ডাক্তাররাও মানুষ

লিখেছেন লিখেছেন প্রেসিডেন্ট ২০ মে, ২০১৪, ০৭:৪১:৪১ সন্ধ্যা

ডাক্তার সাংবাদিক দ্বৈরথ দেখছি অনেকদিন ধরে। ডাক্তারদের ১৪ গুষ্ঠি উদ্ধারে সকলে ব্যস্ত, ঘটনা বিশ্লেষণ এর প্রয়োজনও মনে করেনা কেউ। ডাক্তারদের ডাকাত, লুটেরা সহ সব খারাপ বিশেষণের পাশাপাশি গালিও দিচ্ছেন কেউ কেউ।

হলুদ সাংবাদিকদের সত্য মিথ্যা কাহিনী পড়ে বিভ্রান্তিতে পড়ছে সকলে। একটু ভাবুন, দ্বৈরথ হচ্ছে ডাক্তার বনাম সাংবাদিক(?)। সে তথাকথিত সাংবাদিকরা কি সত্যি কথা লিখবে ডাক্তারদের সম্পর্কে? ডাক্তারদের ডাকাত বানাতে পারলেইতো তাদের পোয়াবারো- নিউজের কাটতি, প্রতিদ্বন্ধীকে ঘায়েল করে আত্মপ্রসাদ লাভ।




আমি নিজে ডাক্তার নই এবং এ পেশার সাথে আমার পেশার দূরতম সম্পর্কও নেই। একসময় ডাক্তার হবার স্বপ্ন দেখতাম বটে। কানের পাশ দিয়ে গেল ডাক্তার হওয়ার প্রাথমিক সুযোগ। ১৯৯৮ সালে ভর্তি পরীক্ষায় ৬৪ মার্কস পেয়েও এসএসসি, এইচএসসি তে একটু কম মার্কস থাকায় ওয়েটিং তালিকা হতে আর ডাক পেলামনা। সুতরাং, না পাওয়ার বেদনায় ডাক্তারী পেশার প্রতি আমার ক্ষুব্ধ থাকাটাই স্বাভাবিক। সুতরাং বুঝতেই পারছেন- দুর্বলতা হেতু ডাক্তারী পেশার প্রতি সাফাই গাওয়া আমার উদ্দেশ্য নয়। কিছু অপ্রিয় সত্য কথা তুলে ধরাই আমার উদ্দেশ্য।

গুটিকয়েক ডাকাতের জন্য পুরো পেশাটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করাটা কোনো কাজের কথা নয়। রোগীর অভদ্র আত্মীয় স্বজন ডাক্তারের গায়ে হাত তুলবে আর দেশের সবচেয়ে মেধাবী সন্তানেরা এ অবমাননা মেনে নিবে সেটা কি হতে পারে? চিকিৎসাসেবা বন্ধ রাখাটা আমি কোনভাবেই সমর্থন করছিনা। কিন্তু ডাক্তাররা কি আমাদের কাছ হতে একটু সহানুভূতি, একটু শ্রদ্ধা পেতে পারেননা? ‘এরা জাতির শ্রেষ্ঠ মেধাবী’- এ কথা বলাটা কি অত্যুক্তি হবে? ডাক্তারদের মধ্যেও মহৎ হৃদয়ের লোক আছেন। নিজের আত্মীয় স্বজনের মধ্যে যে গুটি কয়েক আছেন, তাঁদের জোর করেও কখনো ফী দিতে পারিনি।

লক্ষ্য করুন-

-আমার জানামতে, এমন আর কোনো পেশায় ক্যারিয়ার গড়া এতটা কঠিন নয় যতটা কঠিন একজন ডাক্তার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়া।

- অনার্স মাস্টার্স মিলে আগে ছিল চার বৎসরের কোর্স, এখন পাঁচ বৎসর। আর একজন ডাক্তারের গ্র্যাজুয়েশন কোর্সটিই পাঁচ বৎসরের। কিন্তু স্রেফ এমবিবিএস ডিগ্রী দিয়ে না হয় ক্যারিয়ার, না হয় ইজ্জত রক্ষা। বিশ্বাস করুন আর নাই করুন একজন ডাক্তারকে সারাজীবন কঠিন পড়াশোনার মাঝে থাকতে হয়।

- ডাক্তারদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ-কমিশন বাণিজ্য, কম সময় দেয়া, খারাপ ব্যবহার, অপ্রয়োজনীয় টেস্ট দিয়ে রোগী হয়রানি ইত্যাদি ইত্যাদি। এসব অভিযোগের সত্যতাও আছে। সব পেশাতেই কুলাঙ্গার আছে। কিন্তু একটু চিন্তা করুন, অসুস্থ হলে এ ডাক্তারদের কাছেই আমাদের যেতে হয়। নিজের শয্যাসুখ ত্যাগ করে, প্রিয়তমার সান্নিধ্য বর্জন করে, নিজের শত ব্যস্ততা, শত সমস্যা তুচ্ছ করে রোগীর ডাকে ছুটে যান, নিজের কান্না গোপন করে রোগীর মুখে হাসি ফোটাতে যান যেসব ডাক্তার, তাঁদের জন্য কি আমরা প্রাণভরে দোয়া করতে পারিনা? পারিনা জাতির এ শ্রেষ্ঠ মেধাবীদের একটু সম্মান জানাতে?

বিষয়: বিবিধ

১৫৪৭ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

223881
২০ মে ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪৬
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : আসল কথা তো বলেই দিছেন ভাইজান"সব পেশাতেই কুলাঙ্গার আছে" কিন্তু সব কুলাঙ্গার নয়।
আপনার সাথে একমত পাশাপাশি ডাক্তারদেরকে ও আরো একটু নম্র হতে হবে আমি সবার কথা বলছিনা কিছুদের কথা।
সত্যি ডাক্তারদের অনেক কষ্ট করতে হয় অনেক ত্যাগ শিকার করতে হয়।
অনেক ধন্যবাদ জনাব সুন্দর পোস্টার জন্য।
২১ মে ২০১৪ সকাল ০৯:৩৯
171340
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : হুম, একশ্রেণীর কসাই পেশাটিকে কলঙ্কিত করে ফেলেছে। ভাল যারা তারাও এখন দূর্নামের শিকার। কসাইদের সুমতি হোক।
223887
২০ মে ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫৮
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
223896
২০ মে ২০১৪ রাত ০৮:১০
ছিঁচকে চোর লিখেছেন : প্রবাসী আবদুল্লাহ শাহীন অনেক সুন্দর করে যুক্তি দিয়েছে তার সাথে দ্বিমত করার কোনো অবকাশ নাই।
223904
২০ মে ২০১৪ রাত ০৯:০০
হারিয়ে যাবো তোমার মাঝে লিখেছেন : সাংবাদিকদের ভিতর যেমন বাড়াবাড়ি আছে তেমনি ডাক্তারদের ভিতরও কিছু কষাই আছে যার ফলে এই অবস্থা।
২১ মে ২০১৪ সকাল ০৯:৩৭
171335
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : একমত।
223926
২০ মে ২০১৪ রাত ১০:১৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : চারটি দেশের ডাক্তার ও হাসপাতাল দেখার অভিজ্ঞতা আছে। নিঃসন্দেহে বলতে পারি বাংলাদেশের ডাক্তার ব্যাবহার এবং চিকিৎসায় সর্বনিন্ম মানের।
এর জন্য আমাদের শিক্ষা ও সামাজিক অবস্থাও দায়ি। একজন ছাত্র যখন মেডিকেল কলেজ এ ভর্তি হয় তখন তার আত্মিয় স্বজন মেধাবি বলে অতি বিশেষনে সম্বৃদ্ধ করে ফেলে যার ফলে একজন মেডিকেল ষ্টুডেন্ট নিজেকে সাধারন মানুষের থেকৈ বেশি কিছু বলে মনে করতে শুরু করে। ডাক্তারিতে স্পেশালিষ্ট হওয়ার প্রয়োজনটা নিয়েও আমার মনে সন্দেহ আছে। ছোটকালে কয়েকজন এমবিবিএস এবং এলএমএফ ডাক্তার কে দেখেছি তারা ভাল চিতিৎসা করতেন। বড় কোন সার্জারির প্রয়োজন হলেই শুধু রেফার করতেন।
২১ মে ২০১৪ সকাল ০৯:৩১
171333
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : গ্রামে এলএমএফ দেরও চাহিদা আছে কিন্তু বড় শহরে এমবিবিএসদের বেইল নাই বললেই চলে। একজন MBBS যখন দেখে তার চেয়ে কম মেধাবী একজন কম পরিশ্রমে ব্যাংকার বা ভালো চাকুরে হয়ে অর্থবিত্তে তাকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে, তখন সেটার কুপ্রভাব মনে পড়াটা অস্বাভাবিক নয়।
২১ মে ২০১৪ সকাল ০৯:৩৭
171334
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : চারটি দেশের ডাক্তার ও হাসপাতাল দেখার অভিজ্ঞতা আছে। নিঃসন্দেহে বলতে পারি বাংলাদেশের ডাক্তার ব্যাবহার এবং চিকিৎসায় সর্বনিন্ম মানের।- এদেশে অন্যান্য পেশার অবস্থাও তথৈচব! এটা ডাক্তারী পেশার দোষ নয়, এ জাতির মনুষত্ব্য বিকাশের ব্যর্থতা।
223968
২০ মে ২০১৪ রাত ১১:২২
শাহ আলম বাদশা লিখেছেন : এককথায় চমৎকার!!
২১ মে ২০১৪ সকাল ০৯:৪৩
171342
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : ধন্যবাদ জানবেন।
223983
২১ মে ২০১৪ রাত ১২:২০
ওয়াচডগ বিডি লিখেছেন : বেশ কিছুদিন আগে ’দৈনিক আমাদের সময়’এ বেরিয়েছিল খবরটা। কণিকার পায়ে অপারেশন হবে পংগু হাসপাতালে। ভাই মোস্তাক সাথে এসেছে বোনকে সান্ত্বনা দিতে। দেশীয় ডাক্তারদের হরেক রকম হেলা অবহেলার কাহিনী অনেকের মত কণিকারও জানা ছিল। তাই কেমন একটা অজানা আশংকায় দুলে উঠেছিল তার মন। ডাক্তাররা বাম পায়ের বদলে ডান পা কেটে নেবে, এমন একটা ভয়ের কথা ভাইকে বলতেই ভাই ধমকের সূরে আস্বস্ত করল বোনকে। তবু অস্বস্তি একটা রয়েই গেল, এবং তা নিয়েই যেতে হল অপারেশন টেবিলে।

কণিকা বোধহয় আগ হতেই টের পেয়েছিল কি ঘটতে যাচ্ছে তার ভাগ্যে। হলও তাই, গুনে গুনে বাম পায়ের বদলে ডান পায়ের গোড়ালিটা কেটে নিল ডাক্তারগন। সৌরজগতের কোথাও কোন গ্রহ নক্ষত্রের পতন হলনা, দেশীয় জীবনেও ঘটলনা কোন ছন্দোপতন। লোক চক্ষুর অন্তরালে যা ঘটল তা হল, শরীয়তপুরের কণিকা রহমান নামের একজন নষ্ট বাম পায়ের চিকিৎসা করতে এসে হারিয়ে ফেল্‌ল তাঁর ডান পা। ভাই মোস্তাকের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার বদলে ডাক্তারকুল ব্যস্ত হয়ে উঠল খবর পাগল মিডিয়া ঠেকাতে। হাসপাতালে হট্টগোল হচ্ছে জানতে পেরে ঘটনাস্থলে ছুটে এলেন শাহ আলম নামের জনৈক ডাক্তার। কথা ছিল এই শাহ আলমই অপারেশন করবেন কণিকাকে। জুনিয়র ইয়ার দোস্তদের উপর কণিকার ভার ছেড়ে দিয়ে সিনিয়র শাহ আলম কেন এবং কোথায় গিয়েছিলেন এ প্রশ্নের উত্তর কেবল তিনিই দিতে পারবেন। বাংলাদেশের চিকিৎসা বানিজ্যে এ ঘটনা নতুন কোন ঘটনা নয়, এমনটা হরহামেশাই ঘটছে।

পাঠক, আপনাদের কি পরিচয় আছে সাদা এপ্রোণের এসব জুনিয়র-সিনিয়র ইয়ার-দোস্তদের ইয়ারীর সাথে? মানুষের বাঁচা মরার সন্ধিক্ষনে খোদার ঠিক পরের আসনটায় বসে লাল নীল শিবিরে বিভক্ত এসব পিচাশের দল রুগী নিয়ে কোন্‌ ধরনের মারফতী খেলায় মত্ত হন তা ভুক্তভোগী মাত্রই জানার কথা। অনেকেই বলবেন সব ডাক্তার নিশ্চয় এক নয়। আমি বলব ডাক্তারের অভিধানে ভুল নামের কোন শব্দ থাকা অপরাধ। এমনটা মেনেই ডাক্তারী পড়তে আসা উচিৎ। অন্য সব প্রফশনের ভুল ফিক্স করা সম্ভব হলেও ডাক্তারদের ভুল যে শোধরানো সম্ভব নয় তা আবারও প্রমান করল কণিকার ভুল অপারেশন। এধরনের প্রফেশনাল ক্রাইমের বাইরে বাংলাদেশের ডাক্তার সমাজ রাজনীতির ছত্রছায়ায় মাঝে মধ্যে এমন সব ঘটনার জন্ম দেন যা গিনিজ রেকর্ডবুকে ঠাঁই নেয়ার দাবী রাখে; রুগী পেটানো, সেবিকা আক্রমন, হাসপাতালের ইনফ্রষ্ট্রাকচার ভাংচুর, নিজদের মধ্যে রক্তারক্তি, মৃত্যুপথযাত্রী রুগীদের জিম্মি করে দাবী আদায়, এ জাতীয় ঘটনা বিশ্ব চিকিৎসা ব্যবস্থায় একবারেই অশ্রুত।

আমার এ লেখা পড়ে দায়িত্বপরায়ন দাবীদার ডাক্তারদের যদি গাত্রদাহ হয় দয়া করে প্রমান করবেন আপনাদের ভালমানুষীপনা। রাজনৈতিক বিরুদ্বচারন ছাড়া এক ডাক্তার অন্য ডাক্তারের প্রফেশনাল ক্রাইম নিয়ে কথা বলছে, বাংলাদেশে আজ পর্যন্ত এমনটা শোনা যায়নি। ঢাকা শহরে যেমন তেমন, মফস্বলে রুগীর কাছে ডাক্তার মানেই রক্তচোষা ভ্যম্পায়ার, যারা কর্পোরেট চাহিদার কাছে রুগীদের জিম্মি করে গড়ে নেয় নিজদের ভাগ্য। একদিকে ঔষুধ কোম্পানীর নগদ নারায়ণের জন্যে রুগীদের মাত্রাতিরিক্ত ঔষুধ গেলানো, পাশাপাশি ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের কমিশনের জন্যে পেটের রোগে চোখের এক্স-রে করাতে বাধ্য করা, এসব আর যাই হোক চিকিৎসা হতে পারেনা। সাহষ থাকলে প্রতিবাদ করুন এসব জঘন্য অন্যায়ের, বিচার দাবী করুন এসব লাগামহীন অপরাধের।

কনিকার ডাক্তার সর্বজনাব শাহ আলম ক্ষমা চেয়েছেন সতীর্থদের ভুলের জন্যে। কি চমৎকার বদন্যতা! এ ধরনের ভন্ডামী বাংলাদেশের ডাক্তারদের পক্ষেই সম্ভব, পৃথিবীর অনেক দেশে তা শাস্তিযোগ্য জঘন্যতম অপরাধ। রাজনীতির কড়াল গ্রাস হতে আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা যতদিন মুক্ত না হচ্ছে পাঠকদের অনুরোধ করব আপনজনকে অপারেশন টেবিলে পাঠিয়ে কাছাকাছি কোথাও হতে মনিটর করবেন এসব ডাক্তারদের ডাক্তারীপনা।

- ধন্যবাদ।ব ’দৈনিক আমাদের সময়’এ বেরিয়েছে খবরটা। কণিকার পায়ে অপারেশন হবে পংগু হাসপাতালে। ভাই মোস্তাক সাথে এসেছে বোনকে সান্ত্বনা দিতে। দেশীয় ডাক্তারদের হরেক রকম হেলা অবহেলার কাহিনী অনেকের মত কণিকারও জানা ছিল। তাই কেমন একটা অজানা আশংকায় দুলে উঠেছিল তার মন। ডাক্তাররা বাম পায়ের বদলে ডান পা কেটে নেবে, এমন একটা ভয়ের কথা ভাইকে বলতেই ভাই ধমকের সূরে আস্বস্ত করল বোনকে। তবু অস্বস্তি একটা রয়েই গেল, এবং তা নিয়েই যেতে হল অপারেশন টেবিলে।

কণিকা বোধহয় আগ হতেই টের পেয়েছিল কি ঘটতে যাচ্ছে তার ভাগ্যে। হলও তাই, গুনে গুনে বাম পায়ের বদলে ডান পায়ের গোড়ালিটা কেটে নিল ডাক্তারগন। সৌরজগতের কোথাও কোন গ্রহ নক্ষত্রের পতন হলনা, দেশীয় জীবনেও ঘটলনা কোন ছন্দোপতন। লোক চক্ষুর অন্তরালে যা ঘটল তা হল, শরীয়তপুরের কণিকা রহমান নামের একজন নষ্ট বাম পায়ের চিকিৎসা করতে এসে হারিয়ে ফেল্‌ল তাঁর ডান পা। ভাই মোস্তাকের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার বদলে ডাক্তারকুল ব্যস্ত হয়ে উঠল খবর পাগল মিডিয়া ঠেকাতে। হাসপাতালে হট্টগোল হচ্ছে জানতে পেরে ঘটনাস্থলে ছুটে এলেন শাহ আলম নামের জনৈক ডাক্তার। কথা ছিল এই শাহ আলমই অপারেশন করবেন কণিকাকে। জুনিয়র ইয়ার দোস্তদের উপর কণিকার ভার ছেড়ে দিয়ে সিনিয়র শাহ আলম কেন এবং কোথায় গিয়েছিলেন এ প্রশ্নের উত্তর কেবল তিনিই দিতে পারবেন। বাংলাদেশের চিকিৎসা বানিজ্যে এ ঘটনা নতুন কোন ঘটনা নয়, এমনটা হরহামেশাই ঘটছে।

পাঠক, আপনাদের কি পরিচয় আছে সাদা এপ্রোণের এসব জুনিয়র-সিনিয়র ইয়ার-দোস্তদের ইয়ারীর সাথে? মানুষের বাঁচা মরার সন্ধিক্ষনে খোদার ঠিক পরের আসনটায় বসে লাল নীল শিবিরে বিভক্ত এসব পিচাশের দল রুগী নিয়ে কোন্‌ ধরনের মারফতী খেলায় মত্ত হন তা ভুক্তভোগী মাত্রই জানার কথা। অনেকেই বলবেন সব ডাক্তার নিশ্চয় এক নয়। আমি বলব ডাক্তারের অভিধানে ভুল নামের কোন শব্দ থাকা অপরাধ। এমনটা মেনেই ডাক্তারী পড়তে আসা উচিৎ। অন্য সব প্রফশনের ভুল ফিক্স করা সম্ভব হলেও ডাক্তারদের ভুল যে শোধরানো সম্ভব নয় তা আবারও প্রমান করল কণিকার ভুল অপারেশন। এধরনের প্রফেশনাল ক্রাইমের বাইরে বাংলাদেশের ডাক্তার সমাজ রাজনীতির ছত্রছায়ায় মাঝে মধ্যে এমন সব ঘটনার জন্ম দেন যা গিনিজ রেকর্ডবুকে ঠাঁই নেয়ার দাবী রাখে; রুগী পেটানো, সেবিকা আক্রমন, হাসপাতালের ইনফ্রষ্ট্রাকচার ভাংচুর, নিজদের মধ্যে রক্তারক্তি, মৃত্যুপথযাত্রী রুগীদের জিম্মি করে দাবী আদায়, এ জাতীয় ঘটনা বিশ্ব চিকিৎসা ব্যবস্থায় একবারেই অশ্রুত।

আমার এ লেখা পড়ে দায়িত্বপরায়ন দাবীদার ডাক্তারদের যদি গাত্রদাহ হয় দয়া করে প্রমান করবেন আপনাদের ভালমানুষীপনা। রাজনৈতিক বিরুদ্বচারন ছাড়া এক ডাক্তার অন্য ডাক্তারের প্রফেশনাল ক্রাইম নিয়ে কথা বলছে, বাংলাদেশে আজ পর্যন্ত এমনটা শোনা যায়নি। ঢাকা শহরে যেমন তেমন, মফস্বলে রুগীর কাছে ডাক্তার মানেই রক্তচোষা ভ্যম্পায়ার, যারা কর্পোরেট চাহিদার কাছে রুগীদের জিম্মি করে গড়ে নেয় নিজদের ভাগ্য। একদিকে ঔষুধ কোম্পানীর নগদ নারায়ণের জন্যে রুগীদের মাত্রাতিরিক্ত ঔষুধ গেলানো, পাশাপাশি ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের কমিশনের জন্যে পেটের রোগে চোখের এক্স-রে করাতে বাধ্য করা, এসব আর যাই হোক চিকিৎসা হতে পারেনা। সাহষ থাকলে প্রতিবাদ করুন এসব জঘন্য অন্যায়ের, বিচার দাবী করুন এসব লাগামহীন অপরাধের।

কনিকার ডাক্তার সর্বজনাব শাহ আলম ক্ষমা চেয়েছেন সতীর্থদের ভুলের জন্যে। কি চমৎকার বদন্যতা! এ ধরনের ভন্ডামী বাংলাদেশের ডাক্তারদের পক্ষেই সম্ভব, পৃথিবীর অনেক দেশে তা শাস্তিযোগ্য জঘন্যতম অপরাধ। রাজনীতির কড়াল গ্রাস হতে আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা যতদিন মুক্ত না হচ্ছে পাঠকদের অনুরোধ করব আপনজনকে অপারেশন টেবিলে পাঠিয়ে কাছাকাছি কোথাও হতে মনিটর করবেন এসব ডাক্তারদের ডাক্তারীপনা।

- ধন্যবাদ।
২১ মে ২০১৪ সকাল ০৯:৪২
171341
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : হুম, ভয়াবহ ঘটনা। এটা মেনে নেয়া যায়না কোনভাবেই।

আরেকটি বিষয়, বর্তমানে প্রাইভেট মেডিকেল কলেজগুলোতে যারা পড়তে আসে তাদের ডাক্তার হওয়ার ন্যূনতম যোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ।
224257
২১ মে ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:০৮
ভিশু লিখেছেন : ভালো বলেছেন!
২২ মে ২০১৪ সকাল ০৯:৩১
171712
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : এতক্ষণে একজন ভালো ডাক্তারের দেখা পেলাম। Angel Angel এ পেশার বিকৃতি রোধে আপনাদেরকেই ভূমিকা নিতে হবে।Love Struck Love Struck

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File