কামরুজ্জামান - ঘুমন্তদের হৃদয়ে বারুদ ঢেলে দেয়া এক কালজ্বয়ী শহীদের নাম-২
লিখেছেন লিখেছেন প্রবাসী মজুমদার ২৮ এপ্রিল, ২০১৫, ০৭:৫০:৪৭ সন্ধ্যা
Click this link
- আসসালামু আলাইকুম মজুমদার ভাই।
- ওয়ালাইকুম সালাম।
- কেমন আছেন?
- ভাল। আপনি?
- আলহামদুলিল্লাহ।
- আচ্ছা মজুমদার ভাই। আপনাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করতে চাই। অনুগ্রহ করে বেয়াদবি মনে করবেন না। যদিও বিষয়টি একেবারেই একান্ত এবং খুব সেনসেটিভ।
- হাহা। এমন কি অপরাধ আমার দ্বারা সংগঠিত হল যে জিজ্ঞেস করতে খুব ভয় হচ্ছে। কিংবা একেবারে আমার ইজ্জতে লেগেে যাবে?
- না। বিষয়টি আপনার কাছে এমনটি মনে হলেও আমার কাছে কিন্তুু অন্যরকম।
রিয়াজ ভাই। দাম্মাম থাকে। কোম্পানীতে সুপারভাইজর। এক বছর হল জেদ্দা থেকে বদলী হয়েছে। আমার সাংস্কৃতিক গ্রুপের খুব ভাল একজন অভিনেতা। কাশেম ভাই, শহীদ, রিয়াজ, আলফূ হাসান, এদের সাথে ষ্টেজে অভিনয় করতে উঠলে দর্শক স্তব্ধ হয়ে যেতো। নিখুঁত অভিনয়ের এসব মুক্তমনা লোকগুলোকে নিয়ে রিহার্সাল কালীন সময়ের কোন সীমাবদ্ধতা থাকত না। রিহার্সাল তো নয়, যেন হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে যাবার এক অন্যরকম অবস্থা। দারুণ উতসাহ উদ্দীপনা আর আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে এতের সাথে মেতে থাকতাম।
আমি ওদের নেতৃত্বে থাকলেও অভিনয়ের মাধ্যমে ওদের হৃদয়ের গভীরেই সব সময় অবস্থান করতাম বলে মনে হত। এতে দায়িত্বশীল আর কর্মীর মাঝে দেয়ালটা একেবারেই উঠিয়ে দিয়েছিলাম।
অনেকদিন পর পুরোনো সংস্কৃতি মননের মজুমদার ভাই সম্পকে শোনা এমন অনাকাঙ্খিত কথাগুলো ও মানতে পারেনি বলেই লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে জানতে চেয়েছে।
- জানতে চাইলাম, আমার সম্পর্কে আপনি কি শুনেছেন, সেটুকু আগে বলুন। লজ্জার কিছু নেই। দ্বীনি ভাইয়ের মাঝে কোন সিক্রেসি নেই। একেবারে খোলা মেলা। নারী ঘটিত কোন কেলেংকারি শুনে থাকলেও সেটি জানার জন্য ও অধিকার দেয়া হল আপনাকে।
.....রিয়াজ ভাই বলতে লাগল, আপনাকে নাকি সংগঠন হতে বহিস্কার করেছে! কথাগুলো মুখ থেকে বের হতেই রিয়াজ আবার ও একেবারে অপ্রস্তুত হয়ে গেল।
- তারপর?
- এরপর আর ও দু'তিন জন সদস্য ভাইয়ের কাছে বিষয়টি নিশ্চিত হবার জন্য ফোন করেছিলাম। কিন্তু ওদের উত্তরটা ছিল খুবই অস্পষ্ট।
- কেমন?
- না। মানে, বিষয়টি এমনই। "মজুমদার ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন।" জানিনা, আপনি এমন কি মুরতাদ হয়ে গেলেন যে দোয়া করতে হবে?
রিয়াজের কথাগুলো শুনে আমি নিশ্চুপ। গীবত আর অস্পষ্ট ধারণা নিয়ে বসে থাকা এসব কাছের সদস্যগুলো কখন্ও আমার কাছে জানতে ও চায়নি এ বিষয়টি নিয়ে। আমি ও যেচে কাউকে বলতে যাইনি।
মনে পড়ল সেই চিরাচরিত বেধে দেয়া নিয়মের কথা,
"যারা আল্লাহর দ্বীন থেকে দূরে সরে যায়, তারা যেন ইসলামের রজ্জুকে গলা থেকে খূলে ফেলল......।"
এ আয়াতের ভূল বিশ্লেষণে আমি এখন মুরতাদ হয়ে গেছি। সমাজচ্যুত এক দ্বীন ত্যাগীর নাম। তাই সবার মুখে একই কথা, উনার জন্য দোয়া করবেন।
রিয়াজকে প্রশ্ন করলাম, আপনি জেদ্দা থাকাবস্থায় আমাকে অনেকের মত নেটের অবৈধ সীম বিক্রী করতে দেখেছেন?
- না।
- সামান্য লাভের জন্য ফারইষ্ট ইসলামীক লাইফ ইন্সু্রেন্সের হয়ে কর্মীদের পকেট থেকে টাকা নিতে দেখেছেন?
- না।
- হাউজিং করে......?
- না।
....অনেক ঘটনা আর অঘটন, চাপিয়ে দেয়া ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, সংগঠনের নিবেদিত ও নিরীহ কর্মীদের কাছে নেতৃত্বের আনুগত্যের সুযোগে সুবিধাভোগী এক ধরণের 'ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স" এর লোকদের দ্বারা গড়ে তোলা সিন্ডিকেট রাজনীতির বেড়াজালে পড়ে আমি একেবারেই বাকহীন হয়ে গেলাম। মনের অজান্তেই কল্পিত গ্রুপিং এর অন্তভুক্ত হয়ে গেলাম।
তৈল মর্দনে ওস্তাদ মুখ চেনা কতিপয় স্বার্থপরের অক্লান্ত পরিশ্রমে আমরা "হেতে-হিতি" নামের স্বামী স্ত্রী একবোরেই বাকরুদ্ধ হয়ে গেল। আগত কেন্দ্রীয় নেতার কাছে অভিযোগ করতে গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি থেকে হুমকি আসল, সিষ্টেম ভায়োলেশনের কারণে স্থানীয় সংগঠনের অ্যাকশনের শিকার হওয়ার নিশ্চিত সম্ভাবনা আছে।
......অসহ্য এসব অনিয়ম সহ্য করতে না পেরে সংগঠনের সদস্য আমার বউটা্ খুব অসুস্থ হয়ে গেল। ওর হাটের্র অসুস্থতায় রাত-বিরাতে এ প্রবাসের মাটিতে কত ডাক্তার আর হাসপালে যে দৌড়িয়েছি তার ইয়ত্তা নেই। অন্যদিকে পর্দার অন্তরালে আমার পেছনে চলতে থাকা কল্পিত অনেক আজগুবি তথ্য শুনে খুব কাছের লোকগুলো যেন যোজন যোজন দুরে সরে যেতে থাকল।
ভাবলাম, যাদের সাথে সীসা ঢালা প্রাচীর হয়ে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, নিজের আপন ভাইয়ের চেয়ে যাদেরকে খুব কাছের মানুষ মনে করি, তারা যদি সিন্ডিকেট রাজনীতির খপ্পরে পড়ে দুরে সরে যায়, এতে আমার কিই বা করার আছে।........আমার বলার কিছু ছিলনা। নাগো....
...যারা আমার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখে, ওরাও অনেকটা বহিষ্কৃতদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে "ও-এস-ডি"তে পদোন্নতি লাভ করেছে অনেক আগেই। সে কিসসা লিখতে মানা। লিখলে খবর আছে। আপনাদের ও অনেকেই নাক সিটকানোর সম্ভাবনা আছে। ভাববেন, মজুমদার ভাই.....। থাক।
আমার সম্পকে দু-কান ভারী করে দেয়া কেন্দ্রীয় নেতা সিদ্ধান্ত দিয়ে বিদায় নিয়েছেন। কঠিন এ সময়টিতে বিবেকের বিচারালয়ের কাঠগড়ায় বড়ই অসহায় হয়ে দাড়িয়ে আছি। একদিকে সংগঠনের সিন্ডিকেট গ্রুপের প্রচন্ড দাপটে মানসিক আর সামাজিকভাবে দারুণভাবে হেয় হয়ে গেলাম। কখন ও পদলোভী, আবার কখনও আওয়ামীলীগের কর্মী হিসেবে উপাধি দিতেও রুচিতে বাধেনি ৩০ বছরের এ মানুষটিকে। কি বিচিত্র সেই মানসিকতা।
স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটছি। রাত তিনটায় বাসায় ফিরে দেখি স্কুল পড়ুয়া বাচ্ছা দুটো না খেয়ে বসে আছে। মুখ বিবর্ন বাচ্ছা দুটো . হার্টের অসহ্য ব্যাথায় শংকিত মাকে দেখে ভূলে যায় ক্ষুধার কথা। অভিমানের সুরে মুখ থেকে বের হয়ে অাসেনা, মা আমরা এখনও কিছু খাইনি...। ওদের ক্ষুধানুভুতি বলার আগেই জানতে চায়, মাম্মি তুমি কেমন আছ? ডাক্তার তোমার সম্পকে কি বলেছে?
(চলবে)
বিষয়: বিবিধ
১৮৪২ বার পঠিত, ২৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সৎ পথের পথিকেরা কংকরময় পথ পাড়ি দিয়েই গন্তব্যে পৌছায়! আল্লাহ সহায় হোক সকলের!
ইতিহাসের হাত ধরে এসেছে মোদের
বিদ্রোহী এক ভাই
শাণিত কলম যোদ্ধার গুলির আওয়াজ
স্পষ্ট শুনতে পাই।
পোষ্টটির জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
সত্যের বিজয় অনিবার্য,
মিথ্যার বিণাশ অবশ্যম্ভাবী...
অনিয়ম-অবিচারের প্রতিবাদী কন্ঠ নিয়ে সত্যের মিছিলে টিকে থাকতে পারাটাই কাঙ্খিত সাফল্যের পথ!!
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ..
এইখানে তোর দাদীর কবর
ডালিম গাছের তলে
ত্রিশ বছর ঘূমিয়ে রেখেছিনু
দুই নয়নের জলে..।
ধন্যবাদ।
মরহুম মতিউর রহমান মল্লিকের গানটি আপনার জন্য হাদিয়া।
কেউ না করুক আমি করব কাজ
আল-কুরআনের আহবানে দ্বীন কায়েমর প্রয়োজনে
নতুন করে আবার আমি শপথ নিলাম আজ ।
আমি হতাশ হব না ভেঙ্গে পড়ব না
নিরাশ হব না ভয় ও করব না
ভেঙ্গে পড়ব না, ভয় ও করব না
দ্বীনের কাজে ব্যস্ত রব বরং সকাল সাজ ।
দিনের পরে রাত্রী যেমন আসে
তেমনি আবার রাতের পরে দিনের আলো হাসে
আমি তাইতো থামবনা বাধা মানবনা
মিছে কাদব না ব্যাথা সারব না
আশার প্রদীপ জ্বালিয় যাব নিত্য সবার মাঝ
কেউ না করুক আমি করব কাজ
কে খেলে খেলা আর কে খায় ঠেলা
মেলা বসাই মহান মশাই দেখছেন চুপি চুপি
সময় শেষে ধরবেন টুটি চাপি,
তখন তব প্রতিশোধের আগুন জাবে নিভি
জ্বলবে জাহান্নামের কালো অনল
অভিসাপের দহনে দহিবি অনন্তকাল,
মানুষ হত্যায় আজ মহানন্দ চোখে মুখে!
এ আনন্দ রহিবেনগো বেশিকাল,
সময় এলোবুঝি কাল বৈশেখি রুপে-
রমনার বটমূল উপড়াতে,
উড়িয়ে দিতে তব অহমিকায় গড়া-
বিত্বিহীন তাসের ঘর,
মজলুম প্রানগুলো তখন নিরবতায় দেখিবে-
যে খেলা খেলিবে উপর ওয়ালা,
অনল দহির অর্তনাদে মাবুদ মাওলার আরশ কাঁদে..
আরশের মালিক নিরবেই দেখে সব ,
নিবেন হিসেব কষে কষে প্রিয়বান্দার লাগি
ধ্বংস তোমায় নিবে বুকে অনলে দহিবার লাগি,
হে অভিসপ্ত হে সীমালঙ্গনের অদম পাপ...
অভিসাপের অনল বর্ষন চেয়ে দেখো-
উপলব্দির ভেতর থেকে একটু ভাবো...,
তোমার অতীত আজ করুন ইতিহাস !
তুমি বর্তমানের শুকনো পাতা -
কোন এক মূহ্বর্তে পিষে যাবে সময়ের পদতলে,
মর্মর শব্দে অস্তিত্ব্য বিলিন হবে
সঙ্গিহীন থাকিবে সঙ্গোপনে কিছুকাল,
সময় কাল হবে গিলে খেতে-
বদহজমে উগড়ে দিবে,
জাহান্নামের অতল গহীনে নিক্ষেপিত হবে-
অনন্তের তরে,
দোহাই ফেরাউনের উদহারন হইওনা-
শেষ বেলার অনুতাপ কখনো কাজে আসেনা,
সাদ্দাদ নমরুদের অহংকার ধূলোয় মিশে গিয়েছে
তুমি জানো তাই বিনিতো অনুরুদ হে অবোধ,
ফিরে এসো ফিরে এসো তাওহিদের ছায়াতলে
যেথা মজুলম ফিরে পায় হারানো সব,
ফিরে এসো তওবার হাতধরে-
বেশি দূর যেতে পারেনা-
সীমা লঙ্গনের পাগলা ঘোড়া।
শয়তানের শয়তানি কাজ,
মহারাজ ইবলিশ চালেন চাল
সবই অবশেষে হবে তারই কাল,
মহাকাল গ্রাসিবে তারে-তারই পাপ
মহাপাপ পাপির জাত সাপ,
ইনিয়ে বিনিয়ে নয়াচাল
বেসামাল কাজে কর্মে-আত্মীক ধর্মে,
কাহারে ধ্বংসিয়া কাহারে ধ্বংসিবে
কিলবিল পিপাসা তনুমনে,
মায়াজাল বিছায়ে ধূপছায়া তলে
ডাকিয়া হাকিয়া আনিতেছে কয়ে,
তোমারে খাওয়াবো অমৃত সুধা
চিরতরে তব মিটাবো ক্ষুদা,
মূচন করিবো তব আজন্ম পাপ
ধূলির ধরনী করিব পূণ্য ভূমি,
আমারই চাল মহামায়া জাল
আজ দেশ দেশান্তরে সমাদর করে,
আহামরি বড়াই করি আমি মহারাজ
পাপেই করি সব পূণ্যরে বিনাস,
করি ক্ষমতায় সর্বত্র বিরাজ
পাপেই মহানন্দ-
নেই সংকোচ্ কিংবা লাজ।
শয়তানের শয়তানি কাজ,
মহারাজ ইবলিশ চালেন চাল
সবই অবশেষে হবে তারই কাল,
মহাকাল গ্রাসিবে তারে-তারই পাপ
মহাপাপ পাপির জাত সাপ,
ইনিয়ে বিনিয়ে নয়াচাল
বেসামাল কাজে কর্মে-আত্মীক ধর্মে,
কাহারে ধ্বংসিয়া কাহারে ধ্বংসিবে
কিলবিল পিপাসা তনুমনে,
মায়াজাল বিছায়ে ধূপছায়া তলে
ডাকিয়া হাকিয়া আনিতেছে কয়ে,
তোমারে খাওয়াবো অমৃত সুধা
চিরতরে তব মিটাবো ক্ষুদা,
মূচন করিবো তব আজন্ম পাপ
ধূলির ধরনী করিব পূণ্য ভূমি,
আমারই চাল মহামায়া জাল
আজ দেশ দেশান্তরে সমাদর করে,
আহামরি বড়াই করি আমি মহারাজ
পাপেই করি সব পূণ্যরে বিনাস,
করি ক্ষমতায় সর্বত্র বিরাজ
পাপেই মহানন্দ-
নেই সংকোচ্ কিংবা লাজ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন