩. অনেক মেয়েই শালিনভাবে পোষাক পড়ে অব্যস্হ ।কিন্তু বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোতে মেয়েরা অশালীনভাবে নিজেদের উপস্হাপন করে কেন ?
৪. বিয়ের অনুষ্ঠানে মুনাজাতে রাজনৈতিক ও সামাজিক বিষয় আলোচনা কর কি ঠিক ? বিয়ে তো আনন্দের বিষয় । বিয়ের অনুষ্ঠান কোথায় হওয়া সবচেয়ে ভাল ?
৫. বিয়ের অনুষ্ঠানে গান বাজনা করা কি ঠিক । তাও আবার হিন্দি ছবির গান ।
আমি তার উত্তরে বল্লাম :
দেখ । ওয়াজেদ । বিয়ের দাওয়াত হতে এসেছো । আপাতত বিশ্রাম নাও । আমি ব্লগ সাইটে এসম্পর্কে আলোচনা করবো ।
সংক্ষেপে তোমার প্রশ্নগুলোর উত্তর দিচ্ছি । শোনো :
১. বিয়ের অনুষ্ঠানে কনে ইসলামী নীতিমালা মেনে শাড়ি পড়তে পারে ।
২. বিয়ের জন্য ৫-৬ টা অনুষ্ঠানের প্রয়োজন নেই । এসব অপচয় । অপচয়কারী শয়তানের ভাই । মাত্র ৪০০ টাকা খরচ করে বিয়ের অনুষ্ঠান করা যায়
( ৪০০ টাকা খরচ করে বিয়ের অনুষ্ঠান করা করার খবর :
১. http://www.aquila-style.com/focus-points/my-5-wedding/
২. http://www.sunnah.com/nasai/26/185 )
অথচ বিয়ের অনুষ্ঠান করতেই আমাদের দেশের অনেক লোক ৫০ লাখ টাকা খরচ করে । আর গরীব যে সেও তার মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান করে আরো গরীব হয়ে যায় । বিয়েতে যৌতুক আর অধিক পরিমান দেনমোহর বিয়েকে একটা ভীতপ্রদ বিষয় করে ফেলেছে ।
৩. ছেলে- মেয়ে সবাইকে সর্ব অবস্হায় ইসলামী নীতিমালা মেনে পোষাক পড়ে থাকতে হবে । ছেলে- মেয়ে উভয়কেই ইসলামী নীতিমালা মেনে দৃষ্টি অবনত বা সংযত রেখে চলাফেরা করতে হবে ।
৪. বিয়ের অনুষ্ঠানের পর বর - কনের একত্রে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়া সুন্নত । বিয়ে ধর্মীয় বিষয় । সুতরাং বর - কনের একত্রে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়া গুরুত্বপূর্ণ । বিয়ের অনুষ্ঠান আনন্দময় হওয়া উচিত । এতে চলমান বিষাদময় বিষয় ও অসুস্হ রাজনীতি নিয়ে আলোচনা হতে বিরত থাকা উচিত । কাজি বা হুজুরদের এব্যাপারে সচেতন হতে হবে ।
বিয়ের অনুষ্ঠান মসজিদে হওয়া উত্তম । কারণ মসজিদ হলো মুসলিমদের সব কাজের কেন্দ্রবিন্দু ।
৫. বিয়ের অনুষ্ঠানে অর্থপূর্ণ ও দিক নির্দেশনামূলক গান বাজনা করা ঠিক সঠিক কাজ । হিন্দি ছবির গান যতই ভাল হোক শোনা হতে বিরত থাকতে হবে । কারণ আমরা বাংলাদেশী ।
বিয়ের দিনে এমন গান বাজানো জায়েজ http://www.youtube.com/watch?v=mHpTdsBbYRM ( maher zain-এর গাওয়া barakallahu lakuma - http://www.islamiclyrics.net/maher-zain/baraka-allahu-lakuma/ )।
আমার প্রশ্নের উত্তরগুলোর শোনার পর সে বল্লো :
স্যার । আমার মাথায় একটা ব্যবসার আইডিয়া মাথায় ঢুকেছে ।
আমি বল্লাম : সেটা কেমন ?
ওয়াজেদ বল্লেো : সেটা বিয়ের ঘটকালী হতে শুরু করে বিয়ের সব কিছু একটা প্রতিষ্ঠান তাদের দায়িত্বে কর । এই প্রতিষ্ঠান এমনভাবে বিয়ের অনুষ্ঠান পরিচালনা করবে যাতে ইসলামবিরোধী কিছুই থাকবে না । আর প্রতিটা বিয়েতে খরচ হবে মাত্র ৩০ হতে ৫০ হাজার টাকা ।
আমি তার এই নতুন প্রকল্পের কথা শুনলাম (এব্যাপারে আলোচনা - অন্য কোন লেখায় করবো ) আর আমি বল্লাম :
সে পর্যন্ত ঘটকালীকেই পেশা হিবেসে নিচ্ছো । সমস্যা নেই ।আজ বিয়ের অনুষ্ঠানে যে মেয়েটাকে চয়েস করে এসেছো তার বাড়িতে ঘটক হিসেবে আমিই যাবো । হ্যা রে । মেয়েটা তো বিয়ের অনুষ্ঠানে মাথার চুলগুলোকে তিনভাগে ভাগ করে তিন ধরণের রং মেখে এসেছিলো না ।
আমার কথা শুনে সে বল্লো : আপনি জানেন কি করে ?
আমি বল্লাম : গোয়েন্দা সংস্হার রিপোর্ট । যা বাড়ি যা । তোর ব্যবসায়িক থিমটাকে কাজে লাগাতে হবে । আপাতত নাকে তেল দিয়ে ঘুমা ।
সামনের মাসে আমাদের আলোচনা সভা হবে মিরপুর কফি হাউজে নয়তো বৈঠকখানা রেস্তোরায় । সেখানে তুমি তোমার ঘটকালী ব্যবসা নিয়ে আলোচনা করবে । পলাশনগর মসজিদের ছোট হুজুর "কুআনফুসিকুম আহলিকুম নারা" কুরআনের আয়াতটা নিয়ে আলোচনা করবেন । আমি আলোচনা করবো আকাশ দেখার গুরুত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে । আর আমি চেষ্টা করবো চুলগুলোকে তিনভাগে ভাগ করে তিন ধরণের রং মেখে আসা মেয়েটাকে উপস্হিত করতে । তার আলোচনার বিষয়বস্তু রাখা হবে : পেশা হিসেবে ফ্যশন ডিজাইনিং । আমাদের পার্টির স্পনসর কেহ থাকবে না । সুতরাং ডেলিগেট ফি রাখা হবে । ব্যবসায়ীক চিন্তা-ভাবনা আছে ও সৃষ্টিশীল মনের নতুন কিছু লোক নিয়ে হাজির হবে ।
আর আজকের লেখা নেটে দেখবে । বিষয় হবে : "বিয়ের কনের শাড়ি পড়ার ধরণ কেমন হওয়া উচিত "
একারণেই আজ এই বিষয়ে লেখা ।
বাংলাদেশের অধিকাংশ মেয়ের পোষাক ধরণ ও এর কারণ :বাংলাদেশের অধিকাংশ লোক তাদের মা-বোন-স্ত্রী-মেয়েদের ইসলামের নীতিমালা অনুযায়ী চলাতে দিক নির্দেশনা দেন না । আর অধিকাংশ মেয়ে ইসলামী নীতিমালা অনুযায়ী পোষাক পড়ার ব্যাপারে সচেতন নয় । কারণ :
১. সবাই জ্ঞানের ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয় ।
২. ছেলেরা ঘরে বাহিরে দাইয়ুস-দের মতো চলাফেরা করে । আর অধিকাংশ মেয়ে ইসলামী নীতিমালা অনুযায়ী পোষাক না পড়ে মুতাবার্রিবা-দের মতো চলাফেরা করে ।
যেসব ছেলে তাদের মা-বোন-স্ত্রী-মেয়ে ও কর্মক্ষেত্রের মেয়েদের ইসলামী নীতিমালা অনুযায়ী পোষাক পড়তে অনুরোদ করে না বা দায়িত্ব অনুভতি জাগ্রত করে না, তাদের দাইয়ুস বলা হয় ।
আর যেসব মেয়ে ইসলামী নীতিমালা অনুযায়ী পোষাক পড়ে না তাদের মুতাবার্রিবা বলা হয় ।
রাসুল (সা.) সুস্পষ্টভাবে বলেছেন যে দাইয়ুস ও মুতাবার্রিবা ধরনের লোকরা কখনো জান্নাতে যেতে পারবে না ।
তবে যেসব দাইয়ুস তাদের ভুল বুঝতে পারার পর তাদের মা-বোন-স্ত্রী-মেয়ে ও কর্মক্ষেত্রের মেয়েদের ইসলামী নীতিমালা অনুযায়ী পোষাক পড়তে অনুরোদ করবে বা দায়িত্ব অনুভতি জাগ্রত করবে এবং এই উদ্দেশ্যে প্রাণপণ চেষ্টা চালাবে – তারা জান্নাতে যাবে ।
যেসব মুতাবার্রিবা তাদের ভুল বুঝতে পারার পর নিজে ইসলামী নীতিমালা অনুযায়ী পোষাক পড়ে এবং অন্য মেয়েদের ইসলামী নীতিমালা অনুযায়ী পোষাক পড়তে অনুরোদ করবে বা দায়িত্ব অনুভতি জাগ্রত করবে এবং এই উদ্দেশ্যে প্রাণপণ চেষ্টা চালাবে – তারা জান্নাতে যাবে ।
৩. কিছু ছেলে স্ত্রীদের পাতলা শাড়ি পড়িয়ে বাহিরে চলাফেরা করাকে সম্মানের কাজ মনে করে । অনেক ছেলে তাদের স্ত্রীদের দিয়ে গান চিত্রায়ন করে টেলিভিশনে প্রচার করে থাকে । অনেক ছেলে তাদের পরিবারের মেয়েদের বেআব্রুভাবে সর্বত্র বিচরণ করার জন্য উৎসাহ-অণুপ্রেরণা দিয়ে থাকে ।
উপরন্তু ভারতীয় অনেক টিভি চ্যানেলে বেআব্রুভাবে শাড়ি পড়া অভিনেত্রীরা অভিনয় করে থাকে ।এসব শাড়ি পড়া মহিলাকে দেখে অনেক মেয়ে বেআব্রুভাবে শাড়ি পড়ে ।
সত্যিকার মুসলিমের মতো জীবন যাপন করতে হলে ইসলামের নীতিমালা অনুসরণ করেই শাড়ি পড়তে হবে ।
কুরআন ও হাদিস অনুযায়ী মেয়েদের পোষাক পড়ার নিয়মগুলো হলো :
১. মাথার চুল, পিঠ ও বুক ওড়না দিয়ে যথাযথভাবে ঢেকে রাখা এবং মুখ ও হাতের তালু ছাড়া সমগ্র শরীর ঢেকে রাখা ।
২. এমন ভাবে হাঁটা ও চলাফেরা করা যাতে শরীরের ভাঁজ অপ্রকাশিত থাকে ।
৩. স্বচ্ছ বা পাতলা কাপড়ের পোষাক পড়া যাবে না ।
৪. দৃষ্টি সংযত করে চলাফেরা করা ।
৫. সাভাবিক কন্ঠস্বর ব্যবহার করে কথা বলা ।
ইসলামের আলোকে শাড়ি ব্যবহার করার নিয়ম :
ইসলাম মেয়েদের যে কোন ধরণের পোষাক পড়ার অনুমতি দেয় । তবে শর্ত হলো সে সব পোষাক অবশ্যই ইসলামের নীতিমালা অনুযায়ী পড়তে হবে । সুতরাং শাড়ি এমনভাবে পড়তে হবে যাতে মাথার চুল, পিঠ ও বুক আঁচল বা ওড়না দিয়ে যথাযথভাবে ঢেকে রাখা যায় এবং মুখ ও হাতের তালু ছাড়া সমগ্র শরীর ঢেকে রাখা যায় । আর এজন্য ব্লাউজের হাত ফুল হাতা করে বানাতে হবে ।
অন্যথায় চলতি নিয়ম অনুযায়ী শাড়ি পড়লে নামাজ পড়া অশুদ্ধ হয়ে যাবে । কারণ চলতি নিয়ম অনুযায়ী শাড়ি পড়লে শরীর ভালভাবে ঢেকে রাখা যায় না । ইসলাম মেয়েদের সাজ গোজ করার বিরোধী নয় । তবে অতিরীক্ত কোন কিছু ভাল নয় ।
ইসলামের নীতিমালা অনুযায়ী কীভাবে শাড়ি পড়তে হয়, তা জানার জন্য এই ভিডিওটা দেখুন :http://www.dailymotion.com/video/xwgzh3_how-to-tie-a-sari-hijab-friendly-style_lifestyle
ইসলামের নীতিমালা অনুযায়ী কীভাবে শাড়ি পড়ে বিয়ের অনুষ্ঠানে যেতে হয়, তা জানার জন্য এই ভিডিওটা দেখুন :
http://www.dailymotion.com/video/xwh3c5_sari-hijaabified-for-wedding-ceremony_lifestyle
বিয়ের কনের শাড়ি পড়া
বাংলাদেশের বেশীর ভাগ মেয়ে বিয়ের সময় শাড়ি পড়েন । বিয়ের পরও তারা কম-বেশী শাড়ি পড়েন । শালিনভাবে বিয়ের কনের শাড়ি পড়ার ধরণ লক্ষ্য করবো ।
১. ব্লাউজের হাতা অবশ্যই ঢিলা ও ফুল হাতা হতে হবে । পেট সম্পূর্ণ ঢাকার জন্য ব্লাউজ কোমড় পর্যন্ত মাপ দিয়ে বানাতে হবে ।
২. মাথা স্কার্ফ ও আঁচল দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে । এজন্য বিশেষ ধরনের তিনটা পিন ব্যবহার করা যেতে পারে ।
৩. মাথায় মানানসই অলংকার ব্যবহার করা যাবে ।
৪. হাতে, পায়ে ও গলায় অলংকার ব্যবহার করা যাবে ।
হাতে-পায়ে মেহেদী লাগানো যাবে ।
৫. মুখে প্রয়োজনীয় সাজ-গোজ করা যাবে ।
বিয়ের অনুষ্ঠানের পর করণীয় :
১.শাড়ি পড়ে বরের সাথে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে ঘোড়াফেরা করা যাবে ।
২.বিয়ের অনুষ্ঠানে নিরব নিথর হয়ে বসে থাকা অনুচিত । বর ও অতিথীদের সাথে কথা বলতে হবে ।
৩.বিয়ের অনুষ্ঠানের পর বরের সাথে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়তে হবে । বর নামাজ পড়াবে আর কনে মুনাজাত করে সবার কল্যাণ কামনা করবে ।
সদ্যবিবাহিতা নারীদের যা করণীয় :
১. নতুন আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সৌজন্যমূলক কথা বলা, বড়দের সালাম দেয়ার ব্যাপারে লক্ষ্য রাখতে
২. সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে শ্বশুরবাড়িতে খাবার টেবিলে সবাইকে কিছু পরিবেশনের কাজ করতে পারেন। বিকেলে হয়তো চা রেডী করতে পারেন।
নতুন বাড়িরলোকদের আচরণ বোঝার চেষ্টা করুন এবং তাদের সাতে মানিয়ে চলার চেষ্টা করুন । তাদের মধ্যমনি হওয়ার চেষ্টা করুন ।
৩. স্বামীর সাথে গল্প করার সময় বাড়ির সদস্যদের মন-মানসিকতা সম্পর্কে অল্প অল্প জেনে নিন ।৪. আপনার স্বামীর সামর্থ্য সম্বন্ধে আপনাকে সচেতন থাকতে হবে । স্বামীর সামর্থ্যের বাইরে তাকে অযথা অনুরোধ করবেন না । এতে করে নতুন সম্পর্কে প্রথমেই একটা অস্বস্তিকর পরিস্থিতির অবতারণা হতে পারে, যা কারো জন্যই ভাল নয়।
তবে আপনি চাকুরীজীবি হলে এবং সামর্থ্যবান হলে আর্থিক ব্যাপারে স্বামীর সাথে শেয়ার করবেন। কারণ সংসারটা দু্ই জনের ।
৫. নতুন আত্মীয়-স্বজনদের সাথে একটা ভাল সম্পর্ক তৈরী করতে সচেষ্টও হবেন। পারিবারিকভাবে ছোটখাট কিছু না কিছু ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। ভুল কথা বলা হলে ঠান্ডা মাথায় বুঝিয়ে দিবেন। স্বামীকে আপনার বাবা-মার প্রতি শ্রদ্ধাশীল করে তুলুন। নিজেও তার বাবা-মার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন।
৬. স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ভালোবাসার পাশাপাশি পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধও গড়ে তুলবেন। নিজের বিবেচনাবোধকে প্রথম থেকেই কাজে লাগাবেন। স্বামীর ভালকে ভাল, খারাপকে খারাপ বলার প্র্যাকটিস প্রথম থেকেই করবেন, সর্বোপরি ব্যক্তিত্বসম্পন্ন হবেন।
স্বামীকে বোঝার চেষ্টা করবেন। স্বামীকে খোঁচা মেরে কথা বলবেন না । স্বামীর ইচ্ছাকৃত অবহেলাকেও প্রশ্রয় দেয়ার কিছু নেই। অযথা নমনীয়তা প্রদর্শন করবেন না।
৭. শশুরবাড়িতে স্বামীর সাথে বা আর কারো সাথে অল্প-বিস্তর মনোমালিন্য হলে সেটা বাবার বাড়ির কারো সাথে শেয়ার না করাই ভাল। খুব বড় রকমের সমস্যা হলে সাথে সাথেই বাবা-মার সাথে শেয়ার করবেন।
৮. নিজের জীবনের ব্যাপারে ও ক্যারিয়ারের ব্যাপারে যেকোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে স্বামীর সাথে পরামর্শ করবেন । স্বামীকেও তার কাজে পরামর্শ দিবেন ।
নিজের সত্তা নিজের অধীন, আর কোন মানুষের অধীন নয়। জোর করে কখনো ভালোবাসা বা মনোযোগ বা অতিরিক্ত যত্ন আদায় করা যায় না।
৯.স্বামীর সাথে এমন একটা বন্ধুত্ব সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করতে হবে, যাতে করে খুব সহজেই মনের কথাগুলো শেয়ার করতে পারেন। তবে যদি মনে হয় আপনার স্বামী খোলামেলা হতে চাচ্ছেন না, তাহলে ব্যডলাক। আপনিও তখন নিজেকে খোলামেলা করবেন না, এতে করে আপনার স্বামীর কাছে ছোটই হবেন, চটুলই হবেন। সমস্যা, জটিলতা এগুলো বাড়বে বৈ কমবে না।
১০. ভবিষ্যত জীবনটা কেমনভাবে সাজাতে চান, প্রথম থেকেই নিজেদের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা করে নিবেন।
১১. বৈবাহিক জীবন হলো আধ্যাত্মিক ব্যাপার । কারণ হাদিসে স্পষ্ট বলা হয়েছে : "বিয়ে হলো ধর্মের অর্ধেক আর বাকি অর্ধেক হলো আল্লাহভীতি অর্জন করা ।" আল্লাহ ভীরু মুসলিম মহিলা হওয়াই মুসলিম মেয়ের প্রধান কাজ । আর স্বামীকেও আল্লাহভীরু হওয়ার জন্য সচেতন করা মুসলিম মেয়ের প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য ।
বিয়ের পর বর-কনের করণীয় :
১. বিয়ের শেষে বর-কনে উভয়ই পরস্পর আস্হা, বিশ্বাস ও সমমর্যাদার ভিত্তিত্বে বসবাস করবে ।
২. পরস্পরের সীমাবদ্ধতাকে মেনে নিতে হবে ।
২. উভয়কেই ইসলামী নীতিমালা মেনে সব সময় পোষাক পড়তে হবে । (এব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য অন্য কোন লেখায় দেওয়া হবে ।)
৩. ইসলামের নীতিমালা অনুসারে পরিবার গঠণ করার জন্য চেষ্টা ও সাধনা করে যেতে হবে । বর-কনেকে আল্লাহর সন্তুষ্ঠি অর্জন করা এবং মৃত্যুর পর জান্নাতে বর-কনে একসাথে থাকার উপযোগী চিন্তা মাথায় রেখেই জীবন যাপন করতে হবে ।
৪. বর-কনে বিয়ের পর পরস্পরের প্রতি আস্হা ও ভালবাসা নিয়েই একত্রে বসবাস করে যেতে হবে ।
ইসলামের নীতিমালা অনুযায়ী কীভাবে শাড়ি পড়তে হয়, তা জানার জন্য এই ভিডিওটা দেখুন : http://www.dailymotion.com/video/xwgzh3_how-to-tie-a-sari-hijab-friendly-style_lifestyle
ইসলামের নীতিমালা অনুযায়ী কীভাবে শাড়ি পড়ে বিয়ের অনুষ্ঠানে যেতে হয়, তা জানার জন্য এই ভিডিওটা দেখুন : http://www.dailymotion.com/video/xwh3c5_sari-hijaabified-for-wedding-ceremony_lifestyle
উপসংহার :
ইসলামের নীতিমালা অনুযায়ী যে কোন পোষাক পড়া যায় । শালিনভাবে পোষাক পড়ার প্রায় সব পদ্ধতি ইসলামের নীতিমালাকে সমর্থন করে । আমাদের ইসলামী নীতিমালা মেনে পোষাক পড়তে হবে ও চলাফেরা করতে হবে । বৈবাহিক জীবন হলো আধ্যাত্মিক ব্যাপার । কারণ হাদিসে স্পষ্ট বলা হয়েছে : "বিয়ে হলো ধর্মের অর্ধেক আর বাকি অর্ধেক হলো আল্লাহভীতি অর্জন করা ।" আল্লাহ ভীরু মুসলিম মহিলা ওও পুরুষ হওয়ার জন্য আমাদের বিয়ে করতে হবে ।।
আরো জানার জন্য এই পেজগুলো দেখুন :
1. http://www.facebook.com/WeWillMarryEarly
2. https://www.facebook.com/SareeHijab
3. http://www.facebook.com/SalwarKameezHijab
4. http://www.facebook.com/SelfdefenseTechniquesForFemales
5. http://bangladeshi-orna.blogspot.com/
বিষয়: বিবিধ
১২৩২৭ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমি অবিবাহিত ।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন