বয়ফ্রেন্ড,স্টাডি পার্টনার, ল্যাব পার্টনার বা কলিগদের ধর্ষণ হতে মেয়েরা নিজেদের কীভাবে রক্ষা করবে ?
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ১৭ জুন, ২০১৩, ১২:৫৫:৫০ রাত
সূচনা :
আজ আমি আপনাদের সাথে কেন মেয়েরা বয়ফ্রেন্ড হতে দুরে থাকবে বা বয়ফ্রেন্ড হিসেবে কাউকে গ্রহণ না করার গুরুত্ব তুলে ধরবো । এজন্য আমি আপনাদের সাথে মাত্র দুই মিনিটের একটা সর্ট ফ্লিম শেয়ার করছি : https://www.youtube.com/watch?v=jbCcSfc1QIQ । http://www.dailymotion.com/video/xw61gt_why-you-should-avoid-and-beware-of-boyfriend_shortfilms#.UNdeC3pe_Mo । এই সর্ট ফ্লিম দেখে মেয়েরা ও তাদের অভিভাবকরা তাদের বয়ফ্রেন্ড সম্পর্কে সতর্ক হবে বলে মনে করি ।
ইদানিং বয়ফ্রেন্ড,স্টাডি পার্টনার, ল্যাব পার্টনার বা কলিগদের দ্বারা মেয়েদের যৌন নিগ্রহিত হওয়ার হার আশংকাজনক বেড়েছে । আর আপুদের বুঝতে হবে, এসব লোক তাদের এই সম্পর্কের কারণে তাদের উপর মাত্রাতিরীক্ত অধিকার খাটাচ্ছে কি না । যেমন : এই শর্ট ফ্লিমটাতে লক্ষ্য করুন, শুরু হতেই নায়িকা চিন্তিত মনে এদিক ওদিক তাকাচ্ছেন । আর ওদিকে নায়কের ভাব অনেকটা : " আরেকটু বসি না । জায়গাটা তো ভালই । লোকজন নেই । নিশ্চিন্ত মনে কথা বলতে পারছি ।" কিন্তু নায়ক নায়িকার কথা একটুও ভাবছেন না । গভীর রাতে বাড়িতে যেয়ে নায়িকা কি বলবে বাবা-মা-র কাছে - তাও নায়ক ভাবছে না । আর একারণেই শর্ট ফ্লিমটার নাম দেওয়া হয়েছে why you should avoid and beware of boyfriend । পরবর্তীতে নায়িকা শাসক দলের সন্ত্রাসীদের দ্বারা গণধর্ষণের শিকার হয় ।
এই ধরনের অবস্হা হতে আপুবৃন্দ কীভাবে চিরতরে মুক্তি পাবেন – তা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরছি ।
আপুবৃন্দ ! আশা করি, সর্ট ফ্লিমটা মনোযোগ দিয়ে দেখবেন এবং এই পোস্টের সব কথা মনোযোগ দিয়ে পড়বেন ও কাজে লাগাবেন । অনেক পর্দানশীন আপু কর্মক্ষেত্রে ধর্ষিতা হয়েছেন -এমন তথ্যও পাওয়া যাচ্ছে । পর্দানশীন আপুদেরও বলছি ,লজ্জা ত্যাগ করে এই পোস্ট পড়ুন ।
পটভুমি :
আপনারা অনেকেই জানেন, ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ১৬ ই ডিসেম্বর ২০১২ তারিখ একজন ২৩ বছর বয়সী এক তরুণী নৃশংসভাবে গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন । তিনি ছিলেন পেশায় প্যারামেডিকেল (ফিজিওথেরাপি)-এর ছাত্রী । তিনি রাত সাড়ে নয়টার দিকে বাড়ী ফেরার সময় এই নির্মম ঘটনার শিকার হন । তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে সাথে ইঞ্জিনিয়ার বন্ধুও ধর্ষণকারীদের দ্বারা প্রহৃত হন । হিন্দু ও শিখ ধর্ষণকারীরা তাদের দুইজনকেই লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে একপর্যায়ে নগ্ন অবস্থায় বাস থেকে রাস্তায় ফেলে দেয় । এই ঘটনার ভয়াবহতা এতই প্রকট ছিল যে সার্জনরা কয়েকবার অপারেশন করার পর তরুণীটিকে বাঁচাতে তার অন্ত্রের বেশিরভাগ অংশ ফেলে দিতে বাধ্য হন ।
এই ঘটনার পর সারা ইন্ডিয়ায় তোলপাড় হয়েছিলো । অভিযুক্ত হিন্দু ও শিখ ধর্ষণকারী রাম সিং, মুখেশ সিং, বিনয় শর্মা, পবন গুপ্তা, রাজু এনং অক্ষয় ঠাকুর সবাইকেই পুলিশ গ্রেফতার করেছিলো । ২২শে ডিসেম্বর ২০১২ সাধারণ মানুষ ইন্ডিয়া গেটের সামনে বিক্ষোভ করে ।অবশেষে ২৯ ডিসেম্বর ২০১২মারা গেলেন দিল্লির সেই ধর্ষিতা মেডিক্যাল ছাত্রী।
কেন মেয়েরা বয়ফ্রেন্ড হতে দুরে থাকবে :
আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় মূলত ভারতের এই ঘটনাকে বিস্তারিত বর্ণণা করা নয় । আজকের এই আলোচনায় লক্ষ্য করলে আপনারা দেখতে পাবেন, ধর্ষিতা তরুণীর সাথে তার বয়ফ্রেন্ড ছিল । কিন্তু বয়ফ্রেন্ড পর্যন্ত তাকে রক্ষা করা তো দূরে থাক, সে নিজে পর্যন্ত আহত হয়েছে ।
আজ আমরা সর্ট ফ্লিমটার মাধ্যমে বোঝতে চেষ্টা করবো :
১. আমরা মেয়েরা ( আমি ছেলে । বোঝার জন্য মেয়ে শব্দটা ব্যবহার করেছি ) বয়ফ্রেন্ড, প্রেমিক, স্টাডি পার্টনার, ল্যাব পার্টনার বা কলিগের সাথে রাতে বা নির্জন স্হানে কোন গল্প গুজব করবো না । অন্যথায় আমাদেরও ভারতের এই তরুণীর মতো অবস্হা হতে পারে ।
(উল্লেখ্য, বয়ফ্রেন্ড, প্রেমিক, স্টাডি পার্টনার ও ল্যাব পার্টনার এসব সম্পর্ক আমাদের ধর্ম অনুমোদন করে না ।)
২. তাদের সাথে নির্জনে বা অন্ধকারময় এলাকায় গল্পে মেতে থাকলে ভারতের আলোচিত এই তরুণীর মতো অবস্হা হতে পারে ।
উপরন্তু এসব বয়ফ্রেন্ড, প্রেমিক, স্টাডি পার্টনার, ল্যাব পার্টনার বা কলিগ ঘাতক বা ধর্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে ।
যেমন : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ছাত্র ও বাংলাদেশ ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক ১৯৯৮ সালে এভাবে তার বান্ধবীদের নির্জনে বা অন্ধকারময় নিয়ে ধর্ষণ করতো এবং ধর্ষণ করার পর তার হলে এসে ডায়রীতে এই অপকর্মের বিবরণ বিস্তারিতভাবে লিখতো । ধর্ষিতারা পড়তে পারেনি, কিন্তু তার কিছুই হয়নি ।তাকে সরকার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরী দিয়ে পুরস্কুত করে, জাপানে পড়তে পাঠায় এবং পরবর্তীতে সে ইটালির মিলান শহরে বিলাস বহুল জীবন যাপন করছে এবং এক অপরূপ সন্দরী ও পর্দানশীন মেয়ে তাকে বিয়ে করেছে ।
আপুবৃন্দ !আপনাদের সহায়তা করার জন্য কেহ এগিয়ে আসবে না । কারণ আমরা দেখেছি, ব্রাক এনজিও-র হাসপাতালে দায়িত্বরতা অবস্হায় ব্রাক এনজিও-র কর্মী ডিসেম্বর ২০১২ – তে ডা. সাজিয়া আফরিন ইভা আপুকে ধর্ষণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে হত্যা করে । এই ঘটনার কথা কয়জন মনে রেখেছেন ?
জানি এই সংখ্যাটা তেমন বেশি হবে না, কারণ নামী দামী পেপারগুলোতে এব্যাপারে ফলোআপ করা হয়নি যে! নিভৃতচারী মেধাবী ডাক্তার যে নীরবেই করুণভাবে মৃত্যুবরণ করতে বাধ্য হলেন । উপরন্তু তিনি ইসলামী সংগঠণের কর্মী । ইসলামী নীতিমালা মেনে চল্লে বা পোষাক পড়লে ধর্ষণের শিকার হতে হয় না - তাদের এই বদ্ধমূল ধারণা যে ভেস্তে যাওয়ায় ইসলামী সংগঠণের কর্মীরাও অনেকটা বিভ্রত ।
সাংবাদিকদের কাছে থেকে সাড়া না পেয়ে তার সহকর্মী ডাক্তারেরাই আয়োজন করলেন মানববন্ধনের, সেখানে কি হল সে সম্পর্কে একজন ডাক্তার বলেন :
আজকের মানব বন্ধনে ইন্ডিপেনডেন্ট ও এটিএন এর সাংবাদিকরা আসে কিন্তু আমরা তাদের বিশেষ করে ইন্ডিপেনডেন্টের স্মার্ট নারী সাংবাদিকের কথা শুনে অবাক হয়ে যাই। তিনি বলেন- "আমরা শুনে এসেছি এখানে এক চিকিৎসক আরেক চিকিৎসককে ভুল চিকিৎসা দিয়ে মেরে ফেলেছে, তাই সকলে তার বিচার চায়।" আমরা হতবাক হই তার এই কথা শুনে। পরে ইভা আপুর (ডাঃ সাজিয়া আফরিন) মৃত্যুর বিষয়ে জানাই ও নিউজ করতে বলি। তার উত্তরে সেই সাংবাদিক বলেন "কোন ডাক্তার মরলে নিউজ এজেন্সির কিছু যায় আসেনা, এটা কোন খবর না তবে ডাক্তারের হাতে কেউ মারা গেলে সেটা ইম্পরট্যান্ট।" আমরা তারপরেও তাকে ব্যাপারটা বোঝাতে চেষ্টা করলে তিনি আমাদের নাম জানতে চান। আমরা কয়েকজন পরিস্থিতি খারাপ হবার ভয়ে ইজ্জত নিয়ে সরে পড়ি।
একটা সাংবাদিকের আঙ্গুল কাটলে ব্রেকিং নিউজ দেয় কিন্তু নাইট ডিউটি অবস্থায় একজন চিকিৎসক নিজের সম্ভ্রম বাঁচাতে গিয়ে খুন হলে সেটা নাকি ইম্পরট্যান্ট না।
আপুবৃন্দ । সর্ট ফ্লিমটা দেখে সিদ্ধান্ত নিন : ভুলেও বয়ফ্রেন্ড, প্রেমিক, স্টাডি পার্টনার, ল্যাব পার্টনার বা কলিগের সাথে রাতে বা নির্জন স্হানে কোন গল্প গুজব করবো না ।
স্বামী-বাবা-ভাই-ছেলে ভিন্ন অন্য পুরুষের সাথে মেয়েদের সম্পর্কের ধরণ :
একটা মেয়ের স্টাডি পার্টনার, ল্যাব পার্টনার বা কলিগ -দের সাথে সম্পর্ক বা বিশ্বাস থাকতে পারে । তবে অবশ্যই সেই সম্পর্ক বা বিশ্বাসের একটা সীমা থাকা উচিত । সেই সম্পর্ক বা বিশ্বাসের সীমাকে অতিক্রম করে অন্য কিছুতে জড়িয়ে পড়া মেয়েদের জন্য মোটেও মঙ্গলজনক নয়।
আমি মনে করি, বয়ফ্রেন্ড বা প্রেমিক -রা সাক্ষাত যমের আরেক রূপ ।
আমি যেসব লোকের কথা বল্লাম, ইদানিং তাদের দ্বারা মেয়েদের নিগ্রহ হওয়ার হার আশংকাজনক হারে বেড়েছে । তাদের খামখেয়ালীপূর্ণ আচরণের জন্য মেয়েরা বিভিন্ন ধরনের বিপদে পড়ছে ।
আপুদের বুঝতে হবে, এসব লোক তাদের এই সম্পর্কের কারণে তাদের উপর মাত্রাতিরীক্ত অধিকার খাটাচ্ছে কি না ।
যেমন : এই শর্ট ফ্লিমটাতে লক্ষ্য করুন, শুরু হতেই নায়িকা চিন্তিত মনে এদিক ওদিক তাকাচ্ছেন । আর ওদিকে নায়কের ভাব অনেকটা : " আরেকটু বসি না । জায়গাটা তো ভালই । লোকজন নেই । নিশ্চিন্ত মনে কথা বলতে পারছি ।" কিন্তু সে নায়িকার কথা একটুও ভাবছে না । বাড়িতে রাতে যেয়ে নায়িকা কি বলবে বাবা-মা-র কাছে - তাও নায়ক ভাবছেন না । আর একারণেই শর্ট ফ্লিমটার নাম দেওয়া হয়েছে Why you should avoid and beware of boyfriend ?
আমরা এই ফ্লিমের শেষে দেখি,
Once we will see that one of our beloved sisters will be a gang rape victim in this short film. But her boyfriend will not take any necessary steps for her safety. Why our beloved sisters are dependable on such kinds of boyfriends or persons?
আমি যেসব লোকদের কথা বলেছি তারা বেশীর ভাগই দায়িত্ব জ্ঞানহীন । কারণ তাদের সম্পর্কটার কোন আইনগত ভিত্তি নেই বা তারা নিজেরাই আস্হাহীন তাদের এধরণের সম্পর্ক কত দিন টিকবে । যেমন একজন কলিগের কথা চিন্তা করুন । তিনি তত দিনই কলিগ যত দিন আপনি এক সাথে চাকুরী করেন । পরবর্তীতে নতুন কর্মক্ষেত্রে যান, আপনাকে হয়ত সেই কলিগ মনেই রাখবে না । কারণ চলমান ও ব্যস্ত জীবনে অনেক লোকের সাথেই আমাদের মিথস্ক্রীয়া হয় বা মানবীয় যোগাযোগ হয় । আমরা শুধু অপরিহার্য লোকদেরই মনে রাখি বা গুরুত্ব দেই এই নাগরিক জীবনে । তাহলে কেন আপুবৃন্দ এমন লোকদের কথায় চলবেন বা তারা কেন তাদের উপর এসব লোকদের অন্যায় অধিকার খাটানোকে মেনে নিবেন ?
সর্ট ফ্লিমটি দেখতে পারেন ইউটিউব হতে :
https://www.youtube.com/watch?v=jbCcSfc1QIQ
যেভাবে আপুবৃন্দ নিজের নিরাপদ রাখতে আগে যা ভাববেন :
আপনার নিরাপত্তাকে সুরক্ষিত রাখার প্রধান নিরাপত্তা কৌশল হলো :
১.সদা সবর্দা নিজের নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দিতে হবে ।
২.কারোর খামখেয়ালীপূর্ণ আচরণকে গুরুত্ব দেওয়া যাবে না ।
৩.কারোর উপর নিজের নিরাপত্তার ব্যাপারে মাত্রাতিরীক্ত নির্ভরশীল হওয়া যাবে না ।
যারা বুদ্ধিমান তাদের সামান্য ইশারাই যথেষ্ঠ ।
৪. আত্মরক্ষার কিছু কৌশল আয়ত্ব করতে হবে ।
https://www.facebook.com/SelfdefenseTechniquesForFemales - এই পেজটার
১ হতে ৪০ পর্যন্ত আত্মরক্ষা কৌশলগুলো আয়ত্ব করার জন্য আপুদের বিনীত অনুরোদ করছি এবং এব্যাপারে কোন প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকলে করার জন্য অনুরোদ করছি । আমি আপুদের সব প্রশ্নের উত্তর দিবো ।
নিজের নিরাপত্তা ব্যাপারে কেন সচেতন হতে হবে :
বাংলাদেশে ডা. সাজিয়া আফরিন ইভা-কে নিয়ে কিছুই হলো না । আমরা জাতি হিসেবে আসলেই খারাপ । আমরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের সেঞ্চরীর কথা ভুলে গেছি । আমরা টিএসসি-তে থার্টি ফাস্ট নাইটে বাধণ নামক মেয়ের লাঞ্চিত হওয়ার কথা ভুলে গেছি । আমরা ভিকারুন্নেসার হিন্দু শিক্ষক পরিমল জয়ধরের কথা ভুলে গেছি যার কাজই ছিল একের পর এক ছাত্রী ধর্ষণ করা ।
আর অনেকে আমাকে বলবেন, আপনি কেন বয়ফ্রেন্ড হতে মেয়েদের সতর্ক থাকার কথা বলছেন ? আর কতটুকু বোধ জাগ্রত হলে আমাদের দেশের লোকরা প্রতিবাদী হতে পারবে, বলতে পারবেন কি ? এর উত্তর আমার জানা নেই ।
যারা ভাবছেন বয়ফ্রেন্ড মেয়েদের জন্য অপরিহার্য তাদের বলছি :
যারা সর্ট ফ্লিমটা দেখেছেন তাদের অনেকেই আমাকে বলেছেন : “অনেক সময় প্রয়োজনেই মেয়েদের বের হতে হয় । ভাই, বাবা বা স্বামী না থাকলে অন্য কোন ছেলে , যাদের কথা আপনি যাদের কথা উল্লেখ করলেন, তারাই তো তাদের ভরসাস্হল । আপনি অতিরঞ্জন করে একটু বেশী বলে ফেল্লেন না ! এসব লোকদের প্রতি সন্দেহ প্রবনতা বৃদ্ধি করে দিলেন না ! একটু বেশী বলা হয়ে গেলো না ! সতর্ক হওয়া অবশ্যই প্রয়োজন । মানবিক বা আইনগত সম্পর্ক একটা মেয়ের সাথে এসব লোকদের নেই, তাই বলে তাদের গুরুত্বকে তো অস্বীকার করা যায় না । আমি মনে করি না, একে বারেই এসব সম্পর্কগুলোকে অস্বীকার করার প্রয়োজন আছে । একটা মেয়ের বয়ফ্রেন্ড বা প্রেমিক নাও থাকতে পারে, কিন্তু স্টাডি পার্টনার, ল্যাব পার্টনার বা কলিগ তো থাকবেই । এত কিছুই যখন বল্লেন, পাশের বাড়ির বাড়িওয়ালার ছেলে, পাড়ার রংবাজ আর প্রতিবেশী মহিলাদের স্বামী, দেবর বা ছেলেদের কথা কেন বাদ দিলেন ?
উত্তরে বলছি :
দয়া করে আমার লেখাটা বার বার পড়েন । আমি কোথাও বলিনি : স্টাডি পার্টনার, ল্যাব পার্টনার বা কলিগ এদের সাথে কোন পেশাগত সম্পর্ক রাখবেন না বা এদের উপর বিশ্বাস করবেন না। একটা মেয়ের অবশ্যই স্টাডি পার্টনার, ল্যাব পার্টনার বা কলিগ এদের সাথে সম্পর্ক বা বিশ্বাস থাকতে পারে । তবে অবশ্যই সেই সম্পর্ক বা বিশ্বাসের একটা সীমা থাকা উচিত এবং সেই সম্পর্ক বা বিশ্বাসের সীমাকে অতিক্রম করে অন্য কিছুতে জড়িয়ে পড়া মেয়েদের জন্য মোটেও মঙ্গলজনক কিছু নয়। আর বয়ফ্রেন্ড বা প্রেমিক - আমি তো মনে করি এরা সাক্ষাত যমের আরেক রূপ।।
আর মেয়েদের একটাই বয়ফ্রেন্ড বা প্রেমিক থাকা উচিত। সেটা হচ্ছে তার বিয়ে করা স্বামী। কারন এখানে একটা ছেলের সাথে একটা মেয়ের যে সম্পর্ক হচ্ছে তাতে দেশের আইন, সমাজ আর ধর্ম সবার স্বীকৃতি আছে।
আমি যেসব লোকদের কথা বলেছি তারা বেশীর ভাগই দায়িত্ব জ্ঞানহীন । কারণ তাদের সম্পর্কটার কোন আইনগত ভিত্তি নেই বা তারা নিজেরাই আস্হাহীন তাদের এধরণের সম্পর্ক কত দিন টিকবে । যেমন একজন কলিগের কথা চিন্তা করুন । তিনি তত দিনই কলিগ যত দিন আপনি এক সাথে চাকুরী করেন । পরবর্তীতে নতুন কর্মক্ষেত্রে যান, আপনাকে হয়ত সেই কলিগ মনেই রাখবে না । কারণ চলমান ও ব্যস্ত জীবনে অনেক লোকের সাথেই আমাদের মিথস্ক্রীয়া হয় বা মানবীয় যোগাযোগ হয় । আমরা শুধু অপরিহার্য লোকদেরই মনে রাখি বা গুরুত্ব দেই এই নাগরিক জীবনে ।
তাহলে কেন আপুবৃন্দ এমন লোকদের কথায় চলবেন বা তারা কেন তাদের উপর এসব লোকদের অন্যায় অধিকার খাটানোকে মেনে নিবেন ?
আপনি যেসব লোকের কথা বল্লেন, আমি তাদের সম্পর্কেও লিখবো । তারা কীভাবে বিভিন্ন বয়সের মেয়েদের যৌন নিগ্রহ করে - তাও তুলে ধরবো ।
বর্তমানে টিভি ও বিজ্ঞাপনে বয়ফ্রেন্ডের উপকারিতা প্রসঙ্গ :
বাস্তব অবস্হা মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে যা আমরা টিভি-র বিজ্ঞাপন ও নাটক হতেই দেখতে পাচ্ছি ।
এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির বিজ্ঞাপনে এক মেয়ে বলছে, আমার বয়ফ্রেন্ড আমাকে ছেড়ে চলে গেছে । কোন ছেলেকে কি দেখেছেন - আমার গার্লফ্রেন্ড আমাকে ছেড়ে গেছে বলে হাহুতাস করতে ?
টিভি-তে তাহসান আর মিথিলা অভিনীত এক নাটকে দেখেছি তাহসানকে অসুস্হ হতে । তিনি দ্বিতীয় মাত্রা নামক টেলিফিল্মে অভিনয় করেছেন । এতে আমরা দেখছি, নায়িকা-র সাথে অনৈতিক কাজ করার চিত্রায়ন করে খলনায়ক । এসব সামাজিক অসংগতি সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে এবং এসব হতে আমাদের উত্তরণের পথও আমাদের খুজে বের করতে হবে । এসব বিষয়ে যত আলোচনা হবে,তত আমরা সচেতন হতে পারবো এবং সমাজের অসংগতি দুর হবে ।
মেয়েদের আত্মরক্ষা কৌশল কেন শিখতে হবে :
১. নিজেকে সুরক্ষিত করা ও তাদের আত্মবিশ্বাসী হওয়ার জন্য আত্মরক্ষা কৌশল শিখবেন ।
কর্মক্ষেত্রে কর্মজীবী আপুরা এক শ্রেণী মানুষরুপী পশু হতে মোটেও নিরাপদ নয় ।
২. শরীর ও মন ভাল রাখার জন্য । বিস্তারিত বিবরণ দিচ্ছি না ।
কেন আপনার ধর্ষিতা হওয়া ও অনিরাপদ যৌনতায় অংশ নেওয়া উচিত নয় বা ধর্ষিতা হলে আপনার করণীয় :
১. আপনি আপনার কথিত বয়ফ্রেন্ড নামধারী পশু দ্বারা ধর্ষিতা হলেন । আপনি আইন আদালত করলেন ।আপনার উকিল কাছে ধর্ষণের ঘটনটা শুরু হতে শেষ পর্যন্ত জানতে চাইবে । আপনার ন্যায় বিচারের স্বার্থেই জানতে চাইবেন । এতে আপনি লজ্জা পেলে আপনারই ক্ষতি ।
২.আপনি ডাক্তারের কাছে গেলেন । আপনার বিভিন্ন ধরনের সমস্যা । ডাক্তাররা এক সময় এইডস্ আর হ্যাপাটাইটিস সি ভাইরাসের প্রসঙ্গ তুল্লেন ।কিন্তু আপনি বুঝেও না বুঝার ভান করলেন । আপনি চুপ করে থাকলেন । এতে আপনার লাভ তো হবেই না । ক্ষতিই হবে । এসব মূলত সেক্চুয়্যালি ট্রান্সমিটেট ডিজিজ । আপনি কোন সময় ধর্ষিতা হয়ে থাকলে এসব রোগ আপনার মধ্যে চলে আসতে পারে ।
৩.আপনি ভীষণ ভাল ছাত্রী । শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আপনার সুনাম । কিন্তু পরিমল ধরনের কোন শিক্ষক (আসলে এগুলো শিক্ষক নয়, পশু) আপনার সাথে বিভিন্নভাবে কদর্য আচরণ করে যাচ্ছে । আপনি বেমালুম চেপে যাচ্ছেন । অথচ আপনার অনেক প্রিয় শিক্ষক আছেন বা তারা আপনাকে তাদের ছেলে-মেয়ের মতোই ভালবাসেন, কিন্তু আপনি তাদের সাথে বিষয়টি শেয়ার করলেন না । এতে আপনার লাভ হবে না । আপনার ক্ষতিই হবে ।
৪.আমাদের ধর্মে মেয়েদের ভালবাসার মানুষ হিসেবে বলা হয়েছে বাবা-মা ও স্বামীকে । আপনি বিভিন্ন সমস্যায় পড়লেন কর্মক্ষেত্রে । যেমন ধরুন : আপনার অফিসের এমডি-র আকিজ আহমদ ভাই আপনার সাথে কদর্য আচরণ প্রকাশ করছে । আপনি বিষয়টি আপনার স্বামীর সাথে শেয়ার করলেন না । এটা তো আপনার জন্য ক্ষতিই হবে । চাকরী না করলে বা ছেড়ে দিলে আপনি চেষ্টা করলে ভাল চাকরী পাবেন । কিন্তু ভালবাসার মানুষেনর কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা হারালে কি আপনি তাদের কাছে ভালবাসার মানুষ হয়ে থাকতে পারবেন কি ? তাদের কাছ থেকে কি শ্রদ্ধাপূর্ণ বা সমমর্যাদপূণ আচরণ কি আগের মতো পাবেন কি, ভালবাসার কথা তো বাদই দিলাম ?
পরিশেষে আপুদের বলছি, আমরা আপনাদের আত্মরক্ষা কৌশল সম্পর্কে ধারণা দিচ্ছি । সুতরাং আপনাদের স্বার্থেই আপনাদের লজ্জাবোধ সামান্য হলেও কমাতে হবে । আরেকটি কথা অন্তত ক্ষেত্রে শেখার ক্ষেত্রে লজ্জাহীন ও সাহসী না হলে কোন কিছুই ভালভাবে শেখা যায় না । এই কথাগুলো বলেছেন মনোবিজ্ঞানীরা । এসম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাবেন বাংলাদেশের বিখ্যাত মনোরোগবিশেষজ্ঞ ও মনোচিকিৎসক ডা. মো. তাজুল ইসলামের “মন ও মানুষ” বইয়ে (বইটা প্রকাশ করেছে হাতে খড়ি প্রকাশনী ৩৭ বাংলাবাজার, ঢাকা) । আর এজন্যই আমি সবাইকে বলি : আমি তোমাদের পড়াতে এসেছি আর শিখাতে এসেছি । যদি আমার কাছে তুমি বা তোমরা লজ্জা পাও, তাহলে তুমি বা তোমরা কিছুই শিখতে পারবে না । সুতরাং শেখার জন্য আমার কাছে শেখার সময়টায় নির্লজ্জ হও । সাহসী হও । মন খুলে কথা বলো : স্যার ! বা ভাইয়া ! বুঝি না । দেখিয়ে দেন । পারি না । আবার বলুন না । এই ব্যাপারটি আপুবৃন্দ আপনাদের বাস্তব জীবনে কাজে লাগাবেন । অনেক পর্দানশীন আপু এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেন না । তাদের বলছি : আপু ! নিজেকে মেলে ধরুন । মিশরের আসমা মাহফুজের মতো হোন । তিনি একাই মিসরের স্বৈরাচার হোসনী মোবারক-কে তাড়ানোর উদ্যোগ নেন । তিনি ছিলেন একা । আর এখন দেখুন, মিসরের কি অবস্হা ? !
উপসংহার :
আপুবৃন্দ ! আজই বলুন : No Boy friend ! No Problem! I will you merry early. I will enjoy sex safely with my husband. https://www.facebook.com/WeWillMarryEarly আর অভিভাবকদের বলছি, আপনারা আপনাদের মেয়েদের আত্মরক্ষা কৌশল শেখানোর স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিন । তাদের আগে আগে বিয়ে দিন । স্বামীদের বলছি, আপনার স্ত্রীকে ধর্মীয় চিন্তা-চেতনায় গড়ে তুলুন । তার সাথে সব বিষয় শেয়ার করুন এবং তার প্রতিভা ও মেধাকে বিকশিত করার জন্য সহায়ক ভুমিকা পালন করুন । https://www.facebook.com/SelfdefenseTechniquesForFemales এই পেজের সব কৌশল আপুদের আয়ত্ব করার জন্য অনুরোদ করছি ।
বিষয়: বিবিধ
৪২৮৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন