"শাহবাগ মেসেকার" হতে পারে জামায়াত নিষিদ্ধের হাতিয়ার। অংশগ্রহণকারীদের জন্য অশনি সংকেত।
লিখেছেন লিখেছেন প্রবাসী মজুমদার ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৩:৪৬:২৩ দুপুর
পৃথিবীর ক্ষমতালোভী সব স্বৈরাচারের চরিত্র এক ও অভিন্ন। কর্মে তারতম্য থাকলেও লক্ষ্য ও দৃস্টিভঙ্গী এক। পৃথিবীতে ইতিহাসের সব রক্তাক্ত দলীল এদের অপকর্মের বাস্তবচিত্র। এসব হত্যাকান্ডকে ক্ষনিকের জন্য দেশ ও জাতির স্বার্থে চিত্রায়িত করলেও সময়ের বিবর্তনে আসল তথ্য বের হয়ে আসে। কিন্তু তখন পম্চাদপদ জাতির আফসোস করা ছাড়া আর কোন গত্যান্তর থাকেনা।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামায়াতে ইসলামী একটা বিরাট ফ্যাক্টর। আজকের বাস্তবতায় জামায়াত শিবিরের অপ্রতিরোধ্য আন্দোলনের কারণে দিশেহারা আওয়ামীলীগ মরিয়া হয়ে উঠেছে। ক্ষমতার সময় সীমা ফুরিয়ে আসার দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই হিংস্র হয়ে উঠছে। ধর্মনিরপেক্ষতার নামে গণতন্ত্রের ছদ্মাবরনে লুকিয়ে এসব নেতৃত্ব একটি জাতির জন্য অকল্যাণ বৈ কিছ্ই আনতে পারেনা।
এ প্রজম্ন ১৯৭৪-৭৫ সালের দুঃশাসন দেখেনি। খন্ডিত ইতিহাসে বিভক্ত জাতির এ নতুন প্রজম্ন উনচল্লিশ বছর আগে অভিনীতি সে রুদ্ধশ্বাসের দিনগুলো দেখানোর কোন অনুপম পুর্ণ দৈঘ্য ভিডিও চিত্রও কোন আর্কাইভে রাখতে পারেনি। এটিকে ধারণ করে রাখার অপরাধে জহির রায়হান চির জনমের জন্য বিদায় নিতে হয়েছে দুনিয়া থেকে। আজকের বাস্তবতায় সেই দু:শাসনটির পুনরাবৃত্তি কিংবা মঞ্চায়ন সময়ের দাবী। একটি অতীত সরকারের বাস্তবতা ২০১৩ সালে এসে জীবন্ত অভিনয়ের মাধ্যমে দেখা খুব কষ্টকর হলেও এমনটি হওয়াই যেন বাঞ্চনীয়। সে দাবীর পুর্নদৈঘ্য ছায়াছবিটি রাজপথের সকল প্রেক্ষাগৃহে মঞ্চায়ন দেখে বাঙ্গালী জাতি বুঝতে শূরু করেছে সেই হারিয়ে যাওয়া অতীতকে।
আজকের আওয়ামীলীগ সরকার বরং ১৯৭৪-৭৫ কে ছাড়িয়ে গেছে। ডিজিটাল পরিবর্তের কারণেই এ আমুল পরিবর্তন। ২০২১ সাল পর্যন্ত থাকার পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামা আওয়ামীলীগ সরকার ইতিমধ্যে কিছু গুরুত্বপুর্ন কাজ সেরে ফেলেছে। লক্ষ্য পৌছার জন্য প্রতিবন্ধকতার মুল কাজটি ক্ষমতা আসার শূরুতেই সাফল্যর সাথে শেষ করতে পেরেছে। আর তা হল - দেশ ও জাতি রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরী কতগুলো সুর্যসন্তানকে আপন দেশেই পিলখানা ট্রাজেডির মাধ্যমে জীবন্ত কবরস্থ করা। বাকীদের পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শেষ করার কাজ ও প্রায় শেষের দিকে।
রাজনৈতিক ভাবে চিরশত্রু ও আপোষহীন জামায়াত নিয়ে সরকার এখন দারুন শংকিত। এ শংকাটি থেকে মুক্তির জন্য পুলিশ বিডিআর, কোট আদালত, ট্রাইবুনালসহ সব কিছুই মনের মাধুরী দিয়ে নিলর্জের মত সাজিয়েছে বিগত তিনটি বছর ধরে। প্রতিটি ঘরে ঘরে চাকুরী দেয়ার নামে মুলত ছাত্রলীগের ক্যাডারদের সব প্রশাসনিক কাজে সেট করে দিয়েছে। সংবাদমাধ্যম, মিডিয়াসহ সব জায়গায় নিজেদের প্রযোজনমত টিভি চ্যানেল অনুমোদন দিয়েছে। আজ বিরোধী দলের শান্তিপুর্ন হরতালে পুলিশের এ্যাকশান, ট্রাইবুনালে বিচারের প্রক্রিয়া, মিডিয়ায় প্রপাগান্ডার ধরন, ছাত্রলীগের নগ্ন হামলা, রাজপথে জীবন্ত মানুষকে কুপিয়ে হ্যতা এসব গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশমাত্র।
এখন বাকী থাকল মুল জামায়াতকে নিষিদ্ধ করণ। এ নিষিদ্ধ করার কাজটি ও খুব সহজ। তবে একটু সময়ের দরকার। তাই রাজাকার নিধণের নামে শুধুমাত্র জামায়াতের নেতাগুলোকে ফাসী দেয়ার জন্য তাড়াহুড়ো করে ট্রাইবুনাল বানানো হল। নিজেদের ইচ্ছে মত শোনা কথার উপর ভিত্তি করে জেরা পুর্ব স্বাক্ষীকে অভিনয় করিয়ে উপস্থাপন করার মাধ্যমে দর্শক বিহীন এ নাটকের মঞ্চায়নও দ্রুত এগিয়ে চলেছে।
মুসলমানদের মাঝে লুকিয়ে থাকা ইয়াহুদী ও মুসলিম বিদ্ধেষী এসব নেতা আর সরকারগুলো মিথ্যার প্রলেপ দিয়েই দেশে দেশে ইসলামী আন্দোলনকে কবর দেয়ার ব্যর্থ প্রচেষ্টা করেছে্ যুগে যুগে। উদাহরন স্বরুপ
মিশর : হাসান আল্ বান্নার নেতৃত্বাধীন মিশরের ইখওয়ানুল মুসলিমুনের মহা সম্মেলনে জামাল নাসের সরকারের কিছু সি আইডি ইখওয়ানের সদস্য পরিচয়ে ডুকে বোমা ফাটায়। পুলিশ তাদেরকে আটক করলে গণমাধ্যমে নিজেদেরকে ইখওয়ানের সদস্য পরিচয় দিল। বলল, হাসান আল বান্না আর সাইয়েদ কুতুবের নির্দেশে এমনটি করেছি। গণমাধ্যম,বিচার ব্যবস্থায় সাজানো মঞ্চে পুরো জাতিকে বোকা বানিয়ে ফাসীর কাষ্টে ঝুলিয়ে দিল যুগের শ্রেস্ঠ ইসলামী চিন্তাবিদ হাসান আল বান্না আর সাইয়েদ কুতুব সহা শত শত কর্মীকে। ইমাম আবু হানিফা, শাফেয়ী হাম্বেলীসহ সব সত্যবাদীরা সেই সময়কার সরকার কর্তৃক ফাসী দন্ড বা নির্যাতন থেকে মক্তি পায়নি।
আল জেরিয়াতেও ইসলামীক সালভেনশন ফ্রন্ট ২০০১ সালে ৯০% ভোট পেয়েও পাম্চাত্যদের সহযোগীতায় আর্মি সরকারের তান্ডবলীলায় - নিবাচিত ইসলামী দলের লোকগুলো হয়ে গেল সন্ত্রাসী। পুরো মুসলিম জাতিগুলো নিরব দর্শকের মত চেয়ে থাকল সে ইসলামের বিজয়ের সুর্যকে ডুবিয়ে দেয়ার করুন অধ্যয়।
শাহবাগ হতে পারে জামায়াত নিষিদ্ধের হাতিয়ার। অংশগ্রহকারীদের জন্য অশনি সংকেত:
ক্ষমতার লড়াইয়ে আওয়ামীলী সবই পারে। বামপন্থী দলগুলোর সাথে মোর্চা একটি বাড়তি পাওয়া। বামপন্থীরা সব সময় দেশে দেশে হত্যাকান্ডের মাধ্যমেই ক্ষমতায় আসতে সিদ্ধহস্ত। শাহবাগে আজ তরুন প্রজম্মকে ডেকে এনে যেভাবে রাজাকারের ফাসীর নামে আন্দোলনে জড়ো করা হচ্ছে, বিচার প্রক্রিয়াকে উপেক্ষা করে দেশের শীর্ষ আলেমদের ফাসীর জন্য দাবী তোলা হচ্ছে, চিত্রায়িত করা হচ্ছে আলেম নামেই খারাপ, আমার ভয় হয়, আমার ভয় হয়, আমার ভয় হয় (আল্লাহ রক্ষা করুন এ জাতিকে), আওয়ামীলীগ, বামপন্থী কিংবা 'র' এর কোন এজেন্ট 'শাহবাগে' কোন একটা বড় ধরনের তান্ডব ঘটিয়ে বসতে পারে। জামায়াতের নেতাদের ফাসী কিংবা নিষিদ্ধ করার এ কাজটি উড়িয়ে দেয়ার মত নয়। এ ধরনের একটি সম্ভাবনাময়ী ঘটনা ঘটে গেলে জাতি জানুক আর নাই জানুক, বিগত তিন বছরের আওয়ামীলীগের সাজানো সব কলাকৌশলীদের দক্ষ প্রচারণায় জামায়াত শুধু নিষিদ্ধই নয়, লক্ষ লক্ষ দেশপ্রেমিক তুরুনের জীবনের ইতি টানতে হবে এর মধ্য দিয়ে। ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলনকে নিশ্চিহ্ন করার এটি অতীত শিক্ষা।
ইসলাম বিরোধী ইয়াহুদী শক্তি ও তাদের দোসররা আজ নিজস্ব সৈন্য দিয়ে কোটি ডলার খরচ করার পরিবর্তে মুসলিম দেশের ক্ষমতালোভী দালালদের দিয়ে এ কাজটি দক্ষ হাতে করে আসার প্রক্রিয়া দেশে দেশে শুরু হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় ইরাক, লিবিয়া, ইয়েমিন, সুদান, সিরিয়া, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাহরাইনসহ দেশে দেশে ইসলাম ও ইসলামী দেশগুলোকে পৃথিবীর মানচিত্র হতে মুছে দেয়ার অনেক কাজ পরিকল্পনা মুতাবিক এগিয়ে চলেছে।
একজন দেশ প্রেমিক হিসেবেই উপরের সম্ভাবনামীয় বিষয়গুলোকে দেশ ও জাতির স্বার্থে সবাইকে 'শাহবাগ' আন্দোলনের বিষয়টি বিবেচনার জন্য বিশেষ ভাবে অনুরোধ রইল।
বিষয়: বিবিধ
১২৩৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন