সংবিধানে ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’
লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল মান্নান ২০ মার্চ, ২০১৬, ০১:১৭:৩২ দুপুর
‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ আমাদের সংবিধানে একটা প্রতীকী শব্দ। সংবিধানের ধারাগুলোতে এর কোন প্রয়োগ নেই। তারপরও বাহাছ চলছে ধর্ম মানুষের জন্যে, রাষ্ট্রের ধর্ম থাকে কি করে? একইভাবে অন্যরাও ঐরকম অর্থহীন কিছু প্রশ্ন উত্থাপন করে বলতে পারেন নীতি মানুষের জন্যে তাহলে রাষ্ট্রনীতি হয় কি করে? রাষ্ট্র কথা বলেনা তাহলে রাষ্ট্রভাষা কি কারণে? বিজ্ঞান চর্চা মানুষের কাজ তাহলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিজ্ঞান দিয়ে রাষ্ট্র কি করবে? এভাবে অপ্রয়োজনীয় বহু প্রশ্ন সামনে আনা যাবে। যাঁরা রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম নিয়ে বিতর্ক করছেন তাঁরা না বুঝে করছেন বিষয়টি সেরকম নয়। ভবিষ্যতে প্রতীকী শব্দ ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ প্রজ্জ্বলিত হয়ে সংবিধানে আমুল পরিবর্তন নিয়ে আসে কি না এটি হচ্ছে তাঁদের দুশ্চিন্তার আসল কারণ।
সেক্যুলার পণ্ডিতগণ প্রতিনিয়তই বলে যাচ্ছেন, একটি দেশে বহু ধর্মের মধ্য থেকে বিশেষ কোনো ধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম হিশাবে গ্রহণ করা মহা অন্যায় এবং সংবিধান থেকে তা বাদ দেয়ার জন্য তাঁরা উঠে-পড়ে লেগেছেন। তাঁদের কথার প্রেক্ষিতে একইভাবে প্রশ্ন করা যেতে পারে অনেক আদর্শের অনুসারীদের দেশে কি করে বিশেষ একটি আদর্শের দল রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারে? এতে কি অন্য আদর্শের কবর রচিত হবেনা? আসলে এগুলি কুতর্ক ছাড়া আর কিছুই না।
রাজনৈতিক অঙ্গনে মতাদর্শ শব্দটির ব্যাপক ব্যবহার থাকলেও বর্তমানে বিভিন্ন প্রকারের মতাদর্শ দেখা যায়। ধর্মগুলিও মতাদর্শের অন্তর্ভূক্ত। সত্যিকার অর্থে ধর্মের নীতির আলোকে দেশ পরিচালিত হলে অন্যান্য ধর্মের লোকেরা নিজেদের ধর্ম পালন করতে পারবেনা বিষয়টা মোটেও সেরূপ নয়। অন্যান্য ধর্মের লোকদের মধ্যে ভীতি ছড়ানোই রাষ্ট্রধর্মের বিরুদ্ধে সেক্যুলারিষ্টদের এ প্রচারণার মূল উদ্দেশ্য।
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম সংবিধানে রেখে আওয়ামীলীগ, বিএনপি এবং জাতীয় পার্টি ধর্মের নামে রাজনীতি করছে। অথচ এ দলগুলির বিশেষ করে আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ সারাক্ষণ ধর্মের নামে রাজনীতির বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে থাকেন। নিজেরা কি করছেন ভেবে দেখেননা। ধর্মের নামে রাজনীতি অবশ্যই নিন্দনীয়। তবে ধর্মের আর্থাৎ ইসলামের আলোকে জনগণের কল্যাণের জন্য রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর প্রদর্শিত পথে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে চরিত্রবান নেতৃত্ব ও কর্মী বাহিনী তৈরির মাধ্যমে রাজনীতি, ধর্মের নামে নয় বরং তা ধর্মের রাজনীতি। ধর্মের নামে রাজনীতি এবং ধর্মের রাজনীতি এক কথা নয়। ধর্মের নামে রাজনীতির মধ্যে কল্যাণ নেই, আছে কপটতা। তাই আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থার ভিত্তিতে ধর্মের তথা ইসলামের রাজনীতিই আমাদের কাম্য হওয়া উচিত।
বিষয়: বিবিধ
১৩২২ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন