বর্তমান ও অতীত মা

লিখেছেন লিখেছেন সত্যের পথিক ০৭ মার্চ, ২০১৩, ০৭:১১:২৯ সকাল



মাহারা পুত্র নামাজান্তে ডাকে আল্লাহ্!

মাপ করো মোর মাকে,

সপে দিও তাকে জান্নাতে।

চোখের পানি কপোল বেয়ে মাটি ছুয়ে,

বুঝি উর্বর করে যায় হৃদয়াঙ্গন,

ভারি হয়ে যায় আকাশ, বাতাস, পরিমন্ডল।

ঝাপসা চোখমুছে চতুর্দিকে তাকিয়ে

দীর্ঘশ্বাসে রুমাল দিয়ে মুখ মুছে।

কত মানুষ যে সান্তনা দিল!

পরিবারবর্গ, প্রতিবেশি, আত্মীয়-স্বজন,

সেতো হেতুপূর্ণ নয়, হৃদয়ভরে নেবার মতো।

কেঁদে-কেটে এভাবেই চলে কতেকদিন।

তারপর হারিয়ে যায় চিরতরে,

সংসারের মায়ায় বিভ্রম কাটেনা পুত্রের

না থাকে হৃদয়ের মাঝে,

তারপর রুসুম হলো বৎসরে একবার।

এইতো সেদিন, ক'দিন হবে আবার

মা শুয়ে থাকতো ঘরের দাওয়ায়,

বয়সের ভারে আর কত, যদিও শুকিয়েছিল ঢের।

অপরিচ্ছন্ন বিছানায় খেলতো ছারপোকা,

মাঝে মাঝে আন্ধকারে তেলপোকা দিয়ে যেতো দেখা।

মশারা মনে করতো এবুঝি লুকো চুরির জাল।

অসুস্থ মা বদহজমে নষ্ট হয়ে বিছানা

সেকি রুঢ় চেহারা হতো পুত্র-বধুর।

রাঙা চোখ দেখে ভয় পেয়ে যেতো মা

ঘাবড়ে যেয়ে আরও নিরব হয়ে

হয়ে যেতো নিস্পাপ, মাসুম।

ছোট নাতিরা নাবুঝে একপা এগিয়ে

হয়ে যেতো সাথী মায়ের।

নীরবে সহে সহে সব হৃদয় মরিচাবৃত করে ফেলে পুত্র

যদিও কষ্ট পেতো প্রথমে।

দুর থেকে এসে কেঁদে যেতো কন্যা

মা ভাবতো, এই বুঝি সুদিন এলো,

হঠাৎ মায়ের ভাবনায় ছেদ পড়ে

এভাবেই পাড়ি জমান অনন্ত পরপারে।

এর আগের কথা হবেনা শেষ

কি মায়া-মমতা মায়ের অশেষ!

উদর হতে বিন্দু-বিন্দু মায়ায় জড়িয়ে

মা মহাসাগর গড়ে ভালবাসার।

পুত্রের মল-মূত্র মেখে, ভিজা কাপড়ে

কত রাত যে কেটেছে নাঘুমে!

তণ্দ্রা আসতেই চমকে উঠে মা,

খোজ নিতো সন্তানের, নাজানি কখন কষ্টে হয় নিপতিত।

নিজ হৃদয় ভরে নিতো

আদর মাখা চুমো দিয়ে।

এমনি করে পুত্র-মার হতে থাকে বড়

স্বপ্নের বীজ বুনে হৃদয় গহীনে

যবনিকা ঘটে যার চির-প্রস্থানে।

বিষয়: বিবিধ

১৬২৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File