রমযান আলোচনা-বিষয়ঃ সূরা মুহাম্মদ আয়াত নং ২৯-৩২
লিখেছেন লিখেছেন প্রেসিডেন্ট ০৯ জুলাই, ২০১৪, ০১:০৮:৪৯ দুপুর
أَمْ حَسِبَ الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِم مَّرَضٌ أَن لَّن يُخْرِجَ اللَّهُ أَضْغَانَهُمْ [٤٧:٢٩]
وَلَوْ نَشَاءُ لَأَرَيْنَاكَهُمْ فَلَعَرَفْتَهُم بِسِيمَاهُمْ ۚ وَلَتَعْرِفَنَّهُمْ فِي لَحْنِ الْقَوْلِ ۚ وَاللَّهُ يَعْلَمُ أَعْمَالَكُمْ [٤٧:٣٠]
وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ حَتَّىٰ نَعْلَمَ الْمُجَاهِدِينَ مِنكُمْ وَالصَّابِرِينَ وَنَبْلُوَ أَخْبَارَكُمْ [٤٧:٣١]
Or do those in whose hearts is a disease, think that Allah will not bring to light all their rancour?
Had We so wiled, We could have shown them up to thee, and thou shouldst have known them by their marks: but surely thou wilt know them by the tone of their speech! And Allah knows all that ye do.
And We shall try you until We test those among you who strive their utmost and persevere in patience; and We shall try your reported (mettle).
-যেসব লোকের মনে (মুনাফেকীর) ব্যাধি রয়েছে তারা কি মনে করে নিয়েছে যে, আল্লাহ তাআলা তাদের মনের ঈর্ষা ও বিদ্বেষ প্রকাশ করবেন না?
-আমি তো চাইলে তাদের চাক্ষুস দেখিয়ে দিতে পারি আর অতঃপর তুমি তাদের চেহারা দেখেই চিনতে পারবে, তুমি তাদের কথাবার্তার ধরণ দেখে তাদের অবশ্যই চিনে নিতে পারবে(যে, এরাই হচ্ছে আসল মুনাফিক)। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলা তাদের যাবতীয় কর্মের ব্যাপারে সম্যক ওয়াকিবহাল আছেন।
-আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করবো, যতোক্ষণ না আমি একথা জেনে নেব যে, কে তোমাদের মাঝে আল্লাহর পথের মোজাহেদ, আর কে তোমাদের মাঝে ধৈর্য্যধারণকারী, যতোক্ষণ পর্যন্ত আমি তোমাদের খোঁজখবর যাচাই বাছাই করে না নেবো(ততোক্ষণ পর্যন্ত আমার এ পরীক্ষা চলতে থাকবে)।
(সূরা মুহাম্মাদঃ ২৯-৩১)।
উপরোক্ত আয়াতগুলিতে তাদের সম্পর্কে সতর্কবাণী উচ্চারিত হয়েছে যারা প্রকাশ্যে ইসলামের কথা বললেও প্রকৃতপক্ষে তাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে অর্থাৎ তারা মুনাফিক। মুনাফিকরা তাদের কথাবার্তা, আচার আচরণের মাধ্যমেও তাদের পরিচয় প্রকাশ করে থাকে। কে প্রকৃত ঈমানদার আর কে মুনাফিক সেটা আল্লাহ তাআলা অবশ্যই পরীক্ষা করবেন। ফাঁকি দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা যদি ইতিহাসের দিকে ফিরে যাই তবে জানতে পারি, মদীনার কুখ্যাত মুনাফিক আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই উহুদ এর যুদ্ধ হতে ৩০০ জন অনুসারী নিয়ে পশ্চাদপসরণ করে। তার মুনাফিকীর পরিচয় প্রকাশ হয়ে পড়ে। আল্লাহর পরীক্ষায় মুনাফিকরা তো ফেল করবে, ব্যর্থ হবে-এটাই স্বাভাবিক।
আমাদের দেশের মুনাফিক কারা সেটা কি নতুন করে বলার প্রয়োজন আছে? আমাদের দেশের বৃহত্তম ঈদগাহের ইমাম হিসেবে নিয়োগ পায় এক বিশিষ্ট মুনাফিক তার মুনাফিকীর পুরস্কার হিসেবে। মাত্র কিছুদিন আগে কয়েকজন বিশিষ্ট নাস্তিক এর সাথে মিলে ঐ ব্যক্তি অনেক বিষোদগার করলো মজলুম মুসলমানদের বিরুদ্ধে। এ মুনাফিকের পরিচয় কি দেশের বিশ্বাসী মুসলমানদের কাছে আদৌ গোপন আছে?
http://www.amardeshonline.com/pages/details/2014/07/05/248636#.U7zpW0BXv2k
إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا وَصَدُّوا عَن سَبِيلِ اللَّهِ وَشَاقُّوا الرَّسُولَ مِن بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمُ الْهُدَىٰ لَن يَضُرُّوا اللَّهَ شَيْئًا وَسَيُحْبِطُ أَعْمَالَهُمْ [٤٧:٣٢]
Those who reject Allah, hinder (men) from the Path of Allah, and resist the Messenger, after Guidance has been clearly shown to them, will not injure Allah in the least, but He will make their deeds of no effect.
-যারা কুফরী করে এবং আল্লাহর পথে আসা হতে বিরত রাখে এবং তাদের কাছে হেদায়াত এর পথ পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার পরও যারা আল্লাহর রাসূলের বিরোধিতা করে, তারা কখনো আল্লাহ তায়ালার কোনো ক্ষতি সাধন সক্ষম হবেনা; অচিরেই আল্লাহ তায়ালা তাদের যাবতীয় কর্ম নিষ্ফল করে দিবেন।(সূরা মুহাম্মাদঃ ৩২)।
এটি সুস্পষ্ট অর্থবোধক আয়াত। একটু খোলা মনে চিন্তা করলেই এ আয়াতের অর্থ সুস্পষ্ট হয়ে ধরা দিবে, বিভ্রান্তির কোনো অবকাশ নেই।
এখানে ‘কর্ম নিষ্ফল করে দিবেন’ এর ব্যাখ্যায় মুফাসসিরগণ ঐক্যমত পোষণ করেছেন যে, এর অর্থ হচ্ছে- কুফরীর কারণে নেক আমলগুলো ধ্বংস করে দেওয়া হবে।
তারা যেসব কাজকে নেকীর কাজ মনে করে আঞ্জাম দিয়েছে, মুসলমান হিসেবে যেসব কাজ তারা নামায, রোযা, হজ্জ্ব, যাকাত -এসব ইবাদত বন্দেগী এর সব ফযীলতই ধ্বংস করে দিবেন এজন্য যে, তারা মুসলমান হয়েও আল্লাহ,তাঁর দ্বীন ও ইসলামী মিল্লাতের সাথে আন্তরিকতা ও বিশ্বস্ততার সাথে আচরণ করেনি। উপরন্তু দুনিয়াবী স্বার্থের জন্য লোভ লালসায় জড়িয়ে দ্বীনের দুশমনদের সাথে হাত মিলিয়ে দ্বীন কায়েমের প্রচেষ্টায় নিয়োজিত লোকদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
কুফর ও ইসলামের দ্বন্ধে যে ব্যক্তির সমবেদনা, সমর্থন ইসলামের স্বার্থের অনুকুল নয়, আল্লাহর কাছে তার কোনো আমল গ্রহণযোগ্য হওয়া তো দূরের কথা, তার ঈমানও গ্রহণযোগ্য নয়।
একটি হাদীস আছে এমন যার অর্থ মোটামুটি এরকম (হাদীসটি এ মুহুর্তে সংগ্রহে নাই বিধায় মর্মার্থের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে, সমপূর্ণ শাব্দিক অর্থ নয়)ঃ
“ তোমাদের সামর্থ্য থাকলে জালিম শাসকের বিরুদ্ধে লড়াই কর, তাতে অসমর্থ্য হলে মুখে প্রতিবাদ কর। সেটাও যদি না পার তবে অন্তরে জালিমকে ঘৃণা কর। তবে শুধু অন্তরে ঘৃণা করা দুর্বল ঈমানের লক্ষণ”।
আমাদের দেশে ঘটে যাওয়া এমন হাজারো ঘটনার ভিড়ে মাত্র দুটি ঘটনার চিত্র উদাহরণ হিসেবে পেশ করছি।
এসব ঘটনায় আপনার প্রতিক্রিয়া কি? মাঠে ময়দানে নেমে বা অন্তত লেখালেখিতে প্রতিবাদ করেছেন? মজলুমদের প্রতি কি আপনার আন্তরিক সমর্থন, সহানুভূতি ও জালিমদের প্রতি ঘৃণা ছিল? শেষোক্তটিও যদি না থাকে তাহলে কি আপনার ঈমান অবশিষ্ট আছে?
আপনি মাশাল্লাহ সাড়ে তিন হাত শরীরে ইসলাম কায়েম (!) করেছেন। আপনি অনেক বড় পীর বুযুর্গ(??), দাঁড়ি, টুপি, পাগড়ীতে নূরানী চেহারায় লাবণ্য ঠিকরে বেরুচ্ছে। আপনি কদু/লাউয়ের তরকারী খেয়ে সুন্নাত আদায় করছেন ভেবে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছেন। কিন্তু অন্যায়ের প্রতিবাদে আপনার মুখে কোনো শব্দ বের হয় না। পাছে এ আরামের জীবনে বিঘ্ন ঘটে! বরং যারা প্রতিবাদ করতে গিয়ে নির্যাতিত নিপীড়িত হচ্ছেন তাদের আপনি আহম্মক ঠাওড়াচ্ছেন, সুযোগ পেলে তাদের গালিও দিচ্ছেন, আপনার অবস্থান, বক্তব্য কুফরী শক্তির সহায়ক ও ইসলামের স্বার্থের বিপরীত হচ্ছে।
এবার ক্যালকুলেশন করুন -কুরআন ও হাদীসের আলোকে। আপনার ইবাদত কবুল হচ্ছেতো? আদৌ কি কোনো সুযোগ আছে? আপনার ঈমান কি আদৌ অবশিষ্ট আছে? কুরআনের ঘোষণা অনুযায়ী কি আপনি কুফরী করেন নি?
সেক্যুলারিজম বা ধর্মনিরপেক্ষতাও কুফরী
Oxford dictionary তে বলা হয়েছে –“Secularism means the doctrine morality should be based solely on regard to the wellbeing of mankind in the present life, to exclusion of all consideration drawn from belief in God or in future life”
-ধর্মনিরপেক্ষতা এমন একটি মতবাদ যেখানে মানবজাতির কল্যাণ চিন্তায় গড়ে উঠেছে এমন একটি নৈতিক ব্যবস্থা যেখানে থাকবেনা স্রষ্টা বা পরকাল বিশ্বাস ভিত্তিক কোন বিবেচনা। (নাউজুবিল্লাহ)।
Encyclopedia- বা বিশ্বকোষে বলা হয়েছেঃ
Secular spirit or tendency especially a system of political or social philosophy that reject all form of religious faith.
--ধর্মনিরপেক্ষ চেতনা এমন একটি রাজনৈতিক ও সামাজিক দর্শন যা সকল ধর্ম বিশ্বাসকেই প্রত্যাখ্যান করে।
সুতরাং নিশ্চিত করেই বলা যায়- ধর্মনিরপেক্ষতা কুফরী।
আপনি নামাজ, রোজা, হজ্জ্ব, যাকাত সব ঠিকমত পালন করেন, হালাল হারাম মেনে চলেন কিন্তু আবার ধর্মনিরপেক্ষতা সমর্থন করেন তাহলেও আপনি কুফরী করলেন। আপনার নেক আমলগুলি কুফরীর কারণে ধ্বংস হয়ে যাবে।
আল্লাহ আমাদের কুফর ও নিফাক এর মত নিকৃষ্ট ও ভয়াবহ পাপ হতে হেফাজত করুন। আমিন।
বিষয়: বিবিধ
১৭৭৩ বার পঠিত, ২৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এখান থেকে যে শিক্ষাটুকু পেলাম সেটা বাস্তব জীবনে যেন কাজে লাগাতে পারি আল্লাহ আমাদের সেই তৌফিক যেন দেয় ।
আমীন।
আল্লাহ আমাদের কুফর ও নিফাক এর মত নিকৃষ্ট ও ভয়াবহ পাপ হতে হেফাজত করুন। আমাদের ঈমানী শক্তি বৃদ্ধি করে দিন। আমরা যেন সকল কুফ্ফার এবং মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জয়ী হতে পারি সেই তাওফিক দান করুন। আমাদের পরীক্ষা সহজ করে দিন। আমীন।
আয়াতগুলো অঅমাদের পরিশুদ্ধিতার ব্যাপারে শেখায়। কার সাথে কেমন আচরণ করতে হবে সেটা জানায়। আপনি সুন্দরভাবে আমাদের সামনে উপস্থাপন করলেন। আল্লাহ আপনার কল্যান করুক
একটি মতবাদ
যেখানে মানবজাতির
কল্যাণ চিন্তায়
গড়ে উঠেছে এমন
একটি নৈতিক
ব্যবস্থা যেখানে থাকবেনা স্রষ্টা বা পরকাল
বিশ্বাস ভিত্তিক কোন
বিবেচনা।
(নাউজুবিল্লাহ)।
“ তোমাদের সামর্থ্য থাকলে জালিম শাসকের বিরুদ্ধে লড়াই কর, তাতে অসমর্থ্য হলে মুখে প্রতিবাদ কর। সেটাও যদি না পার তবে অন্তরে জালিমকে ঘৃণা কর। তবে শুধু অন্তরে ঘৃণা করা দুর্বল ঈমানের লক্ষণ”।
বর্ণিত হাদীসটি এই-
عن أبي سعيد الخدري رضي الله عنه قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول "من رأى منكم منكرا فليغيره بيده. فإن لم يستطع فبلسانه. ومن لم يستطع فبقلبه. وذلك أضعف الإيمان
তোমরা যদি কোন গর্হিত কাজ হতে দেখ তবে প্রথমে শক্তি প্রয়োগ করে প্রতিরোধ কর, যদি তা সম্ভব না হয় তবে মুখ ( ভাষা, লেখনি, মিডিয়া, বক্তৃতা, মিছিল, মিটিং, হরতাল ইত্যাদি) দ্বারা প্রতিরোধ কর, যদি তাও সম্ভব না হয় তবে অন্তর দিয়ে( চিন্তা, গবেষনা, পরিকল্পনা, ইত্যাদি) প্রতিরোধ কর । আর এটা হল ঈমানের সর্বশেষ স্তর ।
উক্ত হাদিসের অনুবাদ করতে গিয়ে “অন্তরে ঘৃণা কর” বলা সম্পুর্ণ ভুল ও হাদীসের মূল স্পিরীটের পরিপন্থী ।
Click this link
১/১৮৯। আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, ‘‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি কোন গর্হিত কাজ দেখবে, সে যেন তা নিজ হাত দ্বারা পরিবর্তন করে দেয়। যদি (তাতে) ক্ষমতা না রাখে, তাহলে নিজ জিভ দ্বারা ( উপদেশ দিয়ে পরিবর্তন করে)। যদি (তাতেও) সামর্থ্য না রাখে, তাহলে অন্তর দ্বারা (ঘৃণা করে)। আর এ হল সবচেয়ে দুর্বল ঈমান।’’[1]
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
[1] সহীহুল বুখারী ৯৫৬, মুসলিম ৪৯, তিরমিযী ২১৭২, নাসায়ী ৫০০৮, ৫০০৯, আবূ দাউদ ১১৪০, ৪৩৪০, ইবনু মাজাহ ১২৭৫, ৪০১৩, আহমাদ ১০৬৮৯, ১০৭৬৬, ১১০৬৮, ১১১০০, ১১১২২, ১১১৪৫, ১১৪৬৬, দারেমী ২৭৪০১
من رأى منكم منكرا فليغيره بيده. فإن لم يستطع فبلسانه. ومن لم يستطع فبقلبه. وذلك أضعف الإيمان
এখানে পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসাবে তিনটি জিনিসের নাম বলা হয়েছে-
১। بيده তার হাত দিয়ে,
২। فبلسانه তার মুখ দিয়ে
৩। فبقلبه তার কলব বা অন্তর দিয়ে ।
দেখুন হাদীসের প্রথম অংশে পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসাবে যেখানে ‘হাত’ বলা হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে فليغيره بيده অর্থ-তার কর্তব্য হল - হাত দিয়ে পরিবর্তন করে দেয় । অর্থাৎ মন্দ কাজ কে ভাল কাজ দ্বারা পরিবর্তন করে দেয় । আমরা এটাকে ভাবার্থে বলি মন্দ কাজ প্রতিরোধ করা।
কিন্তু পরবর্তীতে ২ নং ও ৩নং স্থলে, পরিবর্তনের হাতিয়ার যেখানে ‘মুখ’ ও ‘কলব’ বলা হয়েছে, সেখানে শুধু বলা হয়েছে فبلسانه ও فبقلبه , অর্থাৎ মুখ দিয়ে ও কলব দিয়ে । এখানে মুখ দিয়ে ও কলব কি করা হবে সেটা বলা হয়নি । অর্থাৎ Verb অনুপস্থিত। প্রকৃত পক্ষে পূর্ণ বাক্যটি হল بلسانه فليغيره ও بقلبه فليغيره । একই Verb এর পূণরুক্তি বর্জন করে বা উহ্য (understood) রেখে বর্ণনা করা সকল ভাষারই একটা রীতি ।
এখন হাদীসের অনুবাদ করতে গিয়ে যদি বলা হয়
১। فليغيره بيده তার হাত দিয়ে প্রতিরোধ করে
২। بلسانه فليغيره তার মুখ দিয়ে দিয়ে প্রতিরোধ করে
৩। بقلبه فليغيره তার কলব বা অন্তর দিয়ে ঘৃণা করে, তাহলে এটাকে শুদ্ধ অনুবাদ বলা যাবে কি?
একটা উদাহরণ দিলে বিষয়টা আরো পরিষ্কার হবে-
মনে করুন, আপনার ঘরে চোর বা ডাকাত পড়েছে । এখন আপনি কী করবেন । আপনি যদি মনে করেন যারা চুরি বা ডাকাতি করতে এসেছে , তারা দুর্বল, আপনি বা আপনারা সহজেই তাদের শক্তি প্রয়োগ করে (হাত দিয়ে) কাবু করতে পারবেন, তা হলে অবশ্যই তাদের শক্তি প্রয়োগ করে হটিয়ে দিবেন ।
কিন্তু আপনি যদি মনে করেন যে তারা তত দুর্বল নয়, শক্তি প্রয়োগ করতে গেলে ক্ষতির আশংকা আছে, তখন আপনি ডাকাডাকি/ চেচামেচি করে বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে শক্তি সঞ্চার করে (মুখ দিয়ে) তাদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করবেন ।
কিন্তু আপনি যদি মনে করেন যে তারা খুব শক্তিশালী , শক্তি প্রয়োগ করতে গেলে বা ডাকাডাকি/ চেচামেচি করে বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে শক্তি সঞ্চার করে (মুখ দিয়ে) তাদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করতে গেলে বড় ধরনে ক্ষতির আশংকা আছে, তখন আপনি অন্তত পক্ষে মনে মনে ভাববেন যে- ‘হাত’ বা ‘মুখ’ ছাড়া অন্য কোন উপায়ে তাদের প্রতিরোধ করার সুযোগ আছে কি না । মানে মনে মনে প্রতিরোধের চিন্তা বা পরিকল্পনা করবেন ।
এখন, এখানে কি একথ বলা যাবে যে, ‘হাত’ বা ‘মুখ’ দিয়ে প্রতিরোধ করতে পারছেন না, তখন হাত পা ছেড়ে দিয়ে মনে মনে ঘৃণা করবেন ।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সঠিক বুঝ দান করুন ।
আর অন্যায়কে বা জালিমকে ঘৃণা করা ইসলামের স্পিরিট বিরোধী কিভাবে হবে-বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন