মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারের রায় এবং আওয়ামীলীগ সরকারের হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য।
লিখেছেন লিখেছেন কাজী মুস্তাহিদুজ্জামান ২২ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৭:৩৪:০৩ সন্ধ্যা
ভারত যখন আমাদের নাগরিকদের পাখির মত গুলি করে মারে তখন কোথায় তাকে আমাদের সম্মান , আর এই ঘটনারই আবার যখন সাফাই গেয়ে যান আমাদেরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তখন কোথায় থাকে আমাদের মর্যাদা? যখন বিশ্বব্যাংক চুরির অভিযোগ তুলে আমাদের বিশ্বচোর খ্যাতি প্রদান করে এবং একটি বড় অবকাঠামো খাতের ঋণচুক্তি বন্ধ করে দেই তখন কোথায় থাকে আমাদের আত্মসম্মান? যখন সরকারের মদদদাতা ছাত্রলীগ পশুর মত হিংস্রতার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে বিশ্বজিৎ কিংবা রাব্বির মত নিরীহ মানুষের প্রান কেড়ে নেই তখন কোথায় থাকে আমাদের মানবতা? নিজামী বা মুজাহিদ অথবা আবুল কালাম আজাদ বা এইরকম আরও অনেকের ফাঁসি হলেই বা আমাদের কি? এদের ফাঁসি হলে কি আমাদের পদ্মা সেতু হবে? আমাদের শেয়ার বাজারের ৩০ লক্ষ লোকের ক্ষতিপূরণ কি হবে? সরকার যদি তার নিশ্চয়তা দেই তবেই আমি বিশ্বাস করব আসলেই সরকার ঐ তথাকথিত মানবতা বিরোধীদের বিচারে আন্তরিক। এবং সরকারের কোন রাজনৈতিক স্বার্থ নেই। আমরা কেন উৎফুল্ল হই? সেটা কি বুঝে হই না নাবুঝে হই? এই ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর থেকেই আমাদের সরকারের মন্ত্রি-এম, পি দের মুখে বিচারের আগেই নানা মুখি আস্ফলন শুনে আসছি আমরা এবং এখন তারই প্রতিফলন দেখলাম গত কালের ঐ রায়ে। এটা কি পক্ষপাতদুষ্ট রায় নয়? এই বিচার যে পক্ষপাতদুষ্ট বিচার তাতো এই ট্রাইব্যুনালের অনেক কার্যক্রম দেখেই বুঝা গিয়েছিল। আসামি পক্ষের কোন আবেদনই আমলে নেওয়া হয়নি। প্রতিটা আবেদনই সরাসরি খারিজ করে দিয়েছে। এখানে যে বিচারপতি নিয়োগ করা হয়েছে সবই সরকারের সুবিধা ভোগী ব্যক্তি। মুখে বলা হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কিন্তু আদতে এই ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি তো দূরের কথা আসামী পক্ষের একজন আইনজীবীও বিদেশী কাউকে নিয়োগ করতে দেয়নি। আর সবচেয়ে বড় কথা এই রায়ে আমার আপনার মত আমজনতার কারো উপকার হোক বা না হোক ১০০% উপকার হয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের কারণ তাদের তো সামনে নির্বাচনী বৈতরণী পার করতে হবে। গুম, খুন, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজী, সর্বত্র দলীয়করণ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, দফায় দাফায় বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি ও বিরোধীদল নির্যাতনের দরুন সরকার জনতার কাছে হয়েছে পুরোপুরি কোণঠাসা। সরকারে টিকে থাকার মত তাদের কাছে আর কোন ইস্যুই অবশিষ্ট ছিলনা। তাই যেকোনো ধরনের প্রতীবাদে সরকার ঘুরে ফিরে ঐ যুদ্ধঅপরাধী ইস্যু টেনে আনার চেষ্টা করত। এখন এই রায়ের দ্বারা সরকার তাদের অন্য সকল ব্যার্থতা ঢাকার চেষ্টা করবে এবং এই ইস্যু নিয়ে তাদের নির্বাচনের ঢাক-ঢোল পেটাবে। কিন্তু আমার কথা হচ্ছে এর দ্বারা আমাদের কি ফুটা পয়সার ও উপকার হবে? যেখানে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া অপরাধের বিচার এবং তদন্ত করতে সরকারের ঘাম ছুটে যাচ্ছে সেখানে ৪২ বছর আগে ঘটে যাওয়া বিচার এত দ্রুততার সাথে নাকে মুখে মাখিয়ে করা এবং বিচারপতিদের প্রভাবিত করে একটা রায় করা কি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত নয় কি?
বিষয়: বিবিধ
১২৩৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন