এইডস প্রতিরোধের নামে কী হচ্ছে বাংলাদেশে

লিখেছেন লিখেছেন প্রেসিডেন্ট ২৮ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:৩৯:২৯ দুপুর

মরণব্যাধি এইডস! এইডস প্রতিরোধের নামে অনেক এনজিও কাজ করছে বাংলাদেশে সরকারী বেসরকারী পৃষ্ঠপোষকতা ও বিদেশী দাতা সংস্থাসমূহের সাহায্য নিয়ে। শুরুতে এসব কর্মসূচীতে সুন্দর সুন্দর শ্লোগান ছিল।

যেমনঃ “এইডস প্রতিরোধে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলুন।” “বিয়ে বহির্ভূত যৌন সম্পর্ক পরিহার করুন।” ইত্যাদি।

দীর্ঘকাল ক্ষমতায় থাকলেও বিদেশী সাহায্যপুষ্ট এনজিওগুলোর উপর বিএনপি’র কোন নিয়ন্ত্রণ ছিল না। বিএনপি সরকারের শেষ দিকে বিশেষ করে ২০০৬ সালের দিকে এ নিয়ন্ত্রণ প্রায় শূণ্যের কোঠায় আসে। সুলতানা কামাল, খুশী কবীররা তখন বিশেষ এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যস্ত। তাদের প্রত্যক্ষ/পরোক্ষ সহযোগীতায় HIV/AIDS Program এর শ্লোগানসমূহ রাতারাতি বদলে যায়। বিদেশী দাতাসংস্থাসমূহের নির্দেশিত শ্লোগান সমূহ ব্যবহার হয় এর পরিবর্তে।

নতুন শ্লোগানগুলি এমনঃ

- কনডম ব্যবহার করুন, নিরাপদ থাকুন।

- যৌন সংখ্যালঘুদের (সমকামীদের) অধিকার রক্ষায় সচেতন হন।

- Use condom for safe sex.

- Enjoy Life, Take Control, Stop HIV/AIDS.

এসব শ্লোগানের আড়ালের উদ্দেশ্য ছিল মূলত অবৈধ যৌনতা এবং সমকামিতাকে উৎসাহিত করা।

২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেন সরকার ক্ষমতা দখল করার পর এ এনজিওসমূহ অনেক এগ্রেসিভ ভূমিকায় নামে। বরাবরের মতো ২০০৭ সালেও বিশ্ব এইডস দিবস পালিত হয় ১লা ডিসেম্বর। সেদিন মানিক মিয়া এভিনিউ হতে চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র পর্যন্ত র‌্যালী করে এসব এনজিও। আগের শ্লোগানগুলি বাদ দিয়ে নতুন নতুন এগ্রেসিভ ও উস্কানিমূলক শ্লোগান ব্যবহার করে। র‌্যালীতে মহিলা পতিতা ছাড়াও হিজড়া এবং সমকামীরাদের অংশগ্রহণও ছিল দেখার মতো। র‌্যালীতে কনডমকে প্রদর্শন করা হয় বিভিন্ন ভাবে।

এ সেক্টরে কাজ করা বিভিন্ন এনজিও সমূহ হচ্ছে - HASAB, Ashar Alo Society, Bandhu Welfare Society, Light House ইত্যাদি। এদের কেউ কাজ করে মহিলা পতিতা নিয়ে, কেউ হিজড়া জনগোষ্ঠী এবং কেউ পুরুষ পতিতা(gay)/ লেসবিয়ান তথা সমকামীদের নিয়ে।

এদের মাঝে বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির কথা একটু আলাদাভাবে বলতে হয়। এরা সমকামী এবং হিজড়া পতিতাদের নিয়ে কাজ করে। আশ্চর্য হচ্ছেন হয়তো অনেকে। হিজড়ারা কিভাবে পতিতা হয়! অবাক করা ব্যাপার হলেও এটাই সত্যি। বিকৃতরূচির শিকার হয়ে হিজড়ারাও পতিতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেয়। এ এনজিও টির পেছনে এক প্রভাবশালী ব্যক্তি আছেন যিনি নিজেও সমকামী। তিনি হচ্ছেন প্রয়াত শেখ কামাল এর শ্যালক গোলাম আহমদ টিটু। নিজ এলাকায় তিনি ‪#‎হাফলেডীস‬ নামে পরিচিত। থাকেন শাহজাহানপুর। এছাড়া যাত্রাবাড়ির ডেমরায় তার বিশাল একটি বাগানবাড়ি আছে। সেখানে একটি দিঘী আছে, আছে বিদেশী জাতের শতাধিক গরু নিয়ে একটি খামার।

সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ছাড়াও নেদারল্যান্ড ও জার্মানভিত্তিক কিছু সাহায্যসংস্থা এবং USAID এখানে অর্থায়ন করে থাকে।

এ এনজিওটির মূল কাজ হচ্ছে, সমকামিতার মত অত্যন্ত নোংরা ও কদর্য বিষয়টিকে প্রমোট করা। সারা দেশের বিভাগীয় শহরগুলিতে এদের শাখা আছে। মাঠ পর্যায়ে এদের অনেক কর্মী কাজ করে যারা সমকামী। এ কর্মীদের মূল কাজ হচ্ছে সমকামী লোকদের কনডম সাপ্লাই দেয়া। এমনকি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন প্রোগ্রামের নামে স্কুল কলেজের ছেলেমেয়েদের কাছেও তারা কনডম বিতরণ করে। মানে মেসেজটা হচ্ছে- তুমি যা করছো করো, এটা খারাপ নয়, তবে কনডমটা ব্যবহার কর। দাতা সংস্থার আয়োজনে এরা ওয়ার্কসপ, সেমিনার, প্রশিক্ষণ জাতীয় বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে। তবে তারা সমকামী শব্দটি সরাসরি ব্যবহার না করে কৌশলে বিভিন্ন শব্দ ব্যবহার করে। যেমনঃ MSM (Male who have sex with another male), Sexually minority group মানে যৌন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়।

এ এনজিও’র সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত আছে আইনও সালিশকেন্দ্রের সুলতানা কামাল, সারা হোসেন, মানবাধিকার কমিশনের মিজানুর রহমান, নৃত্যশিল্পী শিবলী মুহাম্মদ গং। শিবলীও একজন সমকামী বলে জানা যায়। নৃত্য জগতের বেশিরভাগ কর্মীই সমকামী। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপুমনি তো প্রকাশ্যে বলেছেন, “বাংলাদেশ সরকার সমকামীদের অধিকারের পক্ষে”।

শেষ কথাঃ বহুগামী নারী পুরুষের উপর আল্লাহর পক্ষ হতে একটি দুনিয়াবী আযাব হচ্ছে এইডস। আর সমকামিদের এইডস আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। পবিত্র কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে, এ নোংরা চর্চার জন্য কওমে লূতকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। আপনার আমার সচেতনতাই পারে সমাজে এটার প্রসার রোধ করতে। যেখানে এদেরকে পাওয়া যাবে সামাজিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এ ঘৃণিত কাজের বিরুদ্ধে নিন্দাবাক্য বিবৃতি দিতে হবে। দেশের প্রচলিত আইনেও এ বিকৃত যৌনতা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা মোতাবেক সমকামিতা শাস্তিযোগ্য ফৌজদারি অপরাধ, যার শাস্তি দশ বছর থেকে শুরু করে আজীবন কারাদণ্ড এবং সাথে জরিমানাও হতে পারে। কিছু এনজিও এর বিরোধিতার কারণে এ আইনের প্রয়োগ সীমিত। ঐ এনজিওসমূহ দন্ডবিধির এ ধারাটি বাতিলেরও চেষ্টা করছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহলে নালিশ করে সরকারকে চাপপ্রয়োগে এটি বাদ দেয়ার চক্রান্ত হচ্ছে।

বিষয়: বিবিধ

২২৯৬ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

367379
২৮ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ০১:৪৯
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : এইডস নিয়ে কি হচ্ছে না হচ্ছে, পরে দেখছি। আগে শুভেচ্ছা নেন। বহুদিন পর আসলেন!
০২ মে ২০১৬ সকাল ১০:৩৬
305124
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : শুভেচ্ছার জন্য খুব করে ধন্যবাদ জানবেন। ব্লগে নিয়মিতই আসি, পোস্টও দিই। তবে হয়তো অন্য নামে। Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor <:-P <:-P Don't Tell Anyone Don't Tell Anyone Don't Tell Anyone
০২ মে ২০১৬ সকাল ১১:০২
305131
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : হায় হায় অন্য নামে!!!!
367384
২৮ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ০৩:৩২
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : এইডস রোগে বাংলাদেশে ও বিশ্বে যত মানুষ মারা যায় তার চেয়ে অনেক বেশি মানুষ মারা যায় অপুষ্টি জনিত ব্যাধি এবং জিবানু ঘটিত রোগে। কিন্তু এইডস প্রতিরোধ এর নামে যত টাকা ব্যয় হয় তার শতাংশ ও এই ক্ষেত্রে ব্যায় হয়না। কারন সম্পুর্ন বানিজ্যিক। এইডস প্রতিরোধ এর নামে কনডম এবং সমকামি দের প্রমোট করে সেক্স টয় জাতিয় সামগ্রির ব্যবসা বৃদ্ধিই পাশ্চাত্য ডোনার দের টার্গেট। আর এই দেশিয় এনজিও দের টার্গেট অন্ধ অনুসরন। সরকার সমকামিতা কে নিরব সমর্থন দিচ্ছে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন কয়েকবছর আগে এটাকে স্বাভাবিক দাবি করেছেন। আমরা বিরাট এক বিপর্যয় এর প্রান্তে পেীছে গেছি।
০২ মে ২০১৬ সকাল ১০:৩৮
305125
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : এ এনজিওগুলি ডোনারদের বিভিন্ন শেখানো বুলি রঙচঙে ভাষায় পরিবেশন করে কিছু মাথামোটা সিভিল সার্জনদেরও ব্রেইন ওয়াশ করেছে। তাইতো তাদের বিভিন্ন প্রোগ্রামে এসব সিভিল সার্জনদের দেখা যায়। এগুলা ডাক্তার না, অপদার্থ। সত্যিই আমরা বিরাট এক বিপর্যয় এর প্রান্তে পৌছে গিয়েছি।
367385
২৮ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ০৩:৩৪
কুয়েত থেকে লিখেছেন : ওরা এনজিওর নামে ইসলামের তথা জাতির যে ক্ষতি করছে তা দেখার জন্য কেউ নেই যারা আছে তারাও দুষ্টের লালনে ব্যস্ত। ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপনাকে লেখাটির জন্য।
০২ মে ২০১৬ সকাল ১১:০৬
305133
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য। দিন দিন তাদের ষড়যন্ত্র বৃদ্ধি পাচ্ছে।
367387
২৮ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ০৩:৪০
ইয়াফি লিখেছেন : অনেকদিন পর আপনার দেখা মিলল।
০২ মে ২০১৬ সকাল ১১:০৭
305134
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : হাহাহা। প্রথম কমেন্ট এর প্রতিমন্তব্য দেখুন।Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Don't Tell Anyone Don't Tell Anyone
367408
২৮ এপ্রিল ২০১৬ রাত ০৮:২০
শেখের পোলা লিখেছেন : পরিবাবারের কর্তা আর গিন্নী যে পথে সকলকে চালাবেন সকলে তেমনই চলবে। বিশেষ করে আমরাতো ৭১ দস্তখত দিয়েই দিয়েছি। এখন আর কি করার।
০২ মে ২০১৬ সকাল ১১:০৭
305135
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : যথার্থ বলেছেন। তারা তাদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের উপযুক্ত ক্ষেত্র আগেই তৈরি করে নিয়েছে।
367466
২৯ এপ্রিল ২০১৬ সকাল ১১:৩৪
আয়নাশাহ লিখেছেন : সবকিছুর মুলে রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাব। একটা জাতিকে অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌছানোর কোনো পরিকল্পনা নাই আমাদের কোনো রাজনৈতিক দলের। শুধু ক্ষমতায় যাওয়া, ভোগ করা আর যেভাবেই পরই ক্ষমতায় থাকা। এভাবে কি করে একটা দেশ টিকে? সবচেয়ে বড়ো কথা, কারো কোন লক্ষ্যই যেনো নাই। ভারত কিংবা আমেরিকা যে যেভাবে চাইছে আমরা সেভাবেই নজেদেরকে সপে দিচ্ছি।

তথ্য ভিত্তিক লেখা পড়ে ভাল লাগলো। ধন্যবাদ।
০২ মে ২০১৬ সকাল ১১:১০
305137
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : যারা রাজনৈতিকভাবে দূরদর্শি ছিল, এসব ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করেছিল তাদেরকে আজ ফাঁসি দিয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের উপযুক্ত ক্ষেত্র তৈরি করে নিচ্ছে।
370479
৩০ মে ২০১৬ দুপুর ০৩:৩৯
নেহায়েৎ লিখেছেন : এখন মনে হচ্ছে ভাই অবস্থা ভয়াবহ! আল্লাহ ভাল জনেন সামনে কি হবে! ইসলাম বিদ্বেষীরা এদের প্রমোট করছে।
৩১ মে ২০১৬ সকাল ০৯:৩৩
307440
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : আমরা ঘুমিয়ে আছি। হানাফী আর মোহাম্মদী হিসেবে নিজেদের ডিভাইড করে রেখেছি।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File