পীরদের মুরিদ চাষঃ মুরিদের পীরকে বাঁশ!! (ভন্ড় পীর/মাজার পূজারীদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গকৃত)
লিখেছেন লিখেছেন তীর্যক১০ ০৭ মে, ২০১৪, ০৪:১৭:৪৭ বিকাল
একসময় মানুষ গরু মহিষ ছাগল ভেড়ার চাষ করতো। রাখাল এক পাল গরু-মহিষ নিয়ে পাহাড়ে বন বাদাড়ে ছেড়ে দিতো, সন্ধ্যায় গরুর পাল নিয়ে ফিরে আসতো বাড়ী। তা থেকে বাচ্চা হয়ে বংশ বিস্তার অতপর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি। তবে সেসব এখন প্রগৈতিহাসিক ঘটনার মত। সময়ের আবর্তনে মানুষের রুচি, মনন এবং বৃত্তির বিস্তর পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। গরু ছাগল মেষ চাষের পরিবর্তে এখন হচ্ছে পীর মুরিদের চাষ। এখন আর রাখাল বালক কিংবা চারনভূমির প্রয়োজন পড়েনা, মুরিদ তার মুর্শিদের রেজামন্দির জন্য নিজের কস্ট লদ্ধ আয়ের আংশিক কিংবা পুরোটা পীর বাবাজির কদমতলায় লুটিয়ে দেয়। এমনকি নিজের স্ত্রী কন্যা পীরকে বখশে দেবার ঘটনাও দুর্লভ নয়। কিন্তু মুরিদ যখন টের পায় পীর তার মুরিদের চাষাবাদ করে বেশ ভালই কামাই করছে। বেহেশত-দোযখের কথা বলে জাগতিক সব কিছু লুটে নিয়ে তাকে নিঃস্ব করে দিচ্ছে! তখন কি করে !!!! সে রকম একটি ঘটনা বিধৃত করেছেন হানাফী মাযহাবের প্রখ্যাত আলেম আল্লামা আশরাফ আলী থানবী (রাহঃ)।
এক মুরিদ প্রত্যুষে উঠে পীরের বাড়িতে হাজির। পীর তো অবাক এত সাত-সকালে তুমি এখানে ? ব্যাপার কি বলতো!!
মুরিদঃ হুজুর আমি রাতে একটা মারাত্মক স্বপ্ন দেখে খুব বেচান হয়ে আপনার কাছে ছুটে এসেছি।
পীরঃ তাই নাকি। কি সেই স্বপ্ন?
মুরিদঃ আমি স্বপ্নে দেখলাম আপনি আর আমি পাশাপাশি বসা, আপনার হাত মধুর হাঁড়িতে ডোবানো আর আমার হাতে ময়লার হাঁড়িতে ডোবানো !
পীরঃ ঠিকই তো আছে, এটা কি এমন মারাত্মক স্বপ্ন হলো। আরে তুই হলি পাপী, কমবখ্ত শয়তান, তোর হাত ময়লার হাঁড়িতে হবেনা তো আমার হাত হবে! আর আমি হলাম আল্লাহর অলী, নেক্কার কামেল পীর আমার হাত তো মধুর হাঁড়িতে হবেই। যাহ,,, দুর হয়ে যা ,,,,
মুরিদঃ হুজুর, কথা তো এখনো শেষ হয়নি, স্বপ্নের আরও একটু বাকি আছে ,,,
পীরঃ আবার কি বাকি !
মুরিদঃ তারপর দেখলাম, আপনার হাত আমি চেটে খাচ্ছি আর আমার হাত আপনি ,,,
পীরতো তেলে বেগুনে আগুন। বেয়াদব, নিমক হারাম, কমবখত্ ,, এমন বাজে স্বপ্ন নিয়ে তুই আমার কাছে এসেছিস !
মুরিদঃ আপনার পীরগিরী হলো মুরিদের চাষ করে মুরিদদের ফল-মুল, হাদিয়া-তোহফা, অর্থ-কড়ি লুটে নেওয়া। তো আপনি ময়লা চাটবেননা তো আমি চাটবো! আমার সরল বিশ্বাস ছিল পীর ধরলে বুঝি আল্লাহ কে পাওয়া যায় কিন্তু আমার ভুল ভেঙ্গেছে। আল্লাহ কে পেতে কোন উসিলা লাগেনা, আল্লাহর সাথে বান্দার সরাসরি যোগাযোগ হয় ইবাদাতের মাধ্যমে। আপনার মত ভন্ড় পীরের আমার দরকার নেই।
এ প্রসঙ্গে হযরত বড়পীরের একটি বক্তব্য এখানে প্রাসঙ্গিক মনে করছি। তিনি বলেছেন, “পীরগিরী করতে চাও তো মুরিদের বাড়ীতে দাওয়াত খাওয়া আর মুরিদের হাদিয়া তোহফা নেয়া ছেড়ে দাও, দেখি তোমার পীরগিরী ক’দিন চলে” !!
আমাদের দেশে পীর আর পীর পূজারীর অভাব নেই। চর্মনাই, চক্ষুনাই, কাপড় নাই আবার আটরশি- দশরশি ...... হরেক রকম পীরের ছড়াছড়ি। আবার একেক পীরের ইবাদাতের ধরণ একেক কায়দার। একেক পীরের পোষাকের ধরন একেক কিসিমের। কারও জিকির হু .. হা, কারও জিকির লম্ফ ঝম্ফ করা। এরা ধর্মের লেবাস পরে পরকাল বেচে খায়, আসলে এরা ভন্ড়, পেট পূজারী, এদের চিনে, বুঝে পরিত্যাগ করা উচিত।
বিষয়: বিবিধ
১৯০২ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আর এখন সময়্ও খুব কম হয়। আপনার মত আরও অনেক পুরানো ব্লগারদের দেখে ভাল লাগছে।
ধন্যবাদ সাবধান করার জন্য।
তবে এটা কিন্তু পুঁজি ছাড়া ব্যবসা। লোকসানের সম্ভাবনা কিন্তু নাই। মুরিদের ব্যবসার দিকতো দিকছিনা। কবে যে মানুষগুলো 'মানুষ' হবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেদায়েত দান করুন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন