সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন- আরিফুল হক-জামায়াত- এহসানুল মাহবুব জুবায়ের
লিখেছেন লিখেছেন সালমান আরজু ২৬ মে, ২০১৩, ১১:২২:৩৫ সকাল
অবশেষে জামায়াত সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বি এন পি নেতা আরিফুল হককে সমর্থন দিল। যুক্তি- দেশের বৃহত্তর স্বার্থ। দেশের বৃহত্তর স্বার্থ বলতে এখানে ১৮ দলীয় জোট বুঝানো হয়েছে। আমার ধারনা এ সিন্ধান্ত এসেছে কেন্দ্র থেকে। যদি সিলেটের স্থানীয় জামায়াতকে এব্যাপারে সিন্ধান্ত নেয়ার সুযোগ দেয়া হত, তাহলে কখনোই আরিফুল হককে সমর্থন দেয়া হত না। এটা সিলেটের ইসলামী আন্দোলনের প্রতিটি কর্মীই জানেন, বিশ্বাস করেন। এখন আনুগত্যের খাতিরেই জামায়াতের নেতা কর্মীরা হয়তো আরিফুল হকের পক্ষে কাজ করবেন। কিন্তু একটা রক্তক্ষরণ থেকে যাবে তাঁদের হৃদয়ে !
কারণটা এখানে ব্যাক্তি আরিফুল হক। বি এন পি'র যে লোকগুলো জামায়াতের সাথে ঐক্য, আন্দোলন, নির্বাচন ইত্যাদিতে অনীহা তাঁদের দলে হলেন এই আরিফুল হক। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে সিলেটে জামায়াত-বিএনপি'র অনেক টানাপোড়েন এর সময় এই নেতাকে দেখা গেছে জামায়াতের ক্ষতি হয়, জোটের ঐক্য বিনষ্ট হয় এমন সব ভূমিকা পালন করতে। মদনমোহন কলেজের এক খুনের ঘটনার দুই দিন পর যখন জামায়াত-বিএনপি সমযোতা বৈঠক হয়, তখন এই নেতা চাননি সমযোতা করতে। চেয়েছিলেন যাতে আরও লাশ পড়ে, মানুষের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যাতে আরও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। অধিকন্তু তিনি সিলেটে ছাত্রদল ও যুবদলের সশস্ত্র ক্যাডারদের একজন গদফাদার হিসেবে অতীতে অনেক বিতর্কিত ভুমিকায় ছিলেন। জরুরি অবস্থায় একজন চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ হিসেবে গ্রেফতার হয়েছিলেন।
অপরদিকে ব্যক্তি হিসেবে মেয়র বদর উদ্দিন কামরানের রাজনৈতিক সহনশীল মনোভাব এতদঞ্চলের রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে সুবিদিত। ফলে ক্ষমতায় থেকে অথবা না থেকেও, কামরান ব্যক্তি হিসেবে জামায়াত কিংবা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের যতটুকু না ক্ষতি করবেন, তার চেয়ে ঢের বেশি করবেন আরিফুল হক।
সম্প্রতি সিলেট সিটিতে পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, এখানে আওয়ামীলীগের চেয়ে বি এন পি তথা ১৮ দলীয় জোটের সমর্থন বেশি। সুতরাং বি এন পি থেকে আরিফুল হককে না দিয়ে অন্য কোন প্রার্থী দিলে জামায়াতসহ সমমনা দলগুলোর কর্মীদের ব্যাপক সমর্থন পাওয়া যেত। অপরদিকে ব্যক্তি হিসেবে জামায়াতের মহানগরী আমীর এহসানুল মাহবুব জুবায়েরের চেয়ে আরিফুল হক যোজন যোজন দূরে। যদিও জামায়াতের সমর্থন সিলেটে আওয়ামীলীগ বা বি এন পি'র তুলনায় কিছুটা কম, কিন্তু ব্যক্তিত্বের মাপকাঠিতে আরিফুল হককে অবশ্যই পিছিয়ে রাখতে হবে।
এ নির্বাচনে যদি আরিফুল হক জয়ী হন, তাহলে নগরীর অধিবাসী হিসেবে হয়তো আওয়ামীলীগের পরাজয়ের কারনে একটু আনন্দিত হব। কিন্তু ব্যক্তি কামরানকে হারিয়ে ব্যক্তি আরিফুল হককে পাবার মাঝে কোন স্বার্থকতা আছে বলে মনে হয় না।
বিষয়: রাজনীতি
২৪১৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন