নিউজমেকারদের ইচ্ছের আগুনের নির্মম বলি হচ্ছে সংখ্যালঘুরা
লিখেছেন লিখেছেন প্রেসিডেন্ট ০৮ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৪:২০:০২ বিকাল
অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা তৈরির প্রচেষ্টা করে যাচ্ছে নিউজমেকাররা। আর এ কাজে তাদের সহযোগিতা করছে নাস্তিক ও ধর্মবিদ্বেষী একশ্রেণীর স্বঘোষিত সুশীল, মানবাধিকার কর্মী, হলুদ সাংবাদিক তথা তথ্য সন্ত্রাসী, সরকার দলীয় সন্ত্রাসী ও প্রশাসন। মূল উদ্দেশ্য এই ইস্যুকে পুঁজি করে বিএনপি জামায়াত এর উপর গণহত্যা চালিয়ে নির্মূল করা।
অনেক দিন পর কুম্ভকর্ণের ঘুম ভেঙ্গে আজ এক বিবৃতি প্রসব করেছে আন্ধা মিজান খ্যাত জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এর চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্র ও সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, এখনই সময়; প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করে হলেও অপশক্তিকে রুখতে হবে। বাংলাদেশকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে সমন্বিত রাখতে হবে।’
আইন কমিশন এর চেয়ারম্যান বিচারপতি খায়রুল হক উপস্থিত ছিলেন সে অনুষ্ঠানে। এ বিবৃতি সরকারের হীন পরিকল্পনার অংশ।
প্রথম আলো ৫ তারিখ নির্বাচনের ছবি হিসেবে এই ফটোশপ ছবিটি ছাপে। ছবিতে যে চতুর্থ মহিলার কপালে যে সিঁদুরের দাগ দেখা যাচ্ছে সেটা ফটোশপড। এমনকি ষষ্ঠ এবং সপ্তম মহিলার সিঁদুরের দাগও ফটোশপড। একটু জুম করলেই বোঝা যায়।
(http://www.prothom-alo.com/contents/cache/images/800x500x1/uploads/media/2014/01/05/52c95d35b6d5b-4.jpg)
হাই রেজুলেশন ছবির লিংক: http://bit.ly/1fa1imo
একটু চিন্তা করুন। দেশে হিন্দুদের সংখ্যা ১০%। ছবিটি সঠিক ধরলেও এই প্রশ্নটি আসে-কলংকিত নির্বাচনের ছবি দিতে গিয়ে হিন্দু নারী দেখানোর উদ্দেশ্য কি? উত্তর খুবই সহজ- পরবর্তীতে তাদের সংবাদ তৈরির বলি যে সংখ্যালঘুরা হবে তার দায় সহজে বিএনপি জামায়াত এর উপর চাপানো যাবে।
এদিকে গতকাল বগুড়ায় আলোচিত ঘটনা হচ্ছে- জামায়াত বিএনপিকে দায়ী করতে নিজ স্কুলে আগুন দিতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়লেন আওয়ামীপন্থী স্কুল শিক্ষক। মানবজমিন, নয়াদিগন্ত, আমারদেশ সহ বেশিরভাগ অনলাইন সাইটেও নিউজটি এসেছে।
কিন্তু এ নিয়ে প্রথম আলোর কান্ড দেখুন। শেষ পাতায় প্রধান শিক্ষকের এ কী কান্ড শিরোনামে তারা লিখেছে- তিনি নাকি সরকারী অনুদান পাওয়ার জন্য স্কুল পুড়িয়েছেন। কি হাস্যকার দাবি! সহিংসতার ঘটনায় আওয়ামীলীগের কেউ হাতেনাতে ধরা পড়লেও প্রথম আলো সেটা এড়িয়ে যাচ্ছে কিংবা সংবাদ বিকৃত করছে।
প্রমাণিত ঘটনাকে আড়াল করে প্রথম আলো অপ্রমাণিত ঘটনার দায় সরাসরি বিএনপি আর জামায়াত শিবির এর উপর চাপাচ্ছে। বগুড়ায় আওয়ামী লীগ সমর্থক স্কুল শিক্ষক নিজ স্কুলে আগুন দিতে গিয়ে হাতে নাতে ধরা পড়লে ও প্রথম আলো সেটাকে শেষ পাতায় বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে এবং উক্ত ব্যক্তির রাজনৈতিক পরিচয় গোপন করে হাস্যকর দাবি করে - তিনি নাকি সরকারী অনুদান পেতে স্কুলে আগুন দিয়েছেন।
অথচ অপ্রমাণিত ঘটনাগুলোর দায় কোন তথ্য প্রমাণ ছাড়া সরাসরি বিএনপি আর জামায়াত উপর চাপিয়ে প্রথম পাতায় তিনটি রিপোর্ট ও সম্পাদকীয় পাতায় আবদুল মান্নানের কলাম ছাপিয়েছে আজ প্রথম আলো।
অথচ যশোরে আওয়ামী লীগ এর বিদ্রোহী প্রাথী হুইপ আব্দুল ওহাব কর্তৃক সংখ্যালঘুদের উপর হামলার কোন ঘটনাই প্রথম আলো প্রকাশ করেনি।
পড়ুন মানবজমিন এর রিপোর্টে-
নির্বাচনের আগেই হুমকি দিয়েছিলেন হুইপ ওহাব
প্রথম আলোর আজকের প্রথম পাতার রিপোর্টগুলি যথাক্রমে- সংখ্যালঘুদের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত বিচারের উদ্যোগ, গাইবান্ধায় বাড়ি-দোকান ভাঙচুর মারধোর, হাজারো শিশুর স্বপ্নে আগুন। প্রতিটি ঘটনায় কোন তথ্য উপাত্ত,প্রমাণ, কারণ ও বিশ্লেষণ ছাড়াই বিএনপি জামায়াত কর্মীদের উপর সরাসরি দোষ চাপানো হয়েছে।
হাতেনাতে ধৃত কয়টি ঘটনার কথা বলবো? বিশ্বজিত হত্যাকান্ড, পাঞ্জাবী টুপি পড়ে মিল্কি হত্যাকান্ড, ফেনীতে পেট্রোল বোমা বানাতে গিয়ে ৪ যুবলীগ কর্মীর আহত হওয়া, বাসে পেট্রোল বোমা ছুঁড়তে গিয়ে ৪ ছাত্রলীগ কর্মীর হাতেনাতে ধরা পড়া, স্কুল জ্বালাতে গিয়ে আওয়ামীলীগ এর শিক্ষক এর ধরা পড়া...........।
এখন লোকজন বলাবলি করছে। ধরা পড়লে দেখি আওয়ামীলীগ আর ধরা না পড়লে শুনি বিএনপি জামায়াত। তাহলে কোনটি সত্যি? যেটা দেখলাম নাকি যেটা শুনলাম?
আপনার বিবেককেও জাগ্রত করুন। নিজের বিবেককে মনুষত্ব্যকে প্রশ্ন করুন। অনেক প্রশ্নের জবাব পেয়ে যাবেন।
হিন্দুরা এদেশেরই নাগরিক। নিউজমেকারদের ইচ্ছের নির্মম বলি হতে তাদেরকে রক্ষা করতে হবে। সংখ্যাগুরু, সংখ্যালঘু নির্বিশেষে সবার নিরাপত্তা ও মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হলে এখনই রুখে দাঁড়াতে হবে নিউজ মেকারদের সকল চক্রান্তের বিরুদ্ধে। নাহলে সাম্প্রদায়িক ঘৃণা উস্কানি ছড়িয়ে এদেশের শান্তিকামী মানুষের জীবনকে বিপন্ন করে তুলবে এসকল মিডিয়া।
বিষয়: বিবিধ
১৮২৩ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভারতের সাংবাদিক এম জে আকবর গবেষনা করে তার বইতে লিখেছেন গত দেড়শো বছর এই অনঞ্চলে যত সামপ্রদায়িক দাংগা হয়েছে সবগুলিতেই পলিটিক্স জড়িত।
সুত্র-টিভি টোকশোতে নুরুল কবির।
বাংলাদেশের মিডিয়াগুলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত জালিয়াতি সংবাদ উৎপাদন করে সামপ্রদায়িকতা উসকে দেওয়ার চেষ্টা করিতেছে।সুতারাং সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। জামায়াত-শিবিরকে অনেক ধন্যবাদ সংখ্যালঘুদের ব্যপারে তারা যথেষ্ট সচেতন বলে মনে হচ্ছে।
যাজ্জাকাল্লাহ খায়ের
মন্তব্য করতে লগইন করুন