তারাবি নামাজ সংক্রান্ত কিছু কথা
লিখেছেন লিখেছেন পরিবর্তন ১৪ জুলাই, ২০১৫, ১২:১০:০১ দুপুর
এই লেখাটা শুধু আমার মতামত ব্যক্ত করছি মাত্র-
গতকাল রাত্রে আমি আমার জীবনের সবচেয়ে লম্বা তারাবী পড়লাম ঢাকার উত্তরার একটি মসজিদে প্রথম ১০ রাকাত যিনি পড়ালেন উনি ১০রাকাত পড়াতে সময় নিলেন ৩৮ মিনিট (অথচ ৪৫ মিনিটে ২০ রাকাত খতম তারাবীর ১ পারা শেষ হয়ে যায়)। উনি প্রতি ২ রাকাত এর জন্য প্রায় ৮ মিনিট করে সময় ব্যয় করেছেন। অথচ ২য় ১০ রাকাত যিনি পড়ালেন উনি সময় নিলেন প্রতি ২ রাকাতে গড়ে ৫মিনিট করে এবং উনার ক্বেরাত ও উচ্চারণে বা বুঝতে ও শুনতে কোন মুসল্লির সমস্যা হয়নি এবং উনার মতো সারা বাংলাদেশেই তারাবি পড়ানো হয়/বা সময় লাগে।
তো উনি কেন এত সময় নিলেন সেগুলো বিশ্লেষণ করলাম-
১. উনি সূরা পড়ছিলেন ওয়াক্ত নামাযে যেভাবে পড়া হয় ঠিক সেভাবে
২. উনি রুকুতে ও সেজদাতে ৭বার তাসবিহ পড়ার সময় নিয়েছেন (যা কিনা ৩ বারই যথেষ্ট এবং এটা স্ট্যার্ন্ডাড হিসেবে সবাই ফলো করে)
৩. দুই সেজদার মাঝখানে বসে দো'য়া পড়া হয়েছে (যা আবশ্যকীয় নয়)
৪. রুকু থেকে দাড়ানোর পর সামিআল্লাহ..........রাব্বানা লাকাল হামদ...(এতটুকু পড়লেই যথেষ্ট কিন্তু উনি এটা পুরোটা পড়ছিলেন).....
এখন আমার আসল কথায় আসি যদিও আজকেই খতম তারাবি শেষ পারা পড়া হবে কিন্তু সকলের কাছে বিষয়গুলো নজরে আনার জন্য এটা শেয়ার করছি-
১. ইসলাম কোন বিষয়কেই কঠিন করে আমল করার জন্য বলা হয়নি যদি তাই হতো তাহলে তারাবী নামাজ সুন্নত না করে ফরজ করা হতো।
২. সারাদিন রোজা রেখে প্রতিদিন ৩০ দিন ২০ রাকাত খতম তারাবী পড়া যথেষ্ট মজবুত ঈমানদাররাই পড়তে পারেন এবং এটা সহজ কোন বিষয় নয় কিন্তু তাই বলে ইসলাম কি শুধু কঠিন কাজ করার কঠোর নির্দেশ দেয় নি তাই সূরা তারাবিরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
৩. এত সময় নেয়া অহেতুক খামখেয়ালিপনা ছাড়া কিছুই না বরং উনারাই ইসলামকে কঠিন বিষয় হিসেবে মানুষের মাঝে তুলে ধরছেন।
তাই ঐ সমস্ত ইমাম/মসজিদ কমিটি/সহায়তাকারী ব্যক্তিগণের প্রতি আমার আবেদন আপনারা-
২ রাকাত পড়তে ৫মিনিট ব্যয় হয় ঐ স্যান্ডার্ড ফলো করুন।
যেমন ফলো করা হয় কুরআন খতম পড়ার ব্যাপারে প্রথম ৬ দিন ১.৫ পারা করে তারপরে ১ পারা করে ২৭তম দিনে খতম/ শেষ পারা পড়া হয়।
আরো একটি বিষয়- ৮/১০/১২ রাকাত পড়ে চলে যাওয়া মুসল্লিদের প্রতি নিবেদন..... আপনারা অহেতুক মসজিদে যেয়ে বিশৃংখলা সৃষ্টি করবেন না। আপনারা পুরো ২০ রাকাত না পড়লে সবশেষের কাতারে দাড়াবেন। আপনারা একবারও খেয়াল করেন না যে আপনারা ৮/১০/১২ রাকাত পড়ে যখন যেতে থাকেন তখন মসজিদের কাতারগুলোতো কি রকম বিশৃংখলা শুরু হয় শুধু আপনাদের কারণে কারণ সামনের কাতার খালি (গ্যাপ ফিলাপ না করে) রেখে নামাজ পড়া যায় না।
আসুন সবাই মিলে ইসলামকে কঠিন না করে সহজ ও সুন্দরভাবে মেনে চলি এবং অন্যকেও উৎসাহিত করি।
-ধন্যবাদ।
বিষয়: বিবিধ
২৬৩২ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কেননা এতে ক্বুরআন তাড়াতাড়ি করে তেলাওয়াত করা হয় যেটা মুসল্লীদের বুঝতে কঠিনই হয় ।
আর ক্বুরআন পড়তে তাড়াহুড়ো করতে না করা আছে ।
তারাবীতে যেহেতু ২০ রাকাত নামাজ পড়া হয় যা দিনের অন্যান্য যে কোন সময়ের নামাজের চেয়ে রাকাত হিসেবে বেশী এবং দীর্ঘ সময় ধরে হয় , সেহেতু তারাবীতে ক্বুরআন খতমকে টার্গেট করে তাড়াহুড়ো করে পড়ার চেয়ে যদি ছোট ছোট সূরা দিয়ে পড়া হয় তাহলে কি সমস্যা হবে ?
ক্বুরআন খতম তারাবীতে না দিয়ে যদি প্রত্যেকে নিজ নিজ বাসায় করে থাকে রমজান মাসে সেটাই ভাল বলে মনে করি।
আপনি বিশেষজ্ঞ না হলে ফতোয়া দেয়াটা জেনে করা উচিত।
ভালো লাগলো তারপরও... ধন্যবাদ...
ফরজ নামাজের জামাতের ব্যাপারে রসূল(সাঃ)বলেছেন মুসল্লিদের ধৈর্যের দিকে তাকাতে বা কম দীর্ঘ সূরা পড়তে।
তারাবীর যে সুন্নাহটি দেখা যায় তা হল অল্প রাকাত ও দীর্ঘ সময় ধরে তা পড়া।
দ্রুত পড়ে খতম দেওয়ার থেকে ধিরে নিজের সামর্থমত পড়াই ভাল।
মন্তব্য করতে লগইন করুন