বিহারী পল্লীতে অসহায় মানুষকে পুঁড়িয়ে মেরে কোন রাষ্ট্র বানাচ্ছি আমরা !
লিখেছেন লিখেছেন মহি১১মাসুম ২০ জুন, ২০১৪, ০২:২৪:০৩ রাত
মানুষের সবচেয়ে বড় সম্পদ তার বিবেক ও মানবিক মূল্যবোধ । একাত্তর থেকে আটকে বিহারী সম্প্রদায় বাংলাদেশে অমানবিক জীবন যাপন করছে । একাত্তরে পাকিস্তান রক্ষায় সশস্র যুদ্ধ করার পরও ঐ বর্বর পাকিস্তান সরকার তাদের আটকে পড়া বিহারী মানুষগুলোকে ফেরত নেয়ার ব্যাপারে রীতিমত অনীহা ও অস্বীকার করে যাচ্ছে । অদ্যবধি এই মানুষগুলোকে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে ।
বর্বর পাকিস্তান ওদের নাগরিকদের সম্পর্কে বর্বর মানুষিকতা ও আচরনে আমি ব্যক্তিগত ভাবে বিন্দুমাত্র অবাক ও বিস্ময়বোধ করি না, কারন বর্বরের কাছে মানবিক আচরন প্রত্যাশা করা অযৌক্তিক । কিন্তু আমরাতো একাত্তরের বিজয়ী বীর, আমরা কেন তেতাল্লিশ বছরেও ওদের নিজেদের মধ্যে আত্তীকরন করে ওদের মানবিক জীবন দিতে পারলাম না, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে পারলাম না । স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে জন্ম নেয়া বিহারীতো আইন অনুযায়ী বাংলাদেশী নাগরিক । কেন আমরা ওদের আঁটকে পড়া বিহারী বলছি ?
একাত্তরে ওরা যা করেছে তা যুক্তিতর্কে বা রাষ্ট্রের জাতীয়তাবাদী বা রাজনৈতিক ভাবনায় এদেশীয় রাজাকারদের কৃতকর্মের চাইতে অনেকাংশে কম নিন্দনীয় । রাজাকাররাতো দেশের এমপি মন্ত্রী হয়ে দেশ শাসনও করেছে । ওদের (বিহারীদের) রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে আত্তীকরনের ব্যর্থতা বিজয়ী বাংলাদেশের জন্য লজ্জার বিষয় । আর যারা এহেন মানুষগুলোকে পুঁড়িয়ে মেরেছে, তারা পশুর চাইতেও অধম । এই হত্যাযজ্ঞে সরকারীদলের কতিপয় দুর্নীতিবাজ নেতাকর্মী ও আইন শৃংখলা বাহিনীর গুটিকয়েক অসাধু লোভী সদস্যের যোগ-সাজয সর্বজন স্বীকৃত । আমাদের উচিত এর প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়া এবং কাল-ক্ষেপন না করে এই পাপীষ্টদের কঠিন শাস্তি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রের ইজ্জত সন্মান রক্ষা করা ।
বিষয়: বিবিধ
৩১০৮ বার পঠিত, ২০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপামর বোধ বুদ্ধিসম্পন্ন সকল মানুষ - এ দাবীর সাথে একাত্বতা বোধ করবে এবং অবশ্যই উদ্ভাস্থু, অবহেলিত এসকল মানুষকে যে সকল পিচাশতুল্য মানুষ হত্যা করেছে, কষ্ট দিয়েছে তাদের যথাযথ দৃষ্টান্তমূলক বিচার ও দাবী করছি।
বিচারহীনতা ও রাজনৈতিক ভাবে দায় চাপাচাপির সংস্কৃতি,এসবকে উৎসাহিত করছে।
আর তা রুখতে প্রতিবাদী না হলে ভবিষ্যত শিকার যে আমি-আপনি হবো না, তা বলতে পারবেন কী ?
সহমতের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।।
ঘটনা এমন দাড়িয়েছে যে , দেশের পরিস্থিতি এখন সবার জন্য ভাল না , কি বাংলাদেশী ? কি হিন্দু ? কি মুসলমান ? কি বৌদ্ধ ? কি খৃস্টান ? কি বিহারী ? কি উপজাতি ?
কথা হল একজন বাংলাদেশী সংখ্যাগুরুর উপর নির্যাতন যতটা না বাইরে প্রভাব ফেলে তার চেয়ে বেশী প্রভাব ফেলে এসব রিফিউজি বা উপজাতি বা সংখ্যা লঘু নির্যাতন ।
ধন্যবাদ।
বিহারীদের উপর নির্মম হামলা নিয়ে লিখার মধ্যে ভীন্নতর প্রসঙ্গ দেখে কেউ কেউ বলতে পারেন,আমি ধান ভানতে শীবের গীত করছি কিনা। যাহোক আপনার প্রশ্নের উত্তরটি স্ববিস্তারে তুলে ধরছি ।
রাজাকার চিহ্নিতকরনে বিতর্ক থাকলেও রাজাকারদের অস্তিস্থ ও কর্মকান্ড নিয়ে জাতি দ্বিধাদন্ধ মুক্ত, বর্তমানে কতিপয় চিহ্নিত রাজাকারের মুক্তিযুদ্ধকালিন সময়ে কৃত অপরাধের বিচার চলছে বিচারিক ট্রাইব্যুনালে । রাজাকার নিয়ে প্রচুর লিখা লিখির কারনে রাজাকার সম্পর্কে কমবেশী ধারনা সবাই রাখেন । কিন্তু নব্য রাজাকার বিশেষণটি নিয়ে এক ধরনের বিভ্রান্তি ও বিতর্ক আছে, কোন ব্যক্তি বা গোষ্টীকে নব্য রাজাকারে বিশেষণে বিশেষায়িত করলে অনেকে আপত্তি তুলেন, উষ্মা প্রকাশ করে, একে বাড়াবাড়ি বা অযৌক্তিক বলে বিতর্ক তুলেন । প্রায়শঃ টিভি টকশোতে দেখা যায় বিজ্ঞ আলোচকরা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন, একাত্তর পরবর্তী প্রজন্মের জামাত-শিবিরকে রাজাকার বা নব্য রাজাকার বলা নিয়ে । স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন আসবে যে জামাত-শিবির কর্মীটি একাত্তরে জন্মাননি, তাকে কেন ঐ খেতাবে ভূষিত করা হবে বা ঐ কর্মকান্ডের দায় নিতে হবে ?
একাত্তর পরবর্তী প্রজন্মের জামাত-শিবির কর্মীকে রাজাকার বলাটা আমিও ঠিক মনে করিনা, কারন এতে প্রকৃত রাজাকারদের অবমূল্যায়ন হয় । স্বাধীনতা যুদ্ধকালিন সময়ে স্বাধীনতার সক্রীয় বিরুদ্ধাচারনকারী রাজাকারের ন্যায় ঘৃণার সমকক্ষ কেউ হতে পারে না । একজন রাজাকারের সমকক্ষ আরেকজন রাজাকারই হতে পারে, অন্য কেউ নয় । এক্ষেত্রে হুমায়ুন আজাদের উক্তিটি প্রনিধানযোগ্য অর্থাৎ একজন রাজাকার সবসময়ই রাজাকার কিন্তু একজন মুক্তিযোদ্ধা চিরজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় । তাহলে নব্য রাজাকার কারা ?
সাধারনতঃ বর্তমান সময়ে জামাতের সহযোগি সংগঠন শিবির ও চিহ্নিত রাজাকারদের সমর্থনকারীদের নব্য রাজাকার বিশেষণটি প্রয়োগ করেন । দেখা যায় যাদেরকেই এই বিশেষণে ভূষিত করা হয়, তারা এই বিশেষণটি গ্রহন করতে নারাজ । তাই এই বিষয়টি নিয়ে কিঞ্চিত যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি ।
যাহোক, সবাই জানেন-জামাতের সহযোগি সংগঠন হিসেবে ছাত্রশিবির ছাত্র রাজনীতিতে সক্রীয়, যা একাত্তরে ছাত্র সংঘ নামে ক্রিয়াশীল ছিল । জামাত-শিবিরের রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনা ও আদর্শগত ভাবনা এক ও অভীন্ন । শুধুমাত্র রাজনীতির ক্ষেত্রটি ভীন্ন, জামাত সক্রীয় জাতীয় রাজনীতিতে আর শিবির ছাত্র রাজনীতিতে । অতীত থেকে বর্তমান পর্যন্ত যে কোন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও কর্মকান্ডে জামাত-শিবিরের নবীন প্রবীনের মাঝে নীতিগত ঐক্য সর্বজনসিদ্ধ ।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে জামাত তার কর্মকান্ডকে অদ্যবধি ঠিক মনে করেন এবং ঐ ঐতিহাসিক কলংকজনক ভূমিকার জন্য ভুল বা দুঃখ প্রকাশেও নারাজ, যা রাজাকার শিরোমনি গোলাম আযমের এ্যারেষ্ট পূর্ববর্তী বিভিন্ন টিভি সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট । অন্যদিকে, মুক্তিযুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন জামাতের নেতাদের ছাড়িয়ে নিতে নবীন প্রবীন জামাত শিবির রাজপথে সহিংসতায় সক্রীয় আছে । স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উত্তাপিত হবে চিহ্নিত রাজাকারদের সংঘটিত অপরাধের বিচার থেকে রক্ষার দায়িত্ব নিয়ে যারা রাজপথে সহিংসতা ছড়াচ্ছে, তাদের ঐ অপরাধ মূলক কর্মকান্ডের দায়ও নিতে হবে । রাজাকারদের পক্ষালম্বন করবেন অথচ ঐসব রাজাকারের অপরাধের দায় নিবেন না, তা হতে পারে না । মূলতঃ দায় না নেয়ার ভাবনাটাই অনৈতিক ও অযৌক্তিক ।
জামাত-শিবিরের রাজনীতি পর্যালোচনা করলে দেখা যায় -একাত্তর পূর্ব ও পরবর্তী সব প্রজন্মের জামাত-শিবিরই জামাতের একাত্তরের ভূমিকাকে অর্থাৎ স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে পাক হানাদার বাহিনীকে সহযোগিতা করাকে পূর্বাপর ঠিক মনে করেন । তাই স্বভাবতঃই বলা যায় একাত্তর পরবর্তী বা পূর্ববর্তী প্রজন্ম বিষয়টা মূখ্য নয়, মূখ্য বিষয় হচ্ছে যেহেতু একাত্তরের ভূমিকাকে এখনও ভুল মনে করেন না, সেহেতু এই রাজনৈতিক ভাবনায় পরিচালিত মানুষগুলো পূর্বাপর একই ধরনের আচরন করবে । দুর্নীতির সুযোগের অভাবে সৎ থাকাকে যেমনি সাধু বলা যায় না, তেমনি একাত্তর পরবর্তী প্রজন্মের জামাত-শিবির রাজাকার বা নব্য রাজাকার নয়, তাও ভাবা যায় না । ঐ সময়ে জন্মালে সেও একই ধরনের ভূমিকা রাখতো বা ভবিষ্যতে সুযোগ আসলে একই ধরনের ভূমিকা রাখবে । অতএব, জামাত-শিবিরকে একাত্তর পূর্ববর্তী ও একাত্তর পরবর্তী এই বিভাজনে বিভাজিত করা ঠিক নয় । তাই সংঘত কারনে একাত্তর পরবর্তী প্রজন্মকে রাজাকার ভাবাদর্শের সুযোগ্য উত্তরসূরী অর্থাৎ নব্য রাজাকার বলাটাই শ্রেয় ।
রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের চিন্তা চেতনাকে ধারন করে মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী প্রজন্ম যদি প্রজন্ম একাত্তর বা এ যুগের মুক্তিযোদ্ধা খেতাবে সন্মানিতবোধ করেন, রাজাকারদের চিন্তা চেতনা ধারনকারী একাত্তর পরবর্তী প্রজন্মের জামাত-শিবির কেন নব্য রাজাকার খেতাবে অনীহা দেখাবে বা বিতর্ক তুলবে ? মুক্তিযুদ্ধকে ঠিক মনে করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারন ও লালনকারীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সন্তান খেতাবে ভূষিত করা যৌক্তিক হলে একাত্তরে জামাতের রাজাকারদের ভূমিকা ঠিক মনে করে রাজাকারের চেতনাকে ধারন করে এবং রাজাকার রক্ষায় রাজপথে সহিংস গোষ্টীকে নব্য রাজাকার বা রাজাকারের চেতনার সন্তান বলাটা কেন অযৌক্তিক হবে ? মূলতঃ পূর্বাপর সব জামাত-শিবির কর্মীই রাজাকারদের রক্ষার দায়িত্ব নেয়ার মধ্য দিয়ে তাদের দায়ও নিজেদের ঘাড়ে তুলে নিয়েছেন । তাই এদের নব্য রাজাকার বললে খুব বেশী বলা হয় না এবং এটাকে অযৌক্তিকও বলা যাবে না ।
ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।
স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস পড়লে জানতে পারবেন। এতো দূরে যাওয়ার দরকার কী? এখনও প্রায় নিয়মিত ভাবেইতো পাকিস্তানে আত্মঘাতী হোমার আঘাতে শতশত নিরীহ মানুষ মরছে। তারপরও যদি না দেখেন,তাহলে বলবো কী আপনি পাকি প্রেমে অন্ধ। সরি,একটু বেশীই আঘাত দিয়ে পাকি বর্বরতা দেখিয়ে দেয়ার জন্য । ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।
বর্বরতার জবাব দিতে গেলে অনেক লম্বা হয়ে যাবে, আলাদা একটি পোস্টে জবাব দেয়ার চেষ্টা করবো ইনশা আল্লাহ।
আর স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস ? আমি কাদেরটা পড়বো একটু বলে দিন।
সবার লিখা পড়ে নিজের বিবেক বিবেচনায় সত্য ইতিহাস উৎঘাটনের চেষ্টা থাকলে ইতিহাসের সত্যতা বের করা দুঃসাধ্য নয়।
ধন্যবাদ।
জনাব মুসা একটু ইতিহাস জেনে মন্তব্য করবেন প্লীজ।
তবে ওদের বর্তমান অসহায় অবস্থায় নির্যাতন পীড়নকে ঘৃণা করি। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন