বহুরুপীটা আবার..
লিখেছেন লিখেছেন গরমিল ২৭ মার্চ, ২০১৩, ০৬:৩৭:৪০ সন্ধ্যা
সরকারের দুঃসময়ে পাশে থাকব: এরশাদ
বেশ কিছুদিন ধরে মহাজোট ছাড়ার কথা বলে এলেও ‘দুঃসময়ে’ সরকারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এইচ এম এরশাদ।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের সরকার পতনের আন্দোলনের মধ্যে বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এই প্রতিশ্রুতি দেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান।
তিনি শেখ হাসিনার উদ্দেশে বলেন, “সামনে যে সময় আসছে, আপনার পক্ষে সব সমস্যার সমাধান করা কঠিন। জনগণ আপনার সঙ্গে আছে, আমিও আপনার সঙ্গে আছি।”
আওয়ামী লীগের মহাজোটে যোগ দিয়ে প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ার কথা দীর্ঘদিন থেকে এরশাদ বলে আসছেন। মহাজোটে যোগ দেয়ার সময় জাতীয় পার্টির কর্মীদের আশা ছিল, এরশাদ রাষ্ট্রপতি হবেন। তাদের সেই আশাও পূরণ হয়নি।
সরকারের তিন বছর পেরোনোর পর এরশাদ মহাজোট ছাড়ার আগাম ঘোষণা দেন। মঙ্গলবার দলের এক আলোচনা সভায়ও তিনি বলেছিলেন, “মহাজোট আমাদের ছাড়তে হবে। আপনারা অপেক্ষা করুন। সঠিক সময়েই আমরা সিদ্ধান্ত জানাব।”
এর একদিন বাদেই জিল্লুর রহমান (মিরপুর-বিমানবন্দর) উড়াল সড়কের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার সরকারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ও যোগাযোগমন্ত্রীর সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এরশাদ। উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারও।
রেওয়াজ অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী ও যোগাযোগমন্ত্রীর আগে এরশাদের বক্তৃতা দেয়ার কথা ছিল।
অনুষ্ঠানে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের আগে বক্তব্য দেয়ার জন্য এরশাদের নাম ঘোষণাও হয়েছিল।
কিন্তু এরশাদ বক্তৃতার জন্য উঠতে গেলে ওবায়দুল কাদের তাকে থামিয়ে নিজেই বক্তব্য দিতে এগিয়ে যান।
যোগাযোগমন্ত্রীর পরে এবং প্রধানমন্ত্রীর আগে বক্তব্য রাখেন এরশাদ, এতে তার প্রতি আওয়ামী লীগের গুরুত্বের বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে।
সরকারকে সেনাবাহিনীর ‘পাশে’ থাকার পরামর্শ দিয়ে সাবেক এই সেনাপ্রধান বলেন, “আপনি সেনাবাহিনীকে সাহস জোগাবেন। আপনি ওদের পাশে থাকবেন। ওনার আপনার পাশে থাকবে।”
সেনাবাহিনীকে নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বক্তব্যের মধ্যে এই কথা বললেন এরশাদ।
খালেদা জিয়া গত রোববার বগুড়ায় এক সমাবেশে বলেন, দেশে বিশৃঙ্খলা হলে সেনাবাহিনী ‘বসে’ থাকবে না।
তার ওই বক্তব্য দেশ শাসনে সেনা হস্তক্ষেপের উস্কানি বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগ নেতারা; যদিও বিএনপি বলছে, তাদের নেত্রী সেনা হস্তক্ষেপের কথা বলেননি।
স্থানীয় সংসদ সদস্য এরশাদ নির্বাচনী আসন পুনর্বিন্যাস নিয়ে নিজের অসন্তোষও প্রকাশ করেন।
“ডিলিমিটেশন হয়েছে, আমার ঢাকা-১৭ আসনের কিছু চলে গেছে ঢাকা-১৬ তে। কিছু ১১ ও ১০এ। আগামীবার আমি আর এই এলাকায় নির্বাচন করতে পারব না।”
এনিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন বলেও জানান জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান।
প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে এরশাদ বলেন, “প্রাদেশিক সরকার হলে সব জায়গায় হরতালও হত না।”
হরতালের বিকল্প কর্মসূচি খুঁজে বের করার ওপর জোর দেন তিনি।
ওবায়দুল কাদেরও হরতালের সমালোচনা করে বলেন, “কীভাবে কাজ করব বলুন? গত পাঁচ মাসে পাঁচ হাজার যানবাহন ভাংচুর করা হয়েছে। পাঁচশ’ যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
“রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছে গণপরিবহণ। এই হিংসার রাজনীতি শেষ হতে হবে।”
রাজনৈতিক সঙ্কটের অবসানে সংঘাতের বদলে সংলাপের ওপর জোর দেন তিনি।
যোগাযোগমন্ত্রী বহু প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে বলেন, “এ নিয়ে হতাশার কোনো কারণ নেই। কাজ চলছে।”
কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে জিল্লুর রহমান উড়াল সড়ক, হাতিরঝিল প্রকল্প, পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণে সেনাবাহিনীর কাজের প্রশংসা করেন এরশাদ।
তিনি বলেন, “৩৬ বছর সেনাবাহিনীতে ছিলাম। আট বছর সেনাপ্রধান ছিলাম। পুরোপুরি রাজনীতিবিদ হতে পারিনি, সৈনিকই থেকে গেছি।”
বিষয়: বিবিধ
১৩৪৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন