রাজতান্ত্রিক সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় ধর্ম বিশ্বাস হলো ওহাবীবাদ ও সেক্সীজম (১ম পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ০২ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১২:৩৮:৫৪ রাত
সূচনা :
ইসলামে রাজতন্ত্র অগ্রহণযোগ্য । কিন্তু সৌদি আরব রাজতান্ত্রিক দেশ । উপরন্তু সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় ধর্ম বিশ্বাস হলো ওহাবীবাদ ও সেক্সীজম । তিরমিজি শরীফে রাজতন্ত্রকে জুলুম বা জুলুমতন্ত্র বলা হয়েছে । আর বুখারী শরীফে স্পষ্টতই: সৌদি শাসকদের ও তার সমর্থক আলিমদের শয়তানের শিং বলা হয়েছে । আমরা এই নতুন ধারাবাহিক নিবন্ধে এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানবো ।
সৌদি আববের প্রতিষ্ঠাতা :
সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতা রাজা ইবনে আব্দুল আজিজ ইবনে সৌদ পনের বছর বয়সে বিয়ে করার পর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ২২ টা বিয়ে করেন । তার ছেলে-মেয়ে কত জন তিনি তাও জানতেন না । কোন হিসেবে তার ৩৭ টা ছেলে আর কোন হিসেবে ৪৫ টা ছেলে তিনি জন্ম দেন এসব মহিলাদের মাধ্যমে । তার বয়স যখন ১৮ তখন তার প্রথম সন্তান তুর্কি জন্ম গ্রহণ করেন ।
এই নাপাক ও অপবিত্র লোকদের এবং সৌদি আরবের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে দেখুন : http://www.bdtomorrow.com/blog/blogdetail/detail/1864/fakhrul/13231
ইসলাম ও মানবতার দুষমণ এবং ইসলামবিনাসী শক্তির তাবেদার সৌদি রাজপরিবারের ইতিহাস
http://www.bdtomorrow.com/blog/blogdetail/detail/1864/fakhrul/27711
শয়তানের শিং সম্পর্কিত হাদিস :
অত্যাচারী সৌদি শাসক সম্পর্ক সহিহ হাদিস রয়েছে । হাদিসগুলোতে তাদের শয়তানের শিং বলে অভিহিত করা হয়েছে ।
১. হযরত ইবনে উমর রা. বর্ণনা করেছেন : রাসুলুল্লাহ সা. দোয়া করেছেন - আল্লাহ আমাদের ইয়ামেনে বরকত দিন । কয়েকজন আমাদের নজদ -এ ও বরকত দিন বলতে বল্লেন । তিনি বল্লেন আমাদের সিরিয়া ( শাম )- তে বরকত দিন । আল্লাহ আমাদের সিরিয়া ও ইয়ামেনে বরকত দাও । পুন:রায় উপস্হিত লোকরা বল্লো : ইয়া রাসুলাল্লাহ । আমাদের নজদ এর জন্যও দুয়া করুন । তৃতীয় বারে তিনি বল্লেন, সেখানে তো ভূমিকম্প, ফিতনা এবং শয়তানের শিং উত্থিত হবে । হাদিস নং ৬৬০২ বোখারী শরীফ, কিতাবুল ফিতান
২. হযরত ইবনে উমর রা. হতে বর্ণিত । তিনি রাসুলুল্লাহ সা.-কে পূর্ব দিকে ফিরে (সৌদি শাসকদের কেন্দ্রীয় ভুমি নজদের দিকে ফিরে )বলতে শুনেছেন : সাবধান । ফিতনা এদিক হতে - যেদিক হতে শয়তানের শিং উদিত হবে । হাদিস নং ৬৬০১ বোখারী শরীফ, কিতাবুল ফিতান
(বাংলা অনুবাদের জন্য কৃতজ্ঞতা : মিনা বুক হাউজ, ৪৫ বাংলাবাজার ঢাকা, সহীহ বোখারী ১ হতে ১০ খন্ডে একত্রে, পৃষ্ঠা নং : ১০৪৩ পৃষ্ঠা ।)
বলা বাহুল্য ১৫শ বছরের ইতিহাস প্রমাণ করে যে সেই শয়তানের শিং আর কেউ নয় - সৌদি আরবের ওহাবী মতবাদ ও সৌদি শাসকরাই শয়তানের শিং । নবী সা. এর প্রতি বেয়াদবীমূলক আচরণ, সারা বিশ্বের স্বৈরাচারদের মদদ দান, অতীত মুসলিম শ্রমিক ভাই ও মুসলিম ব্যক্তিত্বদের প্রতিপক্ষ জ্ঞানে খাটো করে দেখা, যৌনবিকারগ্রস্হ আচরণ প্রদর্শন ও অমুসলিমদের দালালির কারণে সৌদি শাসক সম্প্রদায় ও সৌদি আরবের ওহাবী মতবাদ-কে শয়তানের শিং বলে অবিহিত করেছেন ইসলামী ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মারুফ আল মাদানী আল আযহারী-সহ আরো অনেক ইসলামী ব্যক্তিত্ব ।
আমরা জেনে শুনে হাদিসের কথা ও বাস্তব অবস্হাকে অস্বীকার করতে পারি না ।
সৌদি আরব ও ওহাবী ধর্মব্যবসায়ীদের মতে নারী হলো যৌনদাসী :
সৌদি আরবে নারীদের কোন মানুষ মনে করা হয় না । এদেশে মেয়েদের যৌনদাসী মনে করা হয় । এখানে নারীরা কড়াকড়িভাবেই নাগরিক স্বাধীনতাবিহীন ও রাষ্ট্রীয় - রাজনীতিতে তাদের কোনো ভূমিকা নেই।
এতদিন শরিয়ার দোহাই দিয়ে নারীকে প্রান্তিক অবস্থার দিকে ঠেলে দিয়ে আসছে ওহাবী ধর্মব্যবসায়ীরা ও অত্যাচারী সৌদি বংশীয় শাসকবর্গ ।
১.সৌদি আরবে মেয়েদের গাড়ি চালানোর অধিকার নেই ।
তাদের ড্রাইভিং লাইসেন্সপ্রাপ্তির এখানে কোন সুযোগ নেই ।
রিয়াদে ২০১২ সালের প্রথম দিকে কিছু নারী গাড়ি চালনার মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্সের দাবিতে অভিনব পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এ ধরনের প্রচেষ্টাকে উস্কানিমূলক মনে করে কয়েক নারীচালককে গ্রেফতার করে।
২.নারীদের অভিভাবকবিহীন কোনো বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে । মেয়েরা কোথাও প্রকাশ্যে তাদের অভিমত ব্যক্ত করতে পারেন না । সাংবাদিকদের কাছে কখনো তারা কথা বলতে পারেন না । আর কথা বলতে গেলে মেয়েরা তাদের নাম প্রকাশ করে না ।
৩.বর্তমান আইন অনুযায়ী সৌদি নারীকে ঘরের বাইরে পা রাখতে হলে বাবা, ভাই বা সন্তানকে সঙ্গে নিতে হয় বাধ্যতামূলকভাবে।
৪.প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের চলাফেরা ও মানবীয় যোগাযোগ সৌদি আরবে নিষিদ্ধ।
৫. এখন পর্যন্ত সৌদি আরবে মেয়েদের ভোটদানের অধিকার নেই । নির্বাচনে মহিলা প্রার্থী হওয়ারও সুযোগ নেই ।
৬.মেয়েদের ঘর হতে বের হওয়ার অধিকার নেই ।সৌদি নিয়ম অনুযায়ী, মহিলারা ছেলে অভিভাবকের অনুমতিতেই কেবল কাজ করার, ভ্রমণ করার ও অন্য কোনও কাজে যেতে পারেন। তবে সাথে একজন ভাই,স্বামী বা বাবা সম্পর্কীয় ছেলে থাকা প্রয়োজন হয় বাহিরে ভ্রমণ করার ও অন্য কোনও কাজে যাওয়ার জন্য ।
৭.সৌদি আরবের মেয়েদের কালো রংয়ের আবওয়া ও নিকাব পড়া বাধ্যতামূলক হলেও তাদের দেশের অভিযাত মেয়েরা এই পোষাকে আরামদায়ক মনে করেন না ।
সৌদি আরবের অভিযাত লোকদের মেয়েরা উশৃঙ্খল জীবন যাপন করেন :
সৌদি আরবের অভিযাত লোকরা নিজ স্ত্রীর চেয়ে বিদেশী যৌনদাসীদের সাথে অবস্হান করতে পছন্দ করে থাকেন । এমন কি ধর্মব্যবসায়ীবৃন্দ পর্যন্ত ।
দেখুন সৌদি আরবের শাসক পরিবারের হিজাবের সীমারেখা :
আগে দেখুন, সৌদি রাজকুমারী আমিরা - কে
Princess Ameera bint Aidan bin Nayef Al-Taweel Al-Osaimi Al-Otaibi (born 1983, الاميرة اميرة بنت عيدان بن نايف الطويل العصيمي العتيبي, often called Princess Amira al-Taweel, in the English-language press[1], is a Saudi Arabian princess and philanthropist. Princess Ameera assumed the role of Vice Chairperson of Al-Waleed bin Talal Foundation and member of the broad of trustees at Silatech.
http://en.wikipedia.org/wiki/Ameera_al-Taweel
বাদশাহ আব্দুল্লাহর সাথে এক মহিলা বিজ্ঞানী খাওলা আল কুরাইয়াহ -এর একটি আবেগময় মুহুর্ত
সৌদি আরবের জনপ্রিয় টিভি অভিনেত্রী আমিনা আলালি
সৌদি আরবে মেয়েরা নিজেদের পছন্দে বিয়ে করতে পারে না :
Princess Sara bint Talal bin Abdulaziz একজন ব্রিটিশ বিধর্মীকে বিয়ে করেছেন । অথচ সে দেশের মেয়েরা তাদের বাবা বা ভাইয়ের অনুমতি ছাড়া বিয়ে করতে পারে না । তার অশ্লীলতার জন্য তাকে বিদেশীরা বার্বি প্রিন্সে বলে থাকে । তার সম্পর্কে সামান্য তথ্য পাবেন এই লিংকে :
দয়া করে আমাকে আপনারা বলুন, এসব সৌদি আরবের মহিলাদের ব্যাপারে সৌদি আরব সমর্থক হুজুরদের মন্তব্য কি ?
ব্যাপারটা অনেকটা নিজের আচরি ধর্ম অন্যকে শেখানোর মতো ।
সৌদি আরব -এর হুজুর আরিফি-র মতে যুদ্ধের সময় নারী ধর্ষণ বা কিছু সময়ের জন্য বিয়ে করা সৈনিকদের জন্য বৈধ কাজ ।
বাংলাদেশের কিছু সৌদি আরব সমর্থক হুজুরদের মতে মেয়েদের একা পড়াশোনা করতে বাড়ি হতে বের হওয়া ধর্মবিরোধী । সৌদি আরব সমর্থক এসব লোকদের মতে ধর্ষণের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান চালুর প্রয়োজন নেই । তাদের মতে মেয়েদের পুলিশ বা সেনাবাহিনীতে চাকুরী করার প্রয়োজন নেই ।
উপসংহার :
সৌদি আরব প্রতিষ্ঠাতারা ও তাদের বংশধররা যৌন উম্মাদ,নারী লিপ্সু ও কামুক এবং তারা হলেন বুখারী শরীফের হাদিস বর্ণিত শয়তানের শিং এবং মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সা. -এর অভিশপ্ত লোক ।
ইসলাম সহজ - সরল জীবন ব্যবস্হা । কিছু ধর্ম ব্যবসায়ী তাদের হীন স্বার্থে একে কঠিন করে উপস্হাপন করছেন । ইসলাম মধ্যম পন্হার ধর্ম । আমাদেরকে কুরআনের মূলনীতি মানতে হবে ।
আল্লাহ কারোর উপর এমন কোন কষ্টদায়ক দায়িত্ব অর্পণ করেন না , যা তার সাধ্যাতীত । ( সুরা বাকারা ২: ২৮৬ )
রাসুল (সা.) -এর কথা মানতে হবে :
এই জীবন ব্যবস্হা স্বস্তির ধর্ম । এটা সংকীর্ণতা , সীমাবদ্ধতা মুক্ত । যদি কেহ ধর্মীয় বিষয়ে অতিমাত্রায় কঠোর হতে চায় তাহলে তার উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে । সুতরাং সহজ-সরল পথে থাক । নিকটবর্তী হও, সুসংবাদ গ্রহণ কর এবং সকাল-বিকাল ও নিশীথে সাহায্য প্রার্থনা কর । ( সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম )
আমাদের জন্য ইসলামকে আল্লাহ জীবন ব্যবস্হা হিসেবে দিয়েছেন । কিন্তু প্রচারের ক্ষেত্রেও আল্লাহ অর্থ ব্যয়ে মধ্যমপন্হার নির্দেশ দিয়েছেন :
তোমার হাত গ্রীবায় আবদ্ধ করো না । উহা সম্পূর্ণ প্রসারিত করো না । তা হলে তুমি নিন্দিত ও নি:স্ব হবে । ( সুরা বনী ইসলাইল ১৭ : ২৯ )
ইসলাম শান্তির , শান্তি প্রতিষ্ঠার জীবন ব্যবস্হা । ইসলাম কঠোরতার ব্যবস্হা না । আল্লাহ বলেছেন :
আল্লাহ তোমাদের জন্য যা সহজ, তা চান । যা তোমাদের জন্য কষ্টদায়ক তা চান না । ( সুরা বাকারা : ১৮৫ )
তিনি দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের উপর কঠোরতা আরোপ করেননি । ( সুরা হজ্জ :৭৮ )
মানুষ সৃষ্টিগত ভাবে দুর্বল । তাই, আল্লাহ তোমাদের বোঝা লঘু করতে চান । ( সুরা নিসা : ২৮ )
ইসলামী শরিয়াতের মূলনীতিমালা বর্ণিত হয়েছে এভাবে :
কোন কিছু ক্ষতিকর হবে না এবং হয়রান কর হবে না । ( ইবনে মা'যা )
ইসলাম নারীর প্রতি সহিংসতা ও নারীকে অবদমন করার নীতিতে অবলম্বন করতে মুসলিম পুরুষদের বলে না । কিন্তু সৌদি আরবের প্রবর্তিত ইসলাম সাধারণ নারীদের পৃথিবীতে মানুষ হিসেবে বসবাসে স্বীকৃতি দিচ্ছে না ।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার :
আমরা সৌদি আরবের রাজতান্ত্রিক শাসকদের পছন্দ করি না
https://www.facebook.com/SaudiArabianMonarchy
বিষয়: বিবিধ
৬৮৪০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন