মেয়েদের যেভাবে শাড়ি পড়া উচিত
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ০৫ জানুয়ারি, ২০১৩, ১২:০১:১০ দুপুর
পটভুমি :
১. অন্য একটি ব্লগে এক ব্লগার আমার এক পোস্টে মন্তব্য করেছেন :
"শাড়ি পড়াই মানে যে জাহান্নামী হয়ে যাওয়া আর সেলোয়ার কামিজ মানেই যে জান্নাতী,আপনার এ ধারণা হলো কেন । কয়দিন আগে আমার এক কাজিন আসছে । ওর সেলোয়ার হলো মাশাআল্লাহ হাটুর কাছাকাছি,আর হাতা নাই বললেই চলে। আর গলা.....আর শাড়ি পড়া আমি এমন অসংখ্য মানুষকে চিনি,যাদের পর্দার কখনোই সমস্যা হয়না । সুতরাং শাড়ি,সেলোয়ার কামিজ আর পর্দা সবগুলো আলাদা জিনিস। পর্দা করতে চাইলে কোন পোশাকই সমস্যা না ।"
এই মন্তব্যের উত্তরে বলছি : মান্যবর রু আপু । এই সাইটে বর্তমানে আমার মন্তব্য করা এবং প্রথম পাতায় লেখার সুযোগ না থাকায় আমি ভাবলাম, তারপরও লিখে যাবো । কারণ বাল্লিগু আনি ওয়ালাও আয়িয়াহ । ভাবলাম শাড়ি-র উপরই একটা পেজ বানিয়ে ফেলি । এই পেজটা বানালাম : http://www.facebook.com/pages/Saree-Hijab/120505521449973
এর মাধ্যমে আমি অনেক লোককে শাড়ি সম্পর্কে সঠিক ও গঠণমূলক তথ্য দিতে পারবো ।
২.আমারই এক বোন কিছু দিন আগে কোন এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য শাড়ি পড়া সম্পর্কে ইসলামের দিক নির্দেশনা জানতে চেয়েছিল ।
৩.শাড়ি পড়ে নাঁচের অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি কি এসম্পর্কে জানতে চেয়েছিলো আমারই এক সহপাঠি ।
৪.বাংলাদেশের বেশীর ভাগ নারী বিয়ের সময় শাড়ি পড়েন । অনেক বর বা বরের অভিভাবক বিয়ের সময় কনের শাড়ি পড়াকে ভাল চোখে দেখেন না ।
এই বিষয়গুলো আমাকে ভাবতে বাধ্য করে । কারণ আমার অনেক লেখাতেই মেয়েদের সমস্যা উঠে আসে । সমস্যার কথা যেহেতু বলি, তাহলে সমাধান কেন দিবো না ? সুতরাং আমাকে এসব কারণে শাড়ি সম্পর্কে ভাবতে হচ্ছে ।
সূচনা :
ইসলাম সহজ-সরল জীবন বিধান । ইসলামেই আছে সব সমস্যার সমাধান । তাহলে শাড়ির ক্ষেত্রেও সমাধান রয়েছে ।
আমার অভিমত :
১. দেখুন, আমি আমার কোন পোস্টেই বলি নাই : অমুক পোষাক যে পড়বে সে জান্নাতী । আর অমুক পোষাক যে পড়বে সে জাহান্নামী । জান্নাত ও জাহান্নামের ব্যাপারটি নির্ধারণ করার মালিক এক মাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ।
২. তবে বাংলাদেশে বেশীর ভাগ ছেলে ইসলামবিরোধী শক্তির তাবেদার । তারা তাদের মা-বোন-স্ত্রী-মেয়েদের ইসলামের নীতিমালা অনুযায়ী চলার জন্য দিক নির্দেশনা দেয় না । তারা ঘরে বাহিরে তাদের অধিনস্হ মেয়েদের সাথে দাইয়ুস-দের মতো চলাফেরা করে । তারা বিদেশের একশ লোকেশনে তাদের স্ত্রীদের একশ পাতলা শাড়ি পড়িয়ে তাদের স্ত্রীদের দিয়ে অশ্লীল গান চিত্রায়ন করে টেলিভিশনে প্রচার করে থাকে ও তাদের অধীনস্হ মেয়েদের বেআব্রুভাবে সর্বত্র বিচরণ করার জন্য উৎসাহ-অণুপ্রেরণা দিয়ে থাকে । আর এসব শাড়ি পড়া মহিলাকে দেখে কিছু ছেলে তাদের অধিনস্হ মেয়েদের বাড়িতে বেআব্রুভাবে হিন্দু মেয়েদের মতো শাড়ি পড়াতে অভ্যস্হ করে তুলে । অথচ আল্লাহর রাসুল সা. বলেছেন, যে যেই জাতিকে অনুসরণ করবে তার হাসর হবে সেই জাতির সাথে । সুতরাং যদি আমাদের মেয়েরা শাড়ি পড়ে তাহলে ইসলামের নীতিমালা অনুসরণ করেই পড়তে হবে ।
৩.আমরা যদি ইসলামের ইতিহাস দেখি, তাহলে দেখতে পাবো : মুহাম্মদ (সা.) - এর সহচর (রা.) - বৃন্দ বিভিন্ন দেশে ইসলাম প্রচার করেছেন এবং ইসলামের নীতিমালা অবলম্বন করেই সেসব দেশের খাদ্যাভ্যাস, পোষাক ও সংস্কৃতি গ্রহণ করেছেন । সুতরাং শাড়ি-কেও ইসলামী নীতিমালার আলোকে ব্যবহার করলে মোটেও দোষণীয় কাজ হবে না ।
উপরন্তু সভ্যতার নীতিই হলো : দিবে ও নিবে । মুসলিমরা ভারতীয় উপমহাদেশীয় সংস্কৃতি হতে গ্রহণযোগ্য অনেক কিছুই নিবে এবং ভারতীয় সংস্কৃতি-তে অনেক বিষয় প্রবেশ করাবে । এভাবেই ভারতবর্ষীয় মুসলিমরা সভ্যতার গর্বিত অংশীদার হবে এবং মানব সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে ।
বাংলাদেশে মেয়েদের সাধারণ পোষাক সম্পর্কে আমার অভিমত :
আমার মতে, বাংলাদেশের মেয়েদের সাধারণ পোষাক হওয়া উচিত ফুল হাতা ঢোলা লং কামিজ, ঢিলা শোলায়ার এবং মাথা হতে বুক পর্যন্ত ঢাকা যায় এমন ওড়না । http://www.facebook.com/SalwarKameezHijab/
আমি সেলোয়ার, কামিজ ও ওড়না পোষাকটাকে গুরুত্ব দিচ্ছি অনেকগুলো কারণে :
১.বাংলাদেশের মেয়েরা সাধারণত মাঝারি গড়নের । উপরন্তু বেটে মেয়েদের সাথে আমার আলোচিত পোষাক মানসই । আর বেটে ও মোটা মেয়েদের জন্য শাড়ি মানানসই পোষাক হতে পারে না ।
২.মেয়েরা এ পোষাক পড়ে সাবলীলভাবে চলাফেরা করতে পারে ।
৩.দ্রুত প্রস্তুত হয়ে কাজের জন্য বের হওয়া যায় ।
৪.সাশ্র্রয়ী ও আরামদায়ক ।
৫. সেলোয়ার, কামিজ ও ওড়না - এর ব্যাপারে মুহাম্মদ (সা.) -এর পরিবারভুক্ত মহিলারা পড়তেন । তবে ইতিহাসের বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত দ্বারা প্রমাণিত মুহাম্মদ (সা.) এর সময়ে নারীরা বিভিন্ন ধরণের পোষাক পড়েছেন ।
৬.প্রত্যেকটা জাতির ছেলে-মেয়েদের নির্দিষ্ট পোষাক আছে । যেমন : বার্মার মেয়েদের দেখলেই চেনা যায় তারা বার্মার মেয়ে । কারণ তাদের পোষাকের ধরণই বলে দিচ্ছে তারা বার্মার মেয়ে । ভারতের চেন্নাই শহরে মেয়েদের দেখলই বোঝা যায় এরা হিন্দু না মুসলিম মেয়ে । আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলেগুলোকে দেখলে বোঝা যায় ছেলেটা হিন্দু না মুসলিম । কারণ তাদের পোষাকের ধরণ ও হাব-ভাব বলে দেয় তারা কোন সম্প্রদায়ের । তাহলে আমরা বাংলাদেশী মুসলিমরা কেন ড্রেস কোড অনুসরণ করবো না ?
ইসলামের আলোকে শাড়ি ব্যবহার করার নিয়ম :
ইসলাম মেয়েদের যে কোন ধরণের পোষাক পড়াকে অনুমোদন দেয় । তবে শর্ত হলো সে সব পোষাক অবশ্যই ইসলামের নীতিমালা অনুযায়ী হতে হবে ।
ইসলামের আলোকে শাড়ি পড়ার কিছু ধরণ আমরা লক্ষ্য করবো এবং আমরা ছেলেরা আমাদের সাথে সম্পৃত্ত মেয়েদের এভাবে শাড়ি পড়ার জন্য উপদেশ দিবো বা তাদের এভাবে শাড়ি পড়ার জন্য সহায়তা করবো ।
বাড়িতে এভাবে শাড়ি পড়তে হবে ।
বাড়ির বাহিরে যেয়ে সমাজসেবামূলক কাজ করতে গেলে ছবির বাম দিকের মেয়েটার মতো শাড়ি পড়তে হবে ।
ফেসবুকের প্রোফাইলে পিকের জন্য, চাকুরীর ইনটারভিউতে অংশ নিতে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ানোর সময় বা অন্য কোন কোন কাজের জন্য এভাবে শাড়ি পড়া যেতে পারে । অন্যথায় চলতি নিয়ম অনুযায়ী শাড়ি পড়লে নামাজ পড়া অশুদ্ধ হয়ে যাবে । কারণ চলতি নিয়ম অনুযায়ী শাড়ি পড়লে শরীর ভালভাবে ঢেকে রাখা যায় না ।
বিয়ের কনের শাড়ি পড়ার ধরণ যেমন হওয়া উচিত :
ব্লাউজের হাতা অবশ্যই ফুল হাতা হতে হবে ।
মাথা স্কার্ফ ও আঁচল দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে । এজন্য বিশেষ ধরনের তিনটা পিন ব্যবহার করা যেতে পারে ।
মাথায় মানানসই অলংকার ব্যবহার করা যাবে ।
শাড়ি পড়ে বরের সাথে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে ঘোড়াফেরা করা যাবে । বিয়ের অনুষ্ঠানে নিরব নিথর হয়ে বসে থাকা অনুচিত । কারণ এটা ইসলাম অনুমোদন করে না । আর বরের মুখে রুমাল থাকা ইসলামবিরোধী ।
বিয়ের শেষে বরের সাথে মার্জিতভাবে চলাফেরা করতে হবে । পোষাকের ক্ষেত্রে উভয়কেই মার্জিত হতে হবে এবং ইসলামের নীতিমালা অনুসারে পরিবার গঠণ করে ইসলামী সমাজ গঠণ করার কাজ করে যেতে হবে ।
বিয়ের পর পরস্পরের প্রতি আস্হা ও ভালবাসা বৃদ্ধি করার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে । এলক্ষ্যে একে অপরকে লাল গোলাপ বা বিভিন্ন উপহার দিতে পারে ।
মান্যবর আপুবৃন্দ ! ইসলামের নীতিমালা অনুযায়ী কীভাবে শাড়ী পড়তে হয়, তা জানার জন্য এই ভিডিওটা দেখতে পারেন ।
http://www.dailymotion.com/video/xwgzh3_how-to-tie-a-sari-hijab-friendly-style_lifestyle
মান্যবর আপুবৃন্দ ! ইসলামের নীতিমালা অনুযায়ী কীভাবে শাড়ী পড়ে বিয়ের অনুষ্ঠানে কীভাবে যেতে হয়, তা জানার জন্য এই ভিডিওটা দেখতে পারেন ।
http://www.dailymotion.com/video/xwh3c5_sari-hijaabified-for-wedding-ceremony_lifestyle
উপসংহার :
যদি কেহ ইসলামের নীতিমালা অনুযায়ী কোন মেয়ে শাড়ি পড়ে, তাহলে শাড়ি ইসলামী সমাজে গ্রহণযোগ্য হবে । এব্যাপারে কোন ইসলামী তাত্ত্বিক কখনো আপত্তি তোলবেই না, বরং এই বিষয়টাকে ইতিবাচকভাবে দেথতে অভ্যস্হ হবে ।
বিশেষ দ্রষ্টব্য :
১.ইদানিং মেয়েদের প্রতি নির্যাতন আশংকাজনক হারে বেড়ে গিয়েছে ।এই পেজে মেয়েরা কীভাবে কর্মক্ষেত্রে আত্মরক্ষা করবে - তার বিভিন্ন কৌশল ভিডিও ও ছবির মাধ্যমে দেখানো হয়েছে এবং এসম্পর্কে মেয়েদের বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে ।
http://www.facebook.com/SelfdefenseTechniquesForFemales
"মেয়েদের জন্য আত্মরক্ষা কৌশল"
সবাইকে এই পেজটাকে লাইক করার জন্য ও সুচিন্তিত মন্তব্য করার জন্য বিনীত অনুরোদ করা হলো ।
২.তরুণ সমাজকে বিয়ের আগে প্রেম না করে তাড়াতাড়ি বিয়ে করার প্রতি উৎসাহিত করাই এই পেজের লক্ষ্য ।
http://www.facebook.com/WeWillMarryEarly
"আমরা প্রেম করবো না, বিয়ে করবো তাড়াতাড়ি"
৩. এই পেজ মুসলিম পরিবারভুক্ত ভাই তার বোনকে কীভাবে ইসলামের নীতিমালা অনুযায়ী চলবে সে বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিবে এবং বোনদের প্রতি ভাইয়ের দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন করবে ।
http://www.facebook.com/pages/%E0%A6%AC%E0%A7%8B%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A6%BF-%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A7%9F%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%89%E0%A6%AA%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6/506620052704626?ref=hl
বোনের প্রতি ভাইয়ের উপদেশ
৪. Islamic New Year Celebration will be a great attempt to rebuild the Muslim Unity in the world.This page promote to celebrate this occasion at the same day in the whole world and this page will build up awareness to follow the Islamic Calender officially in the all Muslim countries and Muslim communities.
সারা বিশ্বব্যাপী হিজরী নববর্ষ পালন মুসলিম এক্য ও সংহতিকে সুদূর করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেই না, বরং ইংরেজী ও বাংলা নববর্ষ কেন্দ্রীয় কুফরী ও শিরকী কাজ হতে মুসলিমদের বিরত রাখবে । আমাদের এই পেজ সারা বিশ্বব্যাপী ইসলামী নববর্ষ পালন করার উদ্যোগকে পৃষ্ঠপোষকতা করবে এবং মুসলিম দেশগুলোতে ও মুসলিম সম্প্রদায়গুলোর মধ্য একক ইসলামী ক্যালেন্ডার সর্বক্ষেত্রে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সচেতনতা বৃদ্ধি করবে ।
http://www.facebook.com/pages/Islamic-New-Year-Celebration/386930068065104
৫. This page is for those girls and women who like to be Muhajjabahs with the help of Salwar, Kameez and Orna (Bangladeshi Dupatta). This page will promote Islamic fashions and styles for girls and women in the easiest ways. These fashions and styles will be comfortable and the cheaper. This page will bring a New Horizon in Fashion and Design in apparel sector.
এই পেজ যেসব মেয়ে ও মহিলা সেলোয়ার কামিজ এবং ওড়নার মাধ্যমে হিজাবী হতে আগ্রহী হতে চান তাদের জন্য । এই পেজ সহজ পদ্ধতিতে মেয়ে ও মহিলাদের জন্য ইসলামী ফ্যাসন ও স্টাইল প্রদর্শন করবে । এসব ফ্যাসন ও স্টাইল তাদের জন্য আরামদায়ক ও সাশ্রয়ী হবে ।
http://www.facebook.com/SalwarKameezHijab/
আমি আশা করি, আপনারা আমার এসব পেজে লাইক করলে আপনাদের কোন ক্ষতি হবে না । বরং আপনাদের উপকারই হবে ।
বিষয়: বিবিধ
১২৪৮৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন