সেনা বাহিনী সম্পর্কে আমার অভিমত

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ০৩ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৫:৫৯:৪৬ বিকাল

পটভুমি :

কিছুক্ষণ আগে দেখলাম "৯৯% মানুষের ১০০% ভরসা সেনাবাহিনীর উপর" লেখা দিয়েছেন http://www.bdtomorrow.org/blog/blogdetail/detail/7884/Samayerkantha/35227 সময়ের কণ্ঠ নামক ব্লগার ।

আমি তার কথার সাথে একমত নই ।



সেনা বাহিনী সম্পর্কে আমার অভিমত :


অনেকে বলে থাকেন সেনা বাহিনীর লোকরা আমাদের দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্হার পরিবর্তনে সাহায্য করবেন । আমার কথা হলো : দেশের রাজনৈতিক অবস্হা পরিবর্তন করা কি সেনা বাহিনীর অন্যতম প্রধান কাজ ?

মইনুদ্দীন আর ফখরুদ্দীনের আমলে কত জন পরিবার নিস্হ হয়েছে এবং কত পরিবার ধ্বংস হয়েছে তা অনেকের জানার বাহিরে । তখন সেনা বাহিনীর অনেক লোক অনৈতিকভাবে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়েছিলো । তার ফলে হয়েছিলো পীল খানার বিডিআর বিদ্রোহ । আমাদের অনেকেই অনেক কিছুই জানি না বা ভুলে গেছি। মইনুদ্দীন – ফখরুদ্দীনের সময় চালের কেজি তখন ৮০ টাকা হয়েছিলো । আজব হলেও সত্য, অনেক সাংবাদিকের মতে ফকরুদ্দীন ছিল আমেরিকার নাগরিক । এই কারণে তিনি বাংলাদেশের কোন শাসনতান্ত্রিক কোন পদ লাভ করতে পারেন না । সুতরাং তার প্রধান উপদেষ্টার পদ গ্রহণ ছিল অবৈধ । কিন্তু মইনুদ্দীন – ফখরুদ্দীনের সময় ফখরুদ্দীন এই নিয়ম ভেঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা হয়েছিলেন ।

আপনাদের অনেকেই এসব ভুলে গেছেন হয়তো ???? !!!! স্বৈরাচারী জেনারেল এরশাদের সময় কারফিউ হলে সেনা বাহিনী কীভাবে জনগণকে নির্যাতন করতো তা অনেকেই ভুলে গেছেন ????!!! হয়তো অনেকেই তখন জন্মগ্রহণ করেননি । স্বৈরাচারী এরশাদের সময় আজ ২৯ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখের চেয়েইও ভয়াবহ ছিল । কিন্তু স্বৈরাচারী জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায় থাকতে পারেনি ।

স্বৈরাচারী জেনারেল এরশাদের সময়ের একটা ঘটনা শেয়ার করছি । এক দিন টানা তিন দিন কারফিউ দেওয়া হলো । তখন দেখা মাত্র গুলির নির্দেশ দেওয়া হতো । দোকান-পাট খোলা যেতো না । মানুষ অফিসে যেতে পারতো পরিচয়পত্র দেখিয়ে । স্কুল-কলেজও বন্ধ ঘোষনা করা হতো । এরকম একদিনের কারফিউতে আম্মা আব্বাকে বল্লেন : “বাড়িতে ভাল খাবার অনেক দিন খাওয়া হয় না । সবাই চিতল মাছ খাবে বলে গো ধরেছে । আর চালও নেই ।”

আব্বা আমাকে সাথে করে নিয়ে গেলেন । বাজারে লোক অনেক । কারণ অনেকেই অনেক দিন বাজার করতে পারেননি । অনেকেই তাদের ছোট ছেলেদের নিয়ে এসেছে কারফিউ কাকে বলে তা বোঝানোর জন্য ।

আমি আব্বাকে বলেছিলাম : “কারফিউ কাকে বলে ? “ তিনি বলেছিলেন : কারফিউকে বাংলায় বলে সান্ধ্য আইন । এই সময় ঘর হতে বের হওয়া যায় না । বের হলে সেনা বাহিনীর লোকরা গুলি করবে ।

আমি বল্লাম : “সেনা বাহিনীর লোকরা গুলি করবে কেন ?”

আব্বা বল্লেন : “বড় হলে বুঝতে পারবে । আমরা বাজার করে তাড়াতাড়ি বাড়ি যাই । তারপর তোমাকে অনেক কিছু বলবো । নাহলে সেনা বাহিনীর লোকরা এসে আমাদের গুলি করবে ।”

তার এই কথা শুনে আমি চুপ করে থাকলাম । বাবা তড়িঘড়ি করে একটা চিতল মাছ কিনলেন । আর ১০ কেজি চাল কিনলেন । লাল শাক আর লাউ কিনলেন । আমরা রিক্সা পেলাম না । অনেক কষ্টে দুই হাতে দুইটা বাজারের থলে হাতে নিলাম । আব্বা দুই হাতে নিলেন চিতল মাছ আর চালের ব্যাগ ।

হঠাৎ দুইটা পিক আপ করে সেনা বাহিনী আসলো । আসা মাত্রই লোকদের আলোপাথাড়ি লাঠি পেটা শুরু । আর লোকরাও তাদের বাজার সদাই রেখে বা কিছু নিয়ে বা না নিয়ে যে যার মতো পালাচ্ছিলো । আমি আমার আমার খারাপ অবস্হা আর লিখছি না । সে দিন আমরা বাড়িতে ফিরেছিলাম শূণ্য হাতে ।

তার প্রায় এক দশক পর প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ে আমার বাবা এক জন বড় সরকারী কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন । আমরা সিএমএইচ-এ চিকিৎসা সুবিধা বিনা পয়সায় পাওয়ার সুযোগ পেলাম এবং অনেকটা বিনা পয়সায়ই সেনা বাহিনীর লোকদের মতো চাল-তেল-ডালসহ অনেক কিছু পেতাম । কিন্তু বাড়ির সবাই এসব ভোগ করলেও আমি ঘৃণা ভরে এসব প্রত্যাক্ষাণ করতাম । কিন্তু সেই সময়টায় সেনা বাহিনীর ভি আই পি ও ভিভিআইপি ধরনের লোকদের সামান্য হলেও দেখার সুযোগ কম বেশী পেতাম । তাদের অনেকেই আমার দিকে স্নেহের নজরে তাকাতো । কারণ আমাদের পরিবারকে তারা ভিভিআইপি মনে না করলে ভিআইপি মনে করতো এবং আমাদের পরিবারের লোকরাও তাদের শ্রদ্ধা ও ভালবাসার নজরে দেখতো । কিন্তু আমার মনের মধ্যে ছিল তাদের প্রতি এক রাশ ঘৃণা আর ক্ষোভ । আব্বা সেনা বাহিনীকে কোন নজরে দেখেন তা আমার জানা নেই । তবে আমার বিয়ের জন্য কনে খুজার সময় অনেক ঘটককে বলে দিয়েছেন , আমার ছেলেদের জন্য কোন পুলিশ বা উকিলের মেয়ের খোজ নিয়ে আসবেন না, তাদের মেয়েরা যতই যোগ্য হোক না কেন ।

তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে সেনাবাহিনী কখনোই জনগনের বন্ধু হয় না । এরা দেশের জন্য পেরাসাইট হয়ে দাড়ায় । আমাদের দেশের ক্ষেত্রেও তাই । আমাদের দেশ আক্রান্ত হলে সেনা বাহিনীর লোকরা সবার আগে এগিয়ে আসবে না । এগিয়ে আসবে জনসাধারণ । তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে কখনোই সেনাবাহিনী দেশ রক্ষায় প্রথম সারিতে ছিলো না । যেমন : ইরাক কুয়েত যুদ্ধের কথা ভাবুন । সে দেশ তেল সমৃদ্ধ , কিন্তু তৃতীয় বিশ্বের দেশ নয় । সে দেশের শাসক সেনা বাহিনীকে দেশ রক্ষার দায়িত্ব দিয়ে সৌদি আরব চলে যান । কিন্তু সাদ্দামের এক হুংকারে সেনাবাহিনী উদাও হয়ে যায় । সাদ্দাম সৈন্য সামন্ত নিয়ে ইরাকে ঢুকে পড়েন । পাকিস্তানের কথা ভাবুন । মিশরের কথা ভাবুন । সেনা বাহিনী কখনো গণতান্ত্রিক শক্তির বা গণতান্ত্রিক দলের সাহায্যকারী হয় না বা হতে পারে না ।

অনেকে বলেন : বিদেশে আমাদের দেশের সেনা বাহিনী শান্তিরক্ষী হিসেবে কাজ করে । তারা যথেষ্ঠ অমায়িক ও দক্ষ বলে বিদেশে পরিচিত ।

এক্ষেত্রে আমার অভিমত হলো : তারা এমনি এমনি বিদেশে যেয়ে সৎ আর অমায়িক সাজে না । কারন শান্তিরক্ষী হয়ে দেশে ফিরে নিজের জন্য নিয়ে আসেন কম করে হলেও ৭ হতে ২৫ লক্ষ টাকা । এজন্য বিডিআর বিদ্রোহের সময় বিআরএর লোকদের অন্যতম দাবি ছিল তাদেরও শান্তিরক্ষী মিশনে পাঠাতে হবে । ....... আমাদের দেশের সেনাবাহিনী শুরুর থেকেই বিতর্কিত । দেশ স্বাধীনের অর্ধেকটা সময় সেনা শাসনে কেটেছে । ...... আমাদের দেশের সেনা বাহিনী যা করেছে তা লোক দেখানোর জন্য । জনগণের ভালবাসা পাওয়ার জন্য নয় । সেনা বাহিনীর জন্য বাজেটের বরাদ্ধ করা টাকা কমিয়ে শিক্ষা ও স্বাস্হ্য খাতে ব্যয় করলে দেশের উন্নায়ন অগ্রগতি তরান্বিত হবে । সেনা বাহিনীর জন্য অস্ত্র গোলা বারুদ কেনাতে বড় ধরনের দুর্নীতি হয় । যেমন : রাশিয়ার থেকে মিগ বিমান কেনা । এসব বিমান কি চালু আছে এখন ? উত্তর অবশ্যই না । সেনা বাহিনী তৃতীয় বিশ্বের দেশের জন্য পেরাসাইট । আপনি অপারেশন ক্লিন হার্টের কথা স্মরণ করুন । ১-১১ এর কথা স্মরণ করুন । অপারেশন ক্লিন হার্ট নিয়ে একটা উপন্যাসও লেখা হয়েছে ।



বর্তমানে সেনা বাহিনী কীভাবে জনগণের পাশে থাকে :


বর্তমানে সেনা বাহিনী কীভাবে জনগণের পাশে থাকে তার প্রমাণ হলো এই লেখা -

http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=b50bf7fa3b6e58b984f41229edb0be3e&nttl=29122013252130

বিস্তারিত তথ্য দিয়ে সবার ধৈর্যচুত্যি ঘটাতে চাচ্ছি না । লিংকে যেয়ে আপনারা খবরটা দেখতে পারেন ।

উপসংহার :

আমি মনে করি, বাংলাদেশের রাজনীতিতে সেনা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কখনোই কল্যাণকর হয়নি । আন্তজার্তিক শান্তিরক্ষী মিশন ছাড়া আর কোন কিছুতেই বাংলাদেশের সেনা বাহিনীর সাফল্য নেই । দেশের উল্লেখযোগ্য অংশ সেনা ব্যারাক ও ক্যান্টমেন্ট হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে । অথচ বিপুল পরিমান লোকের জন্য রয়েছে আবাসন সংকট । সেনা বাহিনীর জন্য বাজেটে বরাদ্ধ কমিয়ে জনগণের স্বার্থে বাসস্হান, স্বাস্হ্য ও শিক্ষা খাতে বরাদ্ধ বৃদ্ধি করতে হবে ।

আর বাংলাদেশের জনগণকেই গণবাহিনী বানাতে হবে সাদ্দাম হোসেন সময়কার মতো ও সিরিয়ার বর্তমান সরকারের নিয়ম অনুযায়ী । এসব দেশে প্রতিটা নাগরিকের জন্য ৬ মাসের সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলকই নয়, তাদের নিয়মানুবর্তীতা ও আদর্শ নাগরিক হওয়ার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক । বাংলাদেশ যদি স্বাধীন সারভৌবম দেশ হিসেবে টিকে থাকতে চায় তাহলে বাংলাদেশকে এই নীতি মনে নেওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই । অন্যথায় বাংলাদেশকে সিকিমের মতো ভাগ্য বরণ করতে হবে ।

২য় বিশ্ব যুদ্ধের সময় নরওয়ের সেনাবাহিনী ও শাসক দেশকে স্বাধীন রাখার ব্যাপারে কোন কাজ করেননি । সুতরাং জনগণকেও এধরনের উদাহরণ মনের মধ্যে বদ্ধমূল করতে হবে । কারণ শাসক সম্প্রদায়ের অনেকেরই আত্মীয় পরিজন বিদেশে থাকে এবং বিভিন্ন দেশের নাগরিক । তারা যদি দেশকে ভালবাসতো , তাহলে তারা বাংলাদেশি হয়ে দেশেই থাকতো । বিদেশের নাগরিকত্ব নিতো না ।

বিষয়: বিবিধ

৩২৩৫ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

158665
০৩ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:০৭
আলোর কাছে বাঁধা আমি লিখেছেন : ভাইয়া আপনি কি ? খালি প্যচ লাগান সবসময় পোস্টের মাধয়মে-- আরে লোকে আপনাকে যা তা বলে আমার ভাল লাগে না শুনতে -- At Wits' End At Wits' End At Wits' End
০৩ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১৯
113359
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : ব্লগ তো এজন্যই ভাই । ব্লগ সাইট গরু রচনা বা দেখে এলাম বা ঘুরে এলাম ধরনের লেখার জন্য নয় ।

ইংরেজী ও আরবী ব্লগ সাইটগুলো দেখুন । সেখান থেকে নতুন নতুন আইডিয়া ও ধ্যান - ধারনা আবিস্কার হয়েছে এবং এসবের মাধ্যমে সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে ।

ফেসবুক পেজ আর গ্রুপের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে । ঠিক তেমনি ফোরাম আর ব্লগ সাইটের মধ্যেও পার্থক্য আছে ।


এসাইটে অনেকে এমন সব লেখা লিখেন সেগুলো কেন লেখাই হয় না । না ব্লগ সাইটের লেখা না ফোরামের জন্য লেখা ।


আমি এই সাইটের অনেক ব্লগারকে প্রজন্ম ফোরাম নামক সাইটা ঘুরে আসার অনুরোদ জানাচ্ছি । কারণ তারা সেই সাইটের উপযোগী লেখা লিখছেন । এই সাইটটা হলো ফোরাম ।

ব্লগারদের লেখা লেখির ব্যাপারে ধারণা দেওয়ার জন্য এই ব্লগের এডমিনবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি ।


আপনাকে বলছি : পড়াশোনার বিকল্প নেই । কান কথা বা শোনা কথায় নতুন কিছু করা যায় না । নতুন কিছু করতে গেলে পড়াশোনা করতে হয় ।


আর আমার এই লেখার ব্যাপারে তো কিছু বল্লেন না তো ? আমি কি কোন মিথ্যা বা অসত্য কথা বলেছি ?

158672
০৩ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৩৩
বুড়া মিয়া লিখেছেন : শেষ দুইটা বাক্যের সাথে একমত
০৩ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:১৭
113424
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : লেখাটা কয়েক বার পড়ুন । তাহলে আপনি আমার সম্পূর্ণ লেখাটার সাথে একমত হবেন ।

ঢাকা মহানগরীর এক চতুর্থাংশ বলতে গেলে সেনানিবাস । রাতে অনেক এলাকার রাস্তা সেনা বাহিনী বন্ধ করে দেয় । সেনা বাহিনী জনসাধারণের স্বার্থের কথা মোটেই বিবেচনা করে না । বিশ্বের বড় বড় রাজধানী শহরগুলো এমন নয় ।
158674
০৩ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৩৮
বুড়া মিয়া লিখেছেন : “ইসলামের দৃষ্টিতে ব্যবসা করে মুনাফা অর্জন” – এ নিয়ে একটা পোষ্ট দেন; আমারও জানার দরকার আছে এবং এটা একটা সুন্দর আলোচনার বিষয়ও। এই পোষ্ট দিলে ইনভাইট করতে ভুইলেন না।
০৩ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:১৮
113425
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : লিখতে চেষ্টা করবো ।
158687
০৩ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১০
পলাশ৭৫ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
০৩ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:১৪
113423
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ ।
158746
০৩ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১০:২০
রামির লিখেছেন : ধন্যবাদ
১০ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১১:০৯
115518
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ ।
161194
১০ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১১:০৯
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ ।
163438
১৭ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৬:৪১
সাদাচোখে লিখেছেন : সেনাবাহিনীর সমালোচনাটা - অল্প বয়স হতে যেহেতু ঘৃনা করছেন - সে প্রেক্ষিতে হয়তো ঠিক হয়েছে।

তবে সাধারন দৃষ্টিভংগীতে আমার কাছে মনে হয়েছে একপেশে হয়েছে। সেনাবাহিনী যা যা অন্যায়, যা যা নির্যাতন ও নিষ্পেষন বাংলাদেশে এনেছে - তার তুলনায় কোন কোন দিকে আমরা তথাকথিত মহিলা শাসকদের গনতন্ত্রের আওতায় কম নির্যাতন, নিষ্পেষন এর শিকার হয়েছি।

আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনার গণ আর্মীর প্রস্তাবের পক্ষে। একই সাথে আমি বাংলাদেশ আর্মীকে এমন ভাবে ও দেখতে চাই - যাতে প্রয়োজন হলে তারা হাসিনা খালেদার মত জগড়াটে শাসকদের গদীছাড়া করতে পারে।

অস্ট্রেলিয়ায় থাকার সময় বাংলাদেশ আর্মীর বিপরীতে আপনার দেওয়া আর্গুমেন্টের প্রায় ৭০% শুনেছিলাম পশ্চিমবাংলার এক ক্লাসমেট হতে। ধন্যবাদ।
২১ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:২৮
119670
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : আমার কাছে কোন সেনা সদস্য বা পুলিশকে মানবিক গুনাবলী সম্পন্ন মানুষ বলে মনে হয়নি । বাহ্যিকভাবে তারা মানুষ ও মনুষ্যত্ববোধ প্রদর্শন করলেও তাদের পরিবারিক জীবন এবং ছেলে-মেয়েদের সাথে তাদের সম্পর্ক এবং পাড়া-প্রতিবেশীদের সাথে তাদের সম্পর্কও ভাল নয় ।

ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসন আমল ও পাকিস্তান আমলে সেনা বাহিনী ও পুলিশকে যে পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, ঠিক সেই একই পদ্ধতি এখনও তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় । তারা কোনক্রমেই জনগণের বন্ধু হতে পারে না ।


পুলিশ সম্পর্কে আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি । আমার এক বন্ধু পুলিশের বড় কর্মকর্তা । সে পুলিশে চাকুরী পাওয়ার পর আমি নিজেই তার সাথে দুরত্ব বজায় রেখে চলছি । আমার এক দাদু (আমার বাবার কাক) ছিলেন পুলিশ । তার ছেলেও পুলিশ । আমার এক খালুও পুলিশ । আমার দুই মামা (মায়ের খালার ছেলে)পুলিশ । তাদের দুই ভাগ্নেও পুলিশ । যাদের কথা বলছি তাদের সবার পদবী এস আই থেকে এ এস পি পর্যন্ত ।

আমি যখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য গিয়েছিলাম । প্রথম হলে সিট পাইনি । শহরে তাদেরই একজনের বাসায় থেকে ক্লাস করতে যেতাম । বাসা ছিল জিআরপি-র কার্যালয়ের মধ্যে । তখন থেকেই পুলিশ এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের জীবন যাপন কাছ হতে দেখার সুযোগ হয়েছিলো ।

আমার কাছে তাদের মানবিকবোধ সম্পন্ন মানুষ মনে হয়নি ।

আমার বন্ধু যখন সে বিসিএস দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা হওয়ার সুযোগ পায় এবং পুলিশ প্রশিক্ষণ একাডেমী হতে প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিরে এলো ও কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে যাবে, তখন সে জানালো পুলিশে চাকুরী করছি ও করে যাবো কিন্তু সামান্য হলেও মানবিকবোধকে বিসর্জন দিতে হবেই । কারণ চাকুরীটাই এমন । আর এতে দুই নম্বরী থাকবেই । কারণ আমাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় ১৯১২ সালের ব্রিটিশ ট্রেনিং ম্যানুয়েল অনুযায়ী । আর ট্রেনিং-এর সময়ও ধর্ম চর্চার সুযোগ হয়ে ওঠে না ।

যাক । কয়েক বছর আমার এই বন্ধু চাকুরী করতে থাকলো । আমরা কাছ থেকে লক্ষ্য করলাম অপেক্ষাকৃত ভাল ছেলেরা তাকে এড়িয়ে চলা শুরু করছে বা বন্ধু হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে না বা আগের মতো যোগাযোগ রাখছে না । কিন্তু কিছুটা খারাপ ধরনের ছেলেরা তার সাথে ঘনিষ্টতা বৃদ্ধি করে চলছিলো । আমার কাছে একটা সময় মনে হলো, তার মধ্যে সামান্য হলেও পরিবর্তন চোখে পড়ছে । যেমন : আগে কোন বাজে শব্দ কথার মধ্যে ব্যবহার করতো না । এখন অবলীলায় খারাপ শব্দ ও যাকে তাকে লক আপে ঝুলানোর হুমকিও দেয় সে । এবারের ঈদগুলোতে আমি তার বাড়িতে যাইনি ।


এবার আসছি পুলিশের মানবিকতা ও পিতৃসুলভ আচরন প্রসঙ্গে । আমাকে আমার এক বন্ধু তার আরেক বন্ধুর বাসায় যেতে বল্লো । সেই বন্ধুর বন্ধুর বাবা ছিলেন পুলিশ । ঘটনাচক্রে আমি সেই বন্ধুর বন্ধুর বোনের সাথে কথা বলছিলাম তাদের বাসায় । এক সময় দেখলাম তার ( মেয়েটার ) বাবা আসলেন এবং তার মাথায় হাত রেখে আদর করলেন ও যাওয়ার সময় বল্লেন : আজ আমার রাতে ডিউটি পড়েছে, মা, আমার জন্য দুয়া করিস ।

আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম । তিনি কিসের ডিউটি করবেন এই শুক্রবার রাতে ? মেয়েটি বলতে চাননি । পরে জানলাম : ভদ্রলোক পুলিশ (তার পদবী সম্ভবত ওসি ) । তিনি রাতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য কাজ করবেন । বাড়িতেও যে তিনি কয়েক ঘন্টার জন্য এসেছেন তাও ছুটি ছাড়াই ।

আমি যতক্ষণ কথা বলছিলাম, ততক্ষণ মনে হলো, এমন ভদ্র মেয়ে খুব কমই আছে । কিন্তু শুনেছি পুলিশের মেয়ে বলে অনেক ভাল ছেলেই তাকে বিয়ে করতে চায় না ।

ঠিক এমন ব্যাপার ঘটেছিলো আমার এক ফুফুর ক্ষেত্রে ।
আর পুলিশের ছেলেদেরও অনেকে ভাল চোখে দেখে না ।

তবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখেছি পুলিশের ছেলেকে শিবির করতে ।

আমি মনে করি,
আমাদের দেশের রাজনৈতিক পরিমন্ডল পরিবর্তন হলেই এক সময় পুলিশ সম্পর্কে আমাদের বাজে ধারণা পরিবর্তন হবে । উপরন্তু পুলিশকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না করে তাদের পেশাদারিত্ব বজায় রাখার দিকে সরকারকে নজর দিতে হবে । অন্যাথায় আমাদের দেশের জনগণ পুলিশের উপর যতটুকু আস্হা ও বিশ্বাস রাখে তাও বিলীন হয়ে যাবে এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্হিতির অবনতি হতে থাকবে ।
163460
১৭ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৭:৫২
সাদামেঘ লিখেছেন : ভালো লাগলো আপনার লেখাটি এবং আপনার কথার সাথে সহমত প্রকাশ করছি।
২১ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:২৮
119671
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : আপনাকে ধন্যবাদ ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File