শাহাবাগের তরুণদের আন্দোলন এবং আমার ভাবনা।
লিখেছেন লিখেছেন কাজী মুস্তাহিদুজ্জামান ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১১:১৬:৫৬ সকাল
আমি খুব আশ্চার্য না হয়ে পারছিনা। একটা সামান্য বিষয় নিয়ে কেন এত মাতামাতি? যেখানে সরকারের সীমাহীন দুর্নীতির কারনে পদ্মা সেতু বন্ধ হয়ে গেল দেশের এত বড় একটা ক্ষতি হয়ে গেল। কই একজন তরুণকেও তো দেখলামনা টু-শব্দটি করতে! কই একজনকেও তো দেখলাম না সুরঞ্জিত(চোরঞ্জিত) বাবুকে গ্রেফতারের দাবি নিয়ে তাদের বাড়ির সামনের রাস্তায় বিক্ষোভ দেখাতে! কাদের মোল্লা যদি প্রকৃত অপরাধী হয় তবে অবশ্যই তার বিচার হওয়া উচিৎ। কিন্তু তার বিচারের জন্য একজনও প্রত্যক্ষ সাক্ষী যোগার করতে পারলনা প্রসিকিউশন?! আমিও এই তরুণ সমাজের একজন হয়ে তাদের বলছি আপনারা ধোঁকায় পইড়েন না। আমরা কেউ ই মুক্তি যুদ্ধ দেখিনি । আমরা স্বাধীন দেশে বাসকরি আমাদের যুদ্ধ হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে। আমাদের আবেগকে কাজে লাগিয়ে কেউ সুদূরপ্রসারী ফায়দা লুটবে সেটা হতে দেওয়া কি আমাদের উচিত? আমরা কাকে বিশ্বাস করব? যে রকম সাক্ষীর ভিত্তিতে কাদের মোল্লার শাস্তি দেওয়া হলো সেই রকম সাক্ষী হাজার হাজার পাওয়া যাবে অনেক আওয়ামীলীগের বড় বড় নেতার বিরুদ্ধে। আমাদের তরুণ সমাজ নাকি অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে এবং এই আন্দলনের দুধ এবং স্বর খাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ! আমার কথা হচ্ছে আওয়ামীলীগ কি দুধে ধোয়া তুলসি পাতা? তারা এক আবুলকে বাঁচাতে গিয়ে পুরো দেশ এবং জাতির সাথে বেইমানী করল আশ্চার্যজনক হলেও সত্যি এক্ষেত্রে আমাদের কোন ভূমিকায় রাখা হলো না। এখন তো আমার সন্দেহ হয় শাহাবাগের সরকারী টয়লেট ব্যবহারের আন্দোলন আর প্রতি ওয়াক্তে বিরিয়ানির আন্দোলন কি প্রকৃত পক্ষে তরুণ সমাজের আন্দোলন নাকি নাস্তিক বাম ও ছাত্রলীগ যুবলীগের আন্দোলন?! এই আন্দোলন কি শুধুই কাদের মোল্লা সহ আটক জামাত, বি, এন, পির নেতাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন নাকি প্রকৃত যারা যুদ্ধ অপরাধী মানবতা বিরোধী তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন? তাই যদি হয় তবে আমাদের খেয়াল করে দেখতে হবে স্বাধীনতার পরে কারা সবচেয়ে বেশি মানবতা বিরোধী অপরাধ করেছে। কারা দেশটার স্বাভাবিক অগ্রযাত্রা ব্যহত করেছে। আমরা তো কেউ মুক্তি দেখিনি আমরা সবাই শোনা কথার উপর ভিত্তি করে আন্দোলন করছি। যারা প্রকৃত মুক্তি যোদ্ধা তাদেরই একজন মহান স্বাধীনতার জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহ ধন্য বীর উত্তম বঙ্গবীর কদের সিদ্দিকী সাহেব বলেছেন আমাদের বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয় ও নাকি নাম করা রাজাকার ছিল । আমরা কেন তার বিচার এবং গ্রাফতারের দাবি করছি না? নাকি এটা করলে পুলিশের গজারির পরশ পাওয়ার ভয় আছে? আমরা যদি প্রকৃত দাবীর আন্দলনে এত ভয়ই পাব তাহলে কি আমাদের দাবীর নিতি- নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে নয়কি? আমাদের একটা জিনিষ খেয়াল না রাখলেই নয় যে কাদের মোল্লা সহ জামাত বি, এন, পির সকল নেতাদের শুধু ফাঁসি কেন তাদের টুকরো টুকরো করে কেটে নদীতে ভাসিয়ে দিলেও আমাদের চার পয়সার ও উপকার হবে না, যতটা উপকার হবে এক আবুল হোসেন কে গ্রাফতার করলে। আমার আর একটা বিষয় ও সন্দেহ হয় যে কাদের মোল্লা যদি অপরাধী হবেই তবে এত দিন কেন আমরা টা শুনিনি? কাদের মোল্লা কি যুদ্ধের পরে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন? আমি যতদূর শুনেছি কাদের মোল্লা যুদ্ধের পরেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি করেছেন তাহলে সেই ১৯৭৩ সালে যে রাজাকারদের বিরুদ্ধে মামলা এবং গ্রাফতার অভিযান করা হয়েছিল সেখানে কাদের মোল্লার নাম নেই কেন? আপনাদের বুঝতে হবে যে এই সরকার কতটা ধোঁকাবাজি করছে আমাদের সাথে যেখানে চোখের সমানে ঘটে যাওয়া বিষয় গুলো ধামা চাপা দিয়ে দিতে বদ্ধপরিকর সরকার সেখানে তাদের কতটা বিশ্বাস করা যায়। সাগর- রুনী হত্যাকাণ্ডের এক বছর পেরিয়ে গেলেও কোন কূল কিনারা করতে পারলোনা এখনো তাদের ছাত্র সংগঠন সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ দিনে দুপুরে শত শত মানুষের সামনে বিশ্বজিৎ নামের নিরীহ পথচারীকে নৃশংস ভাবে কুপিয়ে হত্যা করল কই ব্লগ আর ফেসবুক বাদে কোথাও কোন টু-শব্দটি পর্যন্ত শুনলাম না । বিশ্বজিতকে হত্যা কি মানবতা বিরোধী অপরাধ নয়? আমার আরও একটা বিষয় বলা দরকার হয়তো কেউ আমাকে রাজাকারের বংশধর যদিও আমাদের বংশে কোন রাজাকার নেই বরং কয়েকজন নাম করা মুক্তি যোদ্ধা আছে। আচ্ছা বিচারের রায় কি দাবীর উপর করা হয় নাকি সাক্ষী প্রমাণের উপর ভিত্তি করে হয়? আসুন আমরা আবেগের স্রোতে ভেসে না গিয়ে প্রকৃত দেশ প্রেমে উজ্জীবিত হয় সকল প্রকার অন্যায় এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলি। তাহলেই কেবল আমাদের নৈতিকতা এবং দাবি সকল মহলে সমান ভাবে প্রশংসিত হবে ও গ্রহণযোগ্যতা পাবে।
বিষয়: বিবিধ
১২৪৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন