রাষ্ট্রমন্ত্রী যখন সন্ত্রাসী
লিখেছেন লিখেছেন ফারুক ০১ জানুয়ারি, ২০১৩, ১১:২৪:৩৭ রাত
আমরা শুনেছি এবং দেখেছি মানুষ যখন জীবন সায়াহ্নে এসে যায় তখন মানুষ আবোল তাবোল বকতে থাকে। এটা খাবে সেটা খাবে। এটা করবে সেটা করবে। আর যদি ইমানদার হয় তখন কালেমা এবং আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে থাকে। মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করতেই হয়। এর পরই শুরু হয় আসল হিসাব নিকাশ। ঠিক তেমন জীবন সায়াহ্নে এসে গেছে বাংলাদেশ সরকার। সকল নেতা- নেত্রি। মন্ত্রী- এমপি সবাই যেন দিশেহারা। কথার কোন লাগাম নেই। আগা গড়া পুরুটাই যেন দিশেহারা। চোর- সন্ত্রাসী- মাস্তান সবাইকে নিয়ে যেন ব্যস্ত। আইন- নিয়ম- শৃঙ্খলার কোন বালাই নেই।
কোন দেশের ভাবমূর্তি নির্ভর করে সে দেশের রাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের উপর। আর রাষ্ট্রমন্ত্রী যদি হয় পাগল অথবা সন্ত্রাসী- মাস্তান তা হলে সেদেশের অবস্থা কেমন হবে তা সহজে অনুমেয়। বাংলাদেশের শুধু রাষ্ট্রমন্ত্রী নয় প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সমস্ত মন্ত্রণালয় একই সুত্রে গাথা। একজন মন্ত্রীরও কথা এবং কাজের কোন ব্যালেন্স নেই। দেশের মানুষ মনে করেছি সাহারা খাতুনকে বাদ দিয়ে সবচেয়ে শিক্ষিত এবং সাবেক আমলা দিয়ে দেশ খুব ভালই চলবে, কিন্তু হোলটা কি? মানুষ আশাহত হোল। যেন এক বড় মাস্তানের কবলে পড়ল। একি!! কোন দায়িত্বশীল মন্ত্রী কি করে সন্ত্রাসকে উসকিয়ে দেয়। সরাসরি নির্দেশ দেয় মানুষ হত্যা করার জন্য। তার কাজ হচ্ছে- আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা, অথচ সে তার পরিবর্তে ছাত্রলীগ আর যুবলীগের মাস্তানদের নির্দেশ দিয়ে সারা দেশে গৃহ যুদ্ধ বাঁধানোর চেষ্টা করছে। এর পরিণতিতে আমরা কি দেখলাম।
৩ ডিসেম্বর। জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ সমাবেশ। বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট। প্রথম থেকেই তিনি মিথ্যা বললেন। জামায়াত নাকি অনুমতি নেয়নি। আবেদনও করেনি, সুতরাং সমাবেশ করতে দেয়া হবেনা।অথচ পুলিশ প্রশাসন বলল আবেদন করেছে। প্রশাসনের গৃহীত কপিতে স্বাক্ষর এবং সিলও রয়েছে। ঘোষণা দেয়া হোল প্রতিহতের। নির্দেশ দেয়া হোল যুবলীগ আর ছাত্রলীগকে। যেখানে জামায়াত শিবির পাবে সেখানে মারা হবে। পারলনা জামায়াত নির্ধারিত সমাবেশ করতে। ফলে পরদিন ৪ ডিসেম্বর সারাদেশে হরতাল। হরতালের সমর্থনে মিছিলে পুলিশ এবং আওয়ামী গুন্ডা- পাণ্ডা দিয়ে শহীদ করা হোল একজন ভাইকে। আহত এবং গ্রেফতার হলেন অসংখ্য ভাই। জনমের হরতাল হয়েছে, কিন্তু আসংখ্য ভাইয়ের রক্তের বিনিময়ে। সমগ্র জাতি স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া দিয়েছে হরতালে। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সবাই ঘোষণা দিয়ে পুলিশ নিয়ে মাঠে নেমেও পারানি হরতাল ঠেকাতে।
৯ তারিখ ছিল ১৮ দলের অবরোধ কর্মসূচী। প্রতিহত করার নামে মন্ত্রীরা তাদের মাস্তানদের রাস্তায় নামালেন। পরিণতি হোল একজন হিন্দুকে নিসংসভাবে হত্যা করা হোল। ইতিমধ্যে জনতার চাপে কয়েকজন হত্যাকারীকে গ্রেফতার করলেও তারা এর দায় দায়িত্ব রাষ্ট্রমন্ত্রীর উপরই চাপালেন। তার নির্দেশে উৎসাহিত হয়ে হত্যায় মেতে উঠে। হিন্দু বিশ্বজিতকে যেভাবে হত্যা করেছে তা ২৮ অক্টোবরকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। সে যখন বলেছিল আমি কোন দল করিনা, আমি হিন্দু, মাকে মেরনা। কে সুনে তার কথা। খুনিগুলো আরও বেশী বেপরোয়া হয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে তাকে হত্যা করা হোল, রাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে একজন মানুষকে খুনের দায় কে নেবে?
খুন হওয়া বিশ্বজিতের ভাই ইতিমধ্যে তার পদত্যাগ দাবি করেছেন। পত্রিকার পাতায় দেখলাম গত ৪৭ মাসে বাংলাদেশে হত্যা সংগঠিত হয়েছে ৭৬৫ জন। আহত হয়েছে ৬০ হাজার। গ্রেফতার করা হয়েছে ৪১ হাজার। গ্রেফতার ছিল সরকারের প্রধান হাতিয়ার। এর থেকে বুঝা যায় আইনশৃঙ্খলার কি অবস্থা ছিল আওয়ামী এ যুগে। কেন এমন হবে? প্রশ্ন আশাই স্বাভাবিক। এর একমাত্র কারণ হচ্ছে- মন্ত্রী যখন নিজেই সন্ত্রাসী হয় তখন ভাল কিছু আশা করা যায়না।
দেশ আজ চরম এক অনিশ্চয়তার দিকে এগুচ্ছে দেশ। এ অবস্থায় জাতির করনিয় কি? ম খা আলমগিরের মতো রাজাকার এবং সন্ত্রাসীকে অতীতের ইতিহাস স্মরণ করা দরকার। যাদেরকে দিয়ে দেশ অস্থিতিশীল করা হচ্ছে তারাই আগামি দিনে তাকে একই শাস্তিটা দেবে। তারা হয়তো প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। অতীতের রাষ্ট্রমন্ত্রীরা আজো জেলের গ্লানি টানছে।
বিষয়: রাজনীতি
১৪৫৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন