ছুটেছি যখন শিকড় পানে ( জার্নি টু নানা বাড়ি)
লিখেছেন লিখেছেন নূর আয়েশা সিদ্দিকা জেদ্দা ২৮ অক্টোবর, ২০১৪, ১০:২০:১৩ রাত
ছোট ভাইয়া ইংল্যন্ডে বসেই কক্সবাজার হতে ফেনায়িত সাগরের উত্তাল তরঙ্গমালার হাতছানি শুনতে পাচ্ছিল। তাই ওখানে বসেই প্ল্যান করলো ঈদুল ফিতরের বন্ধে আমরা সব ভাই বোনরা আম্মা আব্বাকে সাথে নিয়ে ওখান হতে বেড়িয়ে আসবো। কিন্তু পরবর্তীতে আব্বা আম্মার শারীরিক অসুস্থতার কথা চিন্তা করে সেই পরিকল্পনা বাদ দিতে হল। আমার প্রায়ই মনে হয় সন্তানের নিরাপদ ও সুন্দর জীবনের ভিত গড়তে গিয়ে সময়ের আবর্তে বাবা মায়ের অবস্থা হয়ে যায় পরিত্যক্ত জুবুথুবু গাছের গুড়িটির মত। একরাশ ক্লান্তি আর বেলা শেষের দীর্ঘশ্বাস নিয়ে ঘষটে ঘষটে জীবনের দিগন্তে অস্তমিত হওয়ার প্রহর গোণা শুধু। অগণন দায়বদ্ধতার জোয়াল কাঁধে এক হতভাগ্য সন্তানের অবস্থান হতে মনিবের কাছে শুধু মিনতি- রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বা ইয়ানিস সাগীরা।
অবশেষে বাবা মায়ের শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত হল সবাই মিলে গ্রামের বাড়ি যাবো। স্মৃতি বিজড়িত গ্রামের চিরচেনা অতীত হয়তো উনাদের মনে খানিকটা হলে ও প্রশান্তি দেবে। যাত্রার আগেই মেঝ আপু কড়া নোটিশ দিলেন- এই তোরা যদি আমাকে গ্রাম পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাস তবে কিন্ত আমার মেয়ের বিয়ের (বিবাহত্তোর) অনুষ্ঠানে গিয়ে ভাত ও পাবিনা। এই হুমকিতে কাজ হল। সুতরাং সবাই আপুকে মেয়ের বিয়ের যোগাড় যন্ত্রের জন্য ওর নিজ নিবাসে ফিরতে ছাড়পত্র দিলাম।আমরা বাকী পাঁচ ভাইবোন কাচ্চাবাচ্চা সহ যাত্রা করলাম।
ঈদের ২দিনের মাথায় এক ভোরে আমাদের যাত্রা হল শুরু। ঘুমন্ত নগরীটার তখনো পুরোপুরি ঘুম ভাঙ্গেনি। পিচঢালা রাস্তার গায়ে লেপ্টে থাকা পথের ধুলোদের গায়ে তখনো আলস্যের ভাব। আমরা শহর ছেড়ে চললাম গ্রামের উদ্দেশে। জনাকীর্ণ নগরীর এই সময়কার সুনসান নিরবতা অন্যরকম আদলে ধরা দিলো আমাদের সবার চোখে। শহর হতে বের হতেই এক জায়গায় সবকটা গাড়িই থামলো। আমার ছোট্র মেয়েটি ওর বড় মামাকে দেখে জিজ্ঞেস করলো- মামা এখানে কি হচ্ছে? ভাইয়া মজা করে বললেন- শুধু জুইই খাবার খাবে আর কারো খাবারের দরকার নেই নাকি। তুই কি জানিস না নাকি এখানে গাড়িরা খাবার খাচ্ছে। বেচারী এবার ক্লাস থ্রীতে উঠেছে। আত্নসম্মানের লেবেলটা একটু একটু করে বাড়ছে মনে হয়। ও মুখটা কালো করে বললো- বড় মামা তুই তোকারি করছেন কেন? তুই তোকারি করবেন না। ওর কথার ভঙ্গিতে সবাই হেসে অস্থির। বড় আপু হাসতে হাসতে বলল- এই শোননা পাকনা বুড়িটা কি বলল?
এরই মাঝে আকাশটা দুষ্ট ছেলের মত পানি ছিটিয়ে ছিটিয়ে আলসে প্রকৃতির ঘুম ভাঙ্গানোর কোশেশ করলো। প্রকৃতি ও কম যায়না। সুযোগ পেয়ে বাসী মুখটি ধুয়ে বেশ সাফ সুতরো হয়ে উঠলো। শ্রাবণ মেঘের জলকণা মেখে বৃষ্টি স্নাত প্রকৃতির সারা গায়ে সবুজের পেলবতা যেন আমাদের সবার চোখকে ভালোলাগার মুগ্ধ আবেশে অভিভূত করে তুললো। স্রষ্টার অপার সৃষ্টি সম্ভারের এই আধিক্য দেখে বিনম্র আবেগে আনুগত্যের মস্তক নুয়ে এলো।...কোন সেই শিল্পী জল রংয়ে আকা ছবি অনুভবে তনুমন ভরিয়ে তোলে...।বর্ষার বারিধারায় স্নাত প্রকৃতির চারিদিকে যেন সবুজের মেলা বসে গেছে। একমাথা সবুজ পাতা নিয়ে গাছেদের সরব উপস্থিতি। তারই মাথায় বিনাভাড়ায় নীড় বাঁধা পাখিদের ঘুমভাঙ্গা কিচির মিচির। যেন মধ্যবিত্ত পরিবারের সকালের তেল নুনের হিসেবের দরকষাকষির মতই উত্তেজনা। নাম না জানা বুনো ফুলের ঝোপ। আবার বড় গাছের বলিষ্ঠ শরীর জড়িয়ে লাজুক লতাদের এলোমেলো আলিঙ্গনে আকাশের নীলে চোখ রাখার আকুতি। কোথাও সবুজ ধানের সবুজাভ শরীরের ফাঁকে ফাঁকে ধ্যানী বকের মৌনী ভঙ্গিমা।
দীর্ঘদিন প্রিয়জনের বিচ্ছেদ বেদনায় কাতর বৃষ্টিকণা গুলো কি যে এক ভালোবাসার আবেশ নিয়ে জলাশয়ের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ছিলো। ফ্যশনশোতে অংশগ্রহণকারীণীদের হেলেদুলে বিচিত্র ছন্দ তুলে হেঁটে চলার মত করে ঝাঁক বেঁধে হাঁসের দল ব্যস্ততা দেখিয়ে ছুটে চললো জলকেলীতে।
অপলক চোখে তাকিয়ে দেখছি কোন এক স্রষ্টার নিপূন এই অপূর্ব সৌন্দর্য শোভা। এক সময় খবর এলো আমাদের সাথের দ্বিতীয় মাইক্রোটি গ্রামের মুখে ঢুকতে যেয়ে পথ হারিয়ে ফেলেছে। আমরা আরো প্রায় আধা ঘন্টা দেরীতে ওদের সাথে একত্রিত হলাম। আমাদের গাড়ি হতে বাচ্চারা ওদের চেঁচিয়ে বলতে লাগলো- ইস আমাদেরকে ডিঙ্গিয়ে প্রথম হতে পারলেনা। আমি একটু মুরুব্বিয়ানা দেখিয়ে ২/৩ বার সঠিক পথ দেখানোর চেষ্টা করলাম ড্রাইভারকে। কিন্তু বর্ষার আদুরে আথিতেয়তা পেয়ে চারদিকে সবুজের উপচে পড়া আধিক্যে পথ ঘাট এতটাই বদলে গেছে যে চিনতেই পারলাম না। পরে ভাবলাম কার না কার বাড়িতে ঢুকে পড়ে অনাহুত অতিথি হতে যেয়ে ধোলাই খাবো। তাই হার মেনে বড় আপুকে বললাম- নাও আপু তুমিই পথহারাদের পথ দেখাও। বড় আপু এতক্ষণ আমার অজ্ঞতায় হাসছিলেন। এবার গম্ভীর গলা করে বললেন- আরে তোর আগে তো পৃথীবীতে আমি এসেছি নাকি? আপুর দক্ষ পথ নির্দেশনায় আমরা কিছুক্ষণের মধ্যে নানু বাড়ির গেইটে পৌঁছালাম। ছোট মামা এগিয়ে এসে স্বাগত জানালেন সবাইকে।
আমার মত একই দিনে মামা ও দেশে এসেছেন । কেউ ইটালি , কেউ ইংল্যন্ড , কেউ মধ্যপ্রাচ্য, কেউবা বাংলাদেশে । জীবন জীবিকার তাগিদে কচুরিপানার মত ভাসমান মানুষ গুলো আবার এক সাথে হবার সুযোগ পেলাম আল্লাহর আপার মেহের বাণীতে। পথে গাড়ির মান অভিমান ভেঙ্গে ভাইয়াদের গাড়ি দুটো ও এক সময় পৌঁছালো। বাচ্চারা তো মহা খুশি। কেউ ছাদে যায় তো কেউ গ্রামের রাস্তা ধরে ছুটে। কেউবা পুকুরের ধার ঘেঁষে দৌড়ায়। বাড়িতে ঢোকার মুখে বাগানে দেখি অসংখ্য নারকেল পড়ে আছে। ছোট মামাকে বললাম- মামা ঘটনা কি? মামা বললেন- আর বলিস না মা। বাড়ি তো খালিই পড়ে থাকে। কাঠবিড়ালি সেই সুযোগের সদ্বব্যবহার করেছে। যেহেতু সবাই নাস্তা না করেই বেরিয়েছি তাই মামা বাচ্চাদের সবাইকে ডেকে ডেকে জড়ো করলেন নাস্তার টেবিলে। আমরা প্রায় ২৮/৩০ জন মানুষ। আমি বললাম- মামু আমাদের এত বড় মিছিল দেখে ভয় পাচ্ছেন না তো। মামা আবেগ জড়ানো গলায় বললেন- তোর নানুর সাথে ঈদ করবো বলে তোর মামী আর বাচ্চাদের ছেড়ে ২ সপ্তাহের জন্য দেশে আসার প্ল্যান করেছিলাম। এর মধ্যে মামুন যখন ইংল্যন্ড হতে জানালো তোরা গ্রামে আসার প্ল্যান করছিস আমার মনটা খুশিতে ভরে গেল। আর আজ মনে হচ্ছে দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত পড়ে থাকা সারা বাড়িটায় যেন চাঁদের হাট বসে গেছে। সেজ মামীকে দেখলাম কিচেনে দুজন সহকারী নিয়ে ঘর্মাক্ত হয়ে আমাদের দুপুরের খাবারের আয়োজন করছেন।
আমার ছোট মেয়েটির সাথে কিছুক্ষণের মধ্যে আমার ছোট মামার খুব ভাব হয়ে গেল। আমি বাইরে হাঁটতে এসে দেখি মামা ওকে চেয়ারের উপর উঠিয়ে কামরাঙ্গা পাড়তে ব্যস্ত। ও আমাকে দেখে খুশিতে চোখ বড় বড় করে বলবো- আম্মু দেখ স্টার ফ্রুটস।সারা গাছ দেখি পাকা পাকা ফলে ভর্তি। স্রষ্টার অপার দানে যে ফল আমাদের দেশে বড় অবহেলাতেই জন্মে। এই প্রবাসেই সুপার মার্কেটে সেই ফলের দামের দিকে তাকাতে ও ভয় লাগে। গাছে ঝুলে থাকা বড় বড় পেয়ারাগুলো ও দেখি জুয়াইরিয়া হস্তগত করলো কয়েকটি। আমি বললাম- ওকে এত ফল পাড়তে দিচ্ছেন কেন। নষ্ট করবেতো। মামা বললেন- নারে না। বিদেশে তো ওরা এগুলো কল্পনা ও করতে পারেনা। বুঝলাম আগামীর কাছে কিছু সুন্দর স্মৃতির সঞ্চয় জমাতে এই আয়োজন। চারদিকে একাধিক পথ হয়ে যাওয়ায় নানু বাড়ির চারপাশটি ও বেশ নিরব। আমরা দল বেঁধে গ্রামের পথে হাঁটতে বের হলাম। ওমা এক জায়গায় দেখি গাছের নিচে অসংখ্য জাম পড়ে আছে। তবে অতিরিক্ত সাহসিকতা দেখিয়ে উপর হতে ঝাম্প করতে গিয়ে সব বেচারাদের শরীর থেথলানো। অনেক খুঁজে ও অক্ষত কাউকে পাওয়া গেলনা। আমি তখন বড় আপু আর ছোট আপুর দুই মানিক জোড়কে বললাম- দেখি লম্বুরা কয়টা জাম পাড়তো। ওরা গাছের উচ্চতার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বলবো- ছোট খালা ওই গাছে উঠতে বলছো। পড়লে যে বেঘোরে প্রাণটা যাবে। জাম পাড়তে গিয়ে অপঘাতে মৃত্যু ... খালা ব্যাপারটা কেমন হাস্যকর হয়ে যাবেনা। এভারেস্ট জয়ে এই আত্নহুতি হলে না হয় একটা কথা ছিলো। বিকেলে সবাই বললাম- ছোটমামা ডাব খাওয়াও। ছোট ভাইয়া তো খুবই পাজি । ও বলবো- মামু তাড়াতাড়ি ডাব পাড়ার লোক খোঁজ। না হলেও দুপুরে যে ভুরি ভোজ খাইয়েছ পরে কিন্তু পেটে সিগন্যাল দিলে তোমার বিছানা বরবাদ হয়ে যাবে। কিছুক্ষণের মধ্যে ডাব পাড়া শুরু হল। খাদকদের লাইন ও বেশ দীর্ঘ। অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম ডাবের সংখ্যা কমে আসছে কিন্তু গ্রাহক সংখ্যা অপরিবর্তিত থেকে যাচ্ছে। কিছুক্ষন পর দেখি বড় আপুর ছোট ছেলেটি পানিতে দাঁড়িয়ে । আমি বললাম- কি ব্যাপার? ও বললো- সেই কখন থেকে কিউতে আছি। ছোট নানা ভাইয়ার লেডিস ফাস্ট, চিলড্রেন ফাস্ট তরীকা মানতে গিয়ে দেখি সব ডাব সাবাড় হয়ে যাচ্ছে। তাই আমি আর কোন রিস্ক নিতে চাইনা। আমাকে একটা দা এনে দাও। আমি পানিতেই দাঁড়িয়ে আমার ভাগটা পেটস্থ করে ফেলি। সত্যিই শেষ পর্যন্ত ও পানিতে দাঁড়িয়েই ডাব খেল।
চারপাশে সবুজের হাতছানিতে আমরা আর এক পশলা বাড়ির উলটো দিকের রাস্তায় হাঁটতে বের হলাম। গ্রামের মেঠো পথ ছেড়ে সবাই ধান ক্ষেতে নেমে পড়লাম। বাচ্চারা বললো- একটু এডভেঞ্চার হোক যে দিক হতে এসেছি। তার পরিবর্তে অচেনা একটি পথ ধরে বাড়ি ফিরবো। পায়ে পায়ে বাচ্চাকাচ্চার মিছিল নিয়ে অনেক খানি এগুতে গিয়ে টের পেলাম স্থানে স্থানে বর্ষার পানি জমে বেশ কাদা জমে আছে। প্রায়ই পায়ের গোড়ালি ডুবে যাচ্ছে। সুতরাং এই ফাঁকে পায়ের জুতাগুলো ও চান্স পেয়ে হাতে উঠে এলো। ওদের শব্দহীন চেহারা হতে আমি ব্যঙ্গাত্নক হাসি শুনতে পাচ্ছিলাম। হঠাৎ ধান গাছের হালকা শরীরে বয়ে যাওয়া উদাসী বাতাসের সাথে এসে যোগ দিলো ঝিরঝিরে বৃষ্টি। কিন্তু সামনে এখনো- দুর্গম গিরি কান্তার মরু দুস্তর পারপার। যা থাকে কপালে সবাই হেঁটেই চলেছি। ধীরে ধীরে এক সময় বিকেলের কনে দেখা অলোটা মরে যেতে লাগলো। ধেয়ে আসা অন্ধকারে একটু একটু ভয় পেতে শুরু করলো সবাই। একট দূরে গাছের গায়ে ঝুলে থাকা থাকা থোকা কালো অন্ধকার দেখে সবাই চিৎকার করতে লাগলো – এই দেখ ওখানে ওটা কি ভয়ংকর কিছু মনে হচ্ছে। বুঝলাম সময়ের ব্যবধানে চিরচেনা অবয়ব ও অচেনা হয়ে যায় কখনো কখনো। মনে হচ্ছে ভুলভুলাইয়া পেয়ে বসেছে। পথ তো আর শেষ হয়না। আমি আমার মামাতো বোনকে বললাম- আপু, তুমি চিনে বাড়ি ফিরতে পারবে। বেচারী দেখি ইতস্তত করছে। আসলে ওরা ও কদাচিত আসে দাদা বাড়ি। পরে আমি বললাম- ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমরা এল শেপ ধরে এগিয়ে যাবো। পথ তো নিশ্চয় পাওয়া যাবে। বেচারী তখন ফিক করে হেসে দিয়ে বললো- আপু সেই ভরসাতেই তো আমি এতক্ষণ আপনাদের বুঝতে দিইনি এই পথ যে আমার অচেনা। চারদিকে ঝুপ করে নেমে আসা অন্ধকারে সবাই দোয়া দরুদ পড়তে পড়তে দীর্ঘক্ষণ পর এক সময় নানু বাড়ির পথ খুঁজে পেলাম। সবাই খুশিতে চিৎকার করে উঠলো। বাড়ির সামনের পুকুর হতে সবাই কাদা মাখা হাত পা ধুয়ে মাগরিবের অযু করে বাড়ির পথ ধরলাম। (চলবে)
...................................................................
বিষয়: বিবিধ
২২১০ বার পঠিত, ৩৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তোকে খুব মিস করি।
আপু আপনার পরবর্তী লেখার অপেক্ষায়...
খুব ভালো লেগেছে আপুজি।
সুন্দর পোষ্টটির জন্য অনেক ধন্যবাদ। পরবর্তি পর্বের অপেক্ষায়। পথ হারিয়ে কোথায় গেলেন??
এতো দিন কোথায় ছিলেন আপু!
অনেক অনেক মিস করেছি আপনার অসাধারণ সব লেখনী!
আশা করি কন্টিনিও হবেন এখন।
আপনাদের সর্বাংগিন কুশলতা কামনা করি মহান রবের কাছে........
আমীন, ইয়া রাব্বাল অা'লামীন।
প্রকৃতিতো এম্নিতেই আহামরি সুন্দরী। তার উপর আপুর নিপুন হাতের ছোঁয়ায় সেই প্রকৃতিতে যেন সৌন্দর্য্য আর বন্যতার মহাপ্লাবন শুরু হয়ে যায়। জাযাকাল্লাহু খাইরান।
"সুতরাং এই ফাঁকে পায়ের জুতাগুলো ও চান্স পেয়ে হাতে উঠে এলো। ওদের শব্দহীন চেহারা হতে আমি ব্যঙ্গাত্নক হাসি শুনতে পাচ্ছিলাম। হঠাৎ ধান গাছের হালকা শরীরে বয়ে যাওয়া উদাসী বাতাসের সাথে এসে যোগ দিলো ঝিরঝিরে বৃষ্টি। কিন্তু সামনে এখনো- দুর্গম গিরি কান্তার মরু দুস্তর পারপার।"
"ধীরে ধীরে এক সময় বিকেলের কনে দেখা অলোটা মরে যেতে লাগলো। ধেয়ে আসা অন্ধকারে একটু একটু ভয় পেতে শুরু করলো সবাই। একট দূরে গাছের গায়ে ঝুলে থাকা কালো অন্ধকার..."
"চারদিকে ঝুপ করে নেমে আসা অন্ধকারে সবাই দোয়া দরুদ পড়তে পড়তে দীর্ঘক্ষণ পর এক সময় নানু বাড়ির পথ খুঁজে পেলাম"।
আপুর পোস্ট থেকে কিছু অমূল্য রত্নসম উপমা আর কুমিল্লার রসমালাইয়ের স্বাদময় কথারমালাকে একত্র করলাম। যাতে মাঝে মাঝে টুপ করে ডুব দিয়ে সে স্বাদ গ্রহন করতে সময়ের অপচয় না হয়। সাথে অন্যদেরও স্বাদ নেবার কষ্ট করতে না হয়।
আপু চালিয়ে যান, এই প্রকৃতির প্রেমীকে সাথেই পাবেন। ইশ্ আপনার নানাবাড়ির ছবি দেখে কিন্তু আমার নানবাড়ির কথা মনে পড়ে গেল। ঐটা যেন এখন পরিত্যক্ত এক বসতবাড়ি। বছরে এক কি দুইবার মামারা গিয়ে কোরবানী /ফসল তুলে চলে যান আবার ঢাকায়। বিদেশীরাতো সহজে আসেন না। আমার নানাবাড়ির স্মৃতিকথায় আপনাকে আমন্ত্রন।
আমি যদি এভাবে লিখতে পারতাম!
তবে একটা বিরাট কমেন্ট করতে ইচ্ছে করছে, আপনার মনে কষ্টে পাবেন বা আমার উপর বিরক্ত হবেন মনে করে আর করলাম না।
এই পৃথিবীতে আমি যে দিকে তাকাই
নিপুন সৃষ্টি দেখে তোমাতে হারাই।
তোমার করুনায় বৃষ্টি ঝরে
পাখপাখালি গায় তোমার তরে।
আপনাদের ব্লগে দেখে অনেক আনন্দিত। যদিও টুডে ব্লগের ১ম দিকে অনেকেই দেখতাম না।
আপনাকে ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন