একই বৃষ্টি তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে রহমত, আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গজব!!
লিখেছেন লিখেছেন সেলিম জাহাঙ্গীর ১৭ আগস্ট, ২০১৪, ০৫:০৬:৪৩ বিকাল
রাজশাহীর একটি মাঠে দুইদিন ব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছিলো। সেই একই মাঠে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পরের দিন থেকে শুরু হবে বিশাল তাফসিরুল কোরআন মাহফিল। গেট তৈরী হচ্ছে ও মাইকে প্রচার চলছে তুংগে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দ্বিতীয় দিনে মাঠে হঠাৎ বাঁধ সাধলো বৃষ্টি। ফলে আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হলো না, তো কিরার অনুষ্ঠান গুটিয়ে শেষ করা হলো। পরের দিন দৌদ্দুজ্জল ফটফটে আকাশ যথা স্থানে তাফসিরুল কোরআন মাহফিল শরু হলো। শুরুর দিনেই বক্তা শুরুতেই বললেন এই মাঠে এই জায়গায় দুইদিন ব্যাপী শয়তানের বাহাস হয়ে গেলো আপনারা নিশ্চয় অবগত আছেন? আপনারা দেখেছেন আল্লাহ্ সেই কালচার অনুষ্ঠানে বৃষ্টি দিয়েছে। এমন গজবের বৃষ্টি দিয়েছে যে তারা তাদের প্রোগ্রাম করতে পারেনী। ঠিক একই স্থানে এখন চলছে ওয়াজ নশীয়ত, তাফসিরুল কুরআন মাহফিল। আল্লাহর কি কাজ হঠাৎ মাহফিলে বৃষ্টি শুরু হলো। বৃষ্টি শুরু হওয়ার ফলে অনেকেই মাহফিল থেকে উঠে চলে যেতে লাগলো এই সময় আলেম উপস্থিতি মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে চিৎতকার করে বললো আপনারা কেউ উঠবেন না। আমরা সবাই বৃষ্টিতে ভিজবো; এটা আল্লাহর রহমতের বৃষ্টি। এবার প্রশ্ন হলো একই বৃষ্টি তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে হলো রহমত, আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে হয়ে গেলো গজব। আসলে এই বৃষ্টিকে নিয়ে রহস্য বুঝলাম না। এমন কথা আমার এক বন্ধুর সাথে সিয়ার করতে সে একটা গল্প শোনালো।
গল্পটা শুনুন:
ঝমাঝম বৃষ্টির ভেতর এক লোক রাস্তা দিয়ে ভীষন জোরে দৌড়ে যাচ্ছে। নাসিরুদ্দিন বাসার জানালার ধারে বসে বৃষ্টি দেখছিলেন, লোকটাকে এভাবে দৌড়াতে দেখে থামিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, "আরে, এত জোরে দৌড়াচ্ছ কেন? লোকটি জবাব দিল, " দেখছ না কত জোরে বৃষ্টি হচ্ছে? দৌড়াবনা তো কি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভিজব?"
নাসিরুদ্দিন বললেন, " তুমি তো ভারী বোকা লোক হে, আরে বৃষ্টি হল সৃষ্টিকর্তার রহমত। আর তা অবহেলা করে তুমি এভাবে দৌড়াচ্ছ?"
একথা শুনে লোকটা লজ্জা পেয়ে গেল। আর না দৌড়িয়ে চুপচাপ হাঁটতে হাঁটতে কাক ভেজা হয়ে ঘরে ফিরল।
আরেক দিনঃ
কাহিনীর প্লট একই। দৃশ্যও পূর্বেরটাই। খালি এবার দু'জনার ভূমিকায় পরিবর্তন ঘটেছে। মোল্লার স্থানে বসে লোকটা বৃষ্টি দেখছে, আর মোল্লা বৃষ্টি থেকে বাঁচতে উর্ধঃশ্বাসে ছুটছেন।
এবার লোকটা হোজ্জাকে থামিয়ে বললেন, " কি হে হোজ্জা, আজ তুমি যে দৌড়াচ্ছ বড়? সৃষ্টিকর্তার রহমত কেন অবহেলা করছ? ধীরে যাও।"
মোল্লা নাসিরুদ্দিনের সু-চতুর জবাব, " আরে সে জন্যেই তো এত জোরে দৌড়াচ্ছি। যাতে করে সৃষ্টিকর্তার রহমত খুব বেশী পায়ের নিচে পড়ে অসম্মান না হয়।" আমার ঘটনার সঙ্গে তার জবাবটা বেশ ভালো লাগলো।
আসলে আমরা যারা ধর্মের আলেম তারা যে কথাগুলো বলি সেটা যেন ভেবে বলি।
বিষয়: বিবিধ
১৮৮৬ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার লিখা পড়ে মনে হল - মানুষ আসলেই তার লিমিটেশান এর কথা ভুলে গিয়ে স্রষ্টার সাথে বড় বেঈমানীতে জড়িয়ে পড়ে - স্বভাবতঃই সে তার জুরিসডিকশান ছাড়িয়ে স্রষ্টার ডোমেইনে এক্সেস নিতে গিয়ে নাকানি চুবানী খায়।
আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর এ্যাবসুলুট গোলামীতে আবদ্ধ করে ফেলুক - এটাই প্রার্থনা।
সত্য আপনি খুব সুন্দর করে বলেছেন। আপনার সদয় আলোকিত হৃদয়ের দ্বার আরও উন্মোচিত হউক। মাবুদ আমাদের সকলকে তাঁর আলোর মাঝে উজ্জীতিব রাখুন--আমেন
মন্তব্য করতে লগইন করুন