বিএনপি জোট আন্দোলনে ব্যর্থ হলে নির্বাচনে আসবে কী? আওয়ামীলীগ সহ কোন কোন দল নির্বাচন করবে? আমজনতার ভাবনা কী?
লিখেছেন লিখেছেন মহি১১মাসুম ০৭ নভেম্বর, ২০১৩, ০১:২০:৩১ রাত
বিএনপি-জামাত জোট দাবী আদায়ে সক্ষম না হলে বর্তমান সরকারের অধীন নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবে কী ? এটা ঠিক, এই ধরনের প্রেক্ষাপটে এক কথায় উত্তর দেয়া কষ্টকর । তবে এতোটুকু বলা যায় বিএনপি তাদের দলীয় ও জোটভূক্ত অন্যান্য দলের কর্মী-সমর্থকদের আন্দোলনের পাশাপাশি বিদেশী কূটনীতিক ও দাতা সংস্থা দ্বারা সরকারকে চাপে ফেলে মোটামুটি নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচনের (ফর্মুলা বিবেচ্য নয়) ক্ষেত্র তৈরী করতে পারলে নির্বাচন করবে অন্যথায় নির্বাচন বয়কট ও প্রতিহতের ঘোষনা দিবে । তবে বিএনপি-জামাত জোটের বর্তমান শক্তিমত্তা অঞ্চল ভেদে নির্বাচনে বিশৃংখলা সৃষ্টিতে সক্ষম হলেও সারাদেশে প্রতিহত করতে পারবে না । আর এই ধরনের পরিস্থিতিতে এরশাদের জাতীয় পার্টি, ১৪ দল, বিএনএফ সহ কিছু নাম সর্বস্ব দল আওয়ামীলীগের সাথে আঁতাত রেখে নির্বাচন করবে । এছাড়াও সরকার বিভিন্ন এজেন্সীকে ব্যবহার করে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে ১৮ দলীয় জোটের দু/চারটি দল ও বিএনপির কিছু পরিচিত নেতাকেও নির্বাচন প্রক্রীয়ায় যুক্ত করতে চেষ্টা করবেন । এছাড়া যুদ্ধাপরাধীদের রায় কার্যকরকে কেন্দ্র করে বিএনপির বক্তব্য ও মনোভাব নেতিবাচক বিবেচিত হলে গনফোরামের ড. কামাল হোসেন, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না সহ সিপিবি-বাসদকে জোটগত ভাবে নির্বাচনে দেখা যেতেও পারে । এই ধরনের নির্বাচনে গঠিত সরকার আইনগত ভাবে বৈধ হলেও গ্রহনযোগ্যতা প্রশ্ন সাপেক্ষ্য হবে এবং মেয়াদ পূর্ণাঙ্গ করতে না পারলেও ৩/৪ বৎসর কাটিয়ে দিতে পারবে । কারন বিএনপি-জামাত জোট বর্তমান সময়ে সফল আন্দোলন করতে না পারলে নতুন সরকারটির সামনেই দাঁড়াতে পারবে না । হয়তঃ বলবেন, বিএনপি ৯৬র ১৫ ফেব্রয়ারী নির্বাচনে তিন মাসের বেশী টিকেনি, আওয়ামীলীগ কীভাবে টিকবে ? বিএনপি না টিকার কারন আন্দোলন-সংগ্রামে শক্তিশালী আওয়ামীলীগ, পুরো শক্তির জামাত, জাতীয় পার্টি ও বামফ্রন্টের সক্রীয় বিরোদ্ধ অবস্থান ও ম.খা. আলমগীরের নেতৃত্বে সচীবালয়ের সচীব, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মেয়র হানিফের জনতার মঞ্চে যোগদান । সেই তুলনায় আন্দোলনে দূর্বল বিএনপি ও খর্ব শক্তির জামাত ও নাম সর্বস্ব ১৮ দলীয় শরীকরা সক্ষম হবে বলে মনে হয় না । তবে গনতন্ত্রের ধারাবাহিকতা, স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে সব দলের অংশ গ্রহন মূলক নির্বাচনের বিকল্প নাই ।
এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিবারই আওয়ামীলীগ-বিএনপি একে অন্যের প্রতি পক্ষপাতিত্ব ও ষড়যন্ত্রমূলক নির্বাচনের অভিযোগ তুলে মল্লযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন । একদল অন্যদলের লুটপাঠ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে না তুললেও ক্ষমতা দখলের আন্দোলনে পরষ্পর মরিয়া । অথচ শেয়ার বাজার, পদ্মা সেতু ও হলমার্ক নিয়ে বিএনপিকে এবং হাওয়া ভবন, বিদ্যুৎ কেলেংকারী ও দুর্নীতিতে নাম্বার ওয়ান হওয়াকে নিয়ে আওয়ামীলীগ রাজপথে কয়দিন আন্দোলন সংগ্রাম করেছে, নাগরিকরা তা ভুলে যায়নি । তাই ক্ষমতা দখলের এই বিধ্বংসী লড়াইকে প্রকারান্তরে লুটপাঠ ও দুর্নীতির লাইসেন্স অর্জনের লড়াই বললে ভুল হবে কী ? এই দুই দলের সমসাময়িক রাজনীতিকে রাজনীতি না বলে কেউ যদি বলেন এক টুকরা মাংস (ক্ষমতা) নিয়ে দুই কুকুরের (আ.লীগ,বিএনপি) কামড়া-কামড়ী, (দুঃখিত, মাফ করবেন) । দুঃখ হয়, এই দুই দলের ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন রাষ্ট্রের মালিক নামক নিরীহ জনগন । অথচ এই নিরীহ মালিকদের কথা বলে, মালিকদেরই দুর্ভোগ, দুর্দশা ও ভোগান্তি বাড়িয়ে ওনারা চালান ক্ষমতার মসনদ দখলের লড়াই । তাই এই তথাকথিত রাজনীতিকে ধীক্কার জানাই, অবসান চাই, মুক্তি চাই- এই রাজনীতি নামক নৈরাজ্য থেকে । প্রত্যাশা করি, রাজপথে আর কোন মায়ের বুক খালি হবে না, সংকট নিরসনে ওনারা সংলাপে বসবেন, পরষ্পর পরষ্পরকে শুনবেন ও সমঝোতায় পৌঁছবেন ।
বিষয়: রাজনীতি
১৭৪২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন