নামায প্রতিষ্ঠার সময় মুসল্লিদের মনোযোগ আকর্ষণ
লিখেছেন লিখেছেন শান্তিপ্রিয় ২৭ এপ্রিল, ২০১৩, ১১:০১:১১ রাত
মৌসুমী মুসল্লীদের আপনি সহজেই চিনতে পারেন, তারা শুধু জানাযা, জুমুয়া ও ঈদের নামাযেই শরীক হয়ে থাকে। তাদেরকে নামাযে সৌভাগ্যের চূড়ায় দেখতে পাবেন। ইমাম সাহেব যদি নামাযে উচ্চ স্বরে ছোট কোন কিরাত পড়েন, অথবা এমন কিরাত যা প্রসিদ্ধ, তখন এই মুসল্লি সূরাটি মুখস্ত করে নিয়ে ইমামের পেছনে স্বরবে পড়া আরম্ভ করে দেয়। যেন তিনি ইমাম সাহেবের পড়ার প্রতিধ্বনি আওড়াচ্ছেন। এমনকি সে যেন বলেই ফেললো যে, আমি মুখস্ত করে ফেলছি। অতঃপর সে ইমাম সাহেব কিরাত শুরু করার ২/১ সেকেণ্ড পূর্বে কিরাত শুরু করে। যেন মুসল্লিগণ মনে করে আমরা মাশারী রাশেদ আল আফাসীর পেছনে নামায পড়ছি। হ্যাঁ আল্লাহ যাদেরকে রহম করেন। আমাদের কোন ভাই খুৎবা আরম্ভ করে দেয়, অথচ তার এক বা দুই বা তিনটি আয়াতই মুখস্ত আছে, অতঃপর খুৎবা বন্ধ করে নামাযের দিকে মনোযোগী হয়।
কিছু মুসল্লি অনুভব করে না, যে নামায বিনয়ী সাথে পড়তে হয়। ইমামকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে, চোখ বাঁকা করে পেছনের দিকে তাকায়, কোন মুসল্লি পাশে দাড়ালে তার দিকে দৃষ্টি দেয়। জামা-কাপড় নিয়ে খেলা করে, অথবা কাপড়ে ধুলা লাগলে তা পরিষ্কার করে। হাতের ঘড়ির দিকে তাকায়, আবার মসজিদের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে হাতের ঘড়ি দেখে যে, সময় বরাবর ঠিক আছে কিনা। এমন আরো অনেক কর্মকাণ্ড করে থাকে, যা নামাযে করা উচিত নয়। এভাবে নামায পড়েই তারা আনন্দিত, তারা ভাবে না যে মহান সৃষ্টিকর্তার সামনে তারা নামায পড়তে দাঁড়িয়েছে।
উউউউহহহহ উউউউহহহহ উউউউহহহহ
পবিত্র কুরআনের কিছু কিছু আয়াতে রহমত, জান্নাত ও বিশেষ নিয়ামতের কথা বলা হয়েছে। মুমিনগণ সেগুলোর অপেক্ষায় রয়েছেন। আর কিছু আয়াত রয়েছে যার মধ্যে জাহান্নামের শাস্তি, পরকালের আলোচনা করা হয়েছে। মুসল্লিগণ এসব আয়াত শোনার সময় আল্লাহর ভয়ে, জাহান্নামের ভয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। মাঝে মধ্যে এমন কিছু মুসল্লি লক্ষ্য করা যায়, যে তারা প্রত্যেক নামাযেই এভাবে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন, চাই আয়াতগুলো জান্নাত-জাহান্নাম সম্পর্কিত হোক কিংবা মাসিক ঋতু অথবা প্রসূতি সংক্রান্ত হোক। এগুলো মূলত অসচেতনতাই প্রমাণ করে।
দারিদ্রতা কোন দোষনীয় নয় এমনকি হারামও না। নামাযের মধ্যে অনেককেই চূড়ান্ত পর্যায়ের বিনয়ী দেখা যায়। তবুও তারা চেষ্টা করে উত্তম পোশাক পরিধান করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে মসজিদে যেতে। কিন্তু আশ্চার্যের বিষয় হলো অনেক কর্মজীবি লোককে দেখা যায় সাপ্তাহ ভরে কাজ করে মসজিদে আসে অপরিষ্কার অবস্থায়, শরীরের তেলের গন্ধ, ঘামের গন্ধ, সিমেণ্ট লেগে রয়েছে। অযু করার সময় শরীরে সামান্য পানি ছিটা দিয়েই মসজিদে প্রবেশ করে। আর বলে থাকে কাজের ঝামেলায় পরিষ্কার করার সুযোগ পাইনা, আরো বলে দ্বীন তো সহজ।
কিছু মুসল্লি রয়েছেন যারা ইমামের সালাম ফেরানোর সঙ্গে সঙ্গে মসজিদ থেকে বের হওয়ার জন্য উদ্যত হন। তারা এ কথা চিন্তাই করেন না যে, এখনও অনেক মুসল্লি নামায শেষ করেন নাই। অথচ নামাযীর সম্মুখ দিয়ে অতিক্রম করা জায়েয নাই। কিন্তু এই দ্রুতগামী দশ দশ জন মুসল্লির সম্মুখ দিয়ে অতিক্রম করছে, কেউ যদি তাকে বাঁধা দেয়, সে রাগ করে। আর কেউ কেউ মনে করে যে, ধীরগতিতে মুসল্লির সম্মুখ দিয়ে অতিক্রম করলে তা বৈধ হবে (যা মোটেও বৈধ নয়)। আল্লাহ সবাইকে সহীহ বুঝ দান করুন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায পড়া অবস্থায় দৃষ্টি উপরের দিকে নিক্ষেপ করতে নিষেধ করেছেন। বরং যারা সর্বদা উপরের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে তাদের দৃষ্টিশক্তি আল্লাহ বিলুপ্ত করে দিবেন, এমন হুঁশিয়ারি বক্তব্য আল্লাহর রাসূল প্রদান করেছেন। তিনি এ কথা স্পষ্ট করে বলেছেন যে, নামাযী ব্যক্তির দৃষ্টি দাঁড়ানো অবস্থায় সেজদার জায়গায় থাকবে। কিন্তু কিছু মুসল্লি নামাযে রুকু থেকে দাঁড়ানোর সময় ছাদের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে থাকে, তারা মনে করে এটাই সঠিক, যেন তারা আল্লাহর দিকে তাকাচ্ছেন, আর আল্লাহ তাদেরকে সম্বোধন করছেন। (আল্লাহ আমাদের সবাইকে এমন দৃষ্টি নিক্ষেপ করা থেকে হেফাযত করুন)
উচ্চ স্বরে কিরাত বিশিষ্ট নামাযে ইমামের পেছনে আমীন বলা এটি উত্তম সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন রাসূলের উম্মতকে আমীন বলার কারণে ভালোবাসেন। আর ফেরেশতাগণও জামাতের মুসল্লিগণের সঙ্গে আমীন বলেন। আর যে মুসল্লির আমীন বলা ফেরেশতার আমীন বলার সঙ্গে এক হয়ে যায়, আল্লাহ চাহে তো তার গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। তবে শর্ত হলো মুসল্লিদের আমীন ও ফেরেশতার আমীন বলা এক সঙ্গে শোনা যেতে হবে। দুঃখজন হলেও সত্য যে, কিছু মুসল্লি এমন রয়েছেন যে তারা ইমামের আমীন বলার সঙ্গে সঙ্গে বলেন না, বরং দেরী করে বলেন। অথবা এমন লম্বা করেন যে সমস্ত মুসল্লিদের আমীন বলা শেষ হয়ে যায় কিন্তু তিনি “আ” বলে টেনেই যাচ্ছেন।
নামাযে দাঁড়ানো অবস্থায় হাত বাঁধার সঠিক নিয়ম হলো সীনার নিচে ও নাভির উপরে, ডান হাত বাম হাতের উপরে রাখবে। কিন্তু অনেক লোককে দেখা যায়, তারা নাভির নিচে হাত বাঁধে, আবার অনেকে সীনার উপরে গলার কাছাকাছি হাত বেঁধে থাকে। অথবা অস্বাভাবিকভাবে হাত বাঁধে, সেইভাবে অন্য কাউকে বাঁধতে দেখা যায় না।
অনেকে একদিনে বার বার অযু করা পছন্দ করেন না। এই অবস্থাটি জামায়াতের সঙ্গে নামায অপেক্ষা একাকী নামায পড়ার মধ্যে বেশি পরিলক্ষিত হয়। অথচ রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম পেশাব পায়খানা চেপে রেখে নামায পড়তে নিষেধ করেছেন। সুতরাং রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আদেশ অমান্য না করে বরং পেশাব পায়খানার জরুরত থেকে ফারেগ হয়ে নামায পড়লে, নামাযে একাগ্রতা সৃষ্টি হবে।
অনেক সময় লক্ষ্য করা যায়, যে প্রতাপশালী লোকেরা নামাযের মধ্যে দাঁড়ানোর সময় সীসাঢালা প্রচীরের মত কাতার বন্দী হয়ে দাঁড়ায় না। বরং তাড়া দু’জনের মাঝে নিজের মর্যাদাকে বড় মনে করে দূরত্ব বজায়ে দাঁড়ান। আর এভাবে দাঁড়ানো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লামের নামাযের পরিপন্থি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সহীহ বুঝ দান করুন।
জামাতে নামায তথা সময় মত একই ইমামের পেছনে উপস্থিত মুসল্লিদের নিয়ে এক সঙ্গে নামায পড়া। কিন্তু বারবার একই সমস্যা পরিলক্ষিত হয়, প্রধান জামাতের পর একই সঙ্গে দুই জামাত হতে দেখা যায়। আর এটি হয়ে থাকে মুসল্লি দ্রুততার কারণে, এভাবে যে, একজন মুসল্লি দৌড়ায়ে এসে কিছু মুসল্লি নিয়ে মসজিদের একপাশে জামাত আরম্ভ করে দিল, অথচ একই সময় ওই মসজিদে দ্বিতীয় আরো একটি জামাত চলছে। দ্বিতীয় কারণ হলো: ইমাম সাহেবের স্বর এতই নিস্তেজ যে, অন্যরা শুনতেই পায় না। পরে আগত মুসল্লিগণ বুঝতেই পারেন নাই যে, মসজিদে জামাত চলছে।
অনেক নামাযী রুকু অবস্থায় সঠিকভাবে রুকু করে না, রুকু অবস্থায় হাত দিয়ে অনেকে হাঁটুর অনেক নিচে গুড়ালীর কাছাকাছি ধরে আবার অনেকে হাঁটুর উপরে রানের মধ্যে হাত রাখে, আবার অনেকে একটু মাটি লাগলেই হাত দিয়ে ঝাড়া-ঝাড়ি করে। এমন ঘটনা বারবার পরিলক্ষিত হয়, এবং তারা বলেন যে এমন করা হয় নামাযে একাগ্রতা তৈরী হওয়ার জন্য। রুকু করার মানে এ নয় যে জামার মাপ দেওয়ার জন্য নিচ পর্যন্ত হাত দেওয়া।
তবে হ্যাঁ কেউ যদি স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণে সঠিকভাবে রুকু করতে না পারে, তাকে আল্লাহ মাফ করবেন।
তেমনিভাবে অনেক নামাযী ছবিতে দেওয়া সঠিক পদ্ধতিতে রুকু করে না। অনেকে সামান্য ঝুকে যা ৯০% ও হয় না। একে বারে পায়ের গুড়ালি পর্যন্ত ঝুকা, এটাও সঠিক না। এভাবে ঝুকাকে অনেকে নামাযের একাগ্রতা মনে করে।
অনেক মুসল্লি সঠিকভাবে সেজদা আদায় করেন না, কনুই মাটির সাথে মিলায়ে সেজদা করেন, যা শুদ্ধ নয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এভাবে সেজদা করাকে কুকুরের সাথে তুলনা করেছেন। তেমনিভাবে দুনো হাত কম্ফু, কেরাটির মত হাত মুষ্টি করে সেজদা করাও ঠিক নয়। বরং সঠিক নিয়ম হলো দুই হাতের আঙ্গুলগুলো মিলায়ে কিবলার দিকে সোজা রাখা, তেমনিভাবে পায়ের আঙ্গুলগুলোও কিবলার দিকে রাখা।
তবে হ্যাঁ কেউ যদি স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণে সঠিকভাবে রুকু করতে না পারে, তাকে আল্লাহ মাফ করবেন।
অনেক মুসল্লি এমন আছেন যে, জামাত শেষ করার পর মসজিদেই গল্পগোজব শুরু করে দেন। তারা এ কথা ভুলে যান যে মসজিদে অবস্থান করছেন। অথচ অনেকে সুন্নত পড়ছেন, কিংবা অনেকে পরে এসে ফরজ আদায় করছেন। তারা মসজিদটাকে হোটেল বানিয়ে নেন। যদি তাদের থেকে বয়সে ছোট এমন ব্যক্তি বলেন; “মুরব্বীগণ আসতে কথা বলুন! এখানে অনেকে নামায পড়ছেন।” তখন তারা উত্তরে বলে; ‘আশ্চর্য! ছোট ছেলে আমাদেরকে উপদেশ দেয়, শিষ্টাচার বলতে কিছু নেই?’ তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস শুনান যে; যারা বড়দের সম্মান করেন না তারা আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত না। আরো কত কি যে বলে!!!
জামাতের সঙ্গে নামাযের জন্য কাতার বন্দী হয় দাঁড়ানো যেন সীসা ঢালা প্রাচীরের মত মজবুত ও সোজা হয়। সকল নামাযীকে এভাবে দাঁড়ানো উচিত যে, দুই পা এবং কাঁধ যেন বরাবর হয়। কিন্তু অনেক মুসল্লি বিষয়টি না জানার কারণে সঠিকভাবে দাঁড়ায় না, দূরত্ব বজায় দাঁড়ানোর কারণে মাঝখানে শয়তান প্রবেশ করার সুযোগ পায়।
অনেকে পরে এসে জামাতে শরীক হয়, আর এত স্বরবে তাকবীরে তাহরীমা বাঁধে যেন সে ইমাম। এতে মুসল্লিদের সন্দেহ হয় যে ইমাম সাহেব কী তাকবীর বললেন? অনেকে রুকুতে কিংবা সেজদায় চলে যান। মুক্তাদীর জন্য এভাবে স্বরবে তাকবীর বলা কিংবা কেরাত পড়া সুন্নতের পরিপন্থি, এই মর্মে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম অথবা সাহাবা কেরামগণ থেকে কোন বর্ণনা প্রমাণিত নেই। আর নিয়তের স্থান হলো অন্তর, মুখে বলারও কোন প্রয়োজন নেই।
সাধারণত অনেক মুসল্লি এ বিষয়টি জানেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম কাঁচা পেঁয়াজ রশুন খেয়ে মসজিদে যেতে নিষেধ করেছেন। যেন অন্যান্য মুসল্লিদের কষ্ট না হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে অনেক মুসল্লিকে দেখা যায় তারা কাঁচা পেঁয়াজ, রশুন ও সিগারেট খেয়ে মসজিদে নামায পড়তে যান। এবং কাতারে দাঁড়িয়ে আ‘‘‘হ করে হাই তুলেন। বার বার করতেই থাকেন, যেন তিনি এভাবে হাই তুলাকে গর্ব মনে করছেন।
কিছু মুসল্লি জামাতে নামায পড়তে দাঁড়িয়ে কাতার বন্দীকে ভেঙ্গে দেয়। এভাবে যে, ইমামের তাকবীর অপেক্ষা অনেক বিলম্ব করে, সে অন্যান্য মুসল্লি অপেক্ষা রুকু, সেজদায় দেরী করে। আর সে এতেই নিজেকে বেশি মুত্তাকী মনে করে। আর বাকী মুসল্লিগণ যেন ফাও দাঁড়িয়ে আছে। আসলে সঠিক নিয়ম হলো রুকু, সেজদা, এবং দাঁড়ানোসহ সবকিছুই ইমামের সঙ্গে সঙ্গে করা উচিত। যেন প্রকৃতভাবে নামাযটি জামাতের নামায হয়। আর যে ব্যক্তি নামাযে দীর্ঘ সেজদা করতে চায় সে যেন একাকী তথা নফল নামাযে করে।
অনেক মুসল্লিদের দেখা যায়, যারা জুমুয়া কিংবা ফরয নামাযের জন্য বসে অপেক্ষা করা কিংবা খুৎবা চলা অবস্থায় পরস্পর কথা বলে, সালাম ও কোশল বিনিময় করে, অথচ জুমুয়ার খুৎবা নামাযেরই অংশ, খুৎবা চলা অবস্থায় কথা বলা হারাম। এ সময় তারা শিশু কিশোরদের উপদেশ দেয়, আবার অনেকে খতীব সাহেবের খুৎবা ব্যাখ্যা করেন। যেন মনে হচ্ছে তারা কোন মসজিদে না সিনেমা হলে আছে। অথচ সিনেমা হলেও এভাবে কথা বললে বের করে দিবে। আর আল্লাহর ঘর মসজিদে গিয়েও তারা সংযত হয় না। আল্লাহ আমাদের মাফ করুন। আমীন
সাধারণত হাই তুললে অমনোযোগী ও ক্লান্তি বুঝায়ে থাকে। এগুলো হয়ে থাকে সাধারণত ঘুমের চাপের কারণে। বিষয়টি যে কারণেই হোক, যথা সাধ্য হাই দমাতে চেষ্টা করতে হবে। এ যাবৎ কাউকে এমন পাওয়া যায়নি যে সে পেশা হিসেবে হাই তুলে। কিন্তু এমন অনেক লোককে দেখা যায়, যারা নামাযের মধ্যে দাঁড়িয়ে সিংহের মত হা করে হাই তুলে।
প্রথম কাতার পূর্ণ হওয়ার পর দ্বিতীয় কাতার আরম্ভ নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। কেউ মনে করেন নতুন কাতার ডান দিক থেকে আরম্ভ করা ভালো। কেননা সব কাজই ডান থেকে শুরু করা উত্তম। আবার কেউ বাম দিককে প্রাধান্য দেয়, কারণ প্রথম কাতার শেষ হয়ে বাম দিক দিয়ে। আবার কেউ ফ্যানের নিচে থেকেই কাতার শুরু করে দেন, কারণ তিনি গরম সহ্য করতে পারেন না। তবে উত্তম হলো ইমাম বরাবর পেছন থেকে নতুন কাতার শুরু করা।
অনেক মুসল্লি মনে করেন যে, ইমাম সাহেবের সূরা ফাতেহা ও কিরাত পড়া মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট নয়। তারা মনে করেন কমপক্ষে সূরা ফাতেহা পড়তে হবে যেন নামায শুদ্ধ হয়। আসলে বিষয়টির মধ্যে অবকাশ ও মতভেদ রয়েছে। কিন্তু সমস্যা হলো অনেক মুসল্লি ইমামের সঙ্গে সঙ্গে এত দ্রুত ও উচ্চস্বরে সূরা ফাতেহা পাঠ করে যে, সে কি পড়ছে নিজেও বুঝে না। আর পাশের মুসল্লিও ইমামের পড়া শুনতে পান না, তার শব্দের কারণে। ভেবে দেখুন যদি এমন কাণ্ড কয়েক জন মুসল্লি করে, তাহলে নামাযের অবস্থা কি হবে।
সারকথা:
এগুলো সংগ্রহের উদ্দেশ্য হলো: আমাদের নামাযে সাধারণত যেসব ভুল হয়ে থাকে, তা থেকে মুসল্লিদের সংশোধন করা। আর যথা সম্ভব রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামাযের মত নামায আদায় করার চেষ্টা করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই হাদীস “তোমরা আমাকে যেভাবে নামায পড়তে দেখ সেভাবে নামায পড়” হাদীসটির আমল করা।
বিষয়: বিবিধ
৩৩৭০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন