বাহাসের বিষয় : আখেরি জামানার মুজাদ্দেদ সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী এবং নাজিমুদ্দীন আরবাকান প্রসঙ্গ
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ০৪ মে, ২০১৩, ০৩:০৫:৩৫ রাত
পটভুমি :
২০০৮ সালে ২৮ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিন শিবিরের বেশ কিছু ছেলের সাথে মুনাজারা বা বাহাস হলো । বাহাসের বিষয় হলো : আখেরি জামানার মুজাদ্দেদ আবুল আলা মওদুদী । বাহাসে তারা হেরে গেলো । তারা ওয়াদা করলো নাজিমুদ্দীন আরবাকান-কে তাদের আদর্শ হিসেবে বেছে নিবে এবং অনেক পড়াশোনা করবে । বাহাসে হেড়ে যাওয়ার পর তারা আমার সাথে শাহ আলী বাগদাদী রহ-এর মাজার জিয়ারত করলো এবং মাযার সংলগ্ন মসজিদে দুই রাকাত নামাজ পড়লো । পরবর্তীতে এই বাহাসে অংশ নেওয়া এক ছেলের সাথে দেখা হয়েছিলো । সেই ছেলে অনেক পড়াশোনা করেছিলো । কিন্তু সে জামায়াত-শিবির করা ছেড়ে দেয় । আর অন্যদের সাথে দেখা হয়নি । মাজার জিয়ারত করা এবং জামায়াত-শিবির ছেড়ে দেওয়ার কারণ নিয়ে আজ আমি কিছুই বলছি না । তবে নাজিমুদ্দীন আরবাকান সম্পর্কে আমি আলোচনা করছি । আশা করি, আমাকে কেহ গালি গালাজ করবেন না ।
অফিসে নামাজ আদায়রত নাজিমুদ্দিন । ইমামের ভুমিকায় তার শিষ্য রজব তাইপ এরদুগান - তুরস্কের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী । দ্বিতীয় সারিতে হাতের ডানে নাজিমুদ্দিন ।
পরিচিতি :
তুরস্কের সিনোপ শহরে নাজমুদ্দিন আরবাকান ১৯২৬ সালে জন্ম গ্রহণ করেন । পিতা মুহাম্মদ সাবরী ছিলেন একজন বিচারক। তার মার নাম কামির ।
শিষ্য আব্দুল্লাহ গুল - তুরস্কের বর্তমান রাষ্ট্রপতির সাথে নাজিমুদ্দিনের আবেগময় মুহুর্ত
নাজিমুদ্দিন আরবাকান-কে পত্র-পত্রিকায় নেকমেতিন এরবাকান (Necmettin Erbakan )
বলে লেখা হলেও আমি এই নিবন্ধে নাজিমুদ্দিন আরবাকান হিসেবেই তাকে উপস্হাপন করবো ।
ইরানের রাষ্ট্রপতি আহমদি নেজাদের সাথে নাজিমুদ্দিন
তার জন্মের দুই বছর আগে মোস্তফা কামাল (উপাধি : আতাতুর্ক) তুরুস্কে আরবীতে কুরআন পড়া, নামাপ পড়া ও আজান দেওয়া, আরবী অক্ষর এবং শালিন পোষাক পড়া নিষিদ্ধ করেন । আরবীতে আযান না দিতে পেরে তুর্কি ভাষায় আযান দিতে হতো । আযান তুর্কি ভাষায় দেওয়ার সময় শুরুতে বলতে হতো : তানরি উলমুদ (বাংলা অনুবাদ : সৃষ্টিকর্তা মহান) ।
বসনিয়ার স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা, ইসলামি দলের প্রধান এবং প্রথম রাষ্ট্রপতি আলীয়া ইজেত বেগোভিচের সাথে নাজিমুদ্দিনের আবেগময় মুহুর্ত
পড়াশোনা :
তিনি ইস্তাম্বুল শহরের ইস্তাম্বুল হাই স্কুলে লেখাপড়া করেন । ইস্তাম্বুল টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি হতে মেকানিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং এ গ্র্যাজুয়েট হন ।এখানে তার ফলাফল ছিল জিপিএ ৪.০০ এর মধ্যে ৪.০০। এর পর জার্মানির রাইনল্যান্ড এর আর ডাব্লিউ টি এইচ আচেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে মাস্টার্স ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
শিষ্যদের সাথে গুরু নাজিমুদ্দীনের নির্বাচনী প্রচার
কর্মজীবন :
নাজমুদ্দিন আরবাকান তার শিক্ষা জীবন অতিবাহিত করেন এমন এক সময় যখন কামাল ধর্মনিরপেক্ষতা ও তুর্কি জাতীয়তাবাদের নামে তুরুস্ককে ইসলামমুক্ত করার সমস্ত ব্যবস্থা নিয়েছিলেন । আগেই বলা হয়েছে তখন তুর্কি ভাষায় আযান দেওয় হতো । এঅবস্হার মাঝে শিক্ষা লাভ করেও আরবাকান হয়ে উঠেন সব দিক দিয়ে অনন্য ।
প্রথমে ইস্তাম্বুল টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়েই প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৬৫ সালে অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন । এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত থাকার সময় তিনি কয়েকটি গবেষনামূলক কাজ করেন । তার গবেষণা হলো জার্মান ট্যাংক লেপার্ড - ১ ডিজাইন করা । তিনি এই ট্যাংক ডিজাইন প্রকল্পের প্রধান ছিলেন । এই ট্যাংক-এর উপর ভিত্তি করে তৈরি করা ট্যাংক লেপার্ড -২ ট্যাংক এখনও জার্মানি, তুরুস্ক সহ ইউরোপিয় দেশগুলির সেনা বাহিনীতে ব্যবহার হয় ।
http://en.wikipedia.org/wiki/Necmettin_Erbakan
রাজনৈতিক জীবন :
১৯৬৯ সালে আরবাকান বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করেন এবং এবং এই বছর তুরুস্কের ঐতিহাসিক নগরী কুনিয়া থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
১. মিল্লি গুরুস (১৯৬৯ - ৭২):
এসময় তিনি ”মিল্লি গুরুস” ( জাতির দর্শণ ) নামক একটি ম্যানিফেষ্টো প্রকাশ করেন । পরে তিনি এই নামে সংগঠন গড়ে তোলেন যেটি হতে পরবর্তিতে নাশন্যাল অডার পার্টি নামক রাজনৈতিক দল গঠিত হয় । ১৯৭২ সালে এই দল নিষিদ্ধ ঘোষিত হয় । মিল্লি গুরুস বরাবরই ছায়া সংগঠণ হিসেবে উপস্হিত থাকে । ব্যাপারটা অনেকটা মিসরের ইখওয়ানের মতো । ইখওয়ানের রাজনৈতিক শাখার আলাদা নাম আছে ।
http://en.wikipedia.org/wiki/Mill%C3%AE_G%C3%B6r%C3%BC%C5%9F
http://en.wikipedia.org/wiki/National_Order_Party
২. ন্যাশনাল স্যালভেশন পার্টি (১৯৭২ - ১৯৮১):
তিনি মিল্লি গুরুস হতেই ১৯৭২ সালে ”ন্যাশনাল স্যালভেশন ( মিল্লি সালামত)পার্টি” নামে আরেকটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন ।
তুরুস্কের ধর্মনিরোপেক্ষ আইনগত কারণে সরাসরি ইসলামের কথা বলা যায় না । তারপরও ন্যাশনাল স্যালভেশন পার্টি কৌশলে ধর্ম নিরপেক্ষতার বিরোধিতা করে ইসলামী মূল্যবোধের কথা বলে যাচ্ছিলো । ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে ১২ শতাংশেরও অধিক ভোট পায়। এটি ছিল ইসলামবিরোধী ধর্মনিরোপেক্ষ তুরস্কের জনগণের জন্য একটি বিস্ময়কর ঘটনা ।
এসময় ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী রিপাবলিকান পার্টি এই দলকে কোয়ালিশন সরকার এ যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানায় । ন্যাশনাল স্যালভেশন পার্টি-র সহযোগিতায় এই কোয়ালিশন সরকার সাইপ্রাস সংক্রান্ত সমস্যা সফলভাবে সমাধান করতে সমর্থ হয়। http://en.wikipedia.org/wiki/National_Salvation_Party
৩. তুরস্কের সেনা শাসন (১৯৮০ - ৮৭):
১৯৮০ সালে তুরুস্কে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে এবং আরবাকান ও তার দল কে তুরুস্কে রাজনীতিতে নিষিদ্ধ ঘোষনা করে। যতবার তুরস্কে ইসলামী মূল্যবোধ প্রবলতর হয় ততবার ধর্মনিরোপে্ক্ষতাবাদী ও ইসলামবিরোধী কামাল আতাতুর্ক সমর্থক সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে থাকে । এর আগেও বেশ কয়েক বার সেনাবাহিনী এমন কাজ করেছিলো । এসম্পর্কে সামান্য হলেও কিছু তথ্য দিবো অন্য আরেকটি নিবন্ধে । আশা করি আমার সাথেই থাকবেন ।
৪. ওয়েলফেয়ার পার্টি বা রিফাহ পার্টি (১৯৮৩ - ৯৮)
১৯৮৩ সালে আরবাকানের নেতৃত্বে গঠিত এবং ১৯৮৭ সালে পুণ:গঠিত হয় নতুন রাজনৈতিক দল ওয়েলফেয়ার পার্টি বা রিফাহ পার্টি ।
নাজিমুদ্দীনের সমর্থকদের একাংশ । নাজিমুদ্দিন ধার্মিক মহিলাদের প্রিয় ব্যক্তিত্ব । কারণ তিনি ওড়না পড়ার উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার চেষ্টা চালান । তুরস্কে মেয়েদের সংক্ষিপ্ত পোষাক পড়া বাধ্যতামূলক ছিল ।
১৯৯০ সালের নির্বাচনে এই ১৬.৯% ভোট লাভ করে এবং প্রধান বিরোধী দল হয়।
নাজিমুদ্দিনের সমর্থকের একাংশের উল্লাস
১৯৯৫ সালে প্রায় ২২% ভোট লাভ করে ওয়েলফেয়ার পার্টি এবং একক সংখ্যাগরিষ্ঠ না হলেও সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দলের মর্যাদা পায়। ১৯৯৬ সালে একটি কোয়ালিশন সরকার গঠিত হয় এবং এর প্রধান মন্ত্রী হন নাজমু্দ্দিন আরবাকান ।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার অবদান :
১.তিনিই আধূনিক তুরুস্কের প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি কখনও প্রকাশ্যে ইসলামের স্বপক্ষে অভিমত ব্যক্ত করা শুরু করেন ।
২.প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি আরব রাষ্ট্র সমূহ এবং ফিলিস্তিনের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করেন।
৩.তার উদ্যোগে মুসলিম প্রাধান্য দেশ : বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মালেয়শিয়া, ইন্দোনেশিয়া,ইরান,নাইজেরিয়া,মিসর ও তুরুস্ককে নিয়ে উন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭ এর মতো ডি-৮ বা ডেভেলপিং ৮ নামক জোট গঠিত হয় ।
এই জোট প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য : জোটভুক্ত মুসলিম দেশগুলোতে শিল্পায়ন তরান্বিত করা, প্রযুক্তি বিনিময় করা , দক্ষ মানবসম্পদ তৈরী করা এবং অগ্রসর গণতান্ত্রিক সমাজ সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতা ও বানিজ্য বৃদ্ধি করা।
উল্লেখ্য এই সময় তুরুস্কের প্রেসিডেন্ট সুলায়মান ডেমিরেল বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।
কিন্তু তার এই উদ্যোগ তুরুস্কের ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী সেনাবাহিনী ও সাংবিধানিক আদালত পছন্দ করেনি । সামরিক বাহিনী প্রধান দুটি বিরোধি দলের মধ্যে একটি সমঝোতা করেন এবং মাসউদ ইলমাজ-কে তুরুস্কের প্রধান মন্ত্রী বানান।
আরবাকানকে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য করা হয় এবং তার দল : ওয়েলফেয়ার পার্টিকে ১৯৯৮ সালে নিষিদ্ধ করা হয় এবং তাকেও রাজনীতিতে নিষিদ্ধ করা হয়।
http://en.wikipedia.org/wiki/Welfare_Party
৫. ভার্চু পার্টি (১৯৯৭ - ২০০১)
এরপর ওয়েলফেয়ার পার্টির সদস্যরা "ভার্চু পার্টি" নামে আরেকটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন ।নতুন দল হলেও ভার্চু পার্টি সংসদ নির্বাচনে ভাল ফল করে।
এই পার্টি হতে নির্বাচিত সংসদ সদস্যা মার্ভ কাভাকচি যিনি মাথায় ওড়না পড়ে তরুস্কের সংসদে প্রবেশ করার অপরাধে সংসদ সদস্য পদ হারান এবং পরে দেশ থেকে নির্বাসিত হতে বাধ্য হন।
২০০১ সালে তরুস্কের সাংবিধানিক আদালত ও সে্নাবাহিনী ভার্চু পার্টিকেও নিষিদ্ধ করে।
http://en.wikipedia.org/wiki/Virtue_Party
৬.জাস্টিস এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (২০০১ – বর্তমান সময়)
এরপর ভার্চু পার্টির সদস্যরা দুই ভাগ হয়ে যান।
ভার্চু পার্টির নেতৃত্বে থাকা সংখ্যাগরিষ্ঠ ও অপেক্ষাকৃত তরুন সদস্যরা গঠন করে জাস্টিস এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি এবং কিছু সদস্য গঠন করেন ফেলিসিটি পার্টি ।
প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে নিষিদ্ধ হলেও নাজিমুদ্দীন আরবাকান এই দুই দলের তাত্বিক গুরু হিসেবে থাকেন ।
জাস্টিস এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি-র প্রধান নেতা হলেন রিসিপ তাইয়েপ এরদুগান । তিনি নাজিমুদ্দীন আরবাকানের অন্যতম শিষ্য । রিসিপ তাইয়েপ এরদুগানের নেতৃত্বে জাস্টিস এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি সফলতার দিকে এগিয়ে যায় । জাস্টিস এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি ২০০৭ সালের নির্বাচনে ৪৬% ভোট পায় যা তরুস্কের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
http://en.wikipedia.org/wiki/Justice_and_Development_Party_%28Turkey%29
রিসিপ তাইয়েপ এরদুগানের নেতৃত্বে সংস্কার :
নাজিমুদ্দীন আরবাকানের অন্যতম শিষ্য রিসিপ তাইয়েপ এরদুগানের নেতৃত্বে তুরুস্কে বর্তমানে যে সব সংস্কার হচ্ছে মুসলিম বিশ্বের জন্য সেগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম । তার সংস্কারগুলো হলো :
১.দেশ হতে ধর্মনিরোপেক্ষতাবাদী ও ইসলামবিরোধী সামরিক বাহিনীর আধিপত্য দুর করা ।
২.দেশে অগ্রসরমাণ গনতন্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা ।
৩.দেশে ইসলামী মূল্যবোধ পুনপতিষ্ঠা করা ।
৪.দেশকে শক্তিশালী অর্থনীতির দেশে পরিনত করা ।
৫.মুসলিম বিশ্ব ও পশ্চিমা বিশ্বের সাথে সম্পর্ক জোড়দার করা ।
http://en.wikipedia.org/wiki/Recep_Tayyip_Erdo%C4%9Fan
http://www.akparti.org.tr/english/
উপসংহার :
১.নাজমুদ্দিন আরবাকান তার আদর্শ ও মূল্যবোধবিরোধী পরিবেশে শিক্ষা লাভ করেও স্রোতের বিপরীতে তার ঐতিহ্য এবং ইতিহাস সম্পর্কে সচেতন হন।
তার রাজনীতি কেবলমাত্র মুখের কথা আর মাঠের রাজনীতির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি । তিনি অনেক ঘাত – প্রতিঘাত সহ্য করে বিজ্ঞানময় কর্ম পরিকল্পনা হাতে নিয়ে তার রাজনৈতিক মতাদর্শকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন ।
বিখ্যাত ম্যাগাজিন আলা -র একটি সংখ্যার প্রচ্ছদ । এই ম্যাগাজিনে মেয়েদের ইসলামি নীতিমালা অনুযায়ী পোষাক পড়ার কৌশল শিক্ষা দেয় । তুরস্কে ইসলামী নীতিমালা অনুযায়ী পোষাক পড়া নিষিদ্ধ ছিল । নাজিমুদ্দিনের দল শক্তিশালী অবস্হানে পৌছলে এই ম্যাগাজিন প্রকাশ হতে শুরু করে ।
২.তিনি তার রাজনীতি ইস্তাম্বুল শহরের একটা ছোট্ট কফি হাউজ হতে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত ছড়িয়ে দিয়েছেন ।
সুতরাং তার এই কাজ হতে বোঝা যায়, ছোট্ট একটা উদ্যোগই এক সময় বড় একটা প্রতিষ্ঠান দাঁড় করাতে পারে, যেমন বিন্দু বিন্দু জলই এক সময় সমুদ্র সৃষ্টি করে ।
৩.অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রসার একটা দেশের প্রকৃত স্বাধীনতার জন্য অপরিহার্য - ইন্জিনিয়ার নাজিমুদ্দীন আরবাকান তা ভালভাবে জানতেন ।
তিনি ডি-৮ গঠনের মধ্যে দিয়ে মুসলিম বিশ্বের অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছেন । আজ তুরস্ক বিশ্বের ১৫ তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশই নয়, বরং সব দিক দিয়ে অগ্রসরমান দেশ ।
৪.সম্পূর্ণ শত্রুভাবাপন্ন পরিবেশে থেকেও কোন রুপ সংঘাতে না গিয়েও কীভাবে ধৈর্য ও বিজ্ঞানময় কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করে ইসলামী মূল্যবোধভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করার কাজ করা যায় তা নাজিমুদ্দীন আরবকান প্রদর্শন করেছেন ।
পরিশেষে বলা যায়, এক বিংশ শতাব্দীতে মুসলিম বিশ্বে তার মতো ব্যক্তিরাই অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব যাদের ব্যক্তি জীবনকে আদর্শ হিসেবে বেছে নেওয়া যায় এবং তাদের দ্বিধাহীনভাবে অনুসরণ করা যায় ।
তার মৃত্যুতে শোকে বিহবল জনতার একাংশ
তিনি ২৭ ফ্রেব্রুয়ারী ২০১১ তারিখ ইন্তেকাল করেন । তার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি ।
বিষয়: বিবিধ
৮৬৩৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন