আমরা সবাই কি "রুস্তম" ভাইয়ের ত্যাগের খবর

লিখেছেন লিখেছেন গরমিল ১৩ মার্চ, ২০১৩, ১০:৫৬:১২ সকাল

‘রাজনীতি বুঝি না, খারাপ ব্যবহারে কষ্ট লাগে’

বুধবার, ১৩ মার্চ ২০১৩



সকালে বিএনপি কার্যালয়ের গেটের কাছে আসেন রুস্তম আলী। কাঁচা-পাকা দাড়ির মুখে ক্ষুধার ছাপ তখনও। রাতে যে ঘুমাতে পারেননি তার প্রমাণ চোখগুলোই দিচ্ছে। সোমবার সন্ধ্যায় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারের পর পুরো রাতই ৬ তলা ভবনে ছিলেন রুস্তম। পুলিশ বা দলীয় কার্যক্রম নিয়ে মুখ খোলেননি তিনি। বললেন, রাজনীতি বুঝি না স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে চিন্তিত।

রুস্তম বলেন, পুলিশ তার সঙ্গে কোন খারাপ ব্যবহার করেনি। তবে বয়সের ওপর ভরসা করতে পারছেন না। বলেন, ‘বয়স হইছে, একটুখানি ভয় পাইছিলাম।’

রাতের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলেন, ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া হয় নাই। সকালেও অনেকক্ষণ না খাইয়া ছিলাম। অনেক পরে খাইতে পারছি।

সোমবার রাতে গণমাধ্যমে প্রচার হয়, বিএনপি নেতাকর্মীদের আটকের পর রুস্তমের কাছে অফিস বুঝিয়ে দেয় পুলিশ। খবর পেয়েছিলেন রুস্তমের স্ত্রীও। স্ত্রী-মেয়ের জন্য চিন্তা হয় ৬০ বছরের রুস্তুমের। বলেন, ‘বাসা থেকে দুশ্চিন্তা করতেছিল। বৌ বেহুঁশ হয়ে গেছিল। মেয়ে সারারাত কান্নাকাটি করছে, আর ফোনের পর ফোন।’ রুস্তমের ছেলে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন। তিনি বলেন, ‘প্রতিবন্ধী’।

বিএনপি’র রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন না রুস্তম আলী। তবে এখানে থাকতে ভাল লাগে। দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের টানেই এখানে রয়েছেন বলে জানান। প্রায় ৩০ বছর ধরে তিনি এ রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে রয়েছেন। কিন্তু দল থেকে চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। এখানে থাকতে ভাল লাগে, এখানকার মানুষগুলোকে ভালবাসেন রুস্তম।’ বলেন, ‘জিয়া খুবই ভালবাসতেন। এ জন্যই এই দলের সকলেই ভালবাসে। ম্যাডামও স্নেহ করেন।’

এ দলটির সঙ্গে থেকে কি পেয়েছেন? জানতে চাইলে অবাক হন রুস্তম। ভালবাসলে সেখান থেকে প্রাপ্তি থাকতে হবে বলে ভাবেন না তিনি। বলেন, ‘জীবনে কোন চাওয়া পাওয়া নেই। তাই পাওয়ার হিসেব করি নাই।’ সোমবার রাতে যখন বিএনপি’র নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছিল, তখন হাত বাঁধা অবস্থায় রুস্তম। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশ অফিসে ঢুকে রুস্তমকেও আটক করতে উদ্যত হয়। এ সময় সাংবাদিকসহ উপস্থিত সকলে বাধা দেয়।

রুস্তম বলেন, ‘তারা আমারেও আটক করতে চাইছিল। হাত বাইন্ধা রাখছিল, বলছে এখানে দাঁড়াইয়া থাকো।’ যেভাবে সাংবাদিকরা হাত দিয়ে বাধা দিয়েছিল পুলিশকে, নিজের হাত দিয়ে সেই ভঙ্গি করে দেখান রুস্তম। বলেন, ‘সাংবাদিকরা পর্যন্ত হাত আগলিয়ে দাঁড়ান। আল্লাহ্‌র রহমত, আমি এটাকে আল্লাহ্‌র রহমতই বলবো, সবাই আমাকে অত্যধিক ভালবাসে।’ বয়স্কদের সম্মান করেন রুস্তম। বলেন, ‘রাজনীতি বুঝি না, তবে বয়স্ক কারও সঙ্গে কেউ খারাপ ব্যবহার করলে কষ্ট লাগে। সকলেরই তো ঘরে বৌ-বাচ্চা থাকে। তারা টেনশন করে।’ সকলের কাছেই রুস্তম চাচা বা কাকা বলে পরিচিত চাঁদপুরের এ বৃদ্ধ। সূত্র: বাংলানিউজ

বিষয়: বিবিধ

১১১৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File