সাদা মনের খোঁজে
লিখেছেন লিখেছেন প্রবাসী মজুমদার ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০২:২৬:১০ দুপুর
প্রতিবাদী মিছিল থেকে খসে পড়া "সাদা মনের মানুষদের" জন্য উৎসর্গীকৃত এ লেখনি। এ সিরিজ লেখনিতে ব্যবহৃত ছদ্মনামের কোন চরিএ বৈশিষ্ট্য যদি কারো বাস্তব জীবনের সাথে মিলে যায়, তার জন্য আমি দায়ী নই।
ক্ষণ, কাল আর সময়ের বিবেচনায় বাকহীন কলমের প্রতিবাদী ভাষা মুখের ভাষা থেকে অধিক শাণিত। কালের গর্ভে রেখে যা্ওয়া কলমের ভাষা নীরব নিভৃতে পাঠকের হৃদয়ে দাগ কাটে। সত্য মিথ্যার দ্বন্ধে ঝড় তোলা প্রতিটি সত্যবাদী লিখাই সময়ের বিবর্তনে স্থান করে নেয় অবচেতন মনে। আর সেই অবচেতন মনের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলার মাধ্যমে আমার এ লেখনি যদি কারো চলার পথের পাথেয় হয়, তাতেই আমার কৃতিত্ব।
চোখে পড়া অনিয়মের পাহাড়সম যাতনাগুলো লিখার জন্য অনেকবার কলম ধরতে চেয়েছিলাম। মনের বাক বিতন্ডায় জয়ী হতে পারিনি বলে লিখতে গিয়েও রেখে দিয়েছি বার বার। আজ মন বলছে, না। অভিজ্ঞতালব্ধ যাতনা নিয়ে ঘূরে বেড়ানোর চেয়ে উগলে দেয়াই উত্তম। তাই আজ উগলে দিতে বসেছি সে সব জমানো যাতনাকে। পরিপক্কতার এ সন্ধিক্ষণে প্রসব করে দিতে চাই সবকিছু।
জীবন চলার পথে 'অন্তর চক্ষুর গোপন ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডি ্ও' থেকে তুলে ধরা অনিয়মগুলো প্রকাশ করা যেন প্রতিবাদী কলমের অনিবার্যদাবী। সে দাবী পাুরণেই আমার এ প্রয়াস।
আমি প্রতিবাদী মিছিলের একজন একনিষ্ঠ যাত্রী। প্রতিবাদ করার জন্যই সংগঠিত হয়েছি বার বার। মিছিলে হেটে চলেছি দীর্ঘপথ। গলা ফাটানো আ্ওয়াজ তুলেছি অসংখ্যবার। উজাড় করে দেয়া সময় আর অর্থের বিনিময়ে চেতনার বাস্তবায়নে মরিয়া হয়ে উঠেছি বার বার। পেছন থেকে দেয়া ধাক্কা সামলাতে না পেরে ছিটকে পড়েছিও অনেকবার। আবারও উঠে দাড়িয়েছি।
কমিউনিজম, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, প্রেমতন্ত্র, বিদায়তন্ত্র - এসব পোড় খা্ওয়া অভিজ্ঞতা অর্জনে জীবনের অনেক সময় পার করে দিলাম। অভিজ্ঞতালব্ধ জীবনের ভারে এখন অনেকটা পাথর। তবুও আশাহত বিপ্লবের মিছে স্বপ্ন এখনও তম্ময় হয়ে দেখি। কল্পনার উপর ভর করে এখনও বুনি হাজারো মিছে কাব্য।
বিপ্লব - একটি উশৃঙ্খল শব্দের নাম। এটি একজন মানুষকে শুধূ বিপ্লবী করেনা। বিপ্লবের নামে উশৃংখল করে তোলে একটি সমাজকে। জড়ো হ্ওয়া হাজারো প্রতিবাদী বিপ্লবীদের বিস্ফোরণে লন্ড ভন্ড করে দেয় তিল তিল করে গড়ে তোলা একটি প্রতিষ্ঠিত সমাজকে। ইতিহাসে এর ব্যর্থতার গ্লানিটাই বেশী।
জোশ এবং হুশকে ব্যালেন্স করে কাঙখিত মানের "সাদা মনের বিপ্লবী"র অনুপস্থিতিই বিপ্লবকে ত্বরাম্বিত করে। পিছিয়ে দেয় অনেক দুরে। এর জন্য দায়ী - লুকিয়ে থাকা মুষ্টিমেয় স্বার্থপর দক্ষ কিংবা অনভিজ্ঞ বিপ্লবী কর্মী।
একটি আদর্শ সংগঠনে একজন স্বার্থপর বিপ্লবী "উইপোকার মতই ভয়ংকর"। দুর থেকে দেখা ঈর্ষণীয় "সীসাঢালা প্রাচীরকে" অনায়াসে এরা খসে দিতে পারে বলেই যুগে যুগে অনেক সম্ভাবনাময়ী বিপ্লব্ও ব্যর্থতার গ্লানি দিয়ে রক্তাক্ত করেছে অগণিত জনপদকে ।
এদেরকে নিয়েই খুব সুন্দরভাবে বলেছিলেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, লেখক, সাংবাদিক জনাব নাজির আহমেদ। তার ভাষায় -
"অনেক ত্যাগ, তিতিক্ষায় অর্জিত বিজয়ের পর বিপ্লবের কোন একনিষ্ট কর্মীর যদি মৃত্যুপরবর্তী ঠিকানা হয় জাহান্নাম, তাহলে এর চেয়ে দুর্ভাগ্য আর কিছুই হতে পারে না। তাই বিপ্লবের প্রতিটি কর্মীকে আন্দোলনী জিন্দেগীতে নিজের কর্মের মাধ্যমে জান্নাত প্রাপ্তিটাকে বার বার নিশ্চিত করার অবিরাম প্রচেষ্টা অবশ্যই থাকতে হবে।"
বাস্তবতা যদি তাই হয়, তাহলে এ আন্দোলনের কোন বিপ্লবী নেতা/কর্মী স্বার্থপর হতে পারেনা। পারেনা সিন্ডিকেট রাজনীতির দরগাহ সাজিয়ে কাউকে বের করে দেয়ার রাস্তা উম্মুক্ত করে দিতে। বিজয় সেদিন অর্জিত হবে, যেদিন বিপ্লবের উল্লেখযোগ্য কর্মী প্রভুর রাহে বিলিয়ে দেয়া জীবনকে কর্মের মাধ্যমে মডেল হিসেবে পেশ করবে অধীনস্থদের কাছে। একজন সাদা মনের মানুষ হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করতে পারবে সমাজের কাছে।
(চলবে)
বিষয়: বিবিধ
১৯৮৩ বার পঠিত, ৬০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কেন? জালিমের হাতেই যখন মার খেতে হবে, বুলেটের আঘাতে বুক যখন ঝাঝড়াই হবে, হতে হবে যখন প্রিয়জনহারা, এতোসব অত্যাচার নিপীড়ণ যখন অবধারিত, তবে মনটাকে কেন কলুষিত করে রাখা?
কেন স্বার্থপর হওয়া, সিন্ডিকেট করে নিবেদিত কর্মীদের অপমান অপদস্থ করে আল্লাহর বিরাগভাজন হওয়া! অন্যদের থেকে যদি আমাদের আদর্শকে আলাদাই করে রাখতে চাই তাহলে কাজটা কেন অন্যদের মত করে উপরে দেখাতে হবে আমরা তাদের থেকে আলাদা।
আমরা কি ভাল কাজ করছি না কি ভাল কাজের ভান করে যাচ্ছি, তা মানুষ না বুঝুক একজনতো বুঝেন, তার কাছে শেষ ধরা খাবার আগে সতর্ক হয়ে যাওয়া নিশ্চয় বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
''ধুমপান থেকে বিরত থাকুন , এটা শাস্তিযোগ্য/দন্ডনীয় অপরাধ''
দেখা যায় যে এটা করে বেশী বাসের চালকেরাই । ট্রেনে চলতে দেখা যায় যে খাবারের বগিতে দেদারসে সিগারেট ফুঁকছে ট্রেনের কর্মচারীরাই । প্রতিবাদ করলে ধমক খেতে হয় ।
খুব কম লোকই আসে প্রতিবাদে যোগ দিতে ।
যারা ধুমপান করে না তাদের জন্য সিগারেটের ধোঁয়া খুব সেনসিটিভ , কিছুক্ষণের মধ্যেই মাথা ব্যথা শুরু হয়ে যায় । তাছাড়া আশে পাশে শিশু ও মহিলারাও থাকে । আইনও করা আছে কিন্তু একু এটার তাতক্ষনিক প্রয়োগে এগিয়ে আসে না । আশে পাশে কোন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী থাকলে তারা তা না দেখার ভান করে । কোন সময়ে এরা নিজেরাই সিগারেট খায় পাবলিক প্লেসে।
************************************************************
সিটিং গাড়ি নাম লিখা থাকলেও মূলত এটা সিটিং থাকে না । হয়ে যায় লোকালেরও লোকাল । কিন্তু ভাড়া ঠিকই সিটিংয়ের হিসেবে নেয় ।
হরতাল , অবরোধে রাস্তা ফাঁকা থাকলেও তারা জায়গায় জায়গায় থেকে যাত্রী ওঠায় , অযথা সময় নষ্ট করে। রাস্তা ফাঁকার ফলে তাড়াতাড়ি বাসায় পৌছানোর সুযোগ যাত্রীরা কখনই পায় না.
**********************************************************
লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন বেশ অনেকক্ষন ধরে ট্রেনের টিকিট নেবার জন্য । নিয়ম মেনেই সবাই টিকিট কাটছে । এর মধ্যে একজন মহিলা এসে লাইনে না দাঁড়িয়ে ব্রেক করে টিকিট কাটতে গেল । অথচ তার আগে অনেকে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে ধৈর্য্য ধরে । মহিলা হিসেবে অগ্রাধিকার পেয়ে সে ১৫-২০ জন পুরুষকে ডিঙ্গিয়ে গেল । তাড়া তো মহিলাদের চেয়ে পুরুষদেরই বেশী ।
**************************************************************
স্টেডিয়ামে কনসার্ট হচ্ছে দুপুরের পর থেকেই । আযান শুরু হলে স্বাভাবিক নিয়মে তা সাময়িক বন্ধ করে দেওয়া উচিত । উল্টো আযানই বন্ধ করে কনসার্ট চালু রাখা হয়।
**************************************************************
ধন্যবাদ।
সাদা মনের নেতা সাদা মনের মানুষের অনেক অভাব ভাই তারপর ও আছে ভাই অনেক আছেন।
ভাইয়া আপনার লিখা অনেক দিন পড়ে তৃপ্তি পেলাম প্রেরণা পেলাম ।
সময়ুপযুগী লেখার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
ধন্যবাদ আপনাকে অবেদনময়ী সুন্দর মন্তব্য রেখে যাবার জন্য। চেষ্টা করবো নিয়মিত হতে। তাই দায়বদ্ধতাটা ধরে রাখার জন্যই জোর করে সিরিজ লিখায় হাত দিলাম। তবে নিয়মিত নয়। সপ্তাহে দুদিন চলবে ইনশাল্লাহ।
------------------------------
তোমরা যারা স্বপ্ন দেখ বদলে দেবার এই সমাজ
নিজের দেহে সবার আগে কায়েম কর খোদার রাজ॥
সাড়ে তিন হাত দেহ-ই যদি না চলে খোদার ইচ্ছায়
বদলে যাবে কেমনে সমাজ তোমার আমার প্রচেষ্টায়!?
হাজী গাজী অলি ভরা সোনার এই দেশ,
নেই শুধু রেখে যাওয়া কোরানের তেজ।
গজব আলীর এই দেশে যেন সব গাধা
বজ্রের তান্ডবে মাঙ্গে, প্রভু মোরে বাঁচা।
শৃগালের গর্তে হাঁকে, সিংহের গর্জন,
জান্নাতের খোঁজে করে অরণ্য রোদন।
যথার্থ বলেছেন, সহমত
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
ভাবী ভালো ?
অনেক শোনা 'সাদা মনের মানুষ' আসলে যথার্থ ভাবে উপলব্ধিই করতে পারি না আমরা!
লুকানো স্বার্থবাদীর ভালো মানুষির স্বল্প রুপ কেই কখনো এই প্রকারে নিয়ে আসি! ফলশ্রুতিতে আশাহতের বেদনা কুড়ে কুড়ে খায়!
অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিষয়ে আপনার নান্দনিক উপস্হাপনা আমাদের সঠিক দিশা পেতে সহায়ক হবে নিশ্চিতই ইনশা আল্লাহ!
আপনার লেখনী মন্তব্য করতেও হীনমন্যতায় ভোগি-না জানি সৌন্দর্য্য হানী ঘটাই!!
দোয়ার দরখাস্ত রইল!জাযাকাল্লাহু খাইরান!!
এ কেমন সিন্ডিকেটের রাজনীতি আজ,
ভন্ড বাবার দরগাহে দ্যাখ কলকীর আওয়াজ
আহা!
দ্যাখ নামাজীর আজ মুখে বড় দুস্টের হাসি
মিষ্টি বিলায় শূনে আপন ভাইয়ের ফাসী।
ধন্যবাদ। আপনার জন্য কবিতার লাইন চারটি উতসর্গ করে গেলাম।
জাযাকুমুল্লাহু খাইরান ফিদ্ দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ হে শ্রদ্ধেয়....
হিংসা-বিদ্বেষহীন মনটাই একমাত্র সাদা মন।আর এটা দুর্লভ!
জাগবি কবে রাগবি কবে
মুষ্টাঘাতে ভাঙ্গবি দ্বার,
বিস্ফোরণে ফাটবি কবে
ভাঙ্গতে ঐ কাঁচের পাহাড়?
বিদ্রোহে তু্ই জ্বলবি কবে
ছাড়বি কবে আপন ঘর,
সিংহ হয়ে লড়বি কবে
বাঁধবি কবে দ্বীনের ঘর?
কলুষিত মন নিয়ে দ্বীনের ঘর বাধা অলীক কল্পনা। ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য।
ফজরে পাক কোরআন,
সে ঘরে বাজে তবলা ঘুঙ্গুর
মুখে ঠাকুরের গান।
মক্তবে আজি শিশুর কণ্ঠে
শুনি না প্রভুর গান,
দ্বীন হীন এখন গায়ের লোকেরা
ভ্রাতৃত্ববোধ হীন প্রাণ।
ফজরে পাক কোরআন,
সে ঘরে বাজে তবলা ঘুঙ্গুর
মুখে ঠাকুরের গান।
মক্তবে আজি শিশুর কণ্ঠে
শুনি না প্রভুর গান,
দ্বীন হীন এখন গায়ের লোকেরা
ভ্রাতৃত্ববোধ হীন প্রাণ।
যে জাতির ঘুম ভাঙ্গিত পড়ে
ফজরে পাক কোরআন,
সে ঘরে বাজে তবলা ঘুঙ্গুর
মুখে ঠাকুরের গান।
সাদা মনের মানুষদের রক্তাক্ত জামা দেখে,
অনিয়মের ঘোড়াটাও আর চায়না রক্তস্রোতের-
উল্টো হাটতে,
সাদা মনের মানুষ গুলোর সাদা আহ্বানকে পারেনা উপেক্ষা করতে,
লেখক তার সাদা মনের তারনায় বার বার কলম হাতে ঝাপিয়ে পরে...এটি শান্ত বিপ্লবের আশায়,
অতীতের সাদা মনগুলো অগণীত মজুমদার রেখে গেছেন,
যারা সাদা মনের মিছিলের অগ্র সৈনিক,
যাদের প্রচেষ্টায় একদিন অনিয়মের নোংরা গলিও-
স্বেত শুভ্র হবে...
মন্তব্য কিভাবে করবো জানিনা এখন মন খুব বিষন্ন থাবে...
চারিদিকে কাক শুকুনের চিৎকারে...
সাদা মনের মানুষ গুলো আজ অনিয়মের কারাগারে,
সময়ের গতি জেনো ফুরায় না রাতের অন্ধকার যেনো কাটেনা...
তবে বুকে স্বপ্ন এই সাদা মনের লেখকরাও এই শান্তির বিপ্লবে বিসাল অবদান রাখবে...সাকালের সূর্য্যটা তাদের কলম থেকে নির্গত রক্ত স্রোতের উপর দিয়ে আসবে....। আন্তরিক ধন্যবাদ মজুমদার ভাই।
অনিয়মের ঘোড়াটা দুর্বল হয়ে আসছে
সাদা মনের মানুষদের রক্তাক্ত জামা দেখে,
অনিয়মের ঘোড়াটাও আর চায়না
রক্তস্রোতের-
উল্টো হাটতে...
কবির এ প্রত্যাশা সত্য হোক
চালিয়ে যান.............।
.........
মন্তব্য করতে লগইন করুন