আত্বহত্যা করাটাও মানুষের মৌলিক অধিকারে রুপ নিতে পারে
লিখেছেন লিখেছেন আমার মন ১৪ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৩:১৪:০০ দুপুর
বেঁচে থাকা মানুষের একটি মৌলিক অধিকার হলে, মরে যাওয়া বা আÍহত্যা করাও মানুষের মৌলিক অধিকার হবে না কেন?
এই প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়েছিল ভারতের গুজারিশ সিনেমাটিতে। বাস্তবে কিন্তু এমন ঘটনা রয়েছে যা আদালতেও মিমাংসা করা যায় নি
ভারতে একজন নারীর যন্ত্রণাহীন মৃত্যুর জন্য করা আবেদন সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দিয়েছিল। ওই নারীর নাম অরুণা শ্যানবাগ। ১৯৭৩ সালের পর থেকে প্রায় ৩৭ বছর তিনি হাসপাতালের শয্যায় অচেতন অবস্থায় ছিল। পিনকি বিরানি নামে একজন সাংবাদিক অরুণার যন্ত্রণাহীন মৃত্যুর জন্য আবেদন করেন। তিনি অরুণাকে নিয়ে একটি বইও লিখেছেন।
আদালত জানান, চিকিৎসার তথ্য-প্রমাণ অনুসারে অরুণার বেঁচে থাকা উচিত। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা আবেদন করলে যন্ত্রণাহীন মৃত্যু অনুমোদন করা হয়। ১৯৭৩ সালে অরুণা পাশবিক ধর্ষণের শিকার হন। সুত্র- বিবিসি।
অবস্থার পরিপেক্ষিতে কারো মঙ্গলের জন্য আদালত মৃত্যু কার্যকর করার অনুমতি দিতে পারে। গত ২০ জুলাই ২০০৯ তারিখে ব্রিটেনের সর্বোচ্চ আদালত এসিসটেড সুইসাইডকে বৈধ ঘোষণা করে। ডেবি পারডি নামের এক মহিলা আদালতের রায়ে স্বেচ্ছা-মৃত্যুর বৈধতা পান। ব্যাপক আলোচিত সেই ঐতিহাসিক রায় নিয়ে আইনবিদদের মাঝে আলোচনার ঝড় ওঠে। ব্রিটেনের বিদ্যমান আইনের সাথে সেটি সাংঘর্ষিক কিনা সে ব্যাপারেও বিশ্লেষণ শুরু হয়।
এসিসটেট সুইসাইড : ব্রিটিশ আইন কী বলে?
বৃটেনের দ্য সুইসাইড এ্যক্ট ১৯৬১, অনুসারে আÍহত্যায় সহায়তা, প্ররোচনা কিংবা আÍহত্যায় উদ্বুদ্ধকরণ একটি অপরাধ। যার শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড। কিন্তু সুইজারল্যান্ডের সেই হাসপাতালে ডজনখানেক লন্ডনের অধিবাসী এসিসটেড সুইসাইড করলেও এ কারণে তাদের আÍীয় কিংবা বন্ধুবান্ধবদের আদালতের মুখোমুখি করা হয় নি এখন পর্যন্ত। ডেবি পারডির এই মামলার যুক্তি থেকে বিচারকরা বলছেন, এ ব্যাপারে আইনের অবস্থান সু¯পষ্ট নয় এবং পূর্বে এসিসটেড সুইসাইডে সহায়তাকারীগণ এটি জানবার অধিকার রাখেন যে, কোন কোন পরিস্থিতিতে তাদের আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হতে পারে।
আমাদের দেশে এখন পযর্ন্ত্য এমন কোন সমস্যা সৃষ্টি হয় নি। যার কারণে আইনবিদদের ভাবতে হয় নি এখনো। তবে হতে কতক্ষণ!
সর্বশেষ, ১৩ মার্চ,২০১২ এ এই বিষয়টি আবার চোখের সামনে- ব্রিটিশ এক নাগরিক স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণে সহায়তা করার জন্য চিকিৎসকদের অনুমতি কামনা করে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন । টনি নিকলিনসন (৫৮) নামের সেই ব্যক্তি পক্ষাঘাতে ভুগছেন।উইন্টশায়ারের মেকলশামের বাসিন্দা মি. নিকলিনসন স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণে সাহায্যকারী চিকিৎসককে হত্যার অপরাধ থেকে রেহাই দেয়ার জন্য আদালতের রায় চাইছেন। ২০০৫ সালে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের পর স¤পূর্ণ লক ইন সিনড্রমে আক্রান্ত হন টনি। এ রোগে আক্রান্তের গোটা শরীর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হলেও মন সক্রিয় থাকে। কেবল পার্লামেন্টই হত্যা সংক্রান্ত আইন পরিবর্তন করতে পারে জানিয়ে মামলাটি খারিজ করে দিতে চাইছে ব্রিটেনের বিচার মন্ত্রণালয়। নিকলিনসন বলেন, তার জীবন নিস্তেজ, শোচনীয়, হীন, অসম্মানজনক এবং অসহনীয় হয়ে গেছে।বৈদ্যুতিক বোর্ড বা বিশেষ কম্পিউটারের মাধ্যমে যোগাযোগ করে থাকেন তিনি। সেই সঙ্গে তিনি এ জীবনের অবসান চান এবং আইনিভাবে একজন চিকিৎসক তার স্বেচ্ছামৃত্যুর প্রক্রিয়াকে সহায়তা করুক এমনটিই কামনা করেন।
সংবিধান প্রতিটি মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত করে যার কারণে কেউ চাইলেও মরতে পারবে না। তবে আত্বহত্যা ভিন্ন বিষয়। আর ফৌজদারী আইন আত্বহত্যার চেষ্টা করাকেও আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে চি›িহত করেছে। যদি আপনি আত্বহত্যা করার উদ্যোগ নেন এবং অনুরুপ অপরাধ অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে কোন কাজ করেন তাহলে আপনার ১ বছর পযর্ন্ত কারাদন্ড বা জরিমানা হতে পারে। বা উভয় শান্তিই হতে পারে।
প্রয়োজনে এই বিষয়ে সরকার নতুন আইন করতে পারে। কোন কোন অবস্থায় একজন মানুষ কে সেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করার অনুমতি দেয়া যায় । এক সময় হইতো আসবে যখন আÍহত্যা একটি মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতেও পারে।
আপনি কি মনে করেন?
বিষয়: বিবিধ
১১৩৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন