আমার প্রিয় বাবা।
লিখেছেন লিখেছেন প্রবাসী মজুমদার ১৩ মে, ২০১৪, ১০:৩৭:৫৯ সকাল
...না। আজ বাবার মনটা বেশী ভাল নেই। খুবই খারাপ। আকস্মিক হতাশায় নুইয়ে পড়া বাবাকে কোন এক অস্থিরতায় তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। গতকাল ভারাক্রান্ত মন নিয়েই অফিস থেকে দেরিতে ফিরেছে। বাসায় এসেও অন্যদিনের মত কারো সাথে বেশী কথা বলেনি। সকালে রেখে যাওয়া পুরোনো ভাত-তরকারি খেয়েই ঘুমিয়ে পড়েছে। জানতে চাওয়া হলে ম্যাচের লোকদেরকে বলেছে, শরীর খারাপ।
মিছে ঘুমের ভান করে শুয়ে থাকা বাবা জেগে জেগেই পুরো রাতটা কেটে দিয়েছে। অনেক চেষ্টা করেও ঘুমকে চোখের পাতার স্পর্শে আনতে পারেনি। অবশেষে মসজিদের মিনার থেকে ভেসে আসা আজানের শব্দে উঠে পড়েছে। নামাজ পড়ে ঘুমের সাথে আর সমঝোতার চেষ্টা করা হয়নি। করেও লাভ নেই।
আজ বাকহীন অবুঝ মনের দহন সব নিয়মকে ভেঙ্গে দিয়েছে। নিয়মের মধ্য নিয়ে চলতে অভ্যস্থ বাবা অনিয়ম দিয়েই আজকের দিনটা শুরু করেছে। অন্যদিনের মত সকালে পাকশাক শেষে গোসল করা, গরম ভাত খেয়ে দুপুরের জন্য খাবার প্রস্তুত করা , বিছানা-বালিশ গুছানো....এসবের কোন কিছুই আজ করা হয়নি। গতকাল সন্ধ্যায় দেয়ালের সাথে ঝুলিয়ে রাখা পুরোনো জামা কাপড় পরেই বের হয়ে পড়েছে অফিসের উদ্দেশ্য। ভাবতে ভাবতে কখন যে পাঁচ মিনিটের পায়ে হাঁটার রাস্তা শেষ হয়ে গেল টেরই পায়নি। পুরো পথ জুড়ে অন্য এক মনস্কতার উপর ভর করেই অফিসে এসে পৌছেছে।
সকাল ৭টা। অফিসের দরজা এখনও বন্ধ। খুলবে আটটায়। কর্তব্যরত দারোয়ান নিয়মের বাহিরে অফিস দরজা খুলে দেবে না। খোলার প্রয়োজন ও নেই। কারণ বাবা আজ অফিসের কাজে তাড়া তাড়ি আসেনি। এসেছে অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজে, যেটি বাবাকে রাতে ঘুমোতে দেয়নি।
অফিসের সামনের ওয়ান ওয়ে রাস্তাটা সোজা কমার্স কলেজের দিকে চলে গিয়েছে। বামে ব্যস্ততম মুল সড়কটা চট্রগ্রাম পোর্ট থেকে দেওয়ান হাঁট হয়ে ষ্টেশনের নাকের ডগার উপর দিয়ে নিউ মার্কেট ধরেছে। দুই রাস্তার কোনায় দাঁড়িয়ে থাকা অফিসটা এক নজরে সবার চোখে পড়ে। বাবা এ অফিসেরই একজন কর্মচারী। নাম - জনতা ব্যাংক। আগ্রাবাদ শাখা। চট্রগ্রাম।
কমার্স কলেজের দিকে যাওয়া রাস্তার উপর ফলকহীন দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে আছে বাবা। দশ হাতের মধ্যে পায়চারী করছে বার বার। আর গভীর মনোযোগ দিয়ে দেখছে রাস্তায় চলা প্রতিটি মানুষকে। তাদের গতি বিধিকে। মুখের অবয়বকে।
সকাল ৮টা। দারোয়ান ব্যাংকের দরজা খুলেছে মাত্র। হঠাৎ অনেক দূরের একজন পথচারীর ভারাক্রান্ত পথচলা বাবার প্রতীক্ষিত দৃষ্টিকে কেড়ে নিল। লোকটি ধীর পায়ে এগিয়ে আসছে ব্যাংকের দিকে। অন্যমনস্ক হয়ে চলা এ মানুষটির দৃষ্টির ক্যামেরা থেকে রাস্তার ডানে বায়ের কোন কিছুই বাদ যাচ্ছিল না। কোন কিছু প্রাপ্তির আশায় দুপাশ দিয়ে ঘেষে যাওয়া সবকিছুই যেন চোখের ক্যামেরায় ধারণ করে চলছে। বাবা মনে মনে ভাবছে, "আমি বুঝি এ লোকটির জন্যই সকাল থেকে প্রতীক্ষার প্রহর গুণছি"।
কাছে আসতেই বাবা লোকটির দিকে এগিয়ে গেল। সালাম দিয়ে জিজ্ঞেস করল,
- ভাই। কি হয়েছে আপনার? আপনি এত হতাশ হয়ে কি খুঁজছেন?
- ছল ছল চোখে বাবার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকল। তারপর আড়ষ্ট কণ্ঠে বলল, ভাই! আমার সব শেষ!
- শেষ মানে! বলুনতো দেখি কি হয়েছে!
- আহত হৃদয়ে বলতে শুরু করল, গতকাল এ রাস্তা দিয়েই রিক্সা করে যাচ্ছিলাম। বিকেল ৫টা। হাত ভর্তি বাজারের ব্যাগ। সাথে ব্যাগ ভর্তি অনেকগুলো টাকাও। দ্রুত চলা রিক্সাটা ব্যাংকের সামনে দিয়ে মোড় নিতেই কিছুটা নড়ে গেলাম। বামহাতে নিজেকে শক্ত করে ধরে রাখার চেষ্টা করলেও ব্যাগের উপর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ ছিলনা। তবুও মনে হয়েছে সব কিছুই ঠিকঠাক আছে। কিন্তু বাসায় গিয়ে দেখলাম, টাকার ব্যাগটি সাথে আর নেই। রাস্তায় পড়ে গিয়েছে। ছুটে এলাম এখানে। কিন্তু অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া গেলনা। ভাবলাম, দেখি, হয়তোবা কোন হৃদয়বান সৎ ব্যাক্তির হাতে পড়ে টাকাটা ফিরে পেতেও পারি।
- আপনার ব্যাগের রং ক্যামন ছিল? বাবা জানতে চাইলেন।
- সাদা।
- টাকাটা কোথা থেকে এনেছেন?
- ব্যাংক থেকে।
- কত টাকা ছিল?
- বিশ হাজার টাকা।
- ভেতরে কত টাকার নোট ছিল খেয়াল আছে?
- হ্যা।
- বলুন তো।
.....হ্যাঁ। গতকাল থেকে বাবাকে তাড়িয়ে বেড়ানো অস্থিরতা এতক্ষণে কমতে শুরু করেছে। লোকটির হাত ধরে বাবা বলল,
- আসুন। আপনি আমার সাথে আসুন। স্যারের সাথে কথা বলে দেখি। গতকাল ব্যাংকের কোন এক ব্যক্তি এখানে বিশ হাজার টাকা পেয়েছিল। দেখি সেটি আপনার টাকা কিনা। লোকটিকে নিয়ে বাবা সোজা ব্যাংকের ম্যানেজারের চেম্বারে চলে গেলে। ঢুকতেই স্যার জানতে চাইলেন,
- কি ব্যাপার? আসার সময় আপনাকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম। মনে হল, কারো অপেক্ষায় ছিলেন?
- জ্যীঁ স্যার। আমার সাথে আসা এ আগন্তক মানুষটির অপেক্ষায় ছিলাম।
- উনি কে? স্যার জানতে চাইলেন।
..বড় বিপদে পড়া একজন অপরিচিত মানুষ। আর সে বিপদকে সমাধান করার জন্যই আপনার কাছে নিয়ে এসেছি।
- কেমন?
স্যার। উনি গতকাল বিশ হাজার টাকা ভর্তি ব্যাগ হারিয়ে ফেলেছেন। বেচারা নিশ্চিত করেই বলছে, ব্যাংকের সামনে দিয়ে যাবার সময়ই টাকাটা পড়ে গিয়েছে।
- কি বলেন? এতগুলো টাকা হারিয়ে গেল!
- জ্যী স্যার।
- তাহলে আমি কি করবো?
- না স্যার। আপনাকে কিছুই করতে হবেনা। আপনি শুধুমাত্র সমাধান করে দেবেন। আমি গতকাল অফিস শেষে বের হতেই রাস্তার উপর একটা বেগ চোখে পড়ল। সময়টি ছিল বিকেল ৫টা। ব্যাগটি হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলাম। কিন্তু না। কাউকে পেলাম না। অবশেষে ব্যাংকের ভেতরে এসে গুনে দেখি বিশ হাজার টাকা। ব্যাগটা অফিসে রেখেই আমি বাসায় চলে যাই। আজ ভোর ৭টায় এসে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। অপেক্ষা - নিশ্চয় কেউ না কেউ টাকার খোঁজে এ রাস্তায় আসবে। অবশেষে উনাকে পেলাম। ভাবছি, টাকাটা আপনি নিজে গুনে উনার কাছে হস্তান্তর করুণ।
অবাক বিস্ময়ে ম্যানেজার বাবার দিকে তাকিয়ে আছে। ১৯৬৮ সালের ঘটনা এটি। তখন এক পয়সায় বুট-বাদাম পাওয়া যেত। চালের কেজি ছিল পঞ্চাশ পয়সা থেকে এক টাকা। ঐ সময়টাতে বিশ হাজার মানেই অনেক কিছু।
বাবা কিছুক্ষণ পর বেগ ভর্তি টাকা এনে ম্যানেজারের সামনে রাখলেন। গুনে লোকটার হাতে তুলে দিলেন। ব্যাগ থেকে দুহাজার টাকা বের করে খুশি মনে বাবাকে দিতেই সরাসরি নাকচ করে দিলেন। বললেন, এ টাকা আমার নয়। এটি আপনার টাকা। এটি আপনাকে ফেরত দেয়া ছিল একজন মানুষ হিসেবে আমার নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। আপনাকে টাকাটা বুঝিয়ে দিতে পেরেছি, এতেই আমার আনন্দ.....।
ম্যানেজার সহ লোকটি অনেক চেষ্টা করেও বাবাকে টাকা দিতে পারেনি। আবেগ আপ্লুত ম্যানেজারের বুকটা ভরে গেল। আহ। বাবা ব্যাংকের সামান্য বেতনের একজন কর্মচারী। অথচ পথে পাওয়া এতগুলো টাকার লোভ তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। .... বাবার অবিশ্বাস্য হিমালয় সম সততার দৃষ্টান্তে ম্যানেজারের দুচোখ থেকে অশ্রু গড়ালো। স্যার টাকার স্বত্বাধিকারী লোকটিকে নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে পড়লেন। ব্যাংকে কর্মরত সব কর্মচারীদের দৃষ্টি আকর্ষন করলেন। তারপর বললেন,
আমাদের সাথেই কর্মরত একজন অজানা সহযোদ্ধাকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিতে এসেছি। পদবীর দিক থেকে আপনাদের সমতুল্য না হলেও তার বিশ্বাসের ভিতের কাছে আমরা সবাই হার মানতে বাধ্য হয়েছি। অবাক হয়েছি এ না চেনা কাছের মানুষটির এত বড় উদারতা দেখে। যে লোকটি বিশটি হাজার টাকা দিয়ে রাতারাতি ধনী হয়ে যেতে পারতো, সেই মানুষটিই টাকা হারানের বেদনায় মুহ্যমান মানুষটিকে ধরে এনে এতগুলো টাকা বুঝিয়ে দেয়ার দৃস্টান্ত অনেকটা কল্প কাহিনীর মত। আর তিনি হলেন আমাদের এ অফিসের পিয়ন হিসেবে কর্মরত, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ফেরত অকুতভয় সৈনিক, সততায় শ্রেষ্ঠ স্বাক্ষরকারী - সবার পরিচিত, জনাব চানঁ মিয়া মজুমদার। আমার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটিকে টাকা ফেরত দিয়ে তিনি আজ যে সততার পরিচয় দিলেন, তা ব্যাংকের ইতিহাসে চির স্মরনীয় হয়ে থাকবে।
......অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের উদ্দেশ্য দেয়া বক্তৃতা শুনে সবাই অন্য এক চান মিয়াকে আবিস্কার করল। বাবার আত্মজীবনীর স্মৃতিচারণ মুলক এসব দৃষ্টান্তের কথা আজও মনে পড়লে মনটা ভরে যায়। নিজে খুব গর্বিত বোধ করি। ভাবি, আর্তনাদ আর হাহাকারে দিশেহারা জাতির এ দুর্দিনে তোমার মত হিমালয় সম বিশ্বাসের বাবা চরিত্রের মানুষগুলোর বড়ই প্রয়োজন।
------------------------------------------------------------------
১৯৭১ সাল। স্কুলের গণ্ডিতে পা রেখেছি মাত্র। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই বেজে উঠল যুদ্ধের দামামা । বজ্র গতিতে ধেয়ে আসল অনাকাঙ্খিত যুদ্ধ। চারিদিকে গোলাবারুদ, মর্টার সেল আর মেশিনগান থেকে বের হয়ে আসা ঠেট ঠেট শব্দে আতংকিত হয়ে পড়ল জনপদ। আকাশ থেকে যুদ্ধ বিমানের উগলে দেয়া বোমার বিকট শব্দে জেগে উঠা মানুষগুলো প্রাণে বেঁচে থাকার জন্য ঘূম চোখে পালিয়ে বেড়ানোর হিড়িক। যুদ্ধকালীন সময়ে এ ছিল নিত্য দিনের ঘটনা।
ঘটে যাওয়া নয় মাসের সেই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের আংশিক লোমহর্ষক দৃশ্য দর্শকের গ্যালারী থেকে বিস্ময় দৃষ্টিতে দেখার সুযোগ হয়েছিল। সৌভাগ্য হয়েছিল ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ফেরত আমার প্রিয় বাবার ভেতরে লুকিয়ে থাকা অন্য এক মানবীয় 'সৈনিক বাবাকে' দেখার।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার সাথে সাথেই চট্রগ্রাম থেকে পায়ে হেঁটে বাবা বাড়ীতে চলে আসলেন। দীর্ঘ পথ হেটে আসায় পা দুটো ফুলে গেল। দু' সপ্তাহ দাঁড়াতে পারেননি। তারপর আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে উঠলেই শুরু হল যুদ্ধের অনিশ্চিত জীবন থেতে বেঁচে থাকার প্রস্তুতি।
বায়ান্নটি পরিবার নিয়ে গড়ে উঠা আমাদের বাড়ীর মানুষদের একতা ছিল অন্যরকম। আর যুদ্ধ কালীন সময়ে এদের নেতৃত্বে ছিল আমার বাবা। যুদ্ধ শুরুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই বাড়ীর উঠোনে, পেছনে অনেকগুলো ব্যাংকার বানিয়ে ফেলেছেন। সবাইকে বুঝিয়ে দিয়েছেন এ কঠিন মুহূর্তে কি করে ক্রলিং কাটতে হয়, মুহূর্তেই লীন হয়ে যেতে হয় ব্যাংকার কিংবা অন্ধকারের মাঝে। শিখিয়ে দিলেন, শত্রুপক্ষের আক্রমন হতে বেঁচে থাকার জন্য শুঁকনো খাবার ও প্রয়োজনীয় দ্রব্য সম্বলিত কাপড়ের পোটলাটা কে কাঁধে নিয়ে কিভাবে ভাগতে হয়। শেখালেন, জীবনের কঠিন মুহুর্তে রণক্ষেত্রে কি করে কলাগাছের চাল দিয়ে লবন সহ প্রয়োজনীয় জিনিষ বানানো যায়।
যুদ্ধকালীন প্রতিটি মুহূর্তে সবাই বাবার মুখের একটি ডাকের অপেক্ষায় থাকত। বিপদ আসতেই ঘরের সামনে ঝুলিয়ে রাখা পোটলা কে কাঁধে নিয়ে উঠোনে দাঁড়িয়ে জোরে একটা অশনি সংকেত দিতেই সবাই জড়ো হয়ে যেত। বাবার পেছনে পেছনে সবাই পালিয়ে বেড়াতাম। ডান হাতে আমি, বাম হাতে মায়ের হাত। পেছনে সেঝ আর মেঝ ভাই। মাঝে বড় আর ছোট আপা। বড় ভাই মু্ক্তি যোদ্ধা হয়ে ফেরারী আসামী।
যুদ্ধের সময় অনেক আত্মীয় স্বজনের বাড়ী ঘর পাঞ্জাবীরা পুড়ে দেয়ায় ওরা আমাদের বাড়ীতে এসে উঠেছে। সেই নয়টি মাস বাবার নেতৃত্বে থাকা এতগুলো মানুষের বিশাল পরিবারেরর মাঝে আন্তরিকতা আর আতিথেয়তা দেখলে আজও অবাক হই। আজকের বাস্তবতায় সেই মানুষগুলোই বিভক্ত হয়ে নিজেদেরকে হত্যা করা নেশায় মেতে উঠতে দেখে ভাবি, এটিই কি সেই নয় মাসের যুদ্ধের প্রাপ্তি!
১৯৭১ সালের নয় মাসের যুদ্ধে আমাদের নিজস্ব বলতে কিছুই ছিলনা। ধান চাল সহ সবকিছু উজাড় করে দিয়ে শেয়ার করলেন বাস্তব ভিটা মাটি ছেড়ে আসা লোক গুলিকে। চারিদিকে লতা-পাতাসহ ভাতের নিঃসৃত পানিও নিত্য খাদ্য তালিকায় যু্ক্ত হয়ে গেল।
যুদ্ধ শেষে বাবা আবারও যোগ দিলেন চাকুরীতে। শুরু হলো অন্য এক দুর্ভিক্ষ। যুদ্ধের দুর্ভিক্ষ থেকে বাচঁলে ও ৭৪ এর ক্ষুধার এ দুর্ভিক্ষে অনেক লোককে প্রাণ হারাতে হয়েছে। বাবা প্রতি বৃহস্পতিবার চট্রগ্রাম থেকে ছুটে আসতেন।
কোন এক শুক্রবার সকালে পাশের বাসা হতে কান্নার শব্দ ভেসে আসতেই বাবা ছুটে গেলেন। সাত বছরের চাচাত ভাই বমি করতে করতে লম্বা হয়ে শুয়ে গেল। দুদিনের অভুক্ত চাচাত ভাই ক্ষুধা সহ্য করতে না পেরে সবার অগোচরে পাকের ঘরে পড়ে থাকা পুরোনো ভাতের মাড় খেয়ে ফেলল। বেতনের টাকা নিয়ে বাড়ীতে আসা বাবা সেদিন চাচাত ভাইকে বাঁচাতে গিয়ে পুরো টাকাটাই খরচ করে ফেলল। চাচীদের অর্থনৈতিক দৈন্যতায় আর ফিরে চাওয়া হয়নি সে টাকাগুলো।
উদার মনের বাবারা ছিল চার ভাইয়ের মধ্যে সবার বড়। সৈনিক জীবনে আয় করা বাবার টাকায় সংসার চললেও অন্যদের আয় দিয়ে জায়গা জমি কেনার সিদ্ধান্ত হল। কিন্তু সর্বশেষে ভিক্ষার ঝুলিটা হাতে ধরিয়ে দিয়ে সবাই বাবাকে ঠেলে দিল এক অনিশ্চয়তার দিকে। ভাগ হয়ে যাওয়া সংসারে বাবা নিঃস্ব।
এতটুকু ধৈর্য্য সহ্য করার ক্ষমতা ছিল বলেই হয়তোবা সেদিন বাবা রাস্তায় পাওয়া বিশ হাজার টাকা ফিরিয়ে দিতে পেরেছিল। সময়ের বিবর্তনে পরিস্থিতি পাল্টালেও স্বার্থের অন্ধত্বতায় ভাগ হয়ে যাওয়া চাচাদের সন্তানগুলো আমাদের মত কলেজের বিশ্ববিদ্যালয়ের বারান্দায় যাওয়া আর সম্ভব হয়নি। সবাইকে আগলে রাখা বাবা আজ নিজেই ভাগ্য বিড়ম্বনার শিকার।
৭৪ এর দুর্ভিক্ষের কোন এক বিকেলে বাবা অসুস্থ হয়ে চট্রগ্রাম থেকে বাড়ীতে ফিরলেন। দ্রুত স্বাস্থ্যের অবনতি দেখে ছুটে গেলাম অনেক বড় ডাক্তারের কাছে। প্রিয় বাবাকে বাঁচাতে ঘরের টিন বিক্রী করে আমরা কুড়ো ঘরের বাসিন্দা হয়ে গেলাম। কিন্তু তবুও অপেক্ষমান মৃত্যু থেকে বাবাকে আর বাঁচানো যায়নি।
১৯৭৫ সাল। ১৫ই আগষ্ট। সকাল দশটা। বাবা সবাইকে ইশারা দিয়ে কাছে ডাকলেন। মায়ের হাতে হাত রাখলেন। বললেন, আমার সন্তানগুলো কে ভিক্ষা করে হলেও বিদ্যান বানাবে। শিক্ষার সাথে আপোসহীন বাবা ফিস ফিস করে কানে আরও কিছু কথা বললেন। চোখ থেকে নিঃসৃত জলের করুণ মোহমায়া দিয়ে বড় ভাইয়ের কাধে অসমাপ্ত দায়িত্ব তুলে দিয়ে শেষ বিদায় জানালেন। সবার ছোট ছেলেকে কাছে টেনে নিয়ে কপালে চুমু খেলেন। ...তারপর নিঃশ্বাস ঘন হয়ে আসল। "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু...রাসুলুল্লাহ" শব্দগুলো স্পষ্টভাবে বাবার মুখে উচ্চারিত হলেও চোখের পাতা দুটো খোলা রেখেই পাড়ি জমালেন অজানার দেশে। .....এভাবেই আর এক নতুন জীবন যুদ্ধের মুখোমুখি হয়ে বেঁচে থাকার জন্য শেষ সাহস দিয়ে চিরতরে "না ফেরার দেশে" চলে গেলেন "আমার প্রিয় বাবা"। ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন....।
বাবা আর নেই। কিন্তু তার রেখে যাওয়া স্মৃতি বিজড়িত ত্যাগ, ভালবাসা, চিরভাস্বর কীর্তি যেন জীবন চলার পথে প্রতিটি সন্তানের জন্য অনেক বড় পাথেয়। জীবন সংগ্রামের কঠিন মুহূর্তে বাবার সে সব শিক্ষাগুলো আলোর মশাল হয়ে কাজ করে। ছায়া হয়ে বাঁচিয়ে দেয় প্রতিটি অনিশ্চিত মুহূর্ত থেকে।
পেছনে ফেলে আসা জীবনে অর্জিত প্রতিটি ছোট বড় সাফল্যর ষ্টেশনে দাঁড়িয়েই মনে হয়েছে, বাবা, তুমি সত্যিই এক আলোর মিনার। বোধ বিশ্বাসে তুমি হিমালয়ের চেয়েও উঁচু। অহংকারের শ্রেষ্ঠ স্তম্ভ। তুমি অজেয়। কালোত্তীর্ণদের অন্যতম। তুমি আমার জন্য যুগের শ্রেষ্ঠ "জীবন্ত কিং বদন্তি"। তাইতো মনের অজান্তেই হৃদয় থেকে তোমার জন্য উচ্চারিত হয়, "হে আল্লাহ! আমার প্রিয় বাবাকে দান কর - জান্নাতের শ্রেষ্ঠ স্থান ।"
বিষয়: Contest_father
২১৯৭ বার পঠিত, ৬০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনাকে ধন্যবাদ।
ভীষন গরমে কাতরানো মাুনুষের কবিতাটিই বা কম কিসে?
গরম গিয়ে উঠছে এবার চরমে,
কি যে কষ্ট বলতেছি না শরমে।
রাত বরোটায় কারেন্ট মামা পালালো,
হায়রে মরণ, কি জ্বালা যে জ্বালালো।
লাফিয়ে গিয়ে ছাদের ওপর হাঁটলাম,
ঘণ্টাখানেক হায়হুতাশে কাটলাম।
কারেন্ট এলে দেৌড়ে গেলাম বাসাতে,
আর ক'টা দিন বেঁচে থাকার আশাতে!
বাবারা চিরকালই অবহেলিত থাকে ।
আর শেখ হাসিনার অবদানে প্রতিবছর ১৫ই আগস্ট আপনাদেরকে স্মরন করিয়ে দেয় বাবার কথা!
এরকম আরো কিছু শব্দচয়ন করেছেন যা আমার এবং আমাদের জন্য বড়ই উপকারী।
কেউ বলেছেন আপনি তিনের মধ্যে থাকবেন। আমার মূল্যায়নটা অন্য জায়গায়।
অনুভুতি প্রকাশ করা আর সেই সাথে পাঠককে চরিত্রের ভিতরে নিয়ে যাওয়া আলাদা বিষয়।
বাবা সবার আছে। সবার বাবা সবার কাছে দুনিয়া সেরা।
বাবাকে বাবার মত করে প্রকাশ করা এবং সেরকম বাবা হওয়া দুটি ভিন্ন বিষয়।
আপনার বাবার শেষ বিদায়টা যেমন হয়েছে - ঠিক এমন বিদায় যেন আমার আপনার হয়। ঐ রকম চরিত্র প্রয়োজন,উচিত।
আপনার লেখার প্রসংসা না করে বলবো - অন্যরকম ভালো লেগেছে।
আপনাকে মোবারকবাদ।
আমি বলতে চাচ্ছিলাম আপনি পত্রিকায় নিয়মিত লিখতে পারতেন অন্যান্য উন্নতমানের লেখকদের মত আর সেই লিখা দেশের জন্য সমাজের জন্য উপকারী হত।
বাবা নিয়ে লিখা সফল হয়েছে মনে হয় প্রথম হয়ে যেতে পারেন।
আল্লাহ আপনার বাবাকে জান্নাতুল ফিরদাউস নসীব করেন! আমিন।
আপনার মরহুম জান্নাতবাসী পিতার সততার কাহিনী পড়তে গিয়ে আমার জীবনে দেখা আরেকটি ঘটনার কথা মনে পড়ে গেল। ২০০১ সালের ঘটনা। বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরীতে যোগ দেয়ার কয়েক মাস পরের ঘটনা। চট্টগ্রাম কলেজের হোস্টেল গেইটের বিপরীতে পার্সিভেলহীলে আমরা কয়েকজন ছাত্র এবং সদ্য চাকরিতে যোগ দেয়া কয়েকজন সমমনা বন্ধু মিলে একটি বাসাতে ম্যাচ করে থাকতাম। আমাদের বাসায় মধ্য বয়স্ক "ললিতার মা" নামে একজন বুয়া রান্না করে খাওয়াতেন আমাদেরকে। তাকে আমরা সবাই চাচী বলে ডাকতাম। ললিতার মা'র দু'মেয়ে ছিল। বড় মেয়ের নাম ললিতা এবং ছোট মেয়ের নাম ববিতা। তার কোন ছেলে সন্তান ছিল না। চাচী আপন সন্তানের মতই মাতৃত্বের দরদ নিয়ে আমাদের জন্য রান্না বান্ন করতেন। হঠাৎ একদিন চাচী দুপুরে রান্নার জন্য বাসায় আসার সময় একটি ব্রীফকেস নিয়ে আসলেন। মিনি সাইজের ব্রীফকেস লক করা থাকলেও এক পাশ দিয়ে দেখা যাচ্ছে ভিতরে কি ধরনের জিনিস রয়েছে। সম্ভবত কোন মোটর সাইকেল আরোহীর পেছন থেকে পড়ে যাওয়ার কারনে পিচঢালা রাস্তায় ঘষা লেগে ব্রীফকেসের এক কোনায় সামান্য ফাক হয়ে গেছে। ম্যাচে সবার সিনিয়র ছিলেন জোবাইয়ের ভাই। বর্তমানে তিনি একটি বিএড কলেজের শিক্ষিক। ঐ সময়ে ম্যাচে আমি, জোবাইয়ের ভাই, আমান ভাই, নুর মুহাম্মদ তোয়াহা ভাই উপস্থিত ছিলাম। চাচী ব্রীফকেস আমাদের সবার সামনে রেখে বললেন- বাবারা! আমি এখানে আসার সময় হোস্টেল গেটের সামনে রাস্তায় এই ব্রীফকেসটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পেয়েছি। অনেক্ষণ অপেক্ষার পরেও এটির মালিক না পাওয়াতে এখানে নিয়ে আসলাম। সম্ভব হলে তোমরা এটির মালিককে খুজে পাওয়ার চেষ্টা করো। ম্যাচে উপস্থিত সবাই সিদ্ধান্ত নিলাম ব্রীফকেস খুলে আগে সেখানে কি রয়েছে দেখতে হবে। তার পর গুরুত্ব বুঝে আমরা এটির মালিককে খুজে বের করার চেষ্টা করবো। জোবাইয়ের ভাইয়ের নেতৃত্বে আমরা সেটির তালা ভেঙ্গে খুলে দেখলাম ওখানে সর্বমোট আড়াই লক্ষ টাকার সবগুলো পাঁচশত টাকার বান্ডিল। চাচী এতোগুলো টাকা দেখে ব্রীফকেসের মালিকের জন্য আফসোস করতে লাগলেন। রাস্তা থেকে ব্রীফকেসটি কুড়িয়ে আনার কারণে নিজেকে অপরাধী ভাবতে শুরু করলেন। আমরাও খুব চিন্তায় পড়ে গেলাম কি করা যায়! কিভাবে ব্রীফকেসের পকৃত মালিককে খুজে পাওয়া যেতে পারে?
আমরা চাচিকে জিজ্ঞাসা করলাম এসব টাকা থেকে তার কোন চাহিদা আছে কিনা। টাকার প্রতি তার কোন মোহ নেই। বরং পকৃত মালিকের জন্য চাচী খুব হয়রান ও পেরেশান হয়ে গেলেন। আমরা চাচীর মনোভাবের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে মালিকের খুজে বের হয়ে গেলাম। যে স্থান থেকে ব্রীফকেস কুড়িয়ে এনেছে সেখানেই আমরা সবাই দাড়িয়ে রইলাম সন্দেহজনক কাউকে লক্ষ্য করা যায় কিনা। একজন মোটর সাইকেল আরোহী বার বার শুধু রাউন্ড দিচ্ছে স্লো মোশনে গাড়ি চালিয়ে। তার চোখে মুখে হতাশার চাপ। রাস্তার দু'পাশে তীক্ষ্ম নজর দিয়ে চোখের ক্যামেরায় স্কেনিং করছে। হোস্টেল গেটের অপজিটে পার্সিভেলহীলের সামনে আমরা তাকে হাতের ইশারায় থামালাম। জিজ্ঞাসা করলাম এভাবে মোটরবাইক নিয়ে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করার কারণ কি। লোকটি কান্নাজড়িত কন্ঠে টাকাসহ হারানো ব্রীফকেসটির কথা বললেন। লোকটিকে আমরা বাসায় নিয়ে গেলাম। তার বর্ণনা এবং আমাদের বিভিন্ন জাস্টিফিকেশনমূলক প্রশ্নের সন্তোসজনক উত্তর পাওয়াতে টাকা এবং ব্রীফকেস তাকে ফেরত দিয়ে অনুরোধ করলাম যার উসিলা এবং সততার কারণে হারানো ধন তিনি ফেরত পেলেন সেই চাচীকে কিছু সাহায্যে করার জন্য। তাৎক্ষনিকভাবে লোকটি তার সীমাবদ্ধতা এবং অপ্রস্তুত থাকার কারণে অপরগতা প্রকাশ করে আমাদের মোবাইল নাম্বার নিয়ে পরে যোগাযোগ করে চাচীকে তিনি উপযুক্ত বকশিশ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিদায় নিলেন। লোকটি আমাদের কাছ থেকে বিধায় নেওয়ার এক সপ্তাহ পরেও যোগাযোগ না করার কারণে আমরাই তার কাছে ফোন করলে অত্যন্ত অভদ্র ও চরম অশালিন ভাষায় গালিগালাজ করে মোবাইল ফোন কেটে দিলেন। আমাদের বুয়া যাকে আমরা চাচী বলে ডাকতাম তিনি ২০০৬ সালে ইন্তেকাল করেন। সম্ভবত লোকটি এখনো বেচে আছে। হয়তো এসব অন্ন বস্ত্র বাসস্থানহীন চিন্নমূল চাচীদেরকে দুনিয়াবী কষ্টের জীবনের বিনিময়ে আখিরাতের জীবনকে প্রশান্তিময় করে দিবেন মহান আল্লাহ তায়ালা । কিন্তু যারা বেয়াড়া, উপকারের মর্যাদা বুঝার প্রয়োজন মনে করেন না, দুনিয়াতে শুধু নিজের সুখটা নিয়ে ভাবেন তাদের জন্য অনন্ত জীবনের পরকাল কেমন হতে পারে?
ধন্যবাদ প্রেরণা ও শিক্ষামুলক মন্তব্য রেখে যাবার জন্য।
মাটির লাঠিকেও ধন্যবাদ।
আপনি আসলেই একজন মহা ভাগ্যবান ব্যক্তি বলতে হবে এমন একজন আদর্শ ত্যাগী পিতার যোগ্য সন্তান হতে পেরেছেন। আপনার পিতাকে জান্নাতবাসী হিসেবে আল্লাহর মেহমান বানিয়ে নিক।
ধন্যবাদ আপনার চেতনাময় মন্তব্যর জন্য।
"রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বাইয়ানী সাগীরা।"
আপনি নিঃসন্দেহে একজন গর্বিত পিতার গর্বিত সন্তান৷ আপনাদের জানাই স্যালুট৷ আপনার আব্বার জন্য রইল অফুরন্ত দোওয়া৷
ইশ্, এমন একটা কাহিনী যদি আমারও থাকতো পাঠকদের কাছে বলার মতো!
আল্লাহ উনাকে জান্নাতের উচ্চ স্তরে স্থান দিবেন, এই কামনা ও দোয়া করছি।
আর আহমদ মুসার মন্তব্য-এর ঘটনাটাও আমাদের জন্য শিক্ষনীয় ও আমল করার মতো।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আপনার আব্বুকে জান্নাতুল ফেরদাউস নসীব করুন।
বাবা কে নিয়ে লিখেছেন...বলে কথা...
আপনার মহান বাবাকে আল্লাহ বেহেশতে নসীব করুন।
আমার বাবা মোটামুটি বড় পজিশনেই সরকারী কর্মকর্তা ছিলেন। মাসের শুরুতে মোটা অংকের বেতন ঘরে ঢুকলেও কিন্তু সারাটা জীবন আমরা আম্মাকে কেবল হিসাবের টানাটানিতেই দেখেছি। কখনো অভিমানও হতো খুব। সবাই তো আমাদের অনেক গরীব ভাবে! এত জ্ঞাতী গোষ্ঠী টানার কি দরকার! কিন্তু বেলা শেষে আব্বা যখন বুঝিয়ে দিত যে এটা হলো পরকালীন ফিক্স ডিপোজিট তখন একটু সান্তনা খুজে নিতাম। আজ আপনার বাবার মাঝেও এই চরিত্রটির খোঁজ পেয়ে মনে হচ্ছে নাহ, কেবল পরকালীন ফিক্স ডিপোজিটই নয় ইহকালের এই অমাবস্যা আক্রান্ত বর্তমানটাকে বাচিঁয়ে রাখার জন্যও এইসব বাতিদানগুলোর প্রয়োজন ছিল..আছে।
ভাবছিলাম বাবাকে নিয়ে লিখবোনা। প্রথমত ব্যস্ত। দ্বিতীয়ত মুড ছিলনা। তৃতীয়ত মন ভরে লিখতে গেলে পাঠকদের ধৈর্যচ্যুতি ঘটবে্ তাই অবশেষে কেটে ছেটে দিয়েছি। আর বাবার স্মৃতির কিছুটা হলেও প্রকাশ করার সুযোগ পেলাম বলে ব্লগ কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন