তোমরা যারা দ্বিতীয় বিবাহ করতে চাও
লিখেছেন লিখেছেন প্রেসিডেন্ট ২৩ এপ্রিল, ২০১৪, ০৩:১০:৩১ দুপুর
শিরোনাম দেখে যারা ভাবছেন এখানে দিল্লী কা লাড্ডু দ্বিতীয়বার খাওয়ার রসদ উপকরণ আছে, তারা নিশ্চিত হতাশ হবেন।
নতুন বাসায় উঠেছি প্রায় তিন মাস হতে চলল। অনেক পরিবারের সাথে পরিচয় হলেও একদম পাশের ফ্ল্যাটের পরিবারটি সম্পর্কে একদম জানা হলোনা। তাঁরাও সবাইকে এড়িয়ে চলেন। কেমন যেন একটু পালাই পালাই ভাব। ঐ পরিবারে মাশাল্লাহ এক হালির বেশি বাচ্চাকাচ্চা, কাছাকাছি বয়সের দুইজন মহিলা আর ভদ্রলোক। প্রায়ই ঝগড়াঝাটি, কান্নাকাটির আওয়াজ পাই। আশেপাশের ফ্ল্যাটের ভাবী আর ননদিনীরা এ নিয়ে অনেক গুজব ছড়ায়, ফিসফাস করে। আমরা কখনো কান দেয়ার প্রয়োজন মনে করিনা।
কিন্তু গতকাল সে ফ্ল্যাটে ঘটে গেল প্রলয়ংকরী কান্ড! মহা হুলস্থূল, হৈ চৈ, কান্নাকাটি, চেঁচামেচি, আর্তচিৎকার!! একটু পর বয়সে তুলনামূলক ছোট মহিলাটি চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে রক্তাক্ত অবস্থায় বেরিয়ে গেল, উর্ধ্বাঙ্গ প্রায় উদোম। সিঁড়ি দিয়ে নেমে চিৎকার করতে করতে রাস্তায় বেড়িয়ে পড়লো। সবাই অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে আছে। একটু পর ভদ্রলোকও বের হলেন বাসা হতে। তিনিও রক্তাক্ত, গালে মুখে প্রচুর খামছির দাগ।
পরে দারোয়ান এর কাছে শুনলাম বিস্তারিত। ভদ্রলোকের দু্ই স্ত্রী, একসাথেই থাকতেন। কিন্তু প্রতিনিয়ত দুই বউ এর ঝগড়ায় অতিষ্ঠ হয়ে কয়েকদিন আগে ছোট বউকে আলাদা বাসায় রেখে আসলেন। কিন্তু বড় বউ বিভিন্ন বাহানায় ভদ্রলোককে ব্যস্ত রাখে, ছোটবউয়ের বাসায় যেতে দেয়না একদম। ছোটবউ গতকাল এসেছিল আগের বাসায় তার স্বামীকে নিতে। আর যায় কোথায়? বড় বউ তাঁর ছেলেমেয়ে সহ হামলে পড়লো ছোট বউ এর উপর। ভদ্রলোক ছাড়াতে গিয়ে নিজেও হেস্তনেস্ত হলেন, রক্তাক্ত হলেন।
রাতে এ নিয়ে আমার গিন্নীর সাথে কথা হচ্ছিল। আমি চিরকালই নির্যাতিতের পক্ষে। ছোটবউয়ের পক্ষে একটা কিছু বলতে গেলাম। অর্ধেক কথা শেষ হতেই বউয়ের অগ্নিদৃষ্টি দেখে পুরোপুরি মখা হয়ে গেলাম, চুপ মেরে গেলুম একদম। মনে মনে বলি, দিল্লীকা লাড্ডু এত্ত মজা(!) আগে জানলে চিরকুমার থাকার পণ করতুম। খুউব মনে পড়ে আমার হারিয়ে যাওয়া স্বাধীনতাকে, অবসরে বইয়ে মজে যাওয়ার দিনগুলি, উইকএন্ডে ইচ্ছেমত একা একা যেখানে খুশি ঘুরে বেড়ানো, বন্ধুদের সাথে প্রাণবন্ত আড্ডা!!
নারীজাতি খুবই ভালবাসতে জানে। কিন্তু এই একটি ইস্যূতে বড়ই নিষ্ঠুর, নো কম্প্রোমাইজ!
নিম তিতা নিষিন্ধা তিতা, তিতা পানের খড়,
তার চেয়ে অধিক তিতা দুই সতীনের ঘর।
[u]ফুটনোটঃ এই পোস্টে ব্যাচেলারদের বিয়ে না করার ইন্ধন দেয়া হয়েছে বলে কেউ ভাবতে যাবেননা। স্বাধীনতা হারানোর শংকায় কেউ দিল্লী কা লাড্ডু না খাওয়ার পণ করিবেননা যেন। তাহলে ঘরে ঘরে নারী জাতির কান্নার রোল পড়িয়া যাইবে। লেখকের ব্যক্তিগত মন্তব্য হচ্ছে-- কিছু কিছু পরাধীনতায়ও সুখ আছে। [/u]
বিষয়: বিবিধ
১৫৮৭ বার পঠিত, ৪৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তাইলে তো তিনারে শেখ হাসিনার যোগ্যা উত্তরসূরী হিসেবে পারফেক্ট মনে হচ্ছে।
ওস্তাদ! আপনে এক্কাজ করেন। হেতিনিরে না কইয়া আরো তিনডা ইয়ে করেন। তখন বুইজবার পারবেন হেতিনি তারাতারি শেখ হাসিনার আসন দখল কইবার যোগ্যতা হাসিল কইরছে।
কিছু কিছু পরাধীনতায়ও শান্তি আছে।
দৈনিক বুকডন ১০ বার, সাহস বাড়বে।<:-P
অতীব সত্যি কথা!
মানুষকে এইভাবে ভয় দেখানো কি ঠিক?
অবশ্য আপনার উদাহরণের বাস্তবতা আছে। মহিলাদের মাঝে সত্যিকার দীনী দাওয়াতের ঘাটতি আর যে কোনোভাবে দুনিয়াকে ভোগ করার মানসিকতাই এর পেছনে মূলত: দায়ী।
আবার মনস্তাত্ত্বিকভাবে দীনী, শারঈ ও অন্যান্য বিষয় বোঝানো গেলে এবং আর্থিক ও শারীরিক সামর্থ্য থাকলে তখন চিত্র বিপরীত হতো। যেমনটি অতীতে অনেক হয়েছে।
বিস্তারিত আমার আগের একটি লেখায় আছে।
দ্বিতীয় বিবাহ : কুসংস্কার ও মনস্তাত্বিক প্রেক্ষাপট (খানিকটা ১৪+ পোষ্ট)
http://lighthouse24.org/blog/post/viewPost/?postid=267
পান্তা ভাতে কেন ঘি?
এখন আগে আপনি কোমরে গামছা বাইন্ধা রেডি হন। আপনার দ্বিতীয় বিয়ার এন্তেজাম করতেছি। দেখি সাহস কত?
১০০% সঠিক.........
অনেক সুন্দর লিখা... আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
হায় দেশের অবস্থা এখন ঘরেও ঢুকে গেছে।
আমার নানার ছিল তিন ঘর দাদার এবং পরদাদার যদিও একঘর। অন্যদিকে আমার স্ত্রীর নানার দুই এবং দাদার তিন ঘর। সুতারাং এই নিয়ে তর্ক লাগলে আমি সাধারনত পারিবারিক উদাহরন দিয়ে থাকি এবং তিনি সাথে সাথে প্রসঙ্গ পরিবর্তন করে থাকেন।
কিন্তু চিন্তা করি আমাদের পুর্বপুরুষ তিন চার ঘর সামলাতেন আর এখন দুইঘর সামলাতে গিয়ে মানুষ রক্তাক্ত হয়!!
মনে মনে বলি, দিল্লীকা লাড্ডু এত্ত মজা(!) আগে জানলে চিরকুমার থাকার পণ করতুম। খুউব মনে পড়ে আমার হারিয়ে যাওয়া স্বাধীনতাকে, অবসরে বইয়ে মজে যাওয়ার দিনগুলি, উইকএন্ডে ইচ্ছেমত একা একা যেখানে খুশি ঘুরে বেড়ানো, বন্ধুদের সাথে প্রাণবন্ত আড্ডা!!
নারীজাতি খুবই ভালবাসতে জানে। কিন্তু এই একটি ইস্যূতে বড়ই নিষ্ঠুর, নো কম্প্রোমাইজ!
নিম তিতা নিষিন্ধা তিতা, তিতা পানের খড়,
তার চেয়ে অধিক তিতা দুই সতীনের ঘর।
দারুন লিখাটি পড়ে না হেসে পারলাম না, অনেক ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন