নিজের দেখা একজন সফল মানুষ
লিখেছেন লিখেছেন সালমান আরজু ১২ জুন, ২০১৩, ১০:১৪:১৯ রাত
তাঁর আসল নামটা দেব না। তবে ডাকনাম দিয়েই শুরু করি। তেমন বড়সড় বা আহামরি কোন নাম না! আসলে তাঁর ক্ষেত্রে নামে তেমন কিছু আসে যায় না। তিনি কী করেছেন সেটাই এখানে বিবেচ্য। যাক, তারপরও নামটা বলি। নাম সামি। এখন থেকে বলব সামি ভাই।
সামি ভাইয়ের সাথে আমার পরিচয় যেদিন এম ডি এস এর ভাইভা দেই।
জানালেন, এম ডি এস করার ওনার তেমন ইচ্ছা নেই। কিন্তু বউয়ের চাপে এসেছেন। written এ পাশ করেছেন, এখন শুধু ভাইভা বাকী। এটা পার হতে পারলেই বাংলাদেশের ২য় কঠিন প্রতিযোগিতামূলক মাস্টার্স প্রোগ্রামে চান্স পেয়ে যাবেন। যদিও এর আগে তিনি ১ম কঠিন প্রতিযোগিতামূলক মাস্টার্স- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আই বি এ থেকে এম বি এ পাশ করেছেন। কাজ করছেন একটা লিজিং কোম্পানির ডেপুটি ম্যানেজার হিসেবে। লাখের উপর বেতন!
পরে অবশ্য এম ডি এস এর ক্লাস করতে গিয়ে প্রথম দিনেই সামি ভাইকে পেলাম। বুঝলাম তিনি চান্স পেয়েছেন এবং ডিগ্রিটা কমপ্লিট করবেন।
একদিন কথা প্রসঙ্গে জানলাম, তিনি আই বি এ তে ফার্স্ট হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর অনার্স ডিগ্রী না থাকায় তিনি আই বি এ'র টিচার হতে পারেন নি। তাঁর মত লোকের কেন অনার্স ডিগ্রী নেই সেইটাই আজকের প্রশ্ন। একদিন জিজ্ঞেস করেছিলাম তাঁকে। শুনুন তাঁর নিজের ভাষায়-
নটরডেম থেকে সাইন্সে এইচ এস সি পাশ করার পর চান্স পেয়েছিলাম ঢাকা মেডিক্যাল আর বুয়েটে। ভর্তি হলাম মেডিক্যালে। বেশ কিছু দিন ক্লাস করার পর মেডিক্যালের পড়াশুনা ভাল লাগছিল না। ভাবলাম, আমার তো বুয়েটে ভর্তি আছে। চলে এলাম বুয়েটে। যদিও আমার স্বপ্ন ছিল অর্থনীতি পড়ার। কিন্তু আব্বা বাধ সাধলেন। আব্বা ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক। তিনি বললেন, বাবা, এসব অর্থনীতি পড়ে লাভ নেই। চাকুরি-বাকুরিও নেই। তার চেয়ে ঢের ভাল কোন টেকনিক্যাল বিষয় যেমন- ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হওয়া। তো ইঞ্জিনিয়ার হবার মানসেই বুয়েটে চলে আসা।
ফার্স্ট ইয়ার শেষ করার পর আমেরিকার একটা ইউনিভার্সিটিতে ট্রান্সফার হবার সুযোগ চলে এলো। লুফেও নিলাম সেটা। পড়াশুনা শুরু হল সাত সমুদ্র - তেরো নদীর ওপারে। ভালই চলছিল সবকিছু।
হথাৎ করেই দেশে আব্বা অসুস্থ হয়ে পড়লেন। ক্যান্সার ধরা পড়ল তাঁর। চিকিৎসার জন্য দরকার অনেক টাকার। আমাদের ফ্যামিলির তখন এত টাকা যোগাড় করা সম্ভব ছিল না। আমি পড়াশুনার পাশাপাশি odd job করা শুরু করি। টাকা দরকার, অনেক টাকা! ছাত্রদের জন্য নির্ধারিত কাজের সময়ের চেয়েও বেশি সময় আমি কাজ করি। টাকা উপার্জনের জন্য।
[চলবে............... ]
বিষয়: বিবিধ
১৯৩৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন