সত্য কথন-১,২,৩,৪,৫

লিখেছেন লিখেছেন ফিদাত আলী সরকার ০৫ অক্টোবর, ২০১৭, ০৫:১৫:৪৭ বিকাল

সত্য কথন-১

আজ তোমাদের একটা সত্য কাহিনী বলবো। একটা মেয়ে ছিল। তার বাবা এক প্রবাসীর সাথে বিয়ে দেন। প্রবাসী বাংলাদেশে ফিরতে পারে না। কারণ সে সেখানে অবৈধভাবে বাস করে। তাদের মাঝে বিয়ে হয়েছিল ফোনের মাধ্যমে। এরপর সে মেয়ে জীবনে একজন ডাক্তার আসে। অনেক স্বপ্ন দেখায়। একসময় মেয়েটিকে বিয়ে করে। পরে জানতে পারে, ডাক্তারটা বিবাহিত। অনেক মেয়ের জীবন বিয়ে না করে নষ্ট করেছে। এই ডাক্তারের সাথে ওষুধ পরিবেশকরা তাকে সাহায্য করে। দশদিনের মাথায় মেয়েটি জেনে বাসায় ফিরে আসে। ডাক্তারটা একজন খুব খারাপ প্রকৃতির মানুষ ছিল। মেয়েটির নামে অনেক খারাপ কথা রটিয়ে দেয়। অনেক কষ্টে মেয়েটি এই জানোয়ার থেকে ছাড়া পায়। জীবন এগিয়ে যায়। এসব জানোয়ারদের বিচার হয় না। সে হয়তো আরো মেয়েদের জীবন নষ্ট করে। মেয়েদের বলছি, না জেনে কাউকে ভালবাসা উচিত নয়, বিয়ে দুরের কথা। এসব মিথ্যাবাদী ভদ্র মানুষদের বিচার হওয়া উচিত।

সত্য কথন-২

কম্পিউটার বিষয়ে মাস্টার্স পড়া। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার। দেখতেও সুন্দর। পড়াশুনার জন্য বিয়েটা একটু দেরি হয়ে যাচ্ছে। কে যেন তাকে মাথা দিল, তাবিজ করলে বিয়ে তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে। চাকুরি থেকে আয় করা প্রায় ৬০% টাকায় এসব কুফুরির পিছনে লাগালো। এক সময় তার চাকুরি চলে গেল। মাস্টার্স শেষ করতে পারলো না। যখনি কারো কাছ থেকে কোন টাকা পায়, আবার তাবিজ তুমার। মায়ের সাথে খারাপ ব্যবহার। ভাই বিয়ে করেছে, নতুন ভাবির সাথে খারাপ ব্যবহার। নতুন ভাবীকে বিষিয়ে তুলল। নোংরা অপবাদ দিল, ভাই-ভাবীর নামে। শেষে ঘর ছাড়া। ইসলামে তাবিজ নিষিদ্ধ। সরকারের উচিত, এসব তাবিজ আলাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। এই তাবিজ তুমার করতে করতে অনেক সংসার ভেঙ্গে যায়। এটা একটা নেশার মতো। অশিক্ষিত হোক আর শিক্ষিত হোক সবাই প্রায় এই নেশায় মত্ত। কারণ, তাদের মাঝে সঠিক আকিদা নেই। এইটুকু বিশ্বাসও নেই, আল্লাহু সব দেন আবার আল্লাহুই নেন। আল্লাহু সবাইকে সঠিক পথে চলার শক্তি যেন দেন।(আমিন)

সত্য কথন-৩

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে মাস্টার্সের প্রথম বর্ষের পরীক্ষা চলছে। আমি আমার বউকে নিয়ে পরীক্ষা হলে নিয়ে যাচ্ছি। ছয়তলার উপরে পরীক্ষা হল। রুমে দিকে যাচ্ছি, আর জানালা দিয়ে দেখছি। সবার হাঁতে নকল। ছোট ছোট কাগজ। আমি বা আমার বউ নকল করতে জানি না। তাছাড়া আমি তাকে বিয়ের পরেই বলে দিয়েছি, কোনরকম নকল করা যাবে না। আমি একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। ওখানে কেউ নকল করতে গেলে ধরা খেত। যেহেতু বিজ্ঞাপন করতে আসি নাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উহ্য রাখলাম। যখন পরীক্ষা দিয়ে আমার বউ এসে বলে সবাই নকল করেছে, নকল ধরেও অনেককে ছেড়ে দিয়েছে, তখন ফ্যালফ্যাল দিয়ে তার দিকে তাকিয়ে থাকি। জানি না ওর রেজাল্ট কেমন হবে, আমার আম্মাকে সারাদিন সেবা করে, সংসারে জন্য এতো খেটে, রাতে একটু পড়ার সুযোগ পেয়ে। আমরা

যারা নকল করতে বিবেকে লাগে, সৎ থাকতে চাই, নিজের যোগ্যতায় আগাতে চাই, তারা কি এসব চোর, বাটপাড়, নকলবাজদের সাথে পারবে? আর এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বা বোর্ডে নকল করার সুযোগ কেন দেয়? এতো অযোগ্য লোক কেন এসব জায়গায়? তারাও কি এরকম নকল করেই এসব পদে এসেছে? তাহলে আর বলার কিছুই নেই!

সত্য কথন-৪

কাল ডিয়াবাড়ি গিয়েছিলাম। রাস্তার অবস্থা দেখে কান্না পেয়ে গেছে। ঝাঁকি খেয়ে খেয়ে যখন মোহম্মদপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে শিয়া মসজিদ আসি তখন বুঝি আমাকে আর জিমে যেতে হবে না, চোরাদের চুরির কারণে পেটের ভাতের সাথে নাড়ি-ভুঁড়ি সব হজম হয়ে যাবে। ব্রিজগুলো যেভাবে ভেঙ্গে পড়ছে, ৭১ যুদ্ধেও বোধহয় এতো ব্রিজের ক্ষয়ক্ষতি হয় নাই। আগে আমরা চিন্তা করতাম, বিদেশ থেকে ভিক্ষা আসছে, সে টাকায় উন্নতি হয়। এখন কিন্তু সে পরিবেশ নাই। দেশ অন্যদেশ থেকে ঋণ নিচ্ছে, জনগণ ভোট না নিলেও, ভ্যাট ঠিকই নিচ্ছে। এসব টাকা যাচ্ছে কোথায়? রাস্তাঘাটে এতো কবর সরি গর্ত কার জন্য খোঁড়া হচ্ছে? দুঘণ্টা বৃষ্টি হলে ঢাকা ভেনাস হয়ে যায় কোন কবি সাহিত্যিকের জন্য? সরকারের চাকরদের এতো টাকা বেতন দিয়ে যাচ্ছি, তারা কি কাজ করে? আজকাল পত্রিকা পড়া মানুষ বন্ধ করে দিয়েছে কেন মানুষ? কারণ, সত্য আজ নির্বাসিত। সত্য আজ কারো বুকে নাই। সত্য কথন সত্যের আশায় কান্না করছে।

সত্য কথন-৫

আজকাল নতুন জিনিস শুরু হয়েছে। কেউ নিজেকে হানাফি বলছে, কেউ নিজেকে আহলে হাদিস বলছে। কেউ নিজেকে শুধু মুসলিম বলতে রাজি নয়। মাজার-পীরের ব্যবসা তো চালুই আছে। শিরকে আর বেদআতে তো দেশ ভরে গেছে। কোন কোন মসজিদের জোরে আমিন করলে বের করে দিচ্ছে। কোনটা সহি হাদিস, কোনটা বানানো হাদিস সে সম্পর্কে কোন ধারনাই নাই। তথাকথিত হুজুররা নিজেদের কথাই ঠিক মনে করে। সঠিক শিক্ষা না থাকা বা নিজেদের খেয়াল খুশি মতো যা খুশি বলা এদের চরিত্র হয়ে গেছে। তাও আজকাল অনেকে নিজে থেকে ইসলাম সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছে। অনেকে এটাও বুঝেছে সপ্তাহে একদিন মসজিদের যাওয়ার নাম ইসলাম না। সঠিক নামাজির সংখ্যা বাড়ছে। তবে এদের কে, কেউ কেউ বিভ্রান্ত করছে। এদের থেকে তৈরি হচ্ছে জঙ্গি। এর জন্য ইসলাম দায়ী নয়, দায়ী শয়তানের অনুসারিরা। সবচেয়ে বড় জিহাদ নিজেকে সংশোধন করা, যখন সেটা না করে অন্য কিছু করতে যায়, তখন সেটা জিহাদ হয় না, হয় শয়তানী। মুসলিমের উপর অত্যাচার হচ্ছে, আমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী ও রাসুল হজরত মুহাম্মদ(সাঃ) প্রথম থেকেই অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে। আল্লাহু কি তাকে সাথে সাথে তা প্রতিরোধ করতে বলেছেন? সময় দিয়েছেন, যাতে মুসলিম নিজেকে তৈরি করতে পারে সহি আকিদার মানুষ হিসাবে। আমাদের উচিত হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) সঠিকভাবে অনুসরণ করা। তিনি আমাদের আদর্শ। আল্লাহুর কাছে বারবার ক্ষমা চাওয়া আর সঠিক পথে যাওয়ার জন্য দোয়া করা। অনেক রকম ইসলামিক বই,লেকচার, ভিডিও আছে। এরমধ্যে অনেকগুলো যা বাংলাদেশে প্রচলিত আছে তার মধ্যে শিরক, বেদআতে ভড়া। আমাদের খুজতে হবে সঠিক জিনিস। আমাদের দেখতে হবে, আমরা যা পড়ছি বা দেখছি বা শুনছি তা কি কোরআন এবং সঠিক হাদিসের আলোকে নাকি? একজন বলল আর আমরা বিশ্বাস করে নিলাম, এসব হচ্ছে অশিক্ষিত মানুষের লক্ষণ। যাচাই করতে হবে। আল্লাহু যেন সকলকে সঠিক পথে চলার শক্তি যেন দেন।(আমিন)

বিষয়: বিবিধ

৯৩৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File