শিশুশ্রম, বৃদ্ধ শ্রম ও বৃদ্ধাশ্রম
লিখেছেন লিখেছেন প্রেসিডেন্ট ১৮ অক্টোবর, ২০১৪, ০৩:১২:৫৫ দুপুর
বাছবিচার না করেই কিংবা বাস্তবতা অনুধাবন না করেই অনেকে ঢালাওভাবে সকল প্রকার শিশুশ্রম নিষিদ্ধের দাবি করে থাকেন। পাশ্চাত্যে অর্থে লালিত অনেক স্বঘোষিত বুদ্ধিজীবি ও এনজিও এ দাবিতে বেশ সোচ্চার। আপাতদৃষ্টিতে খুব ইতিবাচক মনে হলেও এর পেছনে রয়েছে উন্নয়নশীল দেশসমূহকে অদূর ভবিষ্যতে অলস, কর্মবিমুখ ও অথর্ব জাতি হিসেবে তৈরি করার পাশ্চাত্যের লালিত ইচ্ছা। এবং এক্ষেত্রে তারা বেশ সফলও। জাতিসংঘকে নিজেদের হাতের পুতুল হিসেবে ব্যবহার করে শিশুর সংজ্ঞা হিসেবে নির্ধারণ করেছে- ১৮ বছরের নীচের সকল ছেলেমেয়েকে। অর্থাৎ ১৮ বছর পর্যন্ত সকলে শিশু যা বাস্তবতার চরম বিপরীত।
উন্নয়নশীল বিশ্বে পাশ্চাত্য উন্নয়নের নামে যে সকল বিষয় চাপিয়ে দিচ্ছে সে সবের প্রয়োগ কিন্তু তাদের নিজেদের দেশে করে না বা করতে চায় না বা বলা চলে নানা কৌশলে সেটি এড়িয়ে যায়। আরো মজার বিষয় হচ্ছে, সকল প্রকার শিশুশ্রম নিষিদ্ধের দাবিতে যারা সোচ্চার তারা সকলেই শিশুশ্রমের সেবা গ্রহণ করে থাকেন। তাদের গৃহে, অফিসে, গাড়িতে শিশুরা কর্মরত থাকে। এ দ্বৈতনীতি কি কপটতা নয়?
কেউ কেউ হয়তো এতটুকু পড়ে বিরক্ত হচ্ছেন। ভাবছেন-শিশুশ্রম নিষিদ্ধ করা তো ভাল জিনিস। এ ভাল জিনিস এর মাঝেও দোষ খুঁজতে চায়। এ লোকের উদ্দেশ্য কি?
হ্যা, আমি অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ণ ও অত্যধিক কষ্টসাধ্য শিশুশ্রমের বিপক্ষে। শিশুদেরকে এমন বোঝা দেয়া উচিত নয় যে বোঝার ভার তারা বইতে না পারে। শিশুদের দেখে যাদের মনে স্নেহের উদ্রেক হয় না, যারা শিশুদের প্রতি নির্দয় আচরণ করেন তারা হয় মানসিকভাবে অসুস্থ নয়তো অতি জঘন্য হিংস্র প্রকৃতির লোক।
শিশুশ্রমের নির্মমতার কিছু ছবি দেখলে মনের কোণে তীব্র ব্যথা জেগে উঠে, হাহাকার করে উঠে হৃদয়। এ ধরনের শিশুশ্রম অবশ্যই নিষিদ্ধ করা উচিত আইন করে। সে সাথে প্রয়োজন জনসচেতনতার।
আমি এ ধরনের শিশুশ্রমের তীব্র নিন্দা জানাই। সকলের উচিত এসবের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা তৈরি করা।
মোটাদাগে আমি শিশুশ্রমকে দু্ই ভাগে ভাগ করছি-
এক. অস্বচ্ছল পরিবারের শিশুদের অর্থউপার্জনের জন্য শ্রম
দুই. স্বচ্ছল পরিবারের শিশুদের নিজ পরিবারের গৃহস্থালি শ্রম ও সামাজিক শ্রম।
এক. দরিদ্র পরিবারের শিশুদের অর্থউপার্জন জনিত শ্রমঃ
এ শ্রমকে আবার দুইভাগে ভাগ করছি। সহনীয় শ্রম ও অসহনীয় শ্রম। অসহনীয় ও অতি কষ্টসাধ্য শ্রমের বিষয়ে আগেই বলা হয়েছে যা আমি এবং মানবিক বিবেচনা সম্পন্ন কোনো মানুষ কোনোভাবেই সমর্থন করতে পারেন না।
এবার আমরা আলোচনা করতে পারি শিশুর সহনীয় পর্যায়ের শ্রম এর বিষয়ে। এ শ্রম এর সাথে জড়িত উক্ত শিশুর পরিবারের রুটি রুজি। আপনি ঢালাওভাবে এ শ্রম নিষিদ্ধের দাবি করতে পারেন না। সে দাবি করার আগে সেই শিশুর পরিবার এর জন্য অন্ন-বস্ত্রের সুব্যবস্থা করুন। ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়। অন্ন ছাড়া জাতিসংঘের তথাকথিত শান্তির সুলিখিত উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বাণী দিয়ে শিশুর এবং শিশুর পরিবারের ক্ষুধা মিটবে না। সমাজে যে সীমাহীন অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য নিরসনের পূর্বে আপনি এ জাতীয় শিশুশ্রম নিষিদ্ধের দাবি করতে পারেন না। এ বৈষম্য নিরসনে ইসলাম জাকাতের মাধ্যমে সুন্দর সমাধান দিয়েছে। আমরা জাকাতের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পেরেছি? কুরআনের আলোকে সঠিক লোককে জাকাত দেয়া হচ্ছে কি না সে বিষয়টি মনিটরিং এর কি কোনো রাষ্ট্রীয় বা সামাজিক ব্যবস্থা আছে?
আপনাকে বুঝতে হবে শখের বসে শিশুটি শ্রম বিক্রি করতে যাচ্ছে না। এ গল্পটি পড়ুন। কিছুটা উপলব্ধি করতে পারবেন।
লেচু ... টুটুল মাহমদ।
দুই. স্বচ্ছল পরিবারের শিশুদের নিজ পরিবারের গৃহস্থালি শ্রম ও সামাজিক শ্রমঃ
এ শ্রমকে তো নিষিদ্ধ করার প্রশ্নই আসে না বরং এ জাতীয় শিশুশ্রমকে উৎসাহিত করতে হবে। শুরুটা হোক পরিবার থেকেই। অনেক পরিবারে দেখা যায়-ছেলেমেয়েদের ননীর পুতুল হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। পড়াশোনার ক্ষতি হবে ভেবে জগ হতে এক গ্লাস পানি ঢেলে খেতেও দেওয়া হচ্ছে না। কাজের লোককে দিয়ে এমনকি প্রয়োজনে বাবা মা গ্লাসে পানি ঢেলে খাওয়াচ্ছেন বিদ্বান ছেলে/মেয়ে কে। প্রিয় অভিভাবকেরা, আপনি কি জানেন আপনার বিদ্বান ছেলেটি/মেয়েটিকে আপনি পরনির্ভরশীল, অলস ও কর্মবিমুখ হিসেবেই গড়ে তুলছেন? আপনি কি জানেন, বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসন শিশু বয়সে কঠোর পরিশ্রম করেছেন, খবরের কাগজ ফেরী করেছেন। কিন্তু এত কিছু তাঁর প্রতিভাবে আটকে রাখতে পারে নি।
প্লিজ সন্তানকে কষ্টসহিষ্ঞু হিসেবে গড়ে তুলুন। ছেলেমেয়ে নির্বিশেষে সকলকে পড়াশুনার পাশাপাশি গৃহস্থালি সকল কাজের প্রশিক্ষণ দিন। এর বাইরে আপনি যে কাজে বিশেষ পারদর্শী সেটিও সন্তানকে শিখান। সামাজিক কাজেও অংশ নিতে উৎসাহিত করুন। ধরুন, মহল্লার/গ্রামের একটি রাস্তা ভেঙ্গে গিয়েছে। স্কুলগামী সকল শিশু সম্মিলিতভাবে সে রাস্তা মেরামতের কাজ করতে পারেন। আপনার শিশুকেও সে কাজে অংশ নিতে উৎসাহ দিন। শিক্ষিত হওয়া শুধু সার্টিফিকেট অর্জন করা নয়। আপনার এ শিশুকে বড় হয়ে পারিবারিক, সামাজিক এমনকি রাষ্ট্রীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সে দায়িত্ব পালনের উপযোগী করে তাকে গড়ে তুলুন।
এবার বৃদ্ধ শ্রম (বৃদ্ধাশ্রম নয়) নিয়ে কিছু কথা বলা যাক। পাশ্চাত্য উন্নয়নশীল দেশগুলিতে শিশুশ্রম নিয়ে এত সোচ্চার কিন্তু বৃদ্ধ শ্রম নিয়ে তারা এত নীরব কেন? জাতিসংঘ, ইউনেস্কো বা ইউএনডিপি-যাই বলুন বৃদ্ধশ্রমের বিপক্ষে কি তাদের কোনো প্রচারণা অাছে। সহজ উত্তরঃ না। এক্ষেত্রে তাদের অবস্থান লেজকাটা শেয়ালদের মত। পাশ্চাত্যের দেশসমূহে ভঙ্গুর পরিবারপ্রথা, পিতৃপরিচয়হীন প্রচুর সন্তান, মায়ের দ্বিতীয়/তৃতীয়/চতূর্থ---------বিয়ে। এসব নানাবিধ অসঙ্গতিপূর্ণ অবস্থা পশ্চিমা ও ইউরোপীয় দেশসমূহে। ফলে সেখানকার বৃদ্ধ বৃদ্ধারা খুব কম ক্ষেত্রেই পারিবারিক বন্ধনের উষ্ঞতা পায়। খুব অবাঞ্চিত, কষ্টকর, মমতাহীন ও নিঃসঙ্গ জীবন সেসব বুড়ো বুড়িদের। একা বাসায় তাদের নিজেদের কাজ নিজেদের করতে হয় শরীর/মন না চাইলেও। ছেলেমেয়েরা থাকে দূরে দূরে। বার্থডে, খ্রিসমাস এ কার্ড পাঠিয়ে উইশ করে তাদের দায়িত্ব শেষ। এভাবে একসময় অনেকে নিঃসঙ্গ অবস্থায় বাসায় মৃত্যুবরণ করে অনেকে। লাশ পঁচে দুর্গন্ধ বেরুলে প্রতিবেশিরা পুলিশে খবর দেয়, অনেক সময় সেসব লাশ বিশাল ফ্ল্যাটে শুঁটকি হয়ে যায়। বিত্ত ঐশ্বর্যের অভাব না থাকলেও সেখানে যে জিনিসটি দারুণ অভাব সেটি হচ্ছে ভালবাসা, মমতা।
আমাদের মুসলিম সমাজ এর ভালবাসা, মমতায়পূর্ণ সুন্দর পরিবারপ্রথা দেখলে পাশ্চাত্যের ঈর্ষা হবেই। এটা ভাঙতে পাশ্চাত্য কি না করছে! এইডস সচেতনতার নামে অবৈধ যৌনাচারকে উস্কে দেয়া হচ্ছে, বিয়ে বহির্ভূত লিভটুগেদারকে উৎসাহিত করা হচ্ছে, পতিতাবৃত্তিকে সমাজে সহনীয় করার জন্য পতিতাদের আদুরে নাম দেওয়া হয়েছে যৌনকর্মী। অন্য কথায় চলে যাচ্ছি! সে যাই হোক, বলছিলাম নির্মম নিষ্ঠুর বৃদ্ধশ্রমের বিরুদ্ধে পাশ্চাত্যের কোনো মাথাব্যথা নেই। তার কারণটি উপরের আলোচনায় উপলব্ধিতে আসার কথা।
নিচের ছবিগুলি দেখুন। এ বয়সে এমন অমানবিক শ্রম! আমাদের বিবেক কি লোপ পেয়েছে? এরচেয়ে বৃদ্ধাশ্রম (বৃদ্ধ আশ্রম) অনেক ভাল।
সামাজিক সচেতনতা তৈরি করুন। কুরআনের আলোকে বাবা মায়ের প্রতি সন্তানের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে প্রচারণা চালাতে হবে শিক্ষার্থীদেরসহ সমাজের সকল স্তরের মানুষের কাছে।
পবিত্র কুরআনের ঘোষণাঃ
وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا ۚقَوْلًا كَرِيمًا [١٧:٢٣]
وَاخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ وَقُل رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا [١٧:٢٤]
-তোমার প্রভু নির্দেশ দিচ্ছেন তোমরা কেবল তারই ইবাদত করবে এবং পিতামাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে। তোমাদের কাছে যদি তাদের কোনো একজন অথবা উভয় বৃদ্ধাবস্থায় থাকে তবে তোমরা তাদের 'উহ' পর্যন্ত বলবে না। তাদের ভর্ৎসনা করবে না বরং তাদের সঙ্গে বিশেষ মর্যাদাসহকারে কথা বলবে, বিনয় ও নম্রতার সঙ্গে তাদের সামনে নত হয়ে থাকবে এবং দোয়া করতে থাকবে, হে প্রভু তাদের প্রতি রহম করুন, যেমন তারা বাল্যকালে আমাকে লালন-পালন করেছেন (সূরা বনি ইসরাইল ২৩-২৪)।
যে বয়সে বৃদ্ধ বৃদ্ধারা নাতি নাতনীর সাথে গল্প করবেন, পারিবারিক স্নেহ ভালবাসার উষ্ঞ সান্নিধ্যে থাকবেন, তাঁদের অভিজ্ঞতার ঢালি থেকে নবীনদের ভাল ভাল পরামর্শ দিবেন- সে বয়সে তাদের প্রতি অবমাননা, নিষ্ঠুর শ্রম চাপিয়ে দেয়া অত্যন্ত বেদনাদায়ক। যে সকল সন্তানেরা আর্থিকভাবে অসমর্থ তাদের কথা ভিন্ন। কিন্তু অর্থ ছাড়াও বাবা মায়ের সেবা করা যায়। এক্ষেত্রে ইচ্ছেটাই হচ্ছে আসল কথা।
তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, আর্থিকভাবে চরম দরিদ্র পরিবারগুলির বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের বৃদ্ধাশ্রমেই রাখা উচিত যে বৃদ্ধাশ্রমে সে সকল বৃদ্ধ বৃদ্ধার খাদ্য, বস্ত্র, সুচিকিৎসা, ব্যায়াম, পড়াশোনাসহ সকল ব্যবস্থা থাকবে। এমন অনেক বৃদ্ধাশ্রম দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তৈরিও হয়েছে। সরকারী ও ধনীশ্রেণীর পৃষ্ঠপোষকতায় এমন বৃদ্ধাশ্রম আরো জরুরী। আমাদের বুঝতে হবে, দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত পরিবারের চেয়ে বৃদ্ধাশ্রমে তারা ভাল থাকবেন।
কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে- বৃদ্ধাশ্রমসমূহে দরিদ্র পরিবারের নয়, ধনী ও অভিজাত পরিবারের বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের সংখ্যাই বেশি। এর কারণ নিশ্চয়ই আমাদের অজানা নয়। এর দায় সেই সব বৃদ্ধ বৃদ্ধারাও এড়াতে পারেন না। সন্তানদের তাঁরা সুশিক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। পরিণামে তাদের সন্তানরা
অর্থ বিত্ত ও আভিজাত্য অর্জন করলেও মনুষত্ব অর্জন করতে পারে নি।
আসুন বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের সম্মান করি, বাবা মায়ের প্রতি অর্পিত দায়িত্ব পালন করি। বৃদ্ধ শ্রমকে না বলি।
বিষয়: বিবিধ
৩৬৫৯ বার পঠিত, ২০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অর্থ বিত্ত ও আভিজাত্য অর্জন করলেও মনুষত্ব অর্জন করতে পারে নি।
আসুন বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের সম্মান করি, বাবা মায়ের প্রতি অর্পিত দায়িত্ব পালন করি। বৃদ্ধ শ্রমকে না বলি।
অনেক গুরুত্বপূর্ণ চিন্তাশীল লেখা। ব্যাপক তত্তকথা আছে লেখাটিতে।
সত্যি কথাটাই বলেছেন। তবে সামাজিক প্রথা পরিবর্তনে সচেতনতা তৈরী না হলে বৃদ্ধাশ্রম সময়ের দাবীতে পরিণত হবে। ঠেকানো সম্ভব নয়। ধন্যবাদ আপনাকে। ভাল লাগল এবং যুগোপযোগী।
শিশুশ্রম বন্ধ করা অবশ্যই উচিত কিন্তু এর বিপরিতে সংশ্লিষ্ট শিশুদের ভরনপোষন ও শিক্ষার কোন উদ্যোগ দেখা যায়না। দরিদ্র পরিবারের যে শিশুটি কষ্ট করে স্কুলে যায় প্রায় দেখা যায় খাতার অভাবে বাড়ির কাজ না করায় শিক্ষক এর হাতে নির্যাতনের শিকার হয় কিংবা স্কুল ড্রেস ছাড়া আসায় আকস্মিক পরিদর্শনে আসা শিক্ষা কর্মকর্তাদের হাতে অপমানিত হয়। অন্যদিকে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত পরিবারে নিজের কাজও করতে না শিখানর যে কুসংস্কৃতি চালু হয়েছে সেটা তাদের মধ্যে থেকে শ্রমের মর্যাদা নষ্ট করে দিচ্ছে। আমরা স্কুলে পড়ার সময় প্রতি মাসে একবার স্কুলে পরিচ্ছনতা রুটিন পালিত হতো। এখন এই ধরনের কোন অনুষ্ঠান হয়না। কিছুদিন আগে ব্লগার আফরা একটি অভিজ্ঞতা থেকে সুন্দর পোষ্ট দিয়েছিলেন। যে পিতামাতা বাচ্চাকে ডে-কেয়ার এ পাঠায় সেই বাচ্চা বড় হলে পিতা-মাতা কে বৃদ্ধাশ্রম এ পাঠাবে এটাই স্বাভাবিক।
শিশুশ্রমের যে বিভক্তি তুলে ধরেছেন, সহমত তার সাথে। [এক. অস্বচ্ছল পরিবারের শিশুদের অর্থউপার্জনের জন্য শ্রম
দুই. স্বচ্ছল পরিবারের শিশুদের নিজ পরিবারের গৃহস্থালি শ্রম ও সামাজিক শ্রম।] খুব সুব্দরভাবে বিষয়টি তুলে ধরেছেন। ২য় ভাগের শিশুদের ব্যপারে আপনার কথার সাথে সহমত।
ছবির দ্বারা শিশু এবং বৃদ্ধশ্রমের যে চিত্রটি তুলে ধরলেন, সেগুলো অহরহ আমরা দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু এগুলো থেকে একটি গ্রহণযোগ্য পদ্ধতিতে উতরণের জন্য সমাজ, রাষ্ট্র এবং তথাকথিত পাশ্চাত্যে অর্থে লালিত স্বঘোষিত বুদ্ধিজীবি ও এনজিও দের কোনোরুপ তৎপরতা লক্ষ্য করা যায় না।
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ লিখাটির জন্য।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
বারাকামুল্লাহ ফিক।
যে বাচ্চাগুলো কাজ করে তাদের পরিবার অসচ্ছল বলেই তারা কাজ করতে আসে। পরিবারটিকে অর্থনৈতিক সচ্ছলতার অর্থাৎ পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিলে তারা হয়ত ঐ বাচ্চাটিকে কাজে না পাঠিয়ে স্কুলেই পাঠাত।
বৃদ্ধ বয়সের পারিবারিক ও সামাজিক নিরাপত্তা না থাকায় তারা আজ এই অবস্থার শিকার। আপনার সাথে একমত প্রকাশ করছি যে উনাদেরই বৃদ্ধাশ্রমে রাখা উচিৎ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন