মুসলমানদের মধ্যে যারা ইসলামী রাজনীতির সাথে জড়িত নয় তারা কি ইসলামের শত্রু?

লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল মান্নান ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৫, ১১:৫৮:৪৪ সকাল

আত্মরক্ষা, সমাজিক নিরাপত্তা, রাষ্ট্রের অক্ষন্ডতা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা, বহিশত্রুর আক্রমণ মোকাবিলা, দেশের আভ্যন্তরিন সমস্যা সমাধান, ধর্মীয় অনুশাসন মানা ইত্যাদির জন্যে ইসলামে রয়েছে সুস্পষ্ট নীতিমালা। উল্লিখিত নীতিমালাগুলি যেমন এক ব্যক্তিকে নির্দেশ করে তাকে কি ভাবে তার জীবন পরিচালনা করতে হবে, একই ভাবে একটি সমাজ ও রাষ্ট্রের সার্বিক কাজ-কর্ম কি ভাবে পরিচালিত হবে তাও নির্দেশ করে থাকে। কাজেই কুরআনের অনুসারী হিসাবে একজন মুসলিম বলতে পারেনা কুরআনের কিছু নীতি মানব আর কিছু মানবনা। আল্লাহ্‌ বলেন -

তবে কি তোমরা গ্রন্থের কিয়দংশ বিশ্বাস কর এবং কিয়দংশ কর অবিশ্বাস? যারা এরূপ করে, পার্থিব জীবনে দুর্গতি ছাড়া তাদের আর কোনই পথ নেই! কিয়ামতের দিন তাদেরকে কঠোরতম শাস্তির দিকে পৌঁছে দেয়া হবে। আল্লাহ তোমাদের কাজ-কর্ম সম্পর্কে বে-খবর নন। (২. বাকারাঃ ৮৫)

যেসব লোক আল্লাহ্‌ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফায়সালা করে না, তারাই কাফের। (৫. মায়েদাহঃ ৪৪)

যারা আল্লাহ্‌ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহ্‌কে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে রাসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম) এর মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে। (৩৩. আহযাবঃ ২১)

উপরোল্লিতি আয়াত গুলির আলোকে আমরা বুঝতে পারি আংশিক ভাবে কুরআনকে বিশ্বাস করার এবং সে হিসাবে মান্য করার সুযোগ নেই। আমাদের জীবনের প্রত্যেকটি বিভাগের সকল কাজ কুরআন অনুযায়ী ফায়সালা করা বাধ্যতামূলক। রাসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম) আমাদের আদর্শ নেতা হওয়াতে ব্যক্তিগত কাজ থেকে শুরু করে, রাষ্ট্র পরিচালনা সহ অন্যান্য সকল কাজ তিনি যেভাবে করে দেখিয়েছেন ঠিক সেভাবে অনুসরণ করতে হবে।

কাজেই একজন ঈমানদারকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে কুরআনের আলোকে তাঁর চলার পথটি কেমন হবে। সার্বিকভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করতে চাইলে জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠনের জন্য রাজনীতিই হচ্ছে নিয়মতান্ত্রিক পথ। কাজেই ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় একজন মুসলমানকে ইসলামী রাজনীতির সাথে কোন না কোন ভাবে সম্পৃক্ত থাকতেই হবে। শুধুমাত্র সমর্থন দেয়াও রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার সামিল। একজন মুসলমান ইসলাম প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে ইসলামী রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত না হয়ে যদি গায়ের ইসলামী রাজনীতির সাথে সক্রিয় থাকেন অথবা উনি কোনটিই না করেন তাহলে সে ক্ষেত্রে তাঁর গৃহীত সিদ্ধান্ত ইসলামের পক্ষে যাবে নাকি বিপক্ষে তা সহজেই অনুমেয়। ইসলাম বিরোধী শক্তির সাথে থাকা অথবা কুরআনের আইন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে নিষ্ক্রীয় থাকা আল্লাহর নির্দেশের পরিপন্থী উপরোল্লিখিত আয়াতে তা স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। ইসলাম বিরোধী তারাই, যাদের কর্মপন্থায় ইসলাম তথা আল্লাহ্‌র আইন প্রতিষ্ঠার কোন কর্মসুচী নেই।

বিষয়: বিবিধ

১২০৯ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

355837
৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:৩৫
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : যারা বিরোধি তারা অবশ্যই শত্রু। যারা জড়িত নয় বড়জোর দুর্বল ঈমানদার হতে পারে।
355847
৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:০৬
শেখের পোলা লিখেছেন : "ইসলাম বিরোধী তারাই, যাদের কর্মপন্থায় ইসলাম তথা আল্লাহ্‌র আইন প্রতিষ্ঠার কোন কর্মসুচী নেই।"
সব কথার শেষ কথা৷ধন্যবাদ৷
355973
০২ জানুয়ারি ২০১৬ রাত ০২:৪৯
সাদাচোখে লিখেছেন : আসসালামুআলাইকুম! ব্যাক্তিগতভাবে নিবেন না। একজন মুসলিম ভাই হিসাবে আপনাকে বলবো দয়া করে আপনার প্রজ্ঞা ও জ্ঞান এর আলোকে খোলা মনে সূরা কাহাফের ৩৪, ৩৫, ৩৬ এই তিনটি আয়াত পড়ুন। এবং তারপর ৪২ নং আয়াতটি পড়ুন। দেখুন তো সূরাতে আলোচিত এই ভদ্রলোক কি এমন বলেছিল (৩৪, ৩৫, ৩৬ আয়াতে) যে - যার জন্য (৪২ আয়াতে) সে স্বগোতক্তি করছে, 'সে যদি আল্লাহর সাথে শির্ক না করতো'?

সবশেষে আপনার লিখার শেষ উক্তিটি পড়ুন, 'ইসলাম বিরোধী তারাই, যাদের কর্মপন্থায় ইসলাম তথা আল্লাহ্‌র আইন প্রতিষ্ঠার কোন কর্মসুচী নেই' এবং ভাবুন - কোথাও কোন মিল কিংবা অমিল আছে কিনা?

জাস্ট ইন কেইস যদি কোন মিল কিংবা অমিল পান।

ভাল থাকুন। যা আপনি জেনেছেন ও বুঝেছেন - তার জন্য চেষ্টা করছেন - দেখে ভাল লাগছে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File