গল্পঃ তুমি

লিখেছেন লিখেছেন ফিদাত আলী সরকার ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৩:৪৬:৩২ দুপুর



রনি খুবই সাধারণ ছেলে। গ্রাম থেকে শহরে এসেছে। একটি মেসে থাকে। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে।পড়াশুনা করতে যে কারিকারি টাকা লাগে তা তার প্রবাসি ভাইয়ের কষ্টের টাকা। তার ভাই রুমি কাতারে কাজ করে। ওরা দুই ভাই।বাবা মারা গেছে যখন রনির দুই বছর। তাদের মা বুদ্ধিমতী হওয়াতে সংসার টিকিয়ে রেখেছিল।মা একবছর হল গত হয়েছেন। রুমি গ্রামের সব সম্পত্তি বিক্রি করে কাতারে চলে গেছে আর রনিকে ঢাকায় ভর্তি করে দিয়ে গেছে। রুমি ভালই ইনকাম করে। রনি মোটামুটি রাজার হালেই পড়াশুনা করে যাচ্ছে। যতদিন না সেই ঘটনা ঘটলো।

রনি দেখে তাদের ক্লাসের সবাই মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। কিন্তু তার কোন মোবাইল নাই। ছেলেরা তার কাছে তার মোবাইল নম্বর চায়।সে দিতে পারে না। ব্যাপারটা স্বাভাবিক হয়ে আসছিল।হঠাৎ অনামিকা নামে ক্লাসের সুন্দরী মেয়ে তার কাছে মোবাইল নম্বর চেয়ে বসলো তখন রনি বলল কালকে দিবে।রনি একটি সিম কিনে সেই নম্বরটি দিলো। কিন্তু মোবাইল কিভাবে কিনবে? কারণ রুমি যতই আয় করুক হিসাব মতই টাকা দিতো রনিকে।

- তোমার মোবাইল কি বন্ধ রাখো? অনামিকা জিজ্জাসা করলো।

- আমি আসলে বেশী ব্যবহার করি না।

- তুমি কি জানো আমি তোমার সাথে কত কথা বলতে চাই, কত কথা শুনতে চাই।

রনি টনক নড়ল। রনি ওর রুম মেট মুরাদ থেকে মোবাইল ধার নিল। কিন্তু বেশী দিন ব্যবহার করতে পারল না।কারণ মুরাদেরও মোবাইলে কথা বলার লোক আছে।

- এভাবে আর কত দিন।তারচে একটি মোবাইল কিনে ফেল।

- ভাইয়া তো খরচের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা দেয় না।

- এক কাজ কর তুই তোর ভাইকে বল তুই খুব অসুস্থ। হাজার চারেক টাকা পাঠিয়ে দিতে বল।

মুরাদের কথা শুনে রনি তাই করল।কিন্তু ফলাফল শুন্য।টাকার পরিবর্তে একটি চিঠি এল।

স্নেহের রনি,

তুমি মিথ্যা কথা বলা শিখে গেছো। আমি সাইমনকে জিজ্ঞাসা করেছি।সে তোমার সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছে। অসৎ সঙ্গ ছাড়ো।

ইতি

রুমি

রনির মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। সাইমন ভাইয়া একটি চিজ।গ্রামে থাকতে ছিল একটা গাইয়াভুত এখন ঢাকায় এসে সরকারী দলে নেতা হয়ে গেছে।তার আবার কর্মীবাহিনী আছে।

এখন আর অনামিকার সাথে কথা হয় না। অনামিকা জেনে গেছে রনি গ্রামের ছেলে। রনি ওর লেবেলের নয়। ইস থাকত যদি রনির একটি মোবাইল ফোন।

বিষয়: সাহিত্য

১২০৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File