পশু বানানোর কারখানা

লিখেছেন লিখেছেন ফারুক ১৮ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৯:২৯:৪২ রাত



লিখার শিরোনামটি পড়ে পাঠক হয়তো ধারণা করবেন পশু বানানোর কারখানা আবার কখন তৈরি হোল? ধারণাটি কিন্তু একেবারে অমূলক হবেনা। যে দেশে মুক্তিযোদ্ধা বানানোর কারখানা থাকে সেদেশে পশু বানানোর কারখানা থাকাটা একেবারে অবাস্তব নয়। দুই প্রথিতযসা শিক্ষকের বক্তব্য শুনে আমিও হারিয়ে গেলাম চিন্তার রাজ্যে। কি হচ্ছে এসব বাংলাদেশ নামের ভূখণ্ডে?

প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে পাড়া গাঁয়ের ছোট্ট স্কুলটি পর্যন্ত আজ যেন মাস্তানদের গ্রামে পরিণত হয়ে গেলো। যে শিক্ষকরা ছিল মানুষ গড়ার কারিগর তারা যেন আজ পশু আর মাস্তান গড়ার কারিগর হয়ে গেলো। অনেকেই হয়তো আমার শেষ এ কথাটিতে দ্বিমত পোষণ করতে পারেন। তাদের মতে হয়তো সব শিক্ষক তা নয়, কিন্তু যে শিক্ষালয়ের সর্বচ্চ ব্যাক্তি মাস্তানদের নেতা হয়, সরকারের পেটোয়া বাহিনীর ভূমিকা পালিন করে সেখানে বাকীরা কি করতে পারে?

গণতান্ত্রিক দেশে দাবী আদায়ের আন্দোলনের অধিকার সবার আছে। কিন্তু সে আন্দোলন দমন করার জন্য যখন মাস্তান বাহিনী অথবা লাল ঘোড়া দাবড়ানো হয় তখন আমাদের ভাবতেই হয়। যখন দেখি শিক্ষকদের আন্দোলনে পুলিশ দিয়ে পেপার স্প্রে করিয়ে শিক্ষক হত্যা করা হয়, আবার এ অমানবিক দমননীতির পক্ষ্যে আওয়ামী রাষ্ট্রমন্ত্রী সাফাই গান তখন আমাদের ভাবতে কষ্ট হয়না কি হতে যাচ্ছে দেশে। যখন আমরা দেখি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি, প্রভিসির সামনে তারই শিক্ষকদের পিটানো হচ্ছে, আর তারা বসে বসে সরকারের এজেন্দা বাস্তবায়ন করছে তখন ঐ ভিসিদের শিক্ষক ভাবাটাই কষ্ট নয় কি?

আমাদের ছোটকালে আমরা দেখেছি কোন ছাত্র যদি সাইকেল চালিয়ে যায় আর দেখে তার শিক্ষক আসছে তখন সে ছাত্র সাইকেল থেকে নেমে হেঁটে শিক্ষককে অতিক্রম করে। এটাই আমাদের শিক্ষকরা আমাদের শিখিয়েছেন। কিন্তু আজ শিক্ষকরা তার ছাত্রকে কি শিখাচ্ছেন আর কি পাচ্ছেন? কয়দিন আগে কি দেখলাম আমরা? ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের চরমভাবে পেটাল ছাত্র নামের কিছু পশু। রাজশাহী, চিটাগাং, জাহাঙ্গীর নগরসহ অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানে একই ঘটনা ঘটলো। তাহলে কারা তাদের শিক্ষা দিচ্ছে আর কাদের তারা পিটাচ্ছে? আজ ভাবতে আমাদের লজ্জা হয়। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমনে সরকার মাস্তান লেলিয়ে দিচ্ছে, আর শিক্ষক আন্দোলন দমনে কিছু ভিসি নামের মাস্তান লেলিয়ে দিচ্ছে। আমাদের কষ্ট হয়, আমাদের সম্মানিত শিক্ষকদের নিয়ে এভাবে মন্তব্য করতে। সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদেরকে দিয়েই সরকারের এজেন্দা বাসবায়ন করছে।

আমাদের সম্মানিত শিক্ষকদের প্রতি আমাদের বিনীত অনুরধ নিজের মর্যাদা রক্ষার আন্দোলন করুণ। নিজেদের নয় শিক্ষক সমাজের মর্যাদা ফিরিয়ে আনার আন্দোলন করুণ। পশু তৈরি না করে মানুষ তৈরি করুণ।

রাস্তায় নেমে ফরিয়াদের কথা ছিলোনা আমার সম্মানিত শিক্ষকরা। দাবী আদায়ের আন্দোলনে মারা যাওয়ার কথা ছিলোনা মানুষ গড়ার কারিগররা। কিন্তু কেন আজ তা হচ্ছে?

বিষয়: বিবিধ

১২৭৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File