বাংলাদেশের চিরায়ত নারী এবং পর্দানশীল নারীরা (২য় পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ০৩ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১১:৫৪:০৮ রাত
এরা বাংলাদেশের চিরায়ত নারীর প্রতিচ্ছবি হতে পারে না
পটভুমি :
ব্লগার লোকমান বিন ইউসুপ-সহ অনেকে ফেসবুকে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রী সংস্হা নামক সংগঠণ নিয়ে স্যাটাস দিচ্ছিলেন ও সেসব স্যাটাসে মন্তব্য করছিলেন। আমি তাদের অনেক বিষয়ের সাথে এক মত ছিলাম না । এজন্য আমি এই ধারাবাহিক লেখাটা লেখা শুরু করি ।
সময় থাকলে আজকের পর্বটা পড়ার আগে প্রথম পর্বটা পড়ে নেওয়া যেতে পারে :
বাংলাদেশের চিরায়ত নারী এবং পর্দানশীল নারীরা (১ম পর্ব)
http://www.bdtomorrow.com/blog/blogdetail/detail/1864/fakhrul/32602
আজকে যে লেখাটা বিডিটুমরোতে দিয়েছি তা মূলত সোনার বাংলাদেশ ব্লগে ১৫ জানুয়ারী ২০১৩ তারিখ “ইসলাম মানবতার ধর্ম : এই বিষয়টি এক শ্রেণীর ছেলে এবং কথিত পর্দাশীল মেয়েরা বুঝে না
” শিরোনামে দিয়েছিলাম । লেখার লিংকটা ছিল । http://sonarbangladesh.com/blog/fakhrul/144657 এখন এই সাইটটা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গুরুত্ব এবং প্রসঙ্গ বিবেচনা করে সেই লেখাটা আজ দিলাম । তবে শিরোনাম বদল হয়েছে মাত্র ।
এই লেখার সাথে সম্পৃত্ত একটা মুভি ও ফেসবুক স্যাটাস ছিল এই লিংকে : https://www.facebook.com/photo.php?v=470474716337104&set=vb.368963569811851&type=2&theater । । এই লিংকের স্যাটাস এবং বিভিন্ন মন্তব্য জামায়াত-শিবিরে জন্য স্পর্শকাতর বা বিষয়টি মওদুদী দর্শনের অসারতা প্রমাণ করে বলে যা জামায়াত-শিবিরের লোকরা মুছে ফেলেছে বা ফেলতে বাধ্য করেছে ।
কিন্তু এই স্যাটাসের সাথে সম্পৃত্ত সর্ট ফ্লিম এবং বিভিন্ন মন্তব্য আমার সংগ্রহে থাকায় আমি এই লেখাটি আবার দিতে সক্ষম হচ্ছি ।
কাল দেখলাম, লোকমান বিন ইউসুপ ভাই ছাত্র শিবির এবং ছাত্রী সংস্হা সম্পর্কে ফেসবুকে এযাবত কালের শ্রেষ্ঠ একটা মন্তব্য করেছিলেন । কিন্তু তিনি শিবিরের কিছু কর্মীর চাপে এই স্যাটাস মুছে ফেলেছেন । আমি তাকে অনুরোদ করছি, সেই স্যাটাসটি আবার একটু পরিমার্জিত ও সংশোধন করে আবার দিন । এর ফলে লোকেরা অনেক অজানা তথ্য জানতে পারবে ।
মূল লেখা :
আজ ( জানুয়ারী ২০১৩ এর ২য় সপ্হাহের কোন এক দিন ৮ হতে ১৬ জানুয়ারী পর্যন্ত স্যাটাসটি ছিল ) ফেসবুকে একটা ভিডিও দেখলাম । ভিডিওটির বিষয়বস্তুতে পরে যাচ্ছি । এর আগে আমি আমার নিজের ব্যক্তিগত জীবনের একটা ঘটনা শেয়ার করছি । ঘটনাটা হলো :
যখন আমি কলেজে পড়ি, তখন আমি এক বার ভীষণ অসুস্হ হয়ে পড়েছিলাম । সেই সময়টায় বাড়িতে মেহমান আসলো । মেহমানরা আর কেহ নয় । তাদের একজন আমার আম্মার বান্ধবী । প্রায় ১০ বছর পর এসেছেন দেখা করতে । আর একজন আম্মার বান্ধবীর প্রতিবেশী এক মহিলা ও তার এক মাত্র মেয়ে । মেয়েটি আমার সম বয়সী । আমার আম্মা ভীষণ খুশি তার বান্ধবীকে দেখে । তারা কথা বলছেন খুব আনন্দের সাথে । আমি আমার রুম হতে তাদের হাসির শব্দ শুনতে পাচ্ছি । আমার আম্মার কাছে তারা জানতে চাচ্ছেন, আমরা ভাই-বোনরা কোথায় পড়াশোনা করি । আর পড়াশোনায় আমরা কেমন করছি ।
বাড়িতে আমি আর আমার আম্মা । বাকি সব ভাই বোন স্কুলে ।
হঠাৎ মেয়েটি আমার রুমে আসলো । পানির বালতি নিয়ে । কোন ভুমিকা ছাড়াই বলা শুরু করলো
: এই ভদ্র ছেলে । তুমি নাকি প্রচন্ড ইসলামিক মাইন্ডেড ছেলে । তুমি নাকি…… ( আমি জ্বরে প্রলাপ বকছিলাম আর আম্মা পানি দাও মাথায় । কথা বাদ দাও । ....বলে যাচ্ছিলাম । আর আমি এজন্য তার কথার দিকে পুরোপুরি নজর দিতে পারছিলাম না ।)
মেয়েটি কথা বলেই যাচ্ছিলো । ইন্টার পরীক্ষার রেজাল্ট দিবে । বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং করছি কি না জানতে চাচ্ছিলো । আমি কথা বলতে চাচ্ছিলাম না দেখে সে বল্লো
: আমাকে তোমার মাথায় পানি দিতে পাঠানো হয়েছে । আমি এজন্য তোমার মাথায় পানি দিবো । এতে তোমার আপত্তি নেই তো । ভদ্র ছেলে ! মানে ইসলামীক মাইন্ডেড ছেলে !
কথাগুলো মিছরীর ছুরির মতো আমার কানে বাধছিলো । তারপরও বল্লাম : পানি যখন দেওয়ার জন্য এলে, তাহলে পানি দাও । মেয়েটি তো পানি দিচ্ছিলো না, মনে হলো আমার মাথার চুল নিয়ে খেলছে । পরে বাধ্য হয়ে বল্লাম : ভালভাবে পানি দাও । পানি দিতেই তো এসেছো ।
মেয়েটি বল্লো : না কথা বলতেও এসেছি । কারণ বড়োদের মাঝে বসে থাকতে ভাল লাগছে না । তারা শুধু মেয়েদের খারাপ দিকগুলো আলোচনা করছে । আর তাদের বিষয়ে কথা বলছে । আমি ভীষণ আন ইজি ফিল করছি ।
আমি বল্লাম : আমার কাছে এসে ইজি ফিল করা যাচ্ছে কি ?
মেয়েটি বল্লো : হ্যা । আর তোমার কেমন লাগছে এখন ?
আমি বল্লাম : মাথায় পানি দেওয়ার পর জ্বর কমে আসলো বলে মনে হচ্ছে । আর সামান্য হলেও স্বস্তি পাচ্ছি ।
মেয়েটি বল্লো : আমি তোমাকে চিনি । তুমি ধানমন্ডির সেন্ট্রাল রোডের একটা বাড়িতে যাও । সেখানেই আমাদের বাসা । আমার পড়ার রুম হতে রাস্তার সবই লক্ষ করা যায় । তোমাকে মাঝে মধ্যে এই বাড়ির কাছের মসজিদটায় তোমাকে নামাজ পড়তে দেখি । তুমি বেশ কিছু খোচা খোচা দাড়িওয়ালা ব্যাটাদের সাথে কথা বলো । তুমি নিশ্চয়ই শিবির । কারণ এই ব্যাটাগুলো শিবির ।
আমি বল্লাম : না । তারা আমাকে বিভিন্ন বই দিচ্ছে । আমি সেগুলো পড়ি । আর শিবির হতে হলে অনেক ধাপ পেড়িয়ে যেতে হয় । প্রথমে বন্ধু, তারপর সমর্থক, কর্মী,সাথী,সদস্য এধরনের বিভিন্ন ধাপ পেড়িয়ে শিবির হতে হয় । আমি সেখানে যাই । কারণ আমার এক বন্ধু সেই মেচে থাকে । আর আমি তাকে নিয়ে ঢাকা কলেজের সামাদ স্যারের কাছে রসায়ন পড়তে যেতাম ।
মেয়েটি বল্লো : তাহলে তুমি তার কোন একটা ধাপে আছো ?
আমি বল্লাম : নাই । আবার আছিও । থাকলে তো কোন ব্যাপার ।
মেয়েটি বল্লো : হ্যা । অনেক সমস্যা । দেখোনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় হতে কীভাবে শিবির মুক্ত করা হয়েছে । কত মেধাবী ছেলের পড়াশোনা নষ্ট হলো । আমার এক চাচাতো ভাইও এদের দলে ছিলো । আর শিবির যারা করে তারা সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ।
আমি এই কথা শুনে মেয়েটিকে বল্লাম : সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার জন্য আমি কোন সংগঠণ করি না বা করবোও না । আর আমার কাছে ছাত্রনং অধ্যনং তপ – কথাটা গুরুত্বপূর্ণ ।
মেয়েটি সাথে সাথে বল্লো : পড়াশোনার কথা বল্লে - তা ঠিক আছে । কিন্তু এসব সংগঠণ করলে পড়াশোনা হয় না । তা আমার এক চাচাতো ভাই হতে দেখেছি । বাস্তবতা হলো এসব সংগঠণ যারা করে তারা মেয়েদের সাথে কথা বলে না । তারা শুধু তাদের পরিচিত গন্ডির মধ্যে চলাফেরা করে । এমন কি তারা তাদের সাথে একই ক্লাসে পড়ুয়া মেয়েদের কথা বলে না । আর শিবিরনীরাও ছেলেদের সাথে কথা বলে না ।
আমি বল্লাম : শিবিরনী আবার কি ? মেয়েটির উত্তর : শিবির পুং লিঙ্গ আর স্ত্রী লিঙ্গ হলো শিবিরনী ।
আমি বল্লাম : শিবিরনী বলে কিছু আছে তা এই প্রথম জানলাম ।
মেয়েটি বল্লো : ইসলামী ছাত্রী সংস্হা ।
আমি বল্লাম : আমি এই সংগঠণের নাম প্রথম জানলাম ।
মেযেটি বল্লো : তাহলে তুমি এখনও শিবির হওনি । আমার চাচাতো ভাইটা শিবির করার পর আমাদের দেখলে সাভাবিকভাবে কথাও বলতো না ।
আসলেই আমি শিবির হইনি । আমাদের সময় আমাদের কলেজে বেশ কিছু ছেলে শিবির করতো । তারা তাদের বিভিন্ন ধরণের সাংগঠণিক কাজ করতো । তাদেরও দেখতাম তারা যতটা সম্ভব মেয়েদের এড়িয়ে চলতো । আর আমি ছিলাম বরাবরই উল্টা । এজন্য সম্ভবত আমি তাদের পছন্দের লোক ছিলাম না ।
আমাদের কথার এই পর্যায়ে আমার আম্মার বান্ধবী আসলেন । তিনি আমাকে বিকেলে আম্মাকে সাথে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যেতে বল্লেন । ( আজও আমি অসুস্হ হলে আম্মাই আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান । ) আর তিনি আমাকে এই মেয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন ।
ভিডিও প্রসঙ্গ :
এই ভিডিওটা দেখে প্রায় তের বছর পর এই ঘটনাটা মনে পড়লো । এই মেয়েকে আমি ভুলেই যেতে বসছিলাম । এর পর তার সাথে দেখাও হয়নি বা কথাও হয়নি । তবে তার সাথে এই কথপোকথন আমার মনে ভীষণ দাগ কেটেছিলো । ভিডিওটা ছিল এই লিংকে :
https://www.facebook.com/photo.php?v=470474716337104&set=vb.368963569811851&type=2&theater যা শিবির কর্মীরা মুছে ফেলেছে । তারপরেও ইউটিউব এবং ডেইলি মোশানে ভিডিওটা আছে ।
ভিডিওটার ইউটিউবে বর্তমান লিংক (প্রায় আট মিনিট): http://www.youtube.com/watch?v=N5IjInYNw3A
যাদের সময় কম তারা সংক্ষিপ্ত ভার্সন দেখতে পারেন (সাড়ে তিন মিনিট ): http://www.youtube.com/watch?v=jgn0eY8hbbQ
ভিডিওটার ডেইলি মোশানে বর্তমান লিংক : http://www.dailymotion.com/video/xwrsxr_behind-the-walls_shortfilms#.UPU-TVJe_Mo
যাক, এই ভিডিওটা আমার এই অতীতের এই ঘটনাকে স্মরণ করিয়ে দিল । আমি চলে গিয়েছিলাম সেই তের বছর আগের সেই মুহুর্তগুলোতে ।
এবার আমি ভিডিওটার বিষয়বস্তুর বিশ্লেষণে যাচ্ছি । ভিডিওটি মূলত সর্ট ফ্লিম । এর নাম Behind the walls
ভিডিও-তে দেখতে পাচ্ছি, নির্দিষ্ট গন্তব্য যাওয়ার জন্য চোখ দুটো দেখা যায় এমন নিকাব ও কালো আবআয়া (সৌদি আরব, আরব আমিরাত - এর জাতীয় পোষাক হিসেবে মেয়েদের জন্য নির্ধারিত ।) পড়া এক আপু বহুতল ভবনের এলিভেটারে অবস্হান করছেন ।
এলিভেটর কয়েক তলা যাওয়ার পর এক ভাইয়া এলিভেটরে প্রবেশ করলেন । এপর্যায়ে এলিভেটরে এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে এবং তারা দুজনেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন না ।
হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যায় । উদ্ধারকারী দল এসে তাদের উদ্ধার করতে দেরী হওয়ায় এক সময় ছেলেটা এলিভেটর হতে বের হওয়ার চেষ্টা করে । মেয়েটা নির্বিকারভাবে বসে থাকে । ছেলেটা চেষ্টা করতে যেয়ে হাল ছেড়ে দেয় ।
এক সময় ছেলেটা পানি পান করে এবং মেয়েটাকে পানি পান করতে অনুরোদ করে । মেয়েটি প্রথমে পান করতে রাজি না হলেও একসময় নিজেকে আড়াল না করেই নিকাব খুলে পানি পান করে । কারণ বিপদের সময় এত কিছু খেয়াল রাখা প্রায়ই সম্ভব হয় না ।
ছেলেটি লক্ষ্য করে এলিভেটর খোলার ব্যর্থ চেষ্টা করার সময় সে হাতে আঘাত পায় । এজন্য তার হাত হতে রক্ত ঝড়ছে । ছেলেটি তার ব্যাগ হতে রক্ত বন্ধ করার উপকরণ খুজতে শুরু করলো । কিন্তু সে কিছুই পেলো না । তার হাত হতে রক্ত বের হওয়াও বন্ধ হচ্ছিলো না । ছেলেটি কাঁদতে শুরু করলো ।
এমন সময় হঠাৎ করেই মেয়েটি তার নিকাব খুলে ছেলেটির আঘাত পাওয়া স্হানে স্বউদ্যোগে নিকাব দিয়ে বেধে দেয় । এর ফলে মেয়েটির মাথা ও মুখ অনাবৃত হয়ে যায় । ছেলেটির আঘাতের স্হান বেধে দেওয়ায় ছেলেটি স্বস্তিবোধ করতে শুরু করে । এক সময় উদ্ধারকারী দল আসে ।
আমি মনে করি, এই ভিডিও-তে মেয়েটি তার নিকাব খুলে যে কাজ করেছে - তা ইসলাম সম্মত । এবং এটাই সত্যিকার ইসলামের শিক্ষা ।
এই ভিডিও সম্পর্কে কিছু লোকের অনুভতি :
https://www.facebook.com/photo.php?v=470474716337104&set=vb.368963569811851&type=2&theater ফেসবুকের এই লিংকে অনেকে মন্তব্য করেছেন । তার দুইটা মন্তব্য উল্লেখ করছি :
১. একটা স্মৃতি মনে পড়ে গেলো । ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে একবার সংঘর্ষে ৮০জনের বেশি ছাত্রশিবির নেতাকর্মী আহত হয়...তাদের কে ঘাড়ে করে, ভ্যানে টেনে হাসপাতালে নিয়ে যায় বেপর্দা মেয়েরা, কিন্তু ছাত্রীসংস্থার একটি বোনও এগিয়ে আসেনি..তাদের পর্দা ভঙ্গ হবার ভয়ে
...এই ভিডিওটি একটি পর্যায়ে আমি সেরকমই ভেবেছিলাম...যে ছেলেটি তাকে নিজের ভাগের পানিটুকু শেয়ার করলো তাকে সে কোনও সাহায্য করছে না! এটি ইসলাম হতে পারে না
...সবেশষে সে তার নিজের সাথে যুদ্ধ করে বিজয়ী হলেন...দ্যাট ইজ ইসলাম...মানুষ মানুষের জন্য, ধর্মও মানুষের জন্য
...মানুষকে বাদ দিয়ে ধর্ম নয়
...থ্যাংকস্ ভিডিও নির্মাতাকে
...গায়ের প্রতিটি রোম কাটা দিয়ে ওঠে
...তবে এটি খণ্ড আকারে অর্থাৎ মেয়েটির নেকাব খুলে পা বেধে দেয়ার আগপর্যন্ত কাট করে যে কেউ বোরকার প্রতি পর্দানশীন নারীদের প্রতি ঘৃণা ছড়াতে চেষ্টা করতে পারে
....তাই পুরো ভিডিওটার এক কোনায় সর্বশেষ দৃশ্যটা আইকন আকারে দিয়ে দেয়া যেতে পারে...
এই অনুভতি প্রকাশ করেছেন : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মামুন ভাই ( সাদাসিদা কথা )। http://www.facebook.com/mamundtv
২. আরেকটি মন্তব্য : Live and let live. ইসলাম মানুষকে শান্তি ও সৌহার্দের মধ্যে সবাইকে বসবাস করতে বলে । শান্তি ও পরোপকারমূলক দৃষ্টিভঙ্গি-ই সর্বদা মনে জাগরূক রাখাই হলো একজন মুসলিমের বৈশিষ্ট্য ।
যে বা যারা মওদুদীর "পর্দা ও ইসলাম" বইটা নিয়মিত পড়বে তারা অনেক বিষয়ে তো কনফিউজ হবেই না, বরং চরম বিভ্রান্তিতে পতিত হবে । আর এই চরম বিভ্রান্তি অনেক সময় সাভাবিকতা হতে মানুষকে দুরে নিয়ে যায় ।
আমার অভিমত :
ফেসবুকে তুরস্কের শাসক দল বা এরদুর্গানের দলের মেয়েদের বেশ কিছু দেখলে বিভ্রান্ত হতে হয় । এসব মেয়ে তুরষ্কের ইসলামপন্হী শাসক দলের সমর্থক । কিন্তু এসব মেয়ের অনেকে নিকাব তো দুরে থাক যতটুকু শরীর ঢেকে নামাজ পড়া উচিত সে পরিমান শরীরও ঢাকেননি । কারণ তারা জন্মের পর এভাবেই বেড়ে ওঠেছে আর তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই ধর্মীয় পরিচিতিমূলক পোষাক পড়া নিষিদ্ধ । যেমন : Atatürk University এমন কি তারা নামাজ পড়ার সময় প্রায়ই এধরণের পোষাক পড়ে নামাজ পড়ে । তবে কয়েক মাস হলো হিজাব বা শালীন পোষাক পড়ার উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে ।
তুরস্কের শাসক দলের সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরছি । ১৯৬৯ সালে নাজিমুদ্দীন এরবাকান "মিল্লি গুরুস" নামে একটা ইসলামী সংগঠণ বানান । তারপর এই সংগঠণ National Order Party ও National Salvation Party নাম ধারণ করে । ১৯৯৮ সালে এসে Welfare party । Welfare party ২০০২ সালে এসে দুই ভাগ হয় । একটা অংশ Virtue Party বা Felicity party বা Saadet party নাম ধারণ করে । এসংগঠণের নেতাদের সাথে জামায়াতের কিছু নেতার গলায় গলায় ভাব । এজন্য এদলের লোকরা গোলামে আযমের মুক্তির জন্য তুরস্কে ১০ হাজার লোক জড়ো করে মিছিল ও সমাবেশ করেছে । অপর অংশ Justice and Development Party (Adalet ve Kalkınma Partisi : AKP) নামে পরিচিত । এই দল শাসক দল এবং এরদুগান তার চেয়ারম্যান ।
সুতরাং আমাদের স্হান কাল ও অবস্হা বিবেচনা করতে হবে ।
উপসংহার :
আমাদেরকে মানবিক দৃষ্টিবোধ সম্পন্ন ধার্মিক হতে হবে । কারণ
১.ইসলাম এসেছে মানুষের জন্য । নারী পুরুষ সকলেই মানুষ । এজন্য রাসুল সা. বলেছেন, “নারী পুরুষের সম অংশিদার ।“ তাই সংযম ও অধ্যবসায়ের সাথে জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ অপরিহার্য ।
২.আমরা সহিস হাদিসগ্রন্হগুলোতে দেখতে পাচ্ছি, নারী-পুরুষ এক সাথে যুদ্ধ করছে । আর যুদ্ধে আহতদের নারীরা সেবা করছে । আমরা কি এসব হাদিস ভুলে গেলাম । না আমরা এসব হাদিস পড়ছি না । আমরা যদি এসব হাদিস চর্চা না করি – তাহলে আমরা কীভাবে শ্রেষ্ঠ মুসলিম হবো ।
৩. ইসলাম মানুষকে প্রজ্ঞাবান ও দুরদৃষ্টি সম্পন্ন হওয়ার কথা বলে ।
৪. রাজনীতি সচেতন ও ইসলামপন্হী বলে পরিচিত ছেলেদের উচিত আমাদের দেশের উন্নায়ন ও অগ্রগতির স্বার্থে ও ইসলাম প্রচারের জন্য মেয়েদের সাথে যোগাযোগ তৈরী করা । আর তাদের এক সাথে চলাফেরা করা উচিত এবং তাদের সাথে সম্পর্কের বন্ধন শক্তিশালী করা উচিত । কারণ মুসলিম নারী-পুরুষ সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেন :
ঈমানদার নর-নারী পরস্পর বন্ধু । তারা সৎকাজের আদেশ দেয় এবং অসৎ কাজের নিষেদ করে, সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় ও আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্য করে, তাদের আল্লাহ দয়া করেন । আল্লাহ শক্তিমান তত্ত্বজ্ঞানী । (কুরআন ৯ : ৭১) ।
৫. মহিলাদের চেহারা দেখা ধর্ম বিরোধী নয় । তবে সবাইকে চলাফেরা, কথাবার্তা এবং সব ধরণের মানবীয় কাজে শালীনতা বজায় রেখে চলতে হবে ।
ভিডিওটি দেখতে এখান হতে ডাইনলোড করে বার বার দেখুন এবং সামান্য হলেও নিজেকে মানবিকবোধ সম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলুন :
ভিডিওটার ইউটিউবে বর্তমান লিংক : http://www.youtube.com/watch?v=N5IjInYNw3A
সংক্ষিপ্ত ভার্সন : http://www.youtube.com/watch?v=jgn0eY8hbbQ
বিষয়: বিবিধ
৪১৪১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন