ফর্মুলা মাত্রই বেহুদা সাহেবের ফর্মুলা ভাববেন না প্লীজ্। পড়বেন, মতামত দিয়ে সমৃদ্ধ করবেন। সংকট নিরশনের ফর্মুলা।
লিখেছেন লিখেছেন মহি১১মাসুম ১৩ এপ্রিল, ২০১৩, ০১:২৭:২২ রাত
রাজনীতির এই মহাগ্রাসী সংকট থেকে উত্তরণের কৌশল নির্ধারনে সুধীজন, সুশীল সমাজ, বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ, জাতিয় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থা থেকে ফর্মুলা দিচ্ছেন । আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে মনে হয় এসব ফর্মুলা বা মতামত গুলি গৃহীত হলে পরবর্তী সংসদ নির্বাচনকে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও গ্রহনযোগ্য হবে হয়ত । কিন্তু এতে স্থায়ী সমাধান আসবেনা, অতীতেও আসেনি । যা এসেছে তা হচ্ছে নির্বাচিত সরকারটি ৫ বৎসরের মধ্যে ৪ বৎসর ঠেলে ঠুলে চলার মত সমাধান । বাকী ১টি বৎসর জাতি ভোগ করে অসহনীয় জ্বালাও পোঁড়াও ভাংচুর সহ জীবনহরণ ও অর্থনীতি ধবংস করার এক অদ্ভূত গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রাম । বাস্তবতা হচ্ছে সংকটের স্থায়ী সমাধান আসেনি ।
তাহলে আমরা কি সমস্যা নির্ধারণে ভুল করছি যার কারনে সংকটের স্থায়ী সমাধান আসছে না । আমারও তাই মনে হচ্ছে সমস্যা অন্য জায়গায় যা হচ্ছে প্রাগৈতিহাসিক আমল থেকে আমরা জমিদার রাজা শাসিত মানুষিকতা থেকে ওঠে আসতে পারিনি । রাজা বাদশার আমলে একক শক্তির অধীন ছিলাম কিন্তু এখন অবস্থান করছি বহু দলীয় শাসনে । বহু দলীয় শাসনে আমরা অনেকটা বহু রাজার (দলীয়) আনুগত্যে বিশ্বাসী । তাই দেখা যায় নিরপেক্ষ নির্বাচনে ক্ষমতা প্রাপ্তদেরকেও আমরা ৫ বৎসরও মেনে নিতে পারিনা । আমাদের মানুষিকতা পরিবর্তন যেহেতু হুট করে আসবেনা । সেহেতু নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা ও ক্ষমতাকেও বহু দলীয়করণ করা অনিবার্য্য । এতে স্থায়ী সমাধান আসতে পারে।
আপনাদের মতামতের জন্য হুদা মার্কা ফর্মুলাটি উপস্থাপন করলাম। মতামত চাই।
ফর্মুলাঃ ধাপ-এক
নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালীকরণ ও নির্বাচন কালিন সরকার পরিচালনার জন্য দল গুলির প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে দলগুলি থেকে ১১ জন সদস্য নির্ধারণ করা এবং ১১ জনের সরকারটির প্রধান হবেন সংখ্যাগরিষ্টের ভিত্তিতে তবে দপ্তর বন্টনে দ্বিতীয় প্রধান দল গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর দিয়ে ক্ষমতার ব্যালেন্স করতে হবে এবং অস্থায়ী সরকারের সদস্যরা নির্বাচন করবে সরাসরি প্রেসিডেন্ট ও নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় এবং ঐ সদস্যদের নির্বাচন হবে অস্থায়ী সরকারের ৭ দিনের মধ্যে । যিনি নির্বাচনে হেরে যাবেন ঐ আসনের সদ্য নির্বাচিত সদস্যটি অস্থায়ী সরকারে স্থলাভিষক্ত হবেন । এতে যে সমাধানটি আসবে বা অতীতেও এসেছিল তা ৪ বৎসরের । বাকী ১টি বৎসর আমরা রাজনৈতিক হট্টগোলে পড়ি । আর বাকী ১টি বৎসরকেও স্থিতিশীল করা অর্থাৎ সরকারের ৫টি বৎসরকে শান্তিপূর্ণ করার জন্য আরেকটি প্রস্তাবনা উপস্থাপন করছি ।
পূর্বেই উল্লেখ করেছি আমরা সংসদীয় গণতন্ত্রের এক দলীয় শাসনে মানুষিক স্বস্থি পাই না । আমার দলকে অর্থাৎ আমাকে আমি ক্ষমতাহীন মেনে নিতে বা মানিয়ে নিতে পারি না । এটা দলগুলি স্বীকার করুক আর না করুক, বাস্তবতাকে মেনে নিত পারলে সরকারকে শেষ বৎসরটাতে অনাকাংখিত পরিস্থিতিতে বিরোধী দল বারবার ফেলতেন না । হয়তঃ ভাববেন সমাধানটা কি ? সমাধানটা জাতীয় সরকারের আদলে একটি সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে । যাতে অন্ততঃপক্ষে আসনের ভিত্তিতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দলকে ক্ষমতার অংশীদার করতে হবে ।
যাহোক, হাস্যকর ও পৃথিবীর কোথাও অস্থিত্বহীন মনে হলেও হতে পারে । মনে রাখবেন আমাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থাটি আমরাই প্রথম গ্রহন করেছিলাম । এখন আমরা পরিত্যাগ করলেও পাকিস্থান ও নেপাল অনুকরণ করছে । ইতিপূর্বে উল্লেখিত অস্থায়ী সরকার দ্বারা নির্বাচিত সরকারটি নিন্মরূপে গঠিত হলে সবাই অংশীদারিত্ব অনুভব করবেন হয়ত।
ফর্মুলাঃ ধাপ-দুই
সংখ্যাগরিষ্ট দলটি সরকার গঠন করবে এবং সরকার প্রধান প্রধানমন্ত্রী নির্ধারণ করবেন । প্রধান বিরোধী দল থেকে প্রেসিডেন্ট দিতে হবে । প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্যতা হবে ক) বিরোধী দলের প্রধান অথবা খ) বিরোধী দলের সদস্য যিনি ৫৫ বৎসরের অধীক এবং কমপক্ষে ৫ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য হতে হবে । প্রথম সহকারী স্পীকারের পদটি প্রধান বিরোধী দলকে দিতে হবে এবং দ্বিতীয় সহকারী স্পীকারের পদটি তৃতীয় প্রধান দল থেকে দিতে হবে । সংসদীয় কমিটির সভাপতি হিসেবে সরকার থেকে ৬০ শতাংশ, প্রধান বিরোধী দল থেকে ৩০ শতাংশ এবং দ্বিতীয় প্রধান বিরোধী দল থেকে ১০ শতাংশ দিতে হবে । প্রধান বিরোধী দল চাইলে ১ জন পূর্ণমন্ত্রী ১ জন প্রতিমন্ত্রী নিতে পারবেন সেক্ষেত্রে দপ্তর পছন্দ অপছন্দ থাকবে না । দ্বিতীয় প্রধান বিরোধী দল থেকে ১ জন প্রতিমন্ত্রী দিতে হবে এক্ষেত্রেও পছন্দ অপছন্দ থাকবে না ।
স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন ওঠতে পারে এই ধরনের সরকার কেন ? পৃথিবীর কোথাও এধরনের সরকারের অস্থিত্ব আছে কি ? হ্যাঁ, আমাদের পরিত্যক্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অস্থিত্বও পৃথিবীর অন্য কোন রাষ্ট্রে ছিল না । যদিও এখন পাকিস্থান ও নেপাল অনুকরণ করছে । আর এই ধরনের সরকার প্রয়োজন এ কারনে যে আমরা আমাদেরকে ক্ষমতাহীন অবস্থায় দেখতে চাইনা, মেনে নিতে বা মানিয়ে নিতে পারছি না ।
মেনে নেয়া বা মানিয়ে নেয়ার মাধ্যমে স্থিতিশীল রাষ্ট্র বা সরকার গঠন করে রাষ্ট্রের ধারাবাহিক উন্নয়ণই এই ফর্মুলার বাস্তবতা ।
বিষয়: রাজনীতি
১১৪৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন