“মা“ --------------------- সেলিম জাহাঙ্গীর

লিখেছেন লিখেছেন সেলিম জাহাঙ্গীর ০৬ অক্টোবর, ২০১৩, ০৪:৪৮:২৭ বিকাল

মায়ের এখন অনেক বয়স

নুইয়ে গেছে মাথা

শরীরে তার নানান ব্যধী

কয়না বেশী কথা।

বয়সের ভারে চলন তাহার

আগের মত নাই,

চলাফেরায় হাতে লাঠি

একলা চলাই দায়।

মায়ের গল্পের সঙ্গী কেবল

আদরের নাতি ঘরে,

দাদীর সাথে গল্প করতে

তাও থাকে সে ডরে।

এই বুঝি ডাকপাড়ে,

কইরে গেলি সোনা-

দাদীকে তুমি একা থাকতে দাও

ঘুম পাড়ো মোর মনা।

মায়ের দৃষ্টি গেছে কমে

মানুষ চিনেসে কম,

বসে বসে দিন গুনে যায়

এই বুঝি আসে জম।

থুরথুরে শরীর তাহার

হাতগুলো খুব কাপে,

হাতে তাহার কোন বস্তু

ধরে যায়না রেখে।

কাপা হাতে কিছু খেলে

ছিটে পড়ে যায়

ছেলে বলে চোখে দেখনা

এমন কেন হয়;

গ্লাসেতে কাপা হাতে

পানি যখন খায়

ছেলে বৌ ধমকে বলে

বল শক্তি নাই?

এত পানি পড়ে কেন

খাবার ছিটে ঘড়ে

এমনি করে খাবার খেলে

সংসার যাবে জলে;

অবুঝ মা কেঁদে বলে

কেউ বুঝে না মাবুদ

শরীর আমার গেছে ক্ষয়ে

আমারে দাও সবুর।

ছেলে-বৌয়ের ধমক খেয়ে

দিন চলে যায় বেশ

মায়ের প্রতি তাদের ভালো বাসা

হয়ে গেছে শেষ।

কাপা হাতে কাপতে কাপতে

ভাঙ্গে প্লেট গ্লাস

ছেলে-বৌয়ের তায়না দেখে

শরীর ভরা রগ।

বাজার থেকে আনলো কিনে

কাঠের থালা গ্লাস

একটি টেবিল ঘরের কনে

মায়ের হলো আবাস।

আর ভাংবেনা গ্লাস প্লেট

পানি ভাত যাচ্ছে যাক

মায়ের খাবার ইচ্ছা মত

একা একাই খাক।

মায়ের দু:খ মায়ের কষ্ট

কেউ বোঝেনা খোদা

বৃদ্ধা হলে মা-বাপ কেন

হয়গো সবার বোঝা?

দাদীর কষ্ট দেখে নাতি

মনে মনে কাঁদে

ভিষন রাগে নাতি তাহার

একাই বুদ্ধি সাধে

ঘরের কোনে পড়ে থাকা

কাঠের টুকরা নিয়ে

নাতি বসে খুট-খাট করে

দা ছুনিটা নিয়ে,

মা-বাবা দেখে বলে

কি করছো খোকা?

নাতি বলে কাঠের প্লেট

বানাচ্ছি বসে একা।

মা-বাবায় কয় কেন বাবা

কাঠের প্লেট কি হবে?

নাতি বলে তোমাদের জন্য

তোমরা যখন বুড়ো হবে।

#

বিষয়: বিবিধ

১৬২৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File