বাংলাদেশে বিজ্ঞাপনে উপেক্ষিত ইসলামী মূল্যবোধ ( ১ম পর্ব )

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ১৭ মে, ২০১৩, ১১:১২:৫১ রাত



সূচনা :

সাহিত্যের মতো নাটক-সিনেমা-বিজ্ঞাপন –এর বিষয়বস্তু সমাজ থেকেই উঠে আসে – বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই কথাটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ।

আমি আমার লেখা পোস্ট "আমরা একটি ব্যতিক্রমধর্মী টিভি বিজ্ঞাপন বানিয়েছিলাম" -এ

http://www.bdtomorrow.net/blog/blogdetail/detail/1864/fakhrul/15367 দেখিয়েছিলম : ইসলামী মূল্যবোধ ও আধুনিকতার মেলবন্ধন ঘটতে পারে একটা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে । মালয়েশিয়ায় আমাদের সেই বিজ্ঞাপনটিও https://www.youtube.com/watch?v=excxIZ4wUvg দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছিল ।

কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আমরা আশাহত নই । কারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ইসলামী মূল্যবোধের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েছে । আমি বাংলাদেশে বিজ্ঞাপনগুলোতে ইসলাম মূল্যবোধ কেন উপেক্ষিত হচ্ছে তার কারণগুলো ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরবো । তার সাথে সাথে সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করবো ।



লাক্স সাবানের ইরানী মোড়ক । ইরানে লাক্স সাবানের মডেলরা এমনই হয় ।



ইন্দোনেশিয়ার আলজামেলাহ সৌন্দর্য সাবানের মোড়ক । ইন্দোনেশিয়ায় মোটামোটি এক তৃতীয়াংশ মডেল এমনই ।

বাংলাদেশে বিজ্ঞাপনের অবস্হা :

বাংলা সাহিত্যের অনেক গল্প উপন্যাসে সামান্য হলেও মানবিক মূল্যবোধ বোধ জাগ্রত হয় । কিন্তু বাংলা ভাষায় বানানো বিজ্ঞাপনগুলোর সামান্য ব্যতিক্রম ছাড়া মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত হয় না । বরং এসব বিজ্ঞাপন মূল্যবোধের অবক্ষয়কে উসকে দিচ্ছে । যেমন : কোহিনুর ক্যামিকেলের

তিব্বত সাবানের ৩০ সেকেন্ডের বিজ্ঞাপন ।

Tibet Beauty Soap TV Commercial

https://www.youtube.com/watch?v=ikypfsSPLSM

এই বিজ্ঞাপনে নেপথ্যে একটা জিঙ্গেল বাজতে থাকে । তার সাথে সাথে সমুদ্র সৈকতে মডেল শরীর হতে তার সব কাপড় খুলে ফেলে । কি আছে তাতে ? আছে শুধু এই কথাগুলো :

”হ্যালো মেয়ে শোন না

এক বার চাও না

ঐ হাসি দাও না

মাঝে মাঝে রাগ করে এক বার বল না

ঐ রুপে সৌরভে কি আছে বল না

ঐ রুপে সৌরভে কি আছে বল না

হ্যালো মেয়ে শোন না

ও তিব্বতই তাহলে

তোমার রুপের রহস্য

সুন্দরীতমা ।

নতুন রূপে তিব্বত “







তিব্বত সাবানের মডেল বাধন





বাংলাদেশের মডেল আর অভিনেত্রীরা এমনই হয় ।





বাধনের এই এডের ফলে তিব্বত সাবানের বিক্রি বাড়েনি । কিন্তু বাধনের সুনাম ও সুক্ষ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে চার দিকে ।



আমরা বাধনের মঙ্গল কামনা করি এবং তার হাসি যাতে অমলীন থাকে ও সে যেন পেশাগত জীবনে একজন ভাল পেশাজীবি হতে পারে সেজন্য আমরা তার জন্য দুয়া করছি । তবে তার কাছে এধরনের এড না করার জন্য বিনীত অনুরোদ রইল ।

আমি নির্মাতাকে লজ্জা দিতে চাই না ।তিনি বাংলাদেশের আন্তজার্তিক ক্ষ্যাতিসম্পন্ন চলচিত্র নির্মাতা ও বিখ্যাত এক মডেলের স্বামী । ইউটিউব সহ সর্বত্র তার বিরুপ মন্তব্য ও সমালোচনা বিদ্যামন । এই বিজ্ঞাপন পরিবারের সবাই এক সাথে বসে দেখার মতো তো নয়ই, বরং এই বিজ্ঞাপন তিব্বত সাবানের বিক্রি বাড়াতে পারেনি ।

দেখুন : ইউটিউবে দর্শকদের মন্তব্য :

https://www.youtube.com/all_comments?v=ikypfsSPLSM

বাংলা ভাষায় চিত্রায়িত বিজ্ঞাপনগুলোর মূল উদ্দেশ্য :

আমি বিজ্ঞাপনের মূল উদ্দেশ্যের জন্য বিভিন্ন বইপত্রই না, বরং বিভিন্ন ব্যবসা প্রশাসনের বিভিন্ন কোর্সেও অংশ নিলাম । যেমন : মার্কেটিং প্রমোশন, কন্জুমার বিহেভিয়র, অগানাইজেশনাল বিহেভিয়র , সাইকোলজি অব কন্জুমার । এসক বিষয় আমার একাডেমিক বিষয় না হলেও আমাকে আমার প্রয়োজন ও কৌতুলের জন্য পড়তে হয়েছে । কিন্তু বই বা কোর্সের সাথে বাস্তবতার মিল নেই । তার জন্য আমি এই কাজের সাথে সম্পৃত্তদের সাথে যোগাযোগ করি ।

বাংলা ভাষায় চিত্রায়িত বিজ্ঞাপনগুলোর মূল উদ্দেশ্য জানার জন্য দুই এক জন নির্মাতা ও মডেলদের সাথে কথা বলি । তারা যা বলেন :

“বিজ্ঞাপনের লক্ষ্য একটি পণ্যের বিক্রয় ও মুনাফা নিশ্চিত করা।“

আমার মতে : একটা সফল বিজ্ঞাপন হলো সেই বিজ্ঞাপন যা তার পণ্যের বিক্রি বাড়িয়ে দিতে পারে এবং মানবিক মূল্যবোধকেও জাগ্রত করতে পারে । যেমন :

১.মামি আসে নাই । মিমি আইসে ।

এটা একটা চকলেটের বিজ্ঞাপন । খুবই সাধারন একটা বিজ্ঞাপন । এই বিজ্ঞাপন যে দিন প্রচার হতো সে দিন এই চকলেটের বিক্রি বেড়ে যেতো । অনেকে তার মেয়ের নাম পাল্টে রাখেন মিমি ।

২.নির্মাতাদের তথ্য মতে, বাংলাদেশের বিজ্ঞাপনের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল বিজ্ঞাপন হচ্ছে ‘ফিলিপস’ বাল্বের বিজ্ঞাপন। আমাদের অনেকেরই মনে আছে ‘মাছের রাজা ইলিশ, বাতির রাজা ফিলিপস’। এই বিজ্ঞাপন শুধু জনপ্রিয়তার নিরিখে নয়, পণ্য বিক্রির নিশ্চয়তার হিসেবেও সফলতম।

প্রথমেই দেখা যায় একটা গ্রামের পরিবেশে একটি অল্প বয়সী ছেলে কাটা ডাব হাতে আতিথেয়তা করতে তার ভগ্নিপতিকে জিজ্ঞেস করছে- ‘দুলাভাই, তয় কি মাছ আনমু?’ দুলাভাই একটু ভেবে বলেন- ‘ইলিশ মাছ আনিস’। পরে দুলাভাই ঝাপসা বাতিতে ‘কাটাকুটা কিচ্ছুই দেহি না’ বলে ক্ষোভ প্রকাশ করায় ‘ফিলিপস’ বাতি সে যাত্রায় জামাইয়ের সামনে শ্বশুরবাড়ির মুখ রক্ষা করে।এই বিজ্ঞাপনে অনেকে পুরুষতান্ত্রিকতার গন্ধ খুজে পেতে পারে । কিন্তু বাস্তবতা হলো : এতে আমাদের সমাজের মূল্যবোধ প্রকাশ পায় । মেয়ের জামাই হচ্ছে পরিবারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।

এবার মূল্যবোধ বিনষ্টকারী বিজ্ঞাপন সম্পর্ক কিছু বলছি ।

বিজ্ঞাপনের লক্ষ্য একটি পণ্যের বিক্রয় ও মুনাফা নিশ্চিত করা এবং সাথে সাথে নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধকেও বিনষ্ট করতে পারে । যেমন :

১.এই বিজ্ঞাপনকে পেছনে ফেলতে পেরেছে ইদানীংকালের আরসি কোলার বিজ্ঞাপন ‘কন্যা ফিরা চাও’- গান সমেত মডেল নোবেল ও ভারতীয় একজন নাম না জানা মডেলের নাচানাচি সমৃদ্ধ বিজ্ঞাপনটি। একই সঙ্গে জনপ্রিয়তা ও পণ্য বিক্রির নিশ্চয়তা দিয়ে বিজ্ঞাপন জগতে ক্লাসিক হয়ে গেছে।

বিজ্ঞাপনে প্রেমিক তার প্রেমিকার মান ভাঙাতে আরসি কোলা নিয়ে আসে। সঙ্গে এও বলে ‘আরসির মজা কত, তোমার মত যখন যেমন চাই- সুখে দু:খে মনের মত সঙ্গী তারে পাই।এই বিজ্ঞাপনে পুরুষতান্ত্রিক আদর্শ স্পষ্ট।‘আরসি কোলা’র ক্ষেত্রে নারীকে সরাসরি পণ্যের সাথে তুলনা করা হয়েছে। এ নিয়ে আর কোনো ব্যাখ্যায় যাবার প্রয়োজন বোধ করছি না। এমন সব বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের গণমাধ্যম পরিপূর্ণ।

২.‘ডাবল কোলা’ নামক একটি পানীয়ের বিজ্ঞাপনে নায়ক ফেরদৌসকে দুইজন নারীর সঙ্গে নাচানাচি করতে দেখা যায়- বলা হয় ‘ডাবল ইয়োর প্লেজার’।

বিজ্ঞাপনের মেজেস আসলে কি হওয়া উচিত :

বিজ্ঞাপন নির্তামতাদের বক্তব্য : বিজ্ঞাপন মানুষের কাছে মেসেজ পৌঁছাতে চেষ্টা করে । যদিও আলাদা আলাদা পণ্যের আলাদা আলাদা টার্গেট গ্রুপ থাকে, বিজ্ঞাপনের টার্গেট অডিয়েন্সও আলাদা হয়- কিন্তু দর্শক তো সবাই, ফলে সমাজের মূল স্রোতের মতাদর্শকেই বিজ্ঞাপন প্রতিফলিত করে। তাহলে কি আমরা ধরে নিবো সমাজের মূল স্রোতের মতাদর্শ ইসলাম নয় ।

এজন্য আমরা এয়ারটেল,বাংলালিংক,গ্রামীণ ফোন,আরসি কোলা অথবা সরোয়ার ফারুকী, অমিতাভ রেজা প্রভৃতি কোম্পানী বা ব্যক্তি অবশ্যই আমাদের সমালোচনার মুখোমুখি হতে থাকবেন ।

সমাধান কোন পথে :

বিজ্ঞাপন নির্মাতা ও কোম্পানীর সমালোচনা কোনো সমাধান দিবে না । এজন্য আমাদের যা করণীয় :

১.সমাজের সর্বস্তরে পোষাকের ক্ষেত্রে নীতিমালা তৈরী করে বাস্তবায়ন করতে হবে । পোষাকের নীতিমালা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে এসব পেজে :

http://www.facebook.com/SalwarKameezHijab

https://www.facebook.com/SareeHijab

http://www.facebook.com/pages/%E0%A6%AC%E0%A7%8B%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A6%BF-%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A7%9F%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%89%E0%A6%AA%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6/506620052704626

https://www.facebook.com/WeWillMarryEarly

২. নাটক-সিনেমা-বিজ্ঞাপন বানানো ও প্রচারের ক্ষেত্রে দেশীয় ও ধর্মীয় মূল্যবোধের মাধ্যমে নীতিমালা তৈরী করতে হবে । এই পেজ এসম্পর্কে আপনাদের সামান্য হলেও ধারণা দিবে : https://www.facebook.com/pages/%E0%A6%86%E0%A6%AE%E0%A6%B0%E0%A6%BE-%E0%A6%8F%E0%A6%95%E0%A6%9F%E0%A6%BF-%E0%A6%A8%E0%A6%A4%E0%A7%81%E0%A6%A8-%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%AD%E0%A6%BF-%E0%A6%9A%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B2-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%8B/547851115240030?ref=hl

৩. এক্ষেত্রে নীতিমালা তৈরীর জন্য সরকার ও নীতি নির্ধারণী মহলের উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে ।

৪. সরকার ও নীতি নির্ধারণী মহলের উপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য ও এক্ষেত্রে জনগণকে সচেতন করার জন্য বিভিন্ন সংগঠণ তৈরী করা যেতে পারে । এজন্য ইসলামী নীতিমালার আলোকে যারা নাটক-সিনেমা-বিজ্ঞাপন বানাতে আগ্রহীদের এগিয়ে আসতে হবে ।

৫. ইসলামী নীতিমালার আলোকে নাটক-সিনেমা-বিজ্ঞাপন বানাতে আগ্রহীদের পৃষ্ঠপোষকদের খুজে বের করতে হবে বা তাদের উৎসাহিত করতে পৃষ্ঠপোষকদের অনুরোদ জানার জন্য আবেদন তৈরী করতে হবে । এক্ষেত্রে বই ও ম্যাগাজিন প্রকাশ কাজের হতে পারে । যেমন : ফ্যাশন ম্যাগাজিন আলা ।



বিখ্যাত ম্যাগাজিন আলা -র একটি সংখ্যার প্রচ্ছদ । এই ম্যাগাজিনে মেয়েদের ইসলামি নীতিমালা অনুযায়ী পোষাক পড়ার কৌশল শিক্ষা দেয় । তুরস্কে ইসলামী নীতিমালা অনুযায়ী পোষাক পড়া নিষিদ্ধ ছিল । নাজিমুদ্দিনের দল শক্তিশালী অবস্হানে পৌছলে এই ম্যাগাজিন প্রকাশ হতে শুরু করে ।

৬. ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী কোম্পানীর মালিকদের অগ্রণী ভুমিকা পালন করতে হবে । তারা তাদের কোম্পানীর জন্য ইসলামী মূল্যবোধ নির্ভর বিজ্ঞাপন বানাতে পারে । যেমন : আল আরাফা ব্যাংক, ইবনে সিনা ফার্মাসিটিক্যাল

৭. ইসলামী মূল্যবোধ নির্ভর নাটক-সিনেমা-বিজ্ঞাপন বানানো একটা সাধনা হিসেবে নিতে হবে কিছু লোককে । এজন্য তাদের দেশের বাহিরের বিভিন্ন নির্মাতা ও সংগঠণের সাথে যোগাযোগ গড়ে তোলতে হবে ।

৮. সমাজে পুরুষাধিপত্যবাদী মানষিকতা ও নারির প্রতি সহিংস ও অবমাননাকর কোন কিছুই নাটক-সিনেমা-বিজ্ঞাপনে স্হান না পায় সে দিকে লক্ষ রাখতে হবে । অনেক সময় ইসলামী মূল্যবোধের দোহাই দিযে নাটক-সিনেমা-বিজ্ঞাপনে নারীর প্রতি অবদমন-নির্যাতনকে তুলে ধরা হয় । যেমন : তালাক, বহু বিবাহ, মেয়েকের বিদেশে পড়ার সুযোগ না থাকা সত্তেও পড়ার সুযোগ না দেওয়া বা পরিবারের ছেলের চেয়ে কম সুযোগ সুবিধা দেওয়া ।

নাটক-সিনেমা-বিজ্ঞাপন –এ নারীদের যথাযথভাবে উপস্হাপনের জন্য নারীদের করণীয় :

১. “আমাদের দেশের নারীবাদীরা মেরি ওলস্টোনক্রাফট, ভার্জিনিয়া উলফ, সিমোঁ দ্য বুভোয়া, হেনরিক ইবসেন, বেগম রোকেয়া পাঠ করে তাতে উদ্বুদ্ধ হয়ে নারীর অধিকার রক্ষায় আলোচনার টেবিল, মাঠ গরম করেন। বিজ্ঞাপনে নারীকে পণ্য হিসেবে প্রদর্শনের জন্য সমালোচনার ঝড় বইয়ে দেন।

কিন্তু একটি বিজ্ঞাপনে যখন নারীর চরিত্রে কাণ্ডজ্ঞানহীনতা ও নির্বিবেক স্বার্থপরতা চাপিয়ে দিয়ে নারীকে হেয় করা হচ্ছে, ছোট করা হচ্ছে, এক অর্থে অপমান করা হচ্ছে, তখন কেন তারা চুপ করে বসে আছেন?

এক্ষেত্রে তাদের চুপ করে থাকা চলবে না । তাদের প্রতিবাদ করতে হবে । প্রতিবাদের ক্ষেত্রে অগ্রগামী থাকতে হবে ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী তরুণীদের । যেমন : মিসরের আসমা মাহফুজ যেভাবে হোসনী মোবারকের শাসনামলে প্রতিবাদী হয়েছিলেন ।



২. আমাদের মা, বোনদের মধ্যে কি আমরা এই চরিত্র দেখি? পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাব নিশ্চয় আমাদের সমাজে পড়েছে। কিন্তু নারীর এই রূপ আমরা আসলেই কি গড়পড়তা নারীদের মধ্যে দেখি? নিশ্চয় ‘না’ বলবেন।”

প্রথমত, এই দায় কেবল নারীবাদীদের নয়, সবার। এজন্য ইসলামপন্হী মেয়েদেরই এগিয়ে আসতে হবে মিসরের আসমা মাহফুজের মতো । http://en.wikipedia.org/wiki/Asmaa_Mahfouz

৩. আর মেয়েদেরই একটি নতুন টিভি চ্যানেল প্রতিষ্ঠা করতে হবে যাতে ইসলামী নৈতিকতা ও আধ্যাত্মিকতাকে গুরুত্ব দেওয়া হবে এবং পশ্চিমা মূল্যবোধ বিশেষত: ধর্মহীনতার অনুকরণ এবং প্রযুক্তির অনুপযুক্ত ব্যবহারের কারণে মুসলিম বিশ্বের পতন হয়েছে – এটি তা তুলে ধরবে ।

এই নতুন টিভি চ্যানেলটি গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে ভিন্ন এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি পদর্শন করবে যা নতুন উদ্যোক্তাদের পথ নির্দেশ প্রদর্শন করবে ।

https://www.facebook.com/pages/%E0%A6%86%E0%A6%AE%E0%A6%B0%E0%A6%BE-%E0%A6%8F%E0%A6%95%E0%A6%9F%E0%A6%BF-%E0%A6%A8%E0%A6%A4%E0%A7%81%E0%A6%A8-%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%AD%E0%A6%BF-%E0%A6%9A%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B2-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%8B/547851115240030?ref=hl

৪. আর আমাদের দেশের মেয়েদেরও পোষাক পড়ার ক্ষেত্রে নিচের নীতিমালাগুলো মনে রাখতে হবে :

১.মেয়েরা ইসলামের নীতিমালা মেনে মেয়েরা যে কোন পোষাক পড়তে পারে । তবে তাদের মুখ ও হাতের তালু ছাড়া পুরো শরীর ঢেকে রাখতে হবে এবং চাদর জাতীয় ওড়না ব্যবহার করে মাথার চুল ও বুক পর্যন্ত ঢেকে রাখতে হবে ।

২. হিন্দু মেয়েদের মতো শাড়ি পড়া যাবে না । কারণ হিন্দু মেয়েদের মতো শাড়ি পড়লে পেট, পিঠ, বাহু, মাথার চুল, গলা প্রকাশিত হয়ে পড়ে যা ইসলামী নীতিমালার লংঘন ।

মুসলিম মেয়েদের মুখ ও হাতের তালু ছাড়া সমগ্র শরীর ঢেকে রাখতে হয় । অন্যথায় স্টার জলসার অপবিত্রা মেয়েদের মতো পেটের অধিকাংশ স্হান ও চুল অনাবৃত রেখে শাড়ি পড়লে কবিরা গুনাহ হবে ।

৩. বাংলাদেশের মেয়েরা ৮ বছর বয়স হলেই বয়প্রাপ্তা হয়ে যায় । সেজন্য ৮ বছর বয়সীকে মেয়েকে অবশ্যই ইসলামের নীতিমালা মেনে পোষাক পড়তে হবে । কারণ

এব্যাপারে রাসুল সা. বলেছেন :

عَنْ عَائِشَةَ رضى الله عنها أَنَّ أَسْمَاءَ بِنْتَ أَبِىْ بَكْرٍ دَخَلَتْ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَعَلَيْهَا ثِيَابٌ رِقَاقٌ فَأَعْرَضَ عَنْهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ يَا أَسْمَاءُ إِنَّ الْمَرْأَةَ إِذَا بَلَغَتِ الْمَحِيْضَ لَمْ تَصْلُحْ أَنْ يُرَى مِنْهَا إِلاَّ هَذَا وَهَذَا. وَأَشَارَ إِلَى وَجْهِهِ وَكَفَّيْهِ-

আয়েশা (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, আসমা বিনতে আবী বকর (রাঃ) পাতলা কাপড় পরিহিত অবস্থায় রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট প্রবেশ করলেন। রাসূল (ছাঃ) তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে বললেন, হে আসমা! নারী যখন যৌবনে পদার্পণ করে তখন তার এটা ওটা ব্যতীত প্রকাশ করা বৈধ নয়। তিনি চেহারা ও দু’কব্জির দিকে ইঙ্গিত করে দেখালেন।

[ আবু দাঊদ হা/৪১০৬; মিশকাত হা/৪৩৭২ ]

৪. মেয়েদেরকে ছোট কাল হতেই ইসলামের নীতিমালা অনুযায়ী পোষক পড়তে মেয়ের বাবাই মায়ের আগে উদ্যোগী হবে । অন্যথায় তাকে দায়িত্ব অবহেলার জন্য মায়ের আগে বাবাকেই দায়ি করা হবে । এবং বাবা এক্ষেত্রে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করলে বাবাকে দাউয়ুস বলে আক্ষায়িত করা হবে । দাইয়ুস কখনো জান্নাতে যাবে না ।

৫. মেয়েদের ফেসবুক ও নেটে সতর্কতার সাথে ছবি ব্যবহার করতে হবে । আর কোন ভাবেই চেহারায় সৌন্দর্য ও কদর্যভাবে ফুটিয়ে চলাফেরা তো দুরে থাক ছবিও তো গ্রহণযোগ্য নয় যাতে বাজে লোকরা ছবি দেখে বাজে ধারণা বা বাজে চিন্তা পোষণ করতে না পারে । একান্তই যদি ছবি ফেসবুক বা নেটে দিতে হয়, তাহলে সেসব ছবি ইসলামী নীতিমালা মেনেই তুলতে হবে ।

আর ইসলামী নীতিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে : মুসলিম মেয়েদের মুখ ও হাতের তালু ছাড়া সমগ্র শরীর ঢেকে রাখতে হয় । মেয়েরা ছবি তোলার সময় কোনভাবেই পেট, পিঠ, বাহু, মাথার চুল,হাত, গলা প্রদর্শন করতে পারবে না । আর বাস্তব জীবনে তো নয়ই । আর যদি এগুলো প্রদর্শন করতেই হয়, তাহলে স্বামীর সাথে অবস্হান করার সময়ই করতে পারবে । অনত্র নয় ।

এব্যাপারে আপনারা আমার এই তিনটা পোস্ট দেখতে পারেন :

http://www.bdtomorrow.net/blog/blogdetail/detail/1864/fakhrul/11999

http://www.bdtomorrow.net/blog/blogdetail/detail/1864/fakhrul/11658

http://www.bdtomorrow.net/blog/blogdetail/detail/1864/fakhrul/999

পরিশেষে সবাইকে ফেসবুকের এই পেজটা লাইক করতে অনুরোধ করছি :

http://www.facebook.com/pages/আমরা-একটি-নতুন-টিভি-চ্যানেল-বানাবো/547851115240030?skip_nax_wizard=true

বিষয়: বিবিধ

৫২৫১ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

277929
২৫ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১২:৫০
এনাম বিন আব্দুল হাই লিখেছেন : অত্যন্ত ভালো লাগলো। আপনাকে ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File