মন-মানষিকতাকে ব্যাক্তিস্বার্থের উর্ধ্বে রাখতে পারবেন কি?
লিখেছেন লিখেছেন সূর্য রশ্মি ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০১:০২:২৮ দুপুর
মুসলমানদেরকে এককাতারে নিয়ে আসা এখন সময়ের দাবী, সব ধর্মপ্রান মুসলমানগন এটা একবাক্যে মেনে নিচ্ছেন। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা যারা পালন করতে পারে তারা হলো ইসলামী দলগুলো। ইসলামী দলগুলো যখন এক হবে তখন মুসলমানদের মধ্যে এক হওয়া খুব সহজ হয়ে যাবে।
কিন্তু এক হওয়া কি এতই সহজ!! মনে প্রানে ইচ্ছা থাকলে এটা খুবই সহজ, আর ইচ্ছে না থাকলে এর চেয়ে কঠিনতর কাজ দুনিয়াতে নেই। আমাদের এই পৃথিবীতে যত সংঘাত, দ্বন্দ্ব, ক্ষমতার লড়াই, ভাইয়ে ভাইয়ে মারামারি হয়েছে বা হচ্ছে এর মূল কারন হলো একজনের মতামতকে আরেকজন সহজভাবে গ্রহন করার মনমানষিকতা না জন্মানোর দরুন।
এ জগৎ যতদিন থাকবে তেমনি নানা মত পথের মানুষও থাকবে। এগুলো মানুষের একটা সহজাত প্রবৃত্তি। মানুষের মতভেদ গড়ে উঠে দেশের আবহাওয়া, প্রকৃতি, পরিবেশ এবং পরিবারের উপর ভিত্তি করে। একজন মানুষ তার দেশের চাহিদার উপর নির্ভর করে একটা আদর্শ গ্রহন করে থাকেন। সেই আদর্শের ধরন কিরূপ হবে সেটা নির্ভর করে তার পরিবার, তার বন্ধুবান্ধবের সাহচার্য এবং দেশের পরিস্থিতির উপর। কাজেই সবার মতামতকে এক প্লাটফর্মে আনা আদৌও সম্ভপর নয়। তবে যেটা সম্ভব সেটা হলো সকল আদর্শের মূল যেখানে থাকে সেটাকে বের করে এনে এককাতারে দাড় করানো।
ইসলামী দলগুলোর নানারকম মতভেদ থাকলেও এর মূল কিন্তু এক। তারা সবাই আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসী, তাঁকে সৃষ্টিকর্তা এবং সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী মানেন এবং হযরত মুহাম্মদ স: সর্বশেষ নবী এবং সমগ্রমানবজাতির হেদায়াতের জন্য তাঁকে প্রেরণ করা হয়েছে, কোরআন পুরো মানবজাতির হেদায়াতের একমাত্র উপাদান সেটাও মানেন। এটাই হলো মূল বা শিকড়। পার্থক্য গড়ে উঠে এ বিষয়গুলো কে কিভাবে মনের ভিতরে লালন পালন করেন সেটা নিয়ে।এ থেকেই মূল থেকে বিভিন্ন ডাল পালা, শাখা প্রশাখা গজায়।
ইসলামী দলগুলো যদি একত্রিত হতে চায় তাহলে আগে তাদের মন-মানষিকতার উন্নয়ন ঘটাতে হবে। না-বোধক চিন্তা থেকে বের হয়ে এসে হ্যাঁ-বোধক চিন্তার জগতে নিজেকে প্রবেশ করাতে হবে। এর শাখা-প্রশাখা এমন কেন হল? এটা চিন্তা না করে দেখতে হবে আমাদের সকল শাখাপ্রশাখার মূল একখানে।
প্রশ্ন থেকে যায় সবাই একপ্লাটফর্মে এসে গেলে তখন এ আন্দোলনের নেতৃত্ব কে দিবে? হ্যাঁ যে গাছের মূল প্রয়োজনীয় যত্ন, পানি, সার পায় সেই গাছটিই শক্তিশালী থাকে। কাজেই সবার মতের ভিন্ন মত থাকলেও কিছু মত থাকে খুবই শক্তিশালী এবং যুগের সাথে মানানসই এক্ষেত্রে তারাই নেতৃত্ব দিবে। যাদের চিন্তাশক্তি যুগের সাথে তালমেলাতে পারছেনা তখন তারা শক্তিশালী চিন্তাচেতনার বশ্যতা মেনে নিতে বাধ্যহবে। আর এ মেনে নেওয়ার ক্ষমতাটাই হচ্ছে চ্যালেঞ্জ। এটা বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন কাজ আবার সহজ কাজ।
ইসলামকে সফল দেখতে চাইলে আগে ইসলামী ব্যাক্তিত্বদের নিজের মনমানষিকতাকে ঢেলে সাজাতে হবে, ব্যাক্তিস্বার্থকে ত্যাগ করতে হবে, যুক্তি চর্চাকে মূল্য দিতে হবে। যতদিন না এ চর্চা কেউ করছে ততদিন ইসলামী দলগুলোর এক হওয়ার স্বপ্ন কেবল একটি স্বপ্নই থেকে যাবে, এর ফলাফল খুব একটা আশাব্যাঞ্জক নয়।
বিষয়: বিবিধ
১০৩৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন