পবিত্র কোরআন শরীফের ইজ্জ্বত ও কিছু কথা ।
লিখেছেন লিখেছেন মহি১১মাসুম ১৬ মে, ২০১৩, ১১:১৪:২৪ রাত
প্রত্যেক ঈমানদার মুসলিমের কাছে পবিত্র কোরআন শরীফ শ্রদ্ধা ও বিশ্বাসে অতুলনীয়। নামাজ, রোজা সহ অন্যান্য ধর্মীয় রীতিনীতি অনিয়মিত পালনকারী ও নিয়মিত পালনকারী সব ধর্মবিশ্বাসী মুসলিম পবিত্র কোরআনকে অশ্রদ্ধা অসম্মান করবে, এটা কল্পাতীত বিষয়।
কিন্তু বায়তুল মোকারমের ফুটপাতে ৫ মে ২০১৩ ইং তারিখে অসংখ্য পবিত্র কোরআন শরীফ ও অন্যান্য ধর্মীয় বই পোঁড়াল একদল পাষন্ড। ফুটপাতের দোকানী আর্থিক ও মানুষিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আর দেশ জাতি নির্বিশেষে মুসলিম সমাজ ভীষন কষ্ট পেয়েছেন। অবাক ও বিস্ময়াভূত হয়ে আমার ভীনদেশী মুসলিম বন্ধু জানতে চাইল, সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমানের দেশে জাতীয় মসজিদের পাশে, ধর্মীয় সংগঠনের সমাবেশ থেকে, এমনকি রাজধানী শহরে কিভাবে এই জঘণ্য, ঘৃনীত অবিশ্বাস্য কর্মটি করতে পারল !!
শুধু বিদেশী মুসলিম বন্ধু নয়, ঐ দিন থেকে অদ্যবধি কিছু হিসাব মিলাতে পারছিনা।
আমার সাথে দ্বিমত করে হয়ত বলবেন ঐ দিনের গুলিতে নিহত মানুষগুলি আমার দৃষ্টিতে পরছেনা কেন ? অবশ্য অবশ্যই ঘৃণা ও নিন্দা জানাই। আমার জিজ্ঞাস্য হচ্ছে ঐ দিন ১৩ দফার আন্দোলনে জীবন উৎসর্গকারীরা কোরআনী রাষ্ট্র কায়েমের জন্য জীবন দিয়েছেন। স্বাভাবিক হিসাব নিকাশে প্রশ্ন ওঠবে যারা কোরআনকে রাষ্ট্রীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে জীবন দিল, তারা কিভাবে পবিত্র কোরআন পোঁড়াবে। হ্যাঁ, পোঁড়ানো সম্ভব, কিসের দোকান তা না জেনে আগুন দিলে। কিন্তু তাও না, ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে ভাল ভাবে আগুন জ্বালাতে কোরআন শরীফ ও অন্যান্য বইয়ের পাতা ছিড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আগুনের তেজ বাড়িয়েছে। অর্থাৎ যারা আগুন দিয়েছে তারা জেনে শুনেই পবিত্র কোরআন শরীফ আগুনে পুঁড়িয়েছে।
পরদিন পত্রিকায় দেখলাম প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নেতা এমকে আনোয়ার একজন যুবলীগ নেতার নাম উল্লেখপূর্বক বিবৃতি দিলেন আর তাতে ঐ যুবলীগ নেতা মিথ্যা তথ্যের জন্য এমকে আনোয়ারকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যান, এরপর থেকে অদ্যবধি এমকে আনোয়ার পলাতক। আমার অনুরোধ এমকে আনোয়ার পবিত্র কোরআনকে নিয়ে মিথ্যা তথ্যের রাজনীতি না করে থাকলে, আদালতে এসে কোরআন শরীফকে সম্মান দিন, ঐ পাপিষ্টকে শাস্তির আওতায় আনার সুযোগটি গ্রহন করবেন, আর পবিত্র কোরআন শরীফ নিয়েও মিথ্যা অভিযোগের রাজনীতি করলে এমকে আনোয়ারকে পবিত্র কোরআন শরীফ নিয়ে মিথ্যার রাজনীতির জন্য সরকার আদালত শাস্তির ব্যবস্থা করুক। পবিত্র কোরআন শরীফের কাছে যুবলীগ নেতা বা এমকে আনোয়ার নগণ্য মানুষই বটে।
বেসরকারী টিভির বদৌলতে আমরা দেখেছি, ঐ ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা জামাত-শিবির কর্মীদের অভিযুক্ত করেছেন। ব্যবসায়ীদের ভাষ্য-দীর্ঘদিন ঐ এলাকায় ব্যবসা করার কারনে পবিত্র কোরআন শরীফ পোঁড়ানো লোকগুলিকে জামাত শিবিরের বায়তুল মোকারম এলাকায় জামাত-শিবিরের মিটিং মিছিলে নিয়মিতই দেখতেন, দোকান ও পবিত্র কোরআন শরীফ রক্ষায় ওদের হাতে পায়ে ধরে মিনতি করেছেন। ঐ পাপিষ্ট মানুষগুলো নাকি বলেছে জেহাদের সময় এসব করা যায়, এরা সরকারের বিরুদ্ধে জেহাদে নেমেছে।
আমার প্রশ্ন বাস্তবিক অর্থেই কি এখনকার পরিস্থিতিটা জেহাদ তুল্য এবং গুনাহের কাজ নয়, এমনটা কি? ধর্মজ্ঞান সম্পূর্ণ পাঠক আমাকে প্রশ্নের উত্তরটি জানাবেন।
এছাড়াও আমার কিছু জানার আছে। যেমন-
এক) মিছিল সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার নিকটবর্তী স্থানে পবিত্র কোরআন শরীফ পুঁড়ছে কিন্তু ইসলাম হেফাজতকারীরা ঐ সময়টিতে কোরআন শরীফ হেফাজতে এগিয়ে আসলেন না কেন ?
দুই) ইউটিউবে মহানবী মোহাম্মদ (সাঃ)কে অবমাননায়, রামুতে উত্তম বড়ুয়ার ফেসবুকে পবিত্র কোরআন শরীফ অবমাননায়, হাতে গোনা কয়েকজন ব্লগারের ধর্ম অবমাননায় সারাদেশ উত্তাল হলেও অনেকগুলি কোরআন শরীফ ও ধর্মীয় বই পুঁড়ার ছবি ও টিভি ভিডিওতে দেখার পরও কেন অতীতদিনের আন্দোলনকারীরা আন্দোলনত দূরের কথা একটি শব্দও উচ্চারণ করছেন না ?
গুরুত্ব বিবেচনায় অন্য ঘটনাগুলির চাইতে জঘণ্য ও ঘৃণীত কর্ম এটি। কিন্তু এই রহস্যজনক নীরবতার কারন কি ?
তিন) অন্য ধর্মের লোক, বামপন্থী, আওয়ামী লীগ বা বিএনপির মত সংগঠনের আন্দোলন কর্মসূচীতে সাধারন বইয়ের দোকান ভেবে ভুল করে আগুন দিলে বাংলাদেশে আন্দোলনটা কোন পর্যায়ে গড়াত কল্পনা করে দেখুন।
আমরা রাজনীতি করতে গিয়ে কিনা করছি। তাই বলে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ নিয়েও পারষ্পরিক দোষারোপের খেলা খেলব !
সরকারের উচিত ভিডিও ফুটেজ দেখে অপরাধীদের কঠিন শাস্তির বিধান নিশ্চিত করা।
বিষয়: রাজনীতি
৩৬৯১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন