সবাইকে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে শুভেচ্ছা

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ২৩ জানুয়ারি, ২০১৩, ০১:৪৮:৫০ রাত



মান্যবর ব্লগারবৃন্দ ও মুসলিম ভাই ও বোনেরা !

আস সালামু আলাইকুম ।

বরিউল আউয়াল মাস মানবতার মহান মুক্তির দুত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম - এর জন্ম দিন এবং ওফাত দিবস । এই কারণে বরিউল আউয়াল মাস মুসলিমদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ।



মান্যবর ব্লগারবৃন্দ ও মুসলিম ভাই ও বোনেরা ! আমার হৃদয়ের অন্তস্হল হতে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে শুভেচ্ছা ও সালাম গ্রহণ করুন ।

আসুন । আমরা দরূদ পড়ি ও তার জন্মদিন উপলক্ষ্যে আনন্দ করি : https://www.youtube.com/watch?v=JXkNHODxOxA



বালাগাল উলা বিকামালিহী

কাসাফাদুজা বিজামালিহী

হাসনাত জামিউ খিসালিহী

সাল্লু আলাইহি ওয়া আলিহী

মান্যবর ব্লগারবৃন্দ ও মুসলিম ভাই ও বোনেরা !

মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলিমদের কাছে চিরন্জীব । কারণ তার সাফায়াত ছাড়া কেহ জান্নাতে পৌছতে পারবে না । তিনি এক মাত্র আল্লাহর দিদারপ্রাপ্ত লোক । প্রতি মুহুর্তে সারা বিশ্বে তার নাম ধ্বনিত হয় । তার নামে প্রতি নিয়ত দুরূদ পাঠ হচ্ছে । তার প্রতি দুরূদ ও সালাম পেশ করেন আসমান জমিনের ফেরেশতারা ।



মান্যবর ব্লগারবৃন্দ ও মুসলিম ভাই ও বোনেরা !




মানবতার মহান মুক্তির দুত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর অনুসারীদের সংখ্যা সারা বিশ্বে ১৭৫ কোটি । মানুষ্য সম্প্রদায়ের এক চতুর্থাংশ সদস্য তার অনুসারী ও তার মত-পথের অনুসারী । তার অনুসারীদের জন্য রয়েছে দিক নির্দেশনামূলক গ্রন্হ কুরআনিল কারিম যা বিশ্বের ১১২ টি ভাষায় অনুদিত হয়েছে । তার অনুসারীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় বিশ্বের এক চতুর্থাংশ দেশ । এসব দেশের অধিকাংশই অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কান্ট্রিজ নামে সংঘবদ্ধ হয়েছে : সেই কুরআনের অমীয় বাণীর আলোকে ওয়া তাসিমুবি হাবলিল্লাহি জামিয়াও ওয়া লা তাফার্রাকু (তোমরা আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে আকড়ে ধর ) ।



আমরা মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম - এর উম্মত । মুসলিম উম্মাহ-র গর্বিত সদস্য ও সদস্যা । মুসলিম কোনভাবেই আমেরিকাপন্থী হতে পারে না, মুসলিম কোনভাবেই হানাফী হতে পারে না, পারে না কওমী হতে, পারে না তাবলীগী হতে, পারে না দেওবন্দী হতে, পারে না আহলে হাদিস হতে, পারে না ওহাবী হতে, পারে না শিয়া হতে, পারে না সৌদি রাজতন্ত্রী পন্হী হতে, পারে না জামায়াত-শিবিরপন্হী হতে,পারে না ধর্মনিরোপেক্ষ হতে, পারেনা Islamist হতে, পারেনা Fundamentalist হতে,পারেনা মডারেট মুসলিম হতে, ....... । কারণ আল্লাহর রাসুল নিজেই বলেছেন"হুনা সুজ্জা ফিন্নার" অর্থাৎ যে বা যারা এই দলে (মুসলিম উম্মায়) বিভাজন সৃষ্টি করবে তার পরিনতি হবে হুনা সুজ্জা ফিন্নার অর্থাৎ বিভাজিত হয়ে এসব দলের নেতার পেছনে দলবদ্ধভাবে হেটে জাহান্নামে যাওয়াই তাদের পরিনতি ।



তাই, আসুন আমরা জাতি - গোত্র - লিঙ্গ - ভাষা-ভাষী নির্বশেষে নিজেদের সব সময় শুধুমাত্র মুসলিম বলেই পরিচয় দেই ।

কারণ আল্লাহ বলেছেন :

১. আল্লাহর পথে সংগ্রাম কর যেভাবে সংগ্রাম করা উচিত । তোমাদের তিনি মনোনীত করেছেন । তিনি তোমাদের ধর্মে তোমাদের জন্য কঠিন কোন বিধান দেননি । এ ধর্ম তোমাদের পিতা ইব্রাহিমের ধর্মের অনুরুপ । আল্লাহ পূর্বে তোমাদের নাম করণ করেছেন মুসলিম আর এ কিতাবেও করেছেন যাতে রাসুল তোমাদের জন্য সাক্ষী স্বরুপ হয় । সুতরাং তোমরা নামাজ কায়েম কর, যাকাত দাও ও আল্লাহকে অবলম্বন কর । তিনিই তোমাদের অভিভাবক । এক মহানুভব অভিভাবক । এক মহানুভব অভিভাবক ও এক মহানুভব সাহায্যকারী । সুরা হজ্জ :৭৮

২. বল, আমার সালাত, আমার ইবাদত, আমার জীবন ও আমার মৃত্যু বিশ্বজগতের প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে । তার কোন অংশীদার নেই, আর আমাকে এ ব্যাপারেই তো আদেশ করা হয়েছে, আর মুসলিমদের মধ্যে আমিই প্রথম ।( সুরা আনয়াম : ১৬২ -১৬৩ )



Love of the Holy Prophet (S.A.W) and the role of women শীর্ষক আলোচনা সভায় অংশগ্রহণরতাদের একাংশ



বসনিয়ার জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী সাইলা কাদিস রাসুল সা. -এর সম্মানে গান পরিবেশন করছেন যার প্রথম কয়েক লাইন হলো :

ইয়া মুস্তাফা । ইয়া মুস্তাফা ।

তুহে আশেকে নবী সব খুয়ে ফাতায়ে যা

মুস্তফাকে ইশক মে মেঘ ফিলেশা যায়ে যা

https://www.youtube.com/watch?v=YqOnXjtj01k

মান্যবর ব্লগারবৃন্দ ও মুসলিম ভাই ও বোনেরা !

আমরা বাংলাদেশি মুসলিম । বাংলাদেশ আমাদের ইহজাগতিক ঠিকানা ও মৃত্যুর পর জান্নাত আমাদের শেষ ঠিকানা ।

বাংলাদেশ আমাদের মাতৃভূমি । বাংলা আমাদের মাতৃ ভাষা । আমাদের দেশে ইসলাম এসেছে মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর যুগেই । ১২০৪ খৃষ্টাব্দে তুরস্ক হতে আগাত সেনানায়ক ইখতিয়ার উদ্দীন মুহাম্মদ বখতিয়ার খিলজী এই ভুখন্ডে সর্বপ্রথম ইসলামী রাষ্ট্র স্হাপন করেন । শামসুদ্দীন ইলিয়াস শাহ নিজেকেই শাহ-ই-বাঙালা উপাধি ধারণ করে বাঙ্গালী জাতির সর্দারে পরিনত হোন । ফখরুদ্দীন মুবারক শাহ স্বাধীন সারভৌবম রাষ্ট্র স্হাপন করেন এই ভুখন্ডে । শরফুদ্দীন আবু তাওয়ামা রহ. এবং নুর কুতুবুল আলম রহ. স্হাপন করেন বিশ্বখ্যাত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় যাতে সারা বিশ্বের লোকরা ইসলামী ধর্মতত্বে জ্ঞান আহরোন করতে আসতেন । আমাদের এই দেশ অচিরেই পরিনত হয় বিশ্বের অন্যতম ধনী রাষ্ট্রে ও অন্যতম নৌ পরাশক্তিতে । তাই ইবনে বতুতা তার ভ্রমণ কাহিনীতে আমাদের এই দেশকে বলেছিলেন : পৃথিবীর বুকে স্বর্গ ।

আজ আমাদেরকে সেই স্বর্ণযুগে ফিরে যেতে হবে ।

যেহেতু আমরা মুসলিম জাতির সদস্য ও সদস্য এবং আমরা বাংলাদেশি, সেহেতু আমার মতে আমার দেশের বৈশিষ্ট্যগুলো হওয়া উচিত -

১. একক ও সভ্যতার ভিত্তিতে সুদৃঢ় চেতনার ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশী জাতি গঠন;

২. মনোগতভাবে উদার অপরাজেয় এক উন্নত বাংলাদেশী সামজ প্রতিষ্ঠা;

৩. একটি পরিপূর্ন নৈতিক ও বিনয়ী সমাজ গঠন;

৪. একটি সুচিন্তিত উদার ধৈর্যশীল ও সহিষ্ণু সমাজ গঠন;

৫. একটি বিজ্ঞানমনস্ক ও সুফলতা অর্জনকারী জাতি গঠন;

৬. গতিশীল সংস্কৃতি বাহকরূপে একটি গতিশীল সমাজ গঠন;

৭. একটি ন্যায়পরায়ন ও ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ গঠন;

৮. সবদিক দিয়ে একটি সফল ইসলামী সমাজ গঠন।

৯. একটি বিজ্ঞানমনস্ক ও অগ্রসরমান সমাজ সৃষ্টি করা এর দৃষ্টি সর্বদা প্রসারিত থাকবে ভবিষ্যতের দিকে (অতীতের দিকে নয়) এবং এই দেশটি থাকবে নতুনের প্রতি উদগ্রীব।

১০. এই সমাজ শুধুমাত্র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্রেতা হবে না। বরং তার সাথে সাথে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর এই সভ্যতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে নিত্য নতুন গবেষনা আবিষ্কার ও উন্নয়নের মাধ্যমে।

এগুলো এক বারে হবে না । ধাপে ধাপে এগিয়ে যেতে হবে । এজন্য আমাদের শিক্ষা ব্যবস্হাকে নতুন করে সাজাতে হবে এবং বাস্তবে রূপ দিতে হবে ।

আশ করি, আপনারা এই বিষয়ে চিন্তা করবেন ।

মান্যবর ব্লগারবৃন্দ ও মুসলিম ভাই ও বোনেরা !

আজ মুসলিম বিশ্ব অশুভ শক্তির রাহু গ্রাসে আক্রান্ত । আর আমাদের স্বদেশের আলিম সমাজ চরম বিভ্রান্ত ও জনতা আজ কষ্টের রাজ্যে বসবাস করছে । এজন্য আমাদের এই অবস্হাকে পরিবর্তনের জন্য সুদৃঢ় ঐক্য ও নতুন কর্ম পদ্ধতি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে । এজন্য আমাদের মেধা ও যোগ্যতার মাধ্যমে সর্বত্র স্হান করে নিতে হবে এবং আমাদের বেশী বেশী পড়াশোনায় মননিবেশ করতে হবে । অশুভ শক্তির রাহু গ্রাসে আক্রান্ত অবস্হা হতে বের আসার জন্য আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করতে হবে ।

মান্যবর ব্লগারবৃন্দ ও মুসলিম ভাই ও বোনেরা !

আল্লাহ বলেছেন : নিশ্চয়ই রাসুলের জীবনেই রয়েছে তোমাদের জন্য সর্বোত্তম আদর্শ ।আমরা আমরা আমাদের জীবনের সর্বক্ষেত্রে তার আদর্শ বাস্তবায়ন করার শপথ নেই ।

আপনাদের হায়াতুত তায়্যিবার জন্য মহান আল্লাহর কাছে দু,য়া করেই আজকের পোস্ট শেষ করছি ।

কৃতজ্ঞতা : http://www.facebook.com/pages/Islamic-New-Year-Celebration/386930068065104

বিষয়: বিবিধ

১৪৮২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File