জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ-এর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট ( নিউজ পোস্ট )

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ০২ নভেম্বর, ২০১৩, ০৯:১৭:৪০ রাত



গত ১ আগস্ট/২০১৩ খ্রিঃ রোজঃ- বৃহস্পতিবার মাত্র এক লাইনের রায় দিয়েছেন মহামান্য আদালত, জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ।

সংক্ষিপ্ত রায়ে বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন বলেন,

“বাই মেজরিটি, রুল ইজ মেইড অ্যাবসলিউট অ্যান্ড রেজিস্ট্রেশন গিভেন টু জামায়াত বাই ইলেকশন কমিশন ইজ ডিক্লেয়ার্ড ইলিগ্যাল অ্যান্ড ভয়েড।”

মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী, সন্ত্রাসী দল জামায়াতে ইসলামের বিরুদ্ধে এ রায় প্রদান করেন হাইকোর্ট। আজ ০২ নভেম্বর/২০১৩খ্রিঃ রোজঃ- শনিবার, তার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হল ।



জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে দেয়া হাই কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। তিন বিচারকের স্বাক্ষরের পর । বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের পক্ষে মত দেন সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে, অপর বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন এ রায়ে ভিন্নমত পোষণ করেন।

জামায়াতকে নিবন্ধন দেয়ার সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে তরিকত ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, জাকের পার্টির মহাসচিব মুন্সি আবদুল লতিফ, সম্মিলিত ইসলামী জোটের প্রেসিডেন্ট মাওলানা জিয়াউল হাসানসহ ২৫ জন ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে একটি রিট আবেদন করে।



চারটি কারণে জমায়াতে ইসলামী রাজনৈতিক দল হিসাবে নিবন্ধন পেতে পারে না রিটে উল্লেখ্য করা হয়।


প্রথম জামায়াত নীতিগতভাবে জনগণকে সব ক্ষমতার উৎস বলে মনে করে না। সেইসঙ্গে আইন প্রণয়নে জনপ্রতিনিধিদের নিরঙ্কুশ ক্ষমতাকেও স্বীকার করে না।

দ্বিতীয় গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুসারে কোনো সাম্প্রদায়িক দল নিবন্ধন পেতে পারে না। অথচ কাজে কর্মে ও বিশ্বাসে জামায়াত একটি সাম্প্রদায়িক দল।

তৃতীয় নিবন্ধন পাওয়া রাজনৈতিক দল ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গের কোনো বৈষম্য করতে পারবে না। কিন্তু জামায়াতের শীর্ষপদে কখনো কোনো নারী বা অমুসলিম যেতে পারবে না।

চতুর্থ কোনো দলের বিদেশে কোনো শাখা থাকতে পারবে না। অথচ জামায়াত বিদেশের একটি সংগঠনের শাখা। তারা স্বীকারই করে- তাদের জন্ম ভারতে, বিশ্বজুড়ে তাদের শাখা রয়েছে।

রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি হাইকোর্ট একটি রুল জারি করে। রাজনৈতিক দল হিসাবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের লঙ্ঘন ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় ওই রুলে।

জামায়াতে ইসলামীর সূচনা হয় উপমহাদেশের বিতর্কিত ধর্মীয় রাজনীতিক আবুল আলা মওদুদীর নেতৃত্বে ১৯৪১ সালের ২৬ অগাস্ট, তখন এর নাম ছিল জামায়াতে ইসলামী হিন্দ।

একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে, জামায়াতে ইসলামী ১১ দফাসহ বিভিন্ন দাবি তুলে বাংলাদেশের বিরোধিতা করে।

১৯৭১ সালের পর স্বাধীন বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকায় জামায়াতও এর আওতায় পড়ে। বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তন জামায়াতকে রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ করে দেয়।

মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সহায়তা করতে রাজাকার, আলবদর, আলশামস্ নামে বিভিন্ন দল গঠন করে জামায়াত ও এর তখনকার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘ। তারা সারা দেশে ব্যাপক হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাটের মতো যুদ্ধাপরাধ ঘটায়।

একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে রায়েও দল হিসেবে যুদ্ধাপরাধে দলটির সম্পৃক্ততা উঠে এসেছে ।



একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের জন্য জামায়াতের তৎকালীন আমির গোলাম আযমসহ শীর্ষ নেতাদের প্রায় সবারই সাজা হয়েছে।

উৎস :

http://bangla.bdnews24.com/bangladesh/article693592.bdnews

http://www.kalerkantho.com/online/Court/2013/11/02/17505

বিষয়: বিবিধ

২৩২১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File