সিরিয়ায় নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ ও ইরানের ভূমিকা
লিখেছেন লিখেছেন ছোট্টন ০২ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৮:০৯:৫১ রাত
সরিয়ার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ সুন্নি মুসলিম হলেও সংখ্যালঘু শিয়া সম্প্রদায়ভুক্ত হাফিজ আল আসাদ সেনা সক্তিকে কাজে লাগিয়ে ক্ষমতা দখল করে ষাট'র দশকের শেষের দিকে।তারপর থেকে দীর্ঘ ৪২ বছর ৭৪% ভাগ সুন্নি মুসলিমকে ১২% ভাগ আলাউই শিয়া শাসন করে আসছে। ১৯৮২ সনে একবার হাফিজ আল আসাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ দেখা দিয়েছিল। সে সময়ে বিদ্রোহ দমনের নামে বর্তমান প্রেসিডেন্ট আশাদের পিতা হাফিজ সিরিয়ার হামা শহরে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছিল।
২০১১ সনে দীর্ঘদিনের একনায়কতান্ত্রিক শাসন, শোষণ, নিপীড়ন নির্যাতন, ইত্যাদি থেকে জেগে উঠা ক্ষোভ তিউনিসিয়া, মিশর, লিবিয়া, ইয়েমেন, বাহরাইন, হয়ে শেষ পর্যন্ত সিরিয়ার দামেস্কো ও দেরা শহরে পৌঁছায়। সে গণজাগরণ ঠেকাতে বাসার আল আসাদ তার পিতা থেকেও ভয়ঙ্কর রুপ ধারন করে মানুষ হত্যার মহোৎসবে মেতেছে।
গ্রামের পর গ্রাম মাটির সাথে মিশিয়ে দিচ্ছে আসাদের বিমানবাহিনী, আলোপ্পা, দামেস্কো সহ অন্যান্য শহর গুলো জনমানব শূন্য ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। লক্ষ্য লক্ষ্য সাধারণ জনগণ পাশ্ববর্তী দেশ সমূহে আশ্রয় নিচ্ছে। নিজ জনগণের উপর নির্বিচারে হেলিকপ্টার থেকে বোমা বর্ষণ করা হচ্ছে। স্থল পথে ব্যবহার করা হচ্ছে ট্যাঙ্ক ও ভারি অস্ত্র।
এই পরিস্থিতিতে যখন সারা বিশ্বের মানবতাবাদী মানুষরা আসাদ’র বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে, তখন তথাকথিত ‘ইসলামিক প্রজাতন্ত্র’ ইরান বাশার’র মত রক্তপিপাসু’কে নির্লজ্জ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে । সিরিয়ান সেনাবাহিনী যখন কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে অস্তিত্ব সঙ্কটে ভুগছে, অবিযোগ রয়েছে যে, ইরানী সেনাবাহিনী সিরিয়ায় প্রবেশ করে নিরীহ মুসলিমদেরকে নির্বিচারে হত্যা করছে। ইরানের ‘ইসলামী মুখশ’ মূলত খসে পড়া শুরু হয় ‘আরব বসন্ত’ শুরু হওয়ার পর থেকে। তিউনিসীয়া থেকে যখন আরব বসন্ত শুরু হয়, তখন ইরানী মিডিয়া গুলো এর নাম দিয়েছিল ‘মধ্যপ্রাচ্যে ইসলামী জাগরণ’। সেই ‘ইসলামী জাগরণ’ যখন সিরিয়ায় পৌঁছয়,তখন ইরান তার নাম দিয়েছে, ‘সিরিয়ায় বিদেশী হস্তক্ষেপ’।একই সময়ে সৌদি আরবের শিয়া অধ্যুষিত এলাকা কাতিফে রাজ পরিবার বিরুধি আন্দোলনকে ফুলীয়ে ফাঁপিয়ে দেখিয়ে সেটাকে ‘ইসলামী জাগরণ’ বলে প্রচার চালাচ্ছে। বাংলা ভাষায় ইরানের প্রতিনিধিত্বকারী একমাত্র মিডিয়া 'রেডিও তেহরান 'ও তাদের বাংলা ওয়েব সাইট। এই সংবাদমাধ্যমটি নির্লজ্জভাবে সিরিয়ার সরকারী হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে সোচ্চার জনতাকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করছে। সিরিয়ার গণহত্যার বিপক্ষে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে দেয়া বক্তৃতা বিবৃতিকে বিকৃত করে প্রচার করছে এবং তাদেরকে বলছে ‘কট্টরপন্থী ওহাবি’। সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের বিপক্ষে ও ধ্বংস, হত্যাযজ্ঞের সপক্ষে অবস্থান নিয়ে ইরান প্রমান করেছে তাদের কাছে ইসলাম বা জনস্বার্থ ছেয়ে নিজস্ব সাম্প্রদায়িক স্বার্থই গুরুত্বপূর্ণ।
বিষয়: বিবিধ
১২১৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন